খবরদার! সকালে বাচ্চাদের ঘুম থেকে কিভাবে উঠাবেন?

 

খবরদার! সকালে বাচ্চাদের ঘুম থেকে কিভাবে উঠাবেন?



সকালে সন্তানকে ঘুম থেকে উঠানোর সময় অধিকাংশ পিতা মাতা ও উস্তাদ আমলগুলি করেনা, অনেকে জানে কিন্তু করেনা ফলে সন্তানের জন্য ক্ষতির কারন হয়, আজ সন্তানকে ঘুম থেকে উঠানোর সময় সালফে সালেহিনগন কি সুন্নত তরিকা পালন করত সে রকম ৫টি তরিকা তুলে ধরার চেষ্টা করব, আশা করি প্রত্যেক পিতা মাতা ও উস্তাদদের জন্য খুব বেশী বেশী উপকার হবে।

সন্তানকে যখন ঘুম থেকে উঠাবেন তখন পা ব্যবহার করবেন না, হাত বা বেত দিয়ে মেরে আপনার ছেলে মেয়েকে ঘুম থেকে জাগাবেন না, সালফে সালেহিনের নিয়ম ছিল তারা সন্তানকে ঘুম থেকে উঠানোর জন্য তাঁদের কাঁধে হাত রাখতেন আর সন্তানের মাথার নিচে কাঁধে হাত রেখে বিছানা থেকে তুলতে তুলতে পড়ত (আলহামদুল্লিাহিল্লাজি আহিয়ানা বাদা মা আমাতিনা ওয়া ইলাইহিন নুশুর) ফলে সন্তান পিতা বা উস্তাদের মুখ থেকে শুনে শুনে দোয়াটি শিখে ফেলে এবং তাদের অভ্যাস হয়ে যাবে যখনই সে উঠবে এই দোয়া পড়বে,

এভাবে দোয়া পড়তে পড়তে বসিয়ে দিবেন - ধাক্কা দিবেন না, বসানোর পর কিছু সময় রিলেক্স হলে ২য় বার বলবেন বেটা উঠ এরপর আরো ১টি দোয়া পড়বেন

الحمدُ للهِ الذي عافاني في جَسَدي وَرَدّ عَليّ روحي وَأَذِنَ لي بِذِكْرِه

(আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আফানি ফি জাসাদি, ওয়া রাদ্দা আলাইয়্যা রুহি, ওয়া আজিনা লি, বিজিকরি)

অর্থ্যাৎ সকল প্রসংশা আল্লাহর যিনি আমার শরীরকে নিরাপদ ও সুস্থ রেখেছেন, এবং আমার রুহকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন, এবং আমাকে জিকির করার তৌফিক দিয়েছেন।

ছালফে ছালেহিনের আরো অভ্যাস ছিল যখন তারা সকালে ঘর থেকে মসজিদের দিকে বের হত নিজের সন্তানের হাত ধরে ঘর থেকে বের হত, আর পড়ত

«بِسْمِ اللَّهِ وَلَجْنَا، وَبِسْمِ اللَّهِ خَرَجْنَا، وَعَلَى اللَّهِ رَبِّنَا تَوَكَّلْنَا»

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি ওয়ালাজনা, ওয়া বিস্‌মিল্লাহি খারাজনা, ওয়া আলাল্লাহি রাব্বিনা তাওয়াক্কালনা।

অর্থ : আমি আল্লাহ্‌র নামে প্রবেশ করলাম, আল্লাহ্‌র নামেই বের হলাম এবং আমার রব আল্লাহ্‌র উপরই ভরসা করলাম। [আবু দাউদ : ৫০৯৬]

এরপর পড়ত

بِسْمِ اللَّهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহি লা হাওলা ওয়া লা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহি

অর্থ : আল্লাহ তাআলার নামে, আল্লাহ তাআলার উপরই আমি নির্ভর করলাম, আল্লাহ তাআলার সাহায্য ছাড়া (মন্দ কাজ থেকে) বিরত থাকা ও কল্যাণ পাওয়ার শক্তি কারো নেই।

এভাবে যখন প্রতিদিন করবেন তখন আপনার বাচ্চার জেহেনে নকশা হয়ে যাবে এবং সে শিখে ফেলবে এবং আমল করবে। মানুষের সবচেয়ে উত্তম শিক্ষক হলেন মা বাবা।

তাই বাচ্চাদের সামনে এসব দোয়া ও আমলগুলি বড় বড় করে পড়বেন তাহলে আপনার মুখ থেকে শুনে শুনেই সে শিখে ফেলবে

বাচ্চাদেরকে আরো ১টি আমল শিখাবেন যখন সে বালতিতে জমা পানি থাকবে সকালে ঘুম থেকে উঠে তাতে যেন হাত দিয়ে না দেয়, কারন নবী করিম (দ) এরশাদ করেছেন ঘুমের মধ্যে তোমার হাত কোথায় ছিল তা তোমার জানা নাই, তাই প্রথমে আধুয়া হাত পানির পাত্রে না দিয়ে মগ দিয়ে পানি নিয়ে আগে দুই হাত কব্জি পর্যন্ত ধৌত করবেন।

 ইবনে আবিদ্দুনিয়া লিখেন এক ব্যক্তি এ হাদসিটি অস্বীকার করে বলল রাতে আমার হাত কোথায় যাবে আমার সাথেই ছিল, সে যখন রাতে ঘুমালো দেখা গেল তার হাত তার পায়খানার রাস্তায়, নাউজুবিল্লাহ

তেমনি ভাবে এক লোক হাদীস পড়ল- যে ইমামের আগে রুকু সিজদায় চলে যায় তার চেহেরা গাধার চেহেরা হয়ে যাবে, এ হাদীস সে অস্বীকার করল আর ইমামের আগে ইচ্ছাকৃত রুকু সিজদা করল যখন সে সিজদা থেকে মাথা উঠালো তার মাথা গাধার মাথায় পরিণত হয়ে গেল।

 সে জন্য হাদীস নিয়ে কখনো মজা করতে নাই, আজ দেখুন স্বাস্থ বিজ্ঞানিরা বলছেন হাতের মধ্যে জিবানু থাকে বার বার হাত ধৌত করার পরামশ দিচ্ছেন, এখন সে হাত যদি আপনি পানির পাত্রে ধৌত করা ব্যতীত ঢুকিয়ে দেন তাহলে গোটা পাত্রের পানিই জীবানুতে ভরে যাবে, যা আজকের বিজ্ঞানীরা আবিস্কার করেছেন অথচ আজ থেকে ১৪শত বছর আগেই আমাদের নবী সে শিক্ষা দিয়ে গেছেন। সুতরাং আমাদের বাচ্চাদেরকেও সে আদশগুলি প্রেকটিক্যাল করে করে শিখানো উচিত। ফলে বাচ্চারা শিখতে পারবে এবং তাদের জন্য আমল করা সহজ হবে। যা তাদের জীবনকে বরকতময় করে তুলবে।

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.