হজ্ব প্রশিক্ষন -২। মক্কা মদীনায় দোয়া কবুল হওয়ার ২৫ টি স্থান পরিচিতি।







হজ্ব প্রশিক্ষণ পর্ব-২
বিষয়: মক্কা মদীনায় ২৫ স্থান ও সময়ে দোয়া কবুল হয়

পবিত্র মক্কা-মদিনার বিভিন্ন জায়গায় দোয়া কবুল হয়ে থাকে সেসব স্থানে আল্লাহতায়ালার ওপর পরিপূর্ণ আস্থা রেখে- মনোযোগসহ বিনম্রচিত্তে, অশ্রুসজল নয়নে দোয়া করা দরকার দোয়া দুনিয়ার যাবতীয় জায়েজ মকসুদ পূরণের আবদার করা
পবিত্র মক্কা-মদিনার এমন কয়েকটি স্থান সময়ের উল্লেখ করা হলো- যেখানে দোয়া কবুলের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে বিভিন্নভাবে
একআল্লাহর ঘর বায়তুল্লাহ দেখে দোয়া করা। বায়তুল্লাহ শরিফ দেখামাত্র দোয়া করা। বর্ণিত আছে, বায়তুল্লাহ শরিফ প্রথম নজরে আসার পরে যে দোয়া করা হবে তা কবুল হবে
দুইমুলতাজাম দোয়া কবুলের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। হাজরে আসওয়াদ (কালো পাথর) থেকে কাবা শরিফের দরজা পর্যন্ত জায়গাটুকুকে মুলতাজাম বলে
তিন. সাফা মারওয়া পাহাড়ে দোয়া করা। সাফা মারওয়া পাহাড়দ্বয় আল্লাহর নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম। দুই পাহাড়ের মাঝে সাঈ করা হাজিদের জন্য ওয়াজিব। উভয় পাহাড়ই দোয়া করা দোয়া কবুল হওয়ার অন্যতম স্থান
চারআরাফার মাঠে দোয়া করা। আরাফার মাঠে আরাফার দিবসের মূল অবস্থান আমলই দোয়া। দিন দোয়া-মোনাজাতের গুরুত্ব অপরিসীম। জোহর আসরের নামাজকে জোহরের প্রথম ওয়াক্তের মধ্যে একত্রে আদায় করে নেবেন। কোনো সুন্নত বা নফল নামাজ আদায় না করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সময় দোয়া-মোনাজাত কান্নাকাটিতে ব্যস্ত থাকবে। দুহাত তুলে আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন
হাদিসে এসেছে, উত্তম দোয়া, আরাফার দিবসের দোয়া এবং উত্তম কথা, যা আমি এবং আমার আগের নবীরা বলেছেন।আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি একক, তার কোনো শরিক নেই, রাজত্ব তারই, প্রশংসাও তার, তিনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান।’ –সুনানে তিরমিজি: ৩৫৮৫
পাঁচমুজদালিফায় দোয়া করা। মুজদালিফায় অবস্থানকালে দোয়া করা। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরা যখন আরাফা থেকে প্রত্যাবর্তন করবে, মাশআরুল হারামের কাছে পৌঁছে আল্লাহকে স্মরণ করবে।’ –সূরা আল বাকারা: ১৯৮
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) মুজদালিফায় ফজরের নামাজ আদায়ের পরকুজাপাহাড়ের পাদদেশে গিয়ে উপস্থিত হতেন এবং সেখানে তিনি অবস্থান করতেন। স্থানটি বর্তমানে মাশআরুল হারাম মসজিদের সম্মুখভাগে অবস্থিত। একেবারে আকাশ পরিষ্কার হওয়া পর্যন্ত দোয়া মোনাজাতে মশগুল থাকতে হয়। মূলত এটিই হলো মুজদালিফার মৌলিক আমল
ছয়কঙ্কর নিক্ষেপের পর দোয়া করা। দোয়া কবুলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান সময় হচ্ছে, জামারায় কঙ্কর নিক্ষেপ করে দোয়া করা। কঙ্কর নিক্ষেপের পর জামারার স্থান থেকে সামান্য সরে গিয়ে প্রাণ খুলে দোয়া করা
সাতবিদায়ী তাওয়াফ শেষে দোয়া করা। হজের সব কর্ম পালন শেষ করে দেশে ফেরার আগে বিদায়ী তাওয়াফ করতে হবে। তাওয়াফ শেষে আপনি মুলতাজামের কাছে চলে যাবেন। মুলতাজামে চেহারা, বুক, দুই বাহু দুই হাত রেখে দোয়া করবেন। এটিই আপনার শেষ সুযোগ। একে কাজে লাগান। আল্লাহর কাছে যা খুশি আপনি চাইতে পারেন
আটজমজমের পানি পান করার সময় দোয়া করা। জমজমের পানি পান করার সময় আপনার যা খুশি আল্লাহর কাছে চাইবেন। এখানে আপনি যা দোয়া করবেন, আল্লাহতায়ালা তাই কবুল করবেন
দোয়ার সময় বেশি বেশি কান্নাকাটি করার চেষ্টা করতে হবে।
নয়: মদীনা শরীফের মসজিদে নববী
দশ: মহানবী (দঃ) এর রওজার সোনালীর জালির সামনে
এগার: মসজিদে কুবা
বার: উহুদ পাহাড়ের পাদদেশে
তের: জান্নাতুল বাকীতে
 আল্লাহর দিকে মনোযোগী হয়ে দোয়া করতে হবে। কারণ, অন্যমনস্ক হয়ে দোয়া করলে আল্লাহ তা কবুল করেন না
দোয়ায় কোনো প্রকার বাড়াবাড়ি করা যাবে না। আল্লাহর ওপর বিশ্বাস আস্থা রেখে দোয়া করা খুবই জরুরি। দোয়ার সময় বিশ্বাস মনে পোষণ করবেন, আল্লাহ অবশ্যই আমার কথা শুনছেন এবং আমার দোয়া কবুল করছেন
ছাড়া তওয়াফের স্থানে, কাবাঘরের ভেতরে, মাকামে ইবরাহিমের পেছনে, মিনার মসজিদে খায়েফে, হাজরে আসওয়াদ রুকনে ইয়ামানির মধ্যবর্তী স্থানে, হাতিমের (এলাকার) মধ্যে, মিজাবে রহমতের নিচে- যেখানে বায়তুল্লাহর ছাদের পানি পড়ে,
এসব স্থানের দোয়াও কবুল করা হয়
দোয়া আরবিতেই করতে হবে এটা জরুরি নয়। আপনি আপনার ভাষায় যতো চাওয়া-পাওয়া আছে সব আল্লাহর কাছে তুলে ধরবেন, চোখের পানি ফেলবেন- সুযোগ আপনার জীবনে আর নাও আসতে পারে। আল্লাহতায়ালা সবাইকে তওফিক দান করুন। আমিন

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.