১১ টি ছোট আমল করলে। মৃত্যুর সময় কলমা নসিব হবে।All Bangla/ Nizam Uddin
আমি এমন ১১টি আমল আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব যে সব আমল করলে আপনার খাতেমা বিল
খাইর হবে, মৃত্যুর
সময় কলমা নসিব হবে
নাম্বার
১-(বেগানা নারী বেগানা পুরুষের দিকে না দেখা)
গাইরে
মাহরামের দিকে না দেখা। নবী (আঃ) এরশাদ করেন (আন নজরু সাহমুম মিন সিহামি ইবলিছ)
দৃষ্টি শয়তানের তীরসমুহের মধ্যে একটি তীর (মাসমুমুন) বিষ মাখা তীর (মান তারাকাহা
মাখাফাতি) যে আমার ভয়ে কু দৃষ্টি থেকে বাঁচল (আবদালতাহু ঈমানা) আমি তাকে এমন ঈমান
দান করব (এয়াজিদু হালাওয়াতাহু ফি কালবিহি) সে তার স্বাধ তার অন্তরে অনুভব করবে।
মোল্লা
আলী কারী (রহঃ) ফরমান “ঈমানের স্বাধ যখন অন্তরে প্রবেশ করবে তখন সেটি কখনো
অন্তর থেকে আর বের হয় না”। আজ থেকে এ নিয়ত করে ফেলুন আজ থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত
আমরা কোন গাইরে মাহরাম নারী বা পুরুষের প্রতি কুদৃষ্টি দিব না। অনেক সময় আমাদেরকে
শয়তান এ বলে ধোকা দেয় যে আমিতো এমনে দেখছি কু খেয়ালে দেখছি না, অথচ
দেখলেন আপনি আর কু খেয়াল শয়তান ঢেলে দিবে, সে
জন্য নজরকে কঠোরভাবে কন্ট্রো”ল করতে হবে। এ কু নজর সরাসরিও হতে পারে আবার মোবাইল
স্ক্রীনে, টিভির
পর্দায়, কম্পিউটারের
পর্দায়ও হতে পারে।
নাম্বার
২- (মিসওয়াক করা)
যন্ত
সহকারে মিসওযাক করাও মৃত্যুর সময় কলমা নসীব হওয়ার একটি কারন। এটি যেমন পুরুষের
জন্য সুন্নত মহিলাদের জন্যও সুন্নত।
হাদীসে
পাকে আছে যে লোক অতি যন্তসহকারে মিসওয়াক করে, তার
শেষ সময় মালাকুল মওত আসে এবং ২টি কাজ করেন যেমন শয়তানকে ভাগিয়ে দেন এবং
মৃত্যুপথযাত্রীকে কলমা মনে করিয়ে দেন। চিন্তা করুন এটা কতবড় নেয়ামত যে মালাকুল
মওতই স্মরণ করিয়ে দিবে যে তোমার যাওয়ার সময় হয়েছে এবার কলমা পাঠ করে নাও।
নাম্বার
৩- মুসলমান হওয়ার জন্য শোকর আদায় করা
ঈমানদার
হওয়া এবং মুসলমান হতে পারার জন্য আল্লাহর শোকর আদায় করা। এ ঈমান একটি অনেক বড়
নেয়ামত। আর আল্লাহ বলেন (লাইন শাকারতুম লা আজিদান্নাকুম) যদি শোকর কর তাহলে আমার
নেয়ামত আরো বাড়িয়ে দিব। সুতরাং যে ঈমানের জন্য শোকরিয়া আদায় করতে থাকবে তাকে
আল্লাহ তায়ালা শেষ মুহুর্তে ঈমানের দৌলত থেকে বঞ্চিত করবেন না। আর শোকর আদায় করার
দোয়া হল
(রাদিতু বিল্লাহে রাব্বা, ওয়াবি
মুহাম্মাদিন নাবিয়্যা ওয়াবিল ইসলামে দ্বিনা ) অথ্যাৎ আমি এ জন্য খুশী যে আল্লাহ
আমার রব, মুহাম্মদ
আমার নবী এবং ইসলাম আমার ধর্ম। সকাল সন্ধ্যা এ দোয়াটির মাধ্যমে আল্লাহর শোকর আদায়
করবেন।
নাম্বার
৪- সদকা খয়রাত করা।
হাদীস
শরীফে আছে মেশকাত শরীফের রেওযায়েত (ইন্নাস সাদাকাতা তুদফিউ গাদাবার রাব্বি)
নিশ্চয়ই সদকা আল্লাহর রাগকে দমন করে (ওয়া তাদফাউ মি তাতাস সুঈ) এবং খারাপ মৃত্যু
থেকে মানুষকে বাঁচিয়ে ফেলে।
নাম্বার
৫- আল্লাহওয়ালাদের সাথে সম্পর্ক রাখা তাঁদের ছোহবত অর্জণ করা।
এর
কারন হল নবী করিম (দঃ) এরশাদ করেন (হুম রেজালুল লা এয়াশকা জালিসুহুম) এরা ঐ সমস্ত
লোক তাদের কাছে যারা বসে তারা কখনো দুর্ভাগা হয় না। আর বদবখত সে হয় যার আখেরী সময়ে
কলমা নসিব হয় না। মাওলানা রুম (রহঃ) এর প্রসিদ্ধ শেয়ার প্রনিধানযোগ্য (এক যামানা
সোহবতে বা আউলিয়া, বেহতরাছদ ছালে তাআত বেরিয়া) অথ্যাৎ আল্লাহওয়ালাদের
সাথে এক মুহুর্তের ছোহবত শত বছরের বেরিয়া এবাদত থেকেও আফযল। এ শেয়ারকে অনেকে
অতিরঞ্জিত বলে থাকে তার জবাবে ওলামায়ে কেরাম বলেন, মাওলানা
রোম (রহঃ) শত বছরের বেরিয়া এবাদতের কথা বরং কম বলেছেন লক্ষ বছর বললেও মুলত ভুল হবে
না। যেমন এর উদাহারন আমাদের কাছে আছে। আমরা যদি লক্ষ লক্ষ বছরও এবাদত করি তবুও
মৃত্যুর সময় কলমা পড়ে যেতে পারব তার কোন গেরান্টি নাই যেমন শয়তান লক্ষ লক্ষ বছর
এবাদত করেছে কিন্তু অবশেষে সে মুরতাদ হয়ে গেল। তেমনি বালাম বাউর যে ৩শত বছর এবাদত
করেছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার পরিণতি খুবই খারাপ হল। যে বালাম বাউরের ঘটনা কুরানে
কারিমে বর্ণিত আছে। সুতরাং বুঝা গেল যতই এবাদত কর শেষ পরিণতি ভাল হবে তার কোন
গেরান্টি নাই কিন্তু নেক বান্দার ছোহবতের বিষয়ে নবী করিম (দঃ) গেরান্টি দিয়ে বলছেন
(হুম রেজালুল লা এয়াশকা জালিসুহুম) এরা ঐ সমস্ত লোক তাদের কাছে যারা বসে তারা কখনো
দুর্ভাগা হয় না।
নাম্বার-৬।আল্লাহকে
ভালবাসা
আল্লাহ
তায়ালা এরশাদ করেন (ইউহিব্বুহুম ওযা ইউহিব্বুনাহু) আল্লাহ তাদের মহব্বত করে আর
তারা আল্লাহকে মহব্বত করে। আপনি আল্লাহকে যদি মহব্বত করেন তাহলে সে মহব্বতের
প্রভাব আপনার অন্তরে আপনি অনুভব করবেন। আপনি যদি দুনিয়ায় আল্লাহকে মহব্বত করে
এবাদত রিয়াজত করেন অন্তরের গভীরে আল্লাহর ভালবাসার উষ্ণতা ফিল করেন তাহলে সে
ভালবাসায়ই আপনার আখেরী সময়টাকে সুন্দর করে দিবে।
নাম্বার-৭।যেনা
থেকে বেঁচে থাকা
যেমন
কুরানের আয়াত (ওয়ানাহান নাফসি আনিল হাওয়া, ফাইন্নাল
জান্নাতা হিয়াল মাওয়া) যে আল্লাহ সামনে দাঁড়াতে ভয় পায় এবং নিজের খাহেশাতে নফসকে
দমন করে তার ঠিকানা জান্নাত। হাদীস শরীফে আছে যে লোককে কোন উচ্চবংশের মেয়ে সুন্দরী
রমনী গুনাহের দিকে ডাকে আর সে বলে দেয় আমি আল্লাহকে ভয় পাই তাহলে সে আমলই তাকে
কেয়ামতের দিন আরশের ছায়া দান করবে। একই ভাবে যদি কোন পুরুষ কোন নারীকে গুনাহের
দিকে আহ্বান করে আর নারী বলে দেয় (ইন্নি আখাফুলল্লাহ) আল্লাহ আল্লাহকে ভয় পাই
তাহলে সে আমলটিই তার নাজাতের মাধ্যম হয়ে যাবে। মৃত্যুর সময় কলমা নসিব হবে।
নাম্বার-৮।
আযানের সময় আযান শুনা এবং আযানের জবাব দেয়া এবং আযানের পর দোয়া পাঠ করা।
বুখারী
শরীফের হাদীস নবী করিম (দঃ) এরশাদ করেন যে আযানের পর এ দোয়া পাঠ করবে (হাল্লাত
লাহু শাফাআতি) কেয়ামতের দিন সে বান্দার আমার শাফায়াত নসিব হবে। হযরত মোল্লা আলি
কারি (রহঃ) বলেন এ হাদীসে এ কথার দিকেই ইঙ্গিত আছে যে যে আযানের দোয়া পড়ে সে
মৃত্যুর সময় কলমা পাঠ করে করে মৃত্যু বরণ করবে।
নাম্বার-৯।
বেশী বেশী দোয়া ও জিকির করা।
হাদীসে
পাকে একটি ছোট দোয়া আছে যা যে কোন সময় পাঠ করতে পারেন এ দোয়াটি যে করে সে ঈমানের
সাথে মৃত্যু বরণ করবে। (আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফিল মাউত ওয়াফিমা বাদাল মাউত)
আরেকটি
দোয়া (এয়া হাইয়্যু এয়া কাইয়্যুম বিরাহমাতিকা আছতাগিছ)
এবং
বেশী বেশী কলমার জিকির করবেন। যখনই সময় পাবেন কলমা পাঠ করবে (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ) পড়তে থাকবেন তাহলে শেষ সময় এ কলমা পড়া আপনার জন্য সহজ
হবে।
হযরত
ফরিদুদ্দিন আত্তার (রহঃ) ও আতরের শিশি
খাজা
ফরিদুদ্দিন আত্তার (রহঃ) বলেন “আমার আতরের দোকান ছিল সেখানে অনেক গুলি শিশি খালি পড়ে
থাকে, আমার
বড়ভাই খুবই আল্লাহ ওয়ালা ছিলেন একদিন তিনি আমার দোকানে আসলেন তিনি সে খালি
শিশিগুলি খুবই তিক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখতে লাগল আমি বললাম বড়মিয়া কি দেখছ? সে বলল
তোমার জান যে এতগুলি শিশির মধ্যে আটকে আছে তা কিভাবে বের হবে চিন্তা করছি। তখন
বড়মিয়ার এমন কথা শুনে আমার রাগ লাগল আমি বললাম তোমার জান যেভাবে বের হবে আমার জানও
সেভাবেই বের হবে। তখন বড় মিয়া বলল তুমিকি দেখবে আমার জান কিভাবে বের হবে? এটা
বলে সে আমার দোকানের সামনে শুয়ে গেল আর গায়ের উপর একখানা সাদা চাদর দিয়ে দিল আর
আল্লাহর জিকির করতে করতে সেখানেই তিনি ইন্তেকাল করলেন, বড়মিয়ার
সে দিনের ঘটনা থেকেই হযরত ফরিদ উদ্দীন আত্তারের ভিতর দারুন পরিবর্তন দেখা দিল।
মুলত আল্লাহ ওয়ালারা এভাবে আল্লাহকে স্মরন করতে করতেই দুনিয়া থেকে ইন্তেকাল করেন।
নাম্বার
-১০। কোরানী দোয়া
এ
দোয়াটি বিশেষ করে করবেন (রাব্বানা লা তুজিগ কুলুবেনা বাদা ইজ হাদাইতানা ওয়াহাবলানা
মিললাদুনকা রাহমা ইন্নাকা আনতাল ওয়াহহাব) ওয়াহাবলানা বা হেবা বলা হয় যা কোন ধরনের
প্রতিদান বা বিনিময় ছাড়া দান করা হয় তাকে হেবা বলা হয়। আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে তার
আমলের বিনিময়ে জান্নাত দিবেন না, আমলের বিনিময় জান্নাত হতে পারে পরে না, বরং
আল্লাহ জান্নাত দিবেন তার রহমত ও দয়ায়, নতুবা
আমাদের এমন শক্তি নাই যে আমরা আমলের বদলায় জান্নাত চাইব।
এখন বড়
ফিতনার জামানা চলছে আল্লাহর বান্দা সকালে ঘুম থেকে উঠে মুমিন হয়ে সন্ধ্যা হতে হতে
সে কাফের হয়ে যায়, এমন নাজুক সময় আমরা পার করছি, তাই
সদা গুনাহ থেকে পরহেজ করে চলতে হবে এবং সদা দোয়া করতে হবে এবং আমল করতে হবে।
নাম্বার-১১
। সুরা হাশরের শেষ ৩ আয়াত পড়া
যে
ব্যক্তি ফযর নামাজের পর আউজুবিল্লাহিস সামিইল আলিম মিনাশ শায়তানির রাজিম ৩ বার পাঠ
করার পর হুয়াল্লাহুল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু শেষ পর্যন্ত পাঠ করবে সে যদি সে দিন
মৃত্যু বরণ করে তাহলে সে শহীদের মর্যাদা পাবে। আর শহীদের মর্যাদা একমাত্র মুমিনরাই
হাসিল করতে পারে কাফেররা হাসিল করতে পারে না।
হাদিসটি কোন গ্রন্থ থেকে নেয়া? বলবেন প্লীজ
উত্তরমুছুন