নিজের স্ত্রীকে কখনো ৪টি কথা বলবেন না। JA AL HAQ / NIZAM UDDIN







স্ত্রীকে ৪টি কথা কখনো বলবেন না

ঘটনা-১

ভালোবাসা লুকিয়ে রাখার বস্তু নয়। যদি সেটা হালাল হয়। নিজের
স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসাও অন্যদের কাছে প্রকাশ করা যায়। খোদ নবীজি বলেছেন:


আমাকে খাদীজার ভালোবাসা দান করা হয়েছে। (তার প্রতি আমার
ভালোবাসাটা আল্লাহর হাদিয়া)। (মুসলিম)

ঘটনা-২

আশেয়া রা.-এর কাছে তার ছেলেবেলার বান্ধবীরা আসতো। তার বয়স
তখনো কমই ছিল। পুতুল খেলতে পছন্দ করতেন। সইদের সাথে তিনি খেলতেন। নবীজি তাদেরকে
(সইদের ) আয়েশার কাছে পাঠিয়ে দিতেন। খেলার সুযোগ করে দিতেন (মুসলিম)।


শুধু স্ত্রীদের ভালোবাসতেন তা  কিন্তু নয়, তাদের
বান্ধবীদেরকেও ভালোবাসতেন। খোঁজখবর রাখতেন। যোগাযোগ ছিন্ন হতে দিতেন না। এটা সেটা
হাদিয়া পাঠাতেন। ছাগল যবেহ হলেই কিছু গোশত আলাদা করে বলতেন:


-
এটা খাদীজার (অমুক) বান্ধবীর বাড়িতে দিয়ে এসো! (মুসলিম)।

ঘটনা-৩

নবীজি সারাদিন ব্যস্ত থাকতেন। ফাঁকে ফাঁকে স্ত্রীদেরকে সময়
দিতেন। তবে রাতের বেলায়
, চারদিক নীরব হয়ে এলে, তিনি
আয়েশা রা.-এর সাথে ঘুরতে বের হতেন। হাঁটতে হাঁটতে কথাবার্তা বলতেন (বুখারী)।

ঘটনা-৪

স্ত্রীদের সাথে খেলাধূলা করা। আয়েশা রা. বলেছেন:

-
একবার নবীজি আমাকে বললেনচলো দৌড়
প্রতিযোগিতা করি! আমরা দৌড়ালাম। আমি তার চেয়ে এগিয়ে থেকে দৌড় শেষ করলাম। কিছুদিন
পর আমার স্বাস্থ্য একটু ভাল হলে
, তিনি আবার একদিন
প্রতিযোগিতা দিতে বললেন। এবার তিনি জয়ী হলেন। মুচকি হেসে বললেন:


-
এটা সেটার বদলা। শোধবোধ। (আবু দাউদ)।

ঘটনা-৫

নবীজি সফর থেকে এসে, চট করে
ঘরে চলে যেতেন না। স্ত্রীদেরকে সাজগোজ করার সুযোগ দিতেন। প্রস্তুতি নেয়ার সময়
দিতেন। জাবের রা. বলেছেন:


আমরা একবার সফর থেকে মদীনায় ফিরলাম। ঘরে যেতে উদ্যত হলে, নবীজি
বললেন:


-
থামো, স্ত্রীদেরকে
সুযোগ দাও। রাতের দিকে ঘরে যেয়ো। স্ত্রীরা এর মধ্যে
ক্ষৌরকর্মসেরে নিতে
পারবে। আলুলায়িত কেশ বিন্যাস করে নিতে পারবে! (নাসায়ী)।

ঘটনা-৬

স্ত্রীর শুধু দোষ নয়, তার
গুণগুলোও খুঁজে বের করা দরকার। সেগুলো প্রকাশ করা দরকার। অপছন্দনীয় কিছু দেখলে
অমনিই তেতে ওঠার কোনও কারণ নেই:


স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি যেন অন্যায় আচরণ না করে। তার কোনও
একটা স্বভাব পছন্দ না হলেও
, অন্য আরেকটা স্বভাব পছন্দ হবে! (মুসলিম)।

ঘটনা-৭

সাফিয়া রা. এক সফরে নবীজির সফরসঙ্গী হয়েছিলেন। সাফিয়া(রাঃ)
কিছুটা ধীরে পথ চলছিলেন। পিছিয়ে পড়েছিলেন। নবীজি তার কাছে এগিয়ে গেলেন। গিয়ে
দেখলেন সাফিয়া কাঁদছেন আর বলছেন:


-
আপনি আমাকে একটা ধীরগামী গাধায় সওয়ার করিয়েছেন!

নবীজি স্নেহভরে সাফিয়ার চোখের অশ্রু মুছে দিলেন। তাকে না
কেঁদে চুপ করতে বললেন (নাসায়ী)।

ঘটনা-৮

নবীজি আরও অবিশ্বাস্য (আমাদের যুগের দৃষ্টিভঙ্গিতে) কাজও
করেছেন। তিনি বলেছেন:


তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যে লোকমা তুলে দিবে, সেটার
বিনিময়েও আল্লাহ তোমাকে সওয়াব দান করবেন (বুখারী)
ঈদে-উৎসবে স্ত্রীদেরও শরীক করা। তাদেরকে সাথে নিয়ে উপভোগ
করা সুন্নাত। আয়েশা রা. বলেছেন:

একবার মসজিদের চত্ত্বরে কিছু হাবশী বালক বর্শা নিয়ে
খেলাধূলা করছিল। নবীজি তাদের খেলা দেখছিলেন। আমিও তার পেছনে দাঁড়িয়ে
, তার গায়ে
হেলান দিয়ে খেলাটা উপভোগ করেছি (বুখারী)।
বিজ্ঞজনেরা স্ত্রীর সামনে ৪টি কথা ও কাজ করতে নিষেধ করেছেন
এ ৪টি কথা ও কাজ যদি স্ত্রীকে বলো তাতে তোমাদের ক্ষতি হতে পারে।
প্রিয় বন্ধুরা আপনারা জানেন দুনিয়ার মধ্যে একজন লোককে তখনই সৌভাগ্যবান
মনে করা হয় যদি তার কাছে একজন ভাল স্ত্রী, একটি ভাল ঘর, একটি ভাল ছওয়ারী এবং একটি ভাল
কাজ।
তবে প্রিয় বন্ধুরা যদি কারো এ ৪টি নেয়ামত হাছিল হয় এবং ভাল স্ত্রীও
সাথে থাকে তবে তাকে ৩টি কথা বা কাজ করা যাবে না যেমন
১। স্ত্রীর সামনে যে কোন সমস্যায় কান্না করা যাবে না, যে কোন
বিপদে স্বামীর উচিত স্ত্রীকে সান্তনা দেয়া সেক্ষেত্রে স্বামী নিজেই যদি কান্না করে
তাহলে স্ত্রী সে স্বামীর উপর ভরসা হারিয়ে ফেলবে।
কান্না করা ভাল তবে তা হবে স্ত্রী না দেখে মত, কিন্তু যদি স্ত্রীর
সামনে কান্না করেন তখন স্ত্রী আপনাকে একজন দুবল মানুষ ভাববে।
২। স্বামীরা কখনো স্ত্রীদের সামনে স্ত্রীর মা বাবা আত্মিয় স্বজন
এর দুর্নাম করবে না। অসম্মান জনক কথা বলবে না, কেননা এতে স্ত্রীর মনে আপনার প্রতি বিদ্বেষ
পয়দা হবে এবং এ থেকে ঘরে অশান্তি সৃষ্টি হবে।
৩। স্ত্রীকে সব সময় নিজের
অভাব অনটনের কথা রোজগার এর কথা বলা উচিত নয়, ঘরের রুজি রোজগার এর এন্তেজাম করা স্বামীর
দায়িত্ব আর ঘর এর কাজ সামাল দেয়া বাচ্চা লালন পালন এসব স্ত্রীর জিম্মাদারী, এখন স্বামী
যদি সারাক্ষন স্ত্রীকে রুজি কত হয়েছে, কম হয়েছে, কজ হয়েছে এসব বলতে থাকে তাতে স্ত্রী
মানসিক ভাবে পেরেশানীতে থাকবে এবং সে আপনার সন্তানদের টেক কেয়ারে উদ্যম হারিয়ে ফেলবে।
সে জন্য যথাসাধ্য স্ত্রীর কাছে নিজের কাজ কারবারের সমস্যাগুলি বলা থেকে বিরত থাকবেন।
৪। স্বামী তার ভাই বোন আত্মিয়
স্বজনের সামনে স্ত্রীকে কোন ধরনের গালমন্দ করবে না, এতে স্ত্রীকে অসম্মানি করা হয় এবং
স্ত্রী স্বামীর প্রতি সম্মান  ভালবাসা হারিয়ে
ফেলে এবং এর ফলে ঘরে নানা ধরনের ঝগড়া ফাসাদ সৃষ্টি হয়।

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.