শ্রেষ্ঠ নবীকে যারা অশিক্ষিত বলেন তাদের দাঁতভাঙ্গা জবাব

মহানবী (দঃ) কি অশিক্ষিত?

উম্মি শব্দের অনুবাদ যারা অশিক্ষিত করেন তারাই মুর্খ
শ্রেষ্ঠ নবীকে যারা অশিক্ষিত বলেন তাদের দাঁতভাঙ্গা জবাব



পবিত্র কুরআনে আমাদের প্রিয় আঁকা (দঃ) কে উম্মি বলা হয়েছে আর এ উম্মি শব্দের অথ করতে ২ টি দল ২ ধরনের অথ করে থাকে এক দল বলে উম্মি শব্দের অথ হল ইলিটারেট, যিনি পড়ালেখা জানেন না, অন্য ভাষায় অশিক্ষীত, মুর্খ। আর অপর দলের মতে উম্মি শব্দের অথ মুখ বলাটা নবীর শানে বেয়াদবী।
যারা উম্মি শব্দের শাব্দিক অর্থ মুর্খ বলাটাকে বেয়াদবী বলেন তাদের বক্তব্য হল
নবী করিম (দঃ) এর শানে যে উম্মি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে সে উম্মি শব্দের অর্থ করতে গিয়ে শাহেনশাহে আলম রহমতে দু আলম হুযুর পুরনুর মাহবুবে খোদা (দঃ) কে যারা মুখ বলে থাকেন তারা নবীর উপর অনেক বড় যুলম করে থাকেন। এটা এক রকম গোমরাহি, নবীর শানে বেয়াদবীর শামিল। উম্মী শব্দের অথ হল যিনি কোন দুনিয়ার শিক্ষকের কাছে গিয়ে পড়ালেখা করেন নি। কোন স্কুল মাদরাসা বিশ্ববিদ্যালয় ইনিষ্টিটিউটে পড়েন নি। তিনি আল্লাহর কাছে পড়েছেন। আমরা যারা নবী নই আমরা সকল বান্দা বান্দার কাছে পড়ালেখা করি। আল্লাহর নবী আল্লাহর কাছে পড়েন। আমরা সাধারন মানুষ অন্য একজন সাধারণ মানুষের কাছে পড়ালেখা করে বড় জ্ঞানী হয়ে গেলাম, আর যিনি আল্লাহর কাছে পড়লেন তিনি কিভাবে মুর্খ হয়ে গেলেন?

আল্লাহ তায়ালা সুরা নিসার ১১৩ নং আয়াতে এরশাদ করেন (ওয়া আল্লামাকা মা লাম তাকুন তালামু) অর্থ্যাৎ আর তিনি আপনাকে সে সব জ্ঞান দান করে দিলেন যা আপনি জানতেন না। (ওয়াকা ফাদলুলল্লাহে আলাইকা আজিমা) আর আপনার উপর আল্লাহ তায়ালা অনেক বড় অনুগ্রহ। আল্লাহ তায়ালাই নবীকে এলেম দান করেছেন। সুতরাং যেখানে বলছে নবীকে আল্লাহ যা জানত না তার জ্ঞান দান করেছেন। তাহলে কিভাবে আপনি সে নবীকে মুখ, ইলিটারেট বলতে পারেন? তাছাড়া সুরা বাকারার ১৫১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা প্রিয় নবীর ব্যপারে বলেন নবীতো দুনিয়ার কারো কাছে পড়ার জন্য আসেননি তিনিতো দুনিয়ার সকলের জন্য শিক্ষক আর এরশাদ করেন كَمَا أَرْسَلْنَا فِيكُمْ رَسُولًا مِّنكُمْ يَتْلُو عَلَيْكُمْ آيَاتِنَا وَيُزَكِّيكُمْ وَيُعَلِّمُكُمُ الْكِتَابَ
وَالْحِكْمَةَ وَيُعَلِّمُكُم مَّا لَمْ تَكُونُوا تَعْلَمُونَ ( 151 )
অথ্যাৎ যেমন, আমি পাঠিয়েছি তোমাদেরই মধ্য থেকে তোমাদের জন্যে একজন রসূল, যিনি তোমাদের নিকট আমার বাণীসমুহ পাঠ করবেন এবং তোমাদের পবিত্র করবেন; আর তোমাদের শিক্ষা দেবেন কিতাব ও তাঁর তত্ত্বজ্ঞান এবং শিক্ষা দেবেন এমন বিষয় যা কখনো তোমরা জানতে না।

এ আয়াতে স্পষ্ট বলা হচ্ছে নবী কিতাবের তত্বজ্ঞান শিক্ষা দিবেন, তাহলে সে নবীকে কিভাবে মুর্খ বলার সাহস করেন?
আরেকজন ব্যাখ্যাকারী বলেন যে উম্মি শব্দের অথ হল মা ওয়ালা যিনি মায়ের কোলে থাকেন তিনি হয়ে থাকেন বে গুনাহ মাসুম, আমাদের নবীও উম্মি মানে হল তিনিও বে গুনাহ মাসুম।

আমাদের নবী করিম (দঃ) এর যতগুলি সিফতি নাম আছে তাতে উম্মি শব্দটিও আছে আর এর আভিধানিক অথ সাধারণত যিনি অশিক্ষীত, যার কোন পড়া লেখা নাই, ইংরেজিতে যাকে ইলিটারেট বলা হয়, কিন্তু এখানে আমাদের নবীর শানে যে উম্মি শব্দ ব্যবহৃত হয় তার আসল অর্থ হবে কোন উস্তাদের সাহায্য ছাড়া যিনি পড়ালেখা করেছেন, অথ্যাৎ তিনি দুনিয়ার কারো কাছে পড়ালেখা করেন নি ঠিকই কিন্তু তার কাছে রয়েছে জ্ঞানের ভান্ডার। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কোরানে করীমকে মানুষের ষড়যন্ত্র ও অভিযোগ থেকে বাঁচানো জন্য আমাদের নবী করিম (দঃ) কে কোন ধরনের দুনিয়াবি শিক্ষকের কাছে শিক্ষা নেয়া থেকে বিরত রেখেছেন। যাতে কাফেরগন এ অভিযোগ করতে না পারেন যে পবিত্র কোরআন নবী করিম (দঃ) এর নিজস্ব বানানো কিতাব। তাছাড়া যদি নবী দুনিয়ার কোন শিক্ষকের নিকট পড়ালেখা শিখতেন তাহলে সে বলতে পারত যে তোমরা যে নবীর কালমা পাঠ কর সে আমার ছাত্র। আল্লাহ তায়ালাই নবীকে শিখিয়েছেন সুরা রহমানে এরশাদ হচ্ছে (আর রাহমান আল্লামাল কুরআন) রহমান (আল্লাহ) তার হাবিবকে কুরআন শিক্ষা দিয়েছেন। আর কুরআন শিক্ষা করা মানে হল সবকিছু শিক্ষা করা কারন এ কুরআনকে আল্লাহ তায়ালা (ওয়ানাজ্জালনা আলাইকাল কিতাবা তিবিয়ানাল লিকুল্লি শাই) অথ্যাৎ হে হাবিব যে কোরআন আমি আপনার উপর নাযিল করেছি তাতে সব কিছুর বিস্তারিত বয়ান রয়েছে। েএ কুরআন এমন কিতাব যাতে ছোট বড় সবকিছুর বয়ানই রয়েছে। সুতরাং মুল কথা হল আমাদের প্রিয় নবীকে আল্লাহ তায়ালা সরাসরি জ্ঞান দান করেছেন। সুতরাং ‍নবী করিম (দঃ) এর শানে উম্মি শব্দের অর্থ করতে গিয়ে অশিক্ষীত, ইলিটারেট শব্দ ব্যবহার করাটা মুলত মুর্খতার শামিল।

অতএব সকল বক্তব্যের সারাংশ হল


আমাদের নবী দুনিয়ার কোন শিক্ষকের কাছে পড়ালেখা করেন নি ঠিক, কিন্তু আমাদের নবী অশিক্ষীত নন, জ্ঞানহিন নন, ইলিটারেট নন বরং আমাদের নবী শিক্ষিত, জ্ঞানবানদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ, কারন আমাদের নবীকে শিক্ষা দিয়েছেন আল্লাহ তায়ালা, আর আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক প্রদত্ত জ্ঞানে জ্ঞানী হয়ে নবী হলেন উম্মতের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠশিক্ষক। তাই কুরআনের শব্দ উম্মি এর বাহ্যিক অর্থ না নিয়ে এমন অর্থ নেয়া উচিত যাতে অন্যান্য আয়াতসমুহের সাথে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি না হয়। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সঠিক দ্বীন বুঝার তৌফিক দান করুন। আমিন।

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.