হাসবুনাল্লাহু ওয়ানেমাল ওয়াকিল পড়ার মুজেযা।
হাসবুনাল্লাহু ওয়ানেমাল ওয়াকিল পড়ার মুজেযা।
বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম, প্রিয় বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম!
আজ পবিত্র কুরআনের একটি
ওজিফা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। এটি এমন একটি কলমা যা কোন বিপদের সময় পড়লে সাথে
সাথে সে বিপদ দুর হয়ে যায়। রিজিকের জন্য যদি কেন এই ওজিফা পড়ে তাহলে রিজিকের সমস্যা
সমাধান হয়ে যায়।
আর এই কালিমা যদি কোন হাজতের
জন্য পড়া হয় তাহলে আল্লাহর ফজলে সে হাজত পুরণ হয়ে যায়। কোন মকসদে পড়া হলে সে মকসদ পুরণ
হয়।
প্রিয় ভাই ও বোনেরা এই
কলমাটি খুবই চমৎকার কলমা। (হাসবুনাল্লাহু ওয়া নেমাল ওয়াকিল)অর্থ্যাৎ- আল্লাহ তাআলাই আমাদের জন্য যথেষ্ট, তিনিই হলেন উত্তম
কর্মবিধায়ক;
মনে রাখবেন যখন কোন বান্দা
এই ধারনা করে যে তার জন্য তার আল্লাহই যথেষ্ট, তখন আল্লাহ তায়ালা তাকে কারো মুখাপেক্ষি
হতে দেননা। এই কলমাটি সুরা আল ইমরানের ১টি আয়াতের অংশ।
আজকে আমি এই আয়াতের এমন
একটি মুজাররব ওজিফা বলব, যেটি আপনি যদি আপনার
যে কোন প্রয়োজনে করেন ইনশা আল্লাহ আপনার সে
হাজত পুরণ হবে। খুবই লা জাওয়াব আমল, তাই এটিকে আপনি কোন ভাবেই মিস করবেন না।
ওজিফাটি কিভাবে করবেন তা
বিস্তারিত জানার জন্য আপনার কাছে অনুরোধ আলোচনাটি শেষ পযন্ত অবশ্যই শুনবেন।
বন্ধুরা
মনে রাখবেন এটা সে কলমা যা হযরত ইবরাহিম (আ) সে সময় পড়েছিলেন যখন তাকে আগুনে নিক্ষেপ
করা হচ্ছিল। তাঁর জবানে সে সময় এই কলমাটিই উচচারিত হয়েছিল। (হাসবুনাল্লাহু ওয়ানেমাল
ওয়াকিল)
প্রিয়
ভাই ও বোনেরা ঘটনাটি হল যখন হযরত ইবরাহিম (আ) তার জাতির মুতি সমুহ ভেঙ্গে ফেলেছিলেন,
তখণ তার উপর নমরুদ কঠোর হয়ে গেল। এবং তাঁর জন্য অনেক বড় অগ্নিকুন্ডের এন্তেজাম করল।
অনেক দিন যাবৎ লোকজন আগুনের ইন্দন জমা করতে লাগল, যখন সে অগ্নিকুন্ডে আগুন জ্বালানো
হল তখন তার স্ফুলিংগ আকাশ ছুতে লাগল, এমন কি আসমানে ৩ মাইল উপর দিয়ে কোন পাখি উড়ে গেলে
সেটা আগুনের গরমে জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যেত। আগুনের এমন তাপের কারনে সে অগ্নিকুন্ডের
কাছে কারো পক্ষে যাওয়া সম্ভব ছিলনা।
এখন
প্রশ্ন উঠল এই অগ্নিকুন্ডে ইবরাহিম (আ) কে কিভাবে ফেলা হবে? তখন হেজান নামক এক কমবখত
মিনজেনিক নামের একটি দুর নিক্ষেপের যন্ত্র তৈরী করল আর সে মিনজেনিকের দ্বারা হযরত ইবরাহিম
(আ) কে সে অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করল। সে সময় হযরত ইবরাহিম (আ) এর জবানে মোবারকে এই কলমাটিই
উচচারিত হচ্ছিল (হাসবুনাল্লাহু ওয়ানেমাল ওয়াকিল) আল্লাহ তাআলাই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনিই
হলেন উত্তম কর্মবিধায়ক
যখন
হযরত ইবরাহিম (আ) কে মিনজেনিকের দ্বারা অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করা হচ্ছিল যা দেখে আসমানের
ফেরেশতারা পযন্ত সিজদায় লুটিয়ে পড়ল। হযরত জিবরাইল (আ) আল্লাহর খলিলের কাছে উপস্থিত
হলেন, আর আরজ করলেন হে আল্লাহ খলিল আপনার কি কোন সাহায্য লাগবে? ইবরাহিম খলিল জবাব
দিলেন সাহায্যতো অবশ্যই লাগবে তবে সে জাতের কাছেই আমি সাহায্য পাথনা করি যিনি প্রকৃত
সাহায্যকারী। এমনকি ইবরাহিম খলিলুল্লাহর কাছে বৃষ্টি ও বাতাসের ফেরেশতারাও হাজির হলেন,
আর বলতে লাগলেন যদি আপনি নির্দেশ করেন তাহলে আমরা পানি ও বাতাসের দ্বারা এই আগুনকে
নিভিয়ে দিব। কিন্তু ইবরাহিম খলিলুল্লাহ (আ) এর জবানে শুধুই একটিই কলমা আল্লাহই আমার
জন্য যথেষ্ট, তিনিই একমাত্র কম বিধায়ক। ফলে নমরুদ সহ সকলে দেখতে পেল যে আগুনের শোলা
আসমান কে স্পশ করছিল সে আগ্নিকুন্ড হযরত ইবরাহিম (আ) এর জন্য ফুলের বাগানে পরিণত হয়ে
গেল। আল্লাহ তায়ালা অগ্নিকে নির্দেশ দিলেন (এয়া নারু কুনি বারদাও ওয়া সালামান আলা ইবরাহিম)
হে আগুন তুমি আমার খলিলের জন্য আরামদায়ক ঠান্ডা হয়ে যাও।
ইবরাহিম
(আ) সত্যিকার অথে আল্লাহর উপর পরিপূণ ভরসা করে দেখিয়েছেন আর আল্লাহ তায়ালাও সে জন্য
পরিপূণ নিরাপত্তা দান করে দেখিয়েছেন।
প্রিয়
ভাই ও বন্ধুরা এই ঘটনা শুনানোর মকসদ হল আমাদেরও আল্লাহর উপর এমন বিশ্বাস ও ভরসা থাকা
দরকার যে এই দুনিয়ায় এমন কোন জিনিষ নাই এমন কোন শক্তি নাই যা আমাদের ক্ষতি করতে পারে।
আমাদের উচিত আল্লাহর জাতের উপর পরিপূণ একিন ও ভরসা করা। আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করা
এমন তাওয়াক্কুল যেমন তাওয়াক্কুল হযরত ইবরাহিম (আ) করেছেন। আর যখন এমন তাওয়াক্কুলের
সাথে এই ওজিফাটি পালন করবেন, বিশ্বাস করুন আপনার কোন হাজত কোন প্রয়োজন বাকী থাকবেনা
যা পুরণ হবেনা। সকল মুশকিল থেকে বের হওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালা রাস্তা দেখিয়ে দিবেন।
অতএব
চলুন আজকের ওজিফার দিকে- এবার আমি আপনাকে বলতে যাচ্ছি আপনি হাসবুনাল্লাহু ওয়ানেমাল
ওয়াকিল এর ওজিফা কিভাবে করবেন।
মনে
রাখবেন এই ওজিফা আপনি আপনার যে কোন মকসদের জন্য করতে পারবেন।রিজিকের জন্য, রোজগারের
জন্য, সন্তানের জন্য, সন্তানের নাফরমানির জন্য, ব্যবসা বানিজ্যের জন্য, যে কোন মকসদের
জন্য যা পুরা হচ্ছেনা, পুরা একিনের সাথে এই ওজিফা করুন, অনেক বড় হাজত যা অনেক দিন যাবৎ
চেষ্টা করেও পুরণ হচ্ছেনা, তার জন্য এই ওজিফা করুন, ইনশা আল্লাহ আপনার হাজত আল্লাহর হকুমে পুরণ হবে।
এই
ওজিফা আপনি যে কোন সময় যে কোন দিন করতে পারবেন। তবে ওজিফাটি করার জন্য আগে অজু করবেন,
আর ওজিফাটি করার জন্য এমন জায়গায় বসবেন যেখানে আপনার একাগ্রতা বেশী আসবে। প্রথমে আপনি
৩ বার দরুদ শরীফ পাঠ করবেন। এরপর ১০০ বার এই কলমা (হাসবুনাল্লাহু ওয়ানেমাল ওয়াকিল) পড়বেন এবং শেষে পুনরায় ৩ বার দরুদ শরীফ পাঠ করবেন।
এভাবে
পড়ার পর আপনি সিজদায় যাবেন আর সিজদারত অবস্থায় আপনার মকসদ, আপনার হাজত, আপনার পেরেশানি
ও মুশকিল দুর হওয়ার জন্য দোয়া করবেন। যার জন্য আপনি এই ওজিফা করছেন।
মনে
রাখবেন এই ওজিফাটি আপনি পরপর ২১ দিন পযন্ত জারি রাখবেন। যত বেশী একিন ও আল্লাহর উপর
ভরসা করে এই ওজিফা করবেন তত তাড়াতাড়ি ফলাফল আপনার সামনে আসবে।
নিজেও
মুকাম্মাল বিশ্বাসের সাথে এই আমল করুন আর আপনার আপনজনদের কাছেও এই আমলটি শেয়ার করুন।
বন্ধুরা আমি আশা করি আপনার কাছে আমার আজকের এই ওজিফাটি অবশ্যই পছন্দ হয়েছে। যদি ওজিফাটি
করার পর আপনি ভালো রেজাল্ট পান তাহলে অবশ্যই কমেন্টে লিখে জানাবেন। আল্লাহ আপনাকে ও
আপনার পরিবার পরিজনকে সুস্থ রাখুক হেফাজতে রাখুক আমিন। আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি
ওয়াবারকাতুহ।
কোন মন্তব্য নেই