টঙ্গীতে দুই সন্তানকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যার ‘স্বীকারোক্তি’ মায়ের
টঙ্গীতে দুই সন্তানকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যার ‘স্বীকারোক্তি’
মায়ের
গাজীপুরের টঙ্গীতে ঘটে যাওয়া একটি মর্মান্তিক ঘটনা
সম্প্রতি জাতীয়ভাবে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। একজন মা তার দুই সন্তানকে বঁটি
দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের তথ্যমতে, অভিযুক্ত মা ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন।
ঘটনার বিবরণ
টঙ্গীর গোপালপুর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন
অভিযুক্ত মা ও তার দুই সন্তান। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন সকালে প্রতিবেশীরা শিশুদের কান্নার শব্দ শুনতে
পান। পরবর্তীতে পুলিশ এসে দুই শিশুর নিথর দেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে জানা
যায়, মা বঁটি দিয়ে সন্তানদের কুপিয়ে
হত্যা করেছেন।
পুলিশের পদক্ষেপ
ঘটনার পরপরই পুলিশ অভিযুক্ত মাকে আটক করে। প্রাথমিক
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সন্তানদের হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে, হত্যার পেছনে কী কারণ ছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ বলছে,
মানসিক
স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা অথবা পারিবারিক কলহ এর পেছনে থাকতে পারে।
সামাজিক প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনাটি সমাজে গভীর উদ্বেগ ও শোকের সৃষ্টি করেছে। সামাজিক
যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই মায়ের মানসিক অবস্থার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন, আবার অনেকেই এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন।
ইসলামের দৃষ্টিকোণ
ইসলামে সন্তান হত্যা একটি মহাপাপ। কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু
ওয়া তায়ালা বলেন:
"তোমরা তোমাদের সন্তানদের
হত্যা করো না দারিদ্র্যের ভয়ে; আমরাই তাদের ও তোমাদের জীবিকা দান করি। তাদের হত্যা করা
অবশ্যই এক গুরুতর গোনাহ।" — (সুরা আল-ইসরা, আয়াত ৩১)
নবী মুহাম্মদ ﷺ আরও বলেন: “প্রতিটি ব্যক্তি কিয়ামতের
দিন তার গুনাহের জন্য জবাবদিহি করবে, এমনকি একজন পিতা যদি
অন্যায়ভাবে তার সন্তানকে হত্যা করে, সেজন্যও।”
(সহীহ
হাদিস থেকে সংগৃহীত)
ইসলাম মানুষকে দয়া,
সহানুভূতি
ও ধৈর্যের শিক্ষা দেয়। সন্তানের প্রতি মমতা ও দায়িত্বশীলতা ইসলামী পারিবারিক
জীবনের একটি মৌলিক স্তম্ভ।
মানসিক স্বাস্থ্য ও পারিবারিক সহিংসতা
এই ঘটনা আমাদের সমাজে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতার
প্রয়োজনীয়তা ও পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধের গুরুত্ব স্মরণ করিয়ে দেয়। মানসিক
স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের জন্য সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান অত্যন্ত জরুরি।
উপসংহার
টঙ্গীর এই মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের সমাজে মানসিক স্বাস্থ্য
সচেতনতা বৃদ্ধি ও পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান
জানায়। এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে একযোগে কাজ করতে হবে।
পাশাপাশি, ইসলামের নীতি ও মূল্যবোধকে
জীবনে বাস্তবায়নের মাধ্যমে এমন করুণ ঘটনার প্রতিরোধ করা সম্ভব।
কোন মন্তব্য নেই