হাসবুনাল্লাহু এর বিষ্ময়কর ফজিলত। Qurani Amal/ All Bangla/ Nizam Uddin







বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
বড় বিপদে এ আয়াত পড়ার সাথে সাথেই
আল্লাহর গায়েবী সাহায্য নেমে আসল
প্রিয়
দোস্ত ও বুযুগ আজ আমি কুরানে পাকের ছোট একটি আয়াত যা পড়ার সাথে সাথেই আল্লাহর
সাহায্য নেমে আসে তা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি।

যে কোন লোক যখন কোন মসিবত কিংবা পেরেশানিতে লিপ্ত হয় তখন সে
যদি এ আয়াত পাঠ করে আল্লাহ তায়ালা তাকে সাথে সাথে সাহায্য করেন
মানুষ অনেক সময় বে ছাহারা হয়ে যায়, এমন এমন সমস্যায় ফেসে যায় না
পারে কাউকে বলতে না পারে সইতে
, কিংবা এমন স্থানে বিপদে আটকে যায়
দুর দুর পর্যন্ত সেখানে কারো সাহায্য সহযোগীতা পাওয়ার কোন সুযোগই বাকী থাকে না
,
প্রথমে ১টি বাস্তব ঘটনা শুনুন তাহলে বিষয়টি বুঝতে সহজ হবে
এক গ্রামে এক পরহেযগার আলেম বাস করতেন। তিনি প্রত্যেক কাজে
আল্লাহর প্রতি ভরসা করতেন। তার কাছে কেউ দো
আ চাইলে তিনি সুন্নাতী পন্থায় দোআ করতেন। আর তাহল তিনি ছালাতে দাঁড়িয়ে
যেতেন আর বেশী বেশী কোরানের সে আয়াতটি পড়তেন
পরহেযগার
আলেমের এক প্রতিবেশী ছিল। সেও দ্বীন-ইসলামের বিধান পালন করত।  একদিন পুলিশ এসে
লোকটির একমাত্র
ছেলেকে ধরে নিয়ে যায়। তখন
লোকটি বুযুর্গ পরহেযগার ব্যক্তির নিকট উপস্থিত হয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে বলল, আমার ছেলেকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে, আমি আপনাকে অনুরোধ করছি, আপনি
থানায় গিয়ে সুপারিশ করুন। যাতে আমার ছেলেকে মারধর না করা হয়
, রিমান্ডে না নেওয়া হয় । একথা শুনে ঐ লোক ওযূ করে ছালাত আদায় করে দোয়া করতে লাগলেনকারণ তিনি জানতেন পুলিশকে সুপারিশ করে কোন কাজ হবে না। এদিকে লোকটি তা দেখে
কাঁদতে লাগল এবং বলল
, আমি আসলাম তাকে সুপারিশের অনুরোধ করতে, আর তিনি ছালাত আদায় করতে শুরু করলেন? যখন বুযুর্গ ছালাত ও দোয়া শেষ করলেন তখন লোকটি বলল, আমি আমার ছেলের ব্যাপারে সুপারিশের জন্য এসেছিলাম আর আপনি সুপারিশ না করে জায়নামাজে বসে আছেন?
তিনি
উত্তরে বললেন
, আমি তোমার জন্য সুপারিশই তো করছিলাম। আমি
তোমার সন্তানের মুক্তির জন্য আল্লাহর নিকট দো
আ করেছি। আর এটাই সবচেয়ে বড় সুপারিশ। তিনি যাকে মুক্ত করবেন, তাকে কেউ আটক রাখতে পারবে না।

বুযুর্গ মুছাল্লা থেকে উঠে না দাঁড়াতেই এক মহিলা এ
লোকটিকে ডাকতে
এসে বলল
, ভাই! তোমার
বরকত হোক
, তোমার কল্যাণ হোক! তোমার ছেলেকে পুলিশ ছেড়ে
দিয়েছে। সে বাড়ীতে ফিরে এসেছে। একথা শোনা মাত্রই ঐ
লোক বাড়ী
ফিরে
গেললোকটি বুঝতে
পারল বিপদ মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে।
যেমন
আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (ছাঃ)-এর নিকট যখন কোন কাজ কঠিন হয়ে যেত
, তখন তিনি ছালাতে দাঁড়িয়ে যেতেন, দোয়া করতেন (আবূদাউদ হা/১৩১৯; ছহীহুল জামেহা/৪৭০৩)

আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা সুরা ফাতেহার মধ্যে পাঠ করি ইয়্যাকা
নাবুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতাঈন অথ্যাৎ হে আল্লাহ আমরা তোমারই এবাদত করি তোমারই কাছে সাহায্য
প্রার্থনা করি
এ আয়াত দ্বারা আমরা আল্লাহর সাহায্যের আশা রাখি, আল্লাহর উপর ভরসার কথা বলি
আল্লাহর ওপর যার আস্থা যত বেশি, তার সফলতার পরিপূর্ণতা তত বেশি। তাওয়াক্কুল একটি গুণ, একটি ইবাদত। এটি অর্জন ছাড়া ঈমান অসম্পূর্ণ থাকে। সে কারণে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও ওপর
তাওয়াক্কুল করা যায় না।
পবিত্র কুরআনে বিভিন্ন ভাবে আল্লাহর উপর
ভরসার কথা প্রায় ৭০ বার এসেছে,  যেমন
কোরআনে কারিমে তাওয়াক্কুল
শব্দটি ৯ বার
, বহুবচনে মুতাওয়াক্কিল ৪ বার, বিভিন্ন ক্রিয়াপদে ৩৩ বার এবং ওয়াকিল ২৪ বার ব্যবহৃত হয়েছে।
ইসলামি
শরিয়তে তাকদিরে বিশ্বাস রাখা ওয়াজিব। তাই তাকদিরে বিশ্বাস রাখার পাশাপাশি চেষ্টা
অব্যাহত রাখতে হবে। সফল হলে যে কোনো ব্যাপারে কৃতজ্ঞতা আদায় করতে হবে। আর সফল না
হলে ধৈর্য ধারণ করতে হবে।

প্রচেষ্টা
ও তাওয়াক্কুল উভয়টাই থাকতে হবে। তাকদিরের দোহাই দিয়ে রোগ হলে চিকি‍ৎসা না করা
, শত্রুর হাত থেকে আত্মরক্ষার চেষ্টা না করা ইসলামসম্মত নয়।

আল্লাহতায়ালার ওপর ভরসা করার বিষয়ে বলা হয়েছে। আল্লাহর ওপর ভরসা করার নানা
পর্যায় রয়েছে। কেউ মুখে মুখে ভরসার কথা বলে
, কেউ সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের ভরসা করে, কেউ-বা
সর্বদাই সব কাজে আল্লাহর ওপর ভরসা করে। এটি তাওয়াক্কুলের সর্বোচ্চ পর্যায়। আর যারা
প্রকৃতই আল্লাহর উপর ভরসা করে তাঁদের ব্যপারে সুরা ইমরানের ১৭৩ নং আয়াতের ছোট ট
ুকরাটি যথেষ্ট তা হল
حَسْبُنَا اللّهُ وَنِعْمَ
الْوَكِيلُ
আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট; তিনি কতই
না চমৎকার কামিয়াবীদানকারী। [
 সুরা ইমরান ৩:১৭৩ ]
আয়াতের শিক্ষা :
বর্ণিত আয়াতের শিক্ষা হলো, সর্বাবস্থায় আল্লাহর ওপর ভরসা করা এবং আল্লাহকে নিজেদের জন্য যথেষ্ট মনে করা, আল্লাহকে সব শক্তির উৎস মনে করা। এ ছাড়া এই আয়াতের আরও শিক্ষণীয় বিষয় হলো, শত্রুপক্ষের অনুপ্রবেশ এবং আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য তাদের ছড়িয়ে দেওয়া প্রচারণা
সম্পর্কে সাবধান থাকা
, শত্রুরা যত বেশিসংখ্যক কিংবা শক্তিশালী
হোক না কেন- আল্লাহর ক্ষমতা তার চেয়েও
 বেশি- এমন বিশ্বাস মনে দৃঢ় রাখা।
বুখারী শরীফের ৪৫৬৩ নং হাদীস হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) এ হাদীসের
রাবি তিনি এরশাদ করেন

বাক্যটি ইব্রাহীম আঃ তখন উচ্চারণ করেছিলেন যখন তাকে অগ্নিকুন্ডলীতে নিক্ষেপ করা হয়েছিল


একই বাক্যটি নবী মুহাম্মদ (সাঃ) উচ্চারণ করেছিলেন যখন লোকেরা তাকে বলল, তোমাদের সাথে মোকাবেলা করার জন্য লোকেরা সমাবেশ করেছে বহু সাজ-সরাঞ্জম সুতরাং তাদের ভয় করুন। তিনি বলেছিলেন, হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল

একবার চিন্তা করুন হযরত ইবরাহীম (আঃ) কে যখন জালেম বাদশা
অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করেছিলেন সেটি কতবড় মাপের বিপদ তিনি সে বিপদে এ আয়াতটি
পড়েছিলেন, এবং সাথে সাথে আল্লাহর সাহায্য নেমে এসেছিল, তেমনি আমাদের প্রিয় নবীকে
যখন শত্রুর ভয় দেখানো হয়েছিল তখনও তিনি এ আয়াতটিই পাঠ করেছিলেন, আমরাও যদি আজ
প্রকৃত পক্ষে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা রেখে এ আমল করি তাহলে সাথে সাথে আল্লাহর
গায়েবী সাহায্য নেমে আসবে, সকল দুঃখ পেরেশানী বিপদে আল্লাহ আমাদের চমৎকার সঙ্গী
হবেন তাতে কোন সন্দেহ নাই। যে কোন বিপদে আমাদের ধৈর্য্য ও আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা
রাখতে হবে, এবং এ দোয়া বেশী বেশী পড়তে হবে

তবে আমরা সুরা আল এমরানের ১৭৩ নং আয়াতের অংশের সাথে সুরা
আনফালের ৪০ নং আয়াতের অংশ জোড়া লাগালে এর অর্থ আরো চমৎকার হয়
যেমন-
সুরা এমরানের আয়াতাংশ হল ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল’
সুরা আনফালের আয়াতাংশ ‘নেমাল মাওলা ওয়ানেমান নাসির’
حَسْبُنَا اللّهُ وَنِعْمَ
الْوَكِيلُ نِعْمَ الْمَوْلَى وَنِعْمَ النَّصِيرُ
অথ্যাৎ আমাদের
জন্য আল্লাহই যথেষ্ট
; কতই না চমৎকার কামিয়াবীদানকারী। আল্লাহ কতইনা চমৎকার সাহায্যকারী
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন


কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.