আমেরিকান মেয়ে ও মদীনার খাদেমের বিয়ে। গায়েবী সাহায্য ও কপাল খুলে যাওয়ার দোয়া ও আমল।
আমেরিকান
মেয়ে ও মদীনার খাদেমের বিয়ে। গায়েবী সাহায্য ও কপাল খুলে যাওয়ার দোয়া ও আমল।
আপনারা
জানেন মাদানী চ্যানেলে ১টি ইসলামীক নলেজ এর উপর প্রতিযোগিতার প্রোগ্রাম হয় যার নাম
জেহনি আজমাঈশ, এর ১৩ তম প্রোগ্রাম এর ৫ম পর্বে আবদুল হাবিব আত্তারি যিনি এই প্রোগ্রামের
পরিচালক তিনি মদিনা শরীফের ১টি ঘটনা বয়ান করেন যা শুনে যে কোন আশেকে রাসুলের ঈমান আরো
তাজা হয়ে যাবে। আশেকে রাসুল এতেকাফ অবস্থায় এমন দোয়া করল যে দোয়ার বরকতে তার মনের সব
আশা পুরণ হয়ে গেল, আল্লাহ তায়ালা তাকে গায়েবী সাহায্য দিলেন এবং কপাল খুলে গেল, সে
কি আমল ও কি দোয়া করল বিস্তারিত জানার জন্য শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকুন।
আবদুল হাবিব আত্তারি ভাই
ঘটনাটি বয়ান করে বলেন
আমি
এ বছরও মদীনায় গিয়েছি ওমরা করতে, সেখানের এক ইসলামী ভাই আমাকে বলল আজ থেকে কয়েক বছর
আগে, আমি দাওয়াতে ইসলামীর মাদানী মারকাজে ৩০ দিনের এতেকাফ করেছি, এতেকাফের যেদিন শেষ
রাত ছিল, সে রাতে আমিরে আহলে সুন্নাত দোয়া করেছেন যে সব ভাই দারী রাখার নিয়ত করবে আল্লাহ
পাক যেন তাকে দ্রুত মদিনা শরীফ জেয়ারত নসিব করেন। সে বলল আমি সে বছরই দাড়ী রাখার নিয়ত
করে নিলাম। আমার খুব ইচ্ছা ছিল মদীনা শরীফ যাওয়ার কিন্তু আমার সে সামথ ছিলনা, তবে মাঝে
মাঝে মদীনা শরীফের খাদেম এর জব এর খবর আসত, কিছুদিন পর আমি সে রকম একটি জব এর সন্ধ্যান
পেলাম এবং আমার আত্মিয় স্বজন থেকে ঋণ করে আমি মদিনা শরীফ চলে গেলাম। সে ৩ বছর হয়ে গেছে
কিন্তু এই ৩ বছরে সে মদীনা শরীফ থেকে দেশে আসেনি।
সে
বলল হজ্বের সময় আমি যখন মদীনায় কাজ করছিলাম এমন সময় এক লোক আমাকে বলল আমার কাছ থেকে
কিছু টাকা নাও আর ১টি দস্তারখানা লাগাও, আপনারা যারা মদীনায় গিয়েছেন তারা জানেন প্রতিদিন
আসরের পর মদীনা শরীফে মসজিদে নববীতে মানুষ দস্তারখানা লাগিয়ে অন্যান্যদেরকে খাবার খাওয়ায়
যারা রোজা রাখে তাদের ইফতারের ব্যবস্থা করে, সে রকম যখন দস্তারখানা লাগানো হল সেখানে
কিছু লোক এসে বসল, আর সে দস্তারখানায় একজন আমাকে প্রশ্ন করল তোমার কি বিয়ে হয়েছে? তখন
সে মসজিদে নববীর খাদেম জবাব দিল আমার মত গরিবকে কে মেয়ে দিবে? তখন এক ব্যক্তি আমার
ফোন নাম্বার নিয়ে নিল, ২য় দিন আমার কাছে কল আসল, আমাকে বলল তুমি আমার সাথে একটু মসজিদের
বাহিরে দেখা কর, আমি যখন বাহিরে তার সাথে দেখা করলাম সে বলল আমি একজন পাকিস্তানি তবে
আমি স্বপরিবারে আমেরিকায় থাকি সেখান থেকে হজ্ব করতে এসেছি, গতকাল তুমি দস্তারখানায়
বলেছিলে যে তোমার মত গরিবকে কে মেয়ে দিবে, সে কথায় আজ আমি তোমাকে ডেকেছি তার সাথে সেখানে
তার ২ জন মেয়ে ছিল সে বলল আমার এই ২ জন মেয়ে থেকে তুমি যে মেয়েকে পছন্দ করবে আমি তার
সাথে তোমাকে বিয়ে দিব।
এ
কথা শুনে সে মদীনার খাদেম জবাব দিল আমি একজন অশিক্ষীত লোক এবং খুবই গরীব, আর আমার বেতন
মাত্র ৭০০ রেয়াল, আমি আপনার আমিরিকা ওয়ালী মেয়েকে কিভাবে ভরন পোষন দিব? কিন্তু সে আমেরিকান
লোকটির একই কথা আমার কিছুর দরকার নাই আমি চাই আমার মেয়েকে তুমি বিয়ে কর। কিন্তু সে
রাজি হলনা, সে লোক আমেরিকা চলে গেল, আর সেখান থেকে বার বার যোগাযোগ করতে থাকল, এদিকে
সে খাদেম পাকিস্তানে তার মা বাবার সাথে এ ব্যপারে কথা বলল মা বাবাও আমিরিকান মেয়ে বিয়ে
করতে নিষেধ করল, কারন বিয়ের পর তাকে মিদনা ছেড়ৈ আমিরিকা চলে যেতে হবে।
তখন
সে আমেরিকান লোক পাকিস্তানে তার মা বাবার সাথে যোগাযোগ করল তখন তারা বলল আমার ছেলের
জন্য পাকিস্তানে মেয়ে ঠিক করে রেখেছি, তখন সে আমেরিকান লোক বলল সে পাকিস্তানে গিয়ে
আপনাদের পছন্দের মেয়েকেও বিয়ে করুন তাতে আমার আপত্তি নাই আর সাথে আমার ১টি মেয়েকেও
সে বিয়ে করুক, অবশেষে সে মদীনার পাগল মদিনার খাদেম এমনটিই করল।
আবদুল
হাবিব আত্তারি ভাই বলেন আমেরিকার যে ভাই এই মদীনার খাদেম এর সাথে নিজের মেয়েকে বিয়ে
দিয়েছেন তিনি হলেন দাওয়াতে ইসলামীরই একজন আমেরিকার একনিষ্ট কর্মী এবং আত্তারী।
জবান
আবদুল হাবিব আত্তারি বলেন এই আমেরিকান ভাই কেন সে মদীনার খাদেম এর কাছে নিজের মেয়ে
বিয়ে দেয়ার জন্য এত কিছু করলেন তা জানার জন্য তার নাম্বার জোগাড় করে আমি গত কয়েকদিন
আগে তার সাথে কথা বললাম, সে জানাল সে খাদেম
মসজিদে নববীতে বলেছিল আমার মত গরিবকে কে বিয়ে দিবে, সেদিনই রাতে স্বপ্নের মাধ্যমে আমাকে
দয়াল নবী হুজুর পাক (দ) ইশারা করেছেন।
এ ঘটনা শুনার পর এক সাহাবীর কথা মনে পরে গেল, যে সাহাবীর গায়ের রং কালো ছিল তখন সে হুজুর (দ) এর কাছে গিয়ে আরজ করল এয়া রাসুলাল্লাহ আমার গায়ের রং কালো আমাকে কে বিয়ে করবে? তখন হুজুর (দ) এক ধনী সাহাবীর সুন্দরী মেয়ের কাছে বিয়ে প্রস্তাব পাঠালেন সে সাহাবী প্রথমে এমন কালো ও গরীব লোকের কাছে নিজের মেয়ে বিয়ে দিতে অনিহা প্রকাশ করল কিন্তু সে মেয়েটি ঘর থেকে বলে উঠল আব্বা আপনি বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে কে এসেছে তার দিকে তাকিয়েন না বরং তাকে কে পাঠিয়েছেন সেটা চিন্তা করুন, তাকেতো আমার প্রাণের চেয়ে প্রিয় নবীজি পাঠিয়েছেন, সে মহিয়সী নারী সেদিন সে কালো ও গরীব সাহাবীকে বিয়ে করেছেন। এ ঘটনা আমরা কিতাবে পড়েছি কিন্তু আজো এমনই ঘটনা মদীনা শরীফে ঘটে যায়। এখনো যদি কেহ মদীনায় গিয়ে অন্তর থেকে কিছু বলে কিছু চায় তা হুজুর (দ) এর উছিলায় আল্লাহ কবুল করে নেন, তার অভাব দুর করে দেন। সে খাদেম এর আমল কি ছিল তার মদীনার প্রতি বেতাহাশা ভালবাসা ছিল, অন্তরের অন্তস্থল থেকে মদিনা যাওয়ার আগ্রহ ছিল, মাস ব্যাপী এতেকাফের আমল ছিল আর সে এতেকাফের দোয়া ছিল, ফলে আল্লাহ তাকে মদিনায় পৌছে দিলেন, তারপর মদিনায় গিয়ে মসজিদে নববীর খেদমতকে পেয়ে সে ৩ বছর দেশেও যায়নি এই খেদমতকে প্রাধান্য দিয়েছেন, তাই আল্লাহ এমন জায়গায় রিশতা কায়েম করে দিল যেখানে সে কল্পনাও করেনি। তাই আমরাও যদি সত্যিকার ভাবে খালেস অন্তরে আল্লাহর কাছে কিছু চাই তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সে চাহাত পুরণ করে দিবেন। আমাদেরকে এমন এমন জায়গা থেকে গায়েবী মদদ দান করবেন যা আমরা কল্পনাও করিনা।
কোন মন্তব্য নেই