বাবাকে নিয়ে বিশ্বসেরা ২টি বাস্তব ঘটনা পিতার মর্যাদা। Importance of Father

 বাবাকে নিয়ে বিশ্বসেরা ২টি বাস্তব ঘটনা

 পিতার মর্যাদা। Importance of Father

 


-এক পিতার দরদভরা কবিতা

এক যুবক মহানবীর কাছে এসে পিতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন , মহানবী (দ) অভিযোগ পেয়ে সে বৃদ্ধ পিতাকে দরবারে ডাকা পাঠালেন এই বলে যে তোমার বিরুদ্ধে তোমার সন্তান অভিযোগ দায়ের করেছে পিতা এ কথা শুনে মনে মনে একটি কবিতা পড়তে পড়তে হুজুরের দরবারে হাজির হলেন হুজুর (দ) এর কাছে আল্লাহ তায়ালা জিবরাইলকে পাঠালেন এই বলে যে সে বৃদ্ধ পিতা নবীর দরবারে আসার সময় মনে মনে যে কবিতাটি পড়ছে তা আল্লাহর আরশকে কাঁপিয়ে দিয়েছে, হুজুর (দ) এর কাছে বৃদ্ধ যখন আসল  হুজুরকে বৃদ্ধ প্রশ্ন করল এয়া রাসুলাল্লাহ আমার বিরুদ্ধে আমার সন্তান কি অভিযোগ করেছে? হুজুর বললেন তোমার অভিযোগ পরে বলব আগে তুমি আসার সময় যে কবিতাটা মনে মনে পাঠ করেছ তা আমাকে শুনাও যে কবিতাটি আল্লাহর আরশে আজিমে পৌঁছে গেছে, তখন বৃদ্ধ আশ্চর্য্য হয়ে গেল কারন সে মুখে উচ্চারণ ছাড়াই কবিতাটি পাঠ করেছে, আর তা আল্লাহ শুনে নিয়েছেন। সে বৃদ্ধ পিতা কবিতাটি পাঠ করল আর তা শুনে দরবারে হুজুর (দ) এবং সকল সাহাবা কেঁদে কেঁদে বুক ভাসালেন- কবিতাটি হল 

غَذَوْتُكَ مولوداً وَعْلتُكَ يافعاً * تُعَلُّ بما أُدْنِي إليك وتَنْهَلُ

إذا ليلةٌ نابَتْكَ بالشَّكْوِ لم أَبِتْ * لشَكْواكَ إِلا ساهراً أَتَمَلْمَلُ

كأني أنا المطروقُ دوَنكَ بالذي * طُرِقْتَ به دوني وعينيَ تَهْملُ

تَخَافُ الرَّدَى نَفْسِي عليكَ وإِنها * لتَعلمُ أن الموتَ حتمٌ مؤجّلُ

فلما بَلَغْتَ السِّنَّ والغايةَ التي * إليها مَدَى ما كُنْت فيكَ أُؤَمِّلُ

جَعَلْتَ جزائي منكَ جَبْهاً وغِلْظةً * كأنكَ أنتَ المنعِمُ المتفضِّلُ

فليتكَ إذ لم تَرْعَ حَقَّ أُبُوَّتي * فَعَلْتَ كما الجارُ المجاوِرُ يفعلُ

وسَمَّيْتَني باسْمِ المُفَنَّدِ رأيُهُ * وفي رَأْيِكَ التفنيدُ لو كُنْتَ تعقلُ

تَراهُ مُعِداً للخِلاَفِ كأنهُ * بِرَدٍّ علَى أَهْلِ الصَّوَابِ مُوَكَّلُ

أمية بن أبي الصلت

কবিতার অথ কিছুটা এমন- তুমি যখন ছোট তখন তুমি দুবল ছিলে, আমার শক্তি তোমার জন্যই বিলিন করে দিয়েছি,  আমার জীবন যৌবন সব তোমাকে মানুষ করার জন্য ব্যয় করে দিয়েছি, আজ আমি বাধ্যক্যের কারনে নুজ্য, গায়ে শক্তি নাই আজ যখন তোমার গায়ে প্রচুর শক্তি। তোমাকে যখন আমার প্রয়োজন ছিল আমি আমার সব প্রয়োজনকে তোমার জন্য কুরবান করে দিয়েছি, আজ আমার যখন তোমাকে প্রয়োজন তখন তুমি আমার সাথে এমন আচরন করছ মনে হচেছ আমি তোমার গোলাম আর তুমি আমার মালিক।

পিতার এমন কবিতার কথাগুলি আল্লাহর আরশকে কাপিয়ে দিয়েছে, আর এই কবিতা শুনে হুজুর (দ) সহ সকল সাহাবা সেখানে কাঁদতে লাগলেন

সুতরাং খবরদার প্রত্যেক ছেলে মেয়ে বাবাকে যথেষ্ট সম্মান করতে হবে এমন যেন না হয় আপনার আচরনে বাবার মনে কষ্ট পৌঁছলে যদি বদদোয়া বের হয়ে যায় তা সাথে সাথে কবুল হয়ে যাবে।

বাবার মৃত্যুর পর সন্তান এতিম

পিতার মৃত্যুর পর আল্লাহ সন্তানদের নাম পরিবতন করেন, যদিও মাকে পিতা থেকে বেশী মর্যাদা দিয়েছে কিন্তু সন্তানের জন্য মায়ের চাইতে পিতার ছায়া বেশী প্রয়োজন। সেজন্য দেখবেন পিতার মৃত্যুর পর সন্তানদের হকুম পরিবর্তন হয়, কিন্তু মায়ের মৃত্যুর পর সন্তানদের কোন হকুম পরিবর্তন হয়না। তাই বাবার মৃত্যুর পর সন্তানদেরকে আল্লাহ তায়ালা কুরআনে এতিম বলে নাম দিয়েছেন, কিন্তু মায়ের মৃত্যুতে সন্তানের কোন নাম নাই।

আর এতিমের ব্যপারে ইসলাম ধর্মে খুবই সহানুভুতির আচরন দেখানোর তালিম দিয়েছেন

যেমন এতিমের মাথায় হাত রাখলে তার হাতের নিচে যতগুলি চুল আছে ততগুলি নেকি,

এতিমের মাল ভক্ষন করলে আযাবের ধমক এসেছে

(এয়াকুলুনা আমওয়ালাল এয়াতামা ইন্নামা এয়াকুলুনা ফি বুতুনিহিম নারা) যারা এতিমের মাল ভক্ষন করবে তারা মুলত নিজেদেরকে পেটকে জাহান্নামের আগুন দ্বারা পরিপূণ করে নিল।

তাই প্রত্যেক মানুষের জীবনে বাবার গুরুত্ব খুবই বেশী।

৫ প্রকার লোকের দোয়া সাথে সাথে কবুল হয় ১জনের বদদোয়া মিস নাই

১। অসুস্থ ব্যক্তির দোয়া

২। রোজাদারের দোয়া

৩।কারো অনুপস্থিতিতে দোয়া

৪।মাজলুমের দোয়া

৫। মুসাফিরের দোয়া

আর ১ জনের বদদোয়া মিস নাই

৬। সন্তানের জন্য বাবার বদদোয়া

হযরত কুতুবুদ্দিন বকতিয়ার কাকি (রহ) যিনি অছিয়ত করেছেন তার জানাযা যেন এমন লোকে পড়ায় যিনি কোনদিন তাহাজ্জুদ কাজা করেনি, যিনি কোনদিন তকবীরে উলা ত্যাগ করেনি, যিনি কোনদিন বেগানা নারীর দিকে চোখ তুলে তাকাননি, এমন লোক না পেলে তাকে যেন বিনা জানাযায় দাফন করা হয়, যখন এমন লোক পাওয়া যাচ্ছিলনা তৎকালিন বাদশা শামসুদ্দিন আলতামাস বলেন আমি পড়াব। আর বাদশা ছিলেন কুতুব উদ্দীন বকতিয়ার কাকির মুরিদ। যেমন পীর তেমন মুরিদ, সে বকতিয়ার কাকি (রহ) এর ঘরে একদিন এক প্রতিবেশী খাবার নিয়ে আসলেন আর বললেন হুজুর আপনার ঘরে ৩ দিন ধরে চুলা জ্বলছেনা তা শুনে আমি আপনার পরিবারের জন্য খাবার নিয়ে এসেছি, একথা শুনে কুতুবুদ্দীন বকতেয়ার কাকী বললেন আমার ঘরের হালত যে বাহিরের লোকের কাছে প্রকাশ করেছেন তার সবনাশ হউক এমন কথা বলা সাথে সাথে তার ছেলে মৃত্যু বরণ করলেন।

তাই পিতাকে সম্মান দেখাতে হবে পিতার সাথে এমন আচরন করা যাবেনা যাতে পিতা বদদোয়া দিয়ে দেয়, পিতার বদদোয়া সন্তান ধ্বংস হয়ে যাবে নিশ্চিত তাতে সন্দেহ হনাই।

আর বাবাদেরকেও সন্তানদের প্রতি বদদোযা দেয়া থেকে সতকতা অবলমবন করতে হবে।

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.