3 Steps for successful life
3 Steps for successful life
সফল জীবনের ৩টি সিঁড়ি।
সুপ্রিয় সুধী আজ আমরা জানব আমরা কিভাবে আমাদের জীবনের
সকল কাজকে খুবই ভালভাবে সমাধান করব।কিভাবে আমরা আমাদের প্রতিটি মুহুর্তকে প্রতিটি
সেকেন্ডকে চমৎকারভাবে অতিবাহিত করব? সে জন্য কয়েকটি পয়েন্ট মনে রাখতে হবে, প্রথমত-
আপনারা রাতের ঘুম পুরা করবেন, ফজরের আগে তাহাজ্জুদের জন্য উঠবেন এবং তাহাজ্জুদের
মাধ্যমে আপনার দিনের কার্যক্রম শুরু করবেন। তাহাজ্জুদে আল্লাহ পাকের তরফ থেকে
ভরপুর সাহায্য নেমে আসে, হাদীসে পাকে আছে রাতের শেষ ভাবে একজন ফেরেশতা ঘোষনা করেন (হাল মিন সাইলিন ফা উতিয়া লাহ) কেহ কি আছ চাওয়ার তাঁকে দান
করা হবে। কেহ কি আছ গুনাহ ক্ষমা চাওয়ার যাকে ক্ষমা করে দেয়া হবে। যখন আল্লাহর তরফ
থেকে ঘোষনা করা হচ্ছে আমাদের উচিত সে সময়টাতেই আমরা আমাদের অভাব অভিযোগ আল্লাহর
কাছে আবেদন নিবেদন করব। যে সময়টাতে আল্লাহর স্পেশাল রহমত নাযিল হয় সে সময়টাকে আমরা
আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান সময় মনে করতে হবে। সে সময়টাতে আল্লাহর অনুগ্রহসমুহ যদি
মানুষ খালি চোখে দেখত পেত তাহলে পৃথিবীর কেহই তাহাজ্জুদ ছাড়ত না।
তাই প্রত্যেক বুদ্ধিমান নারী পুরুষের
কাজ হবে আজ থেকে প্রতিদিন রাতে তাহাজ্জুদে দাঁড়িয়ে যাওয়া। এরপর ফজরের নামাজ পড়তে
হবে, ফজরের পর নিজের প্রয়োজনীয় জিকির আযকার করতে হবে, এরপর সুর্য উঠার পর এশরাকের
নামাজ পড়ে, নিজের অফিস, দোকান, ব্যবসার কাজে বেরিয়ে পড়া।
দ্বিতীয়ত- আল্লাহ তায়ালা বলেন হে আমার বান্দা তুমি দিনের শুরুতে ৪
রাকাত নামাজ পড় তাহলে সারা দিনের কাজে আমি তোমার সাহায্যকারী হব। একবার চিন্তা
করুন যেখানে সারা দিনের কাজে আল্লাহ আমাদের সাহায্যকারী হয়ে যাচ্ছেন তাহলে আমাদের
আর কিসের অভাব থাকতে পারে? আর এ নেয়ামত তাদের জন্য যারা সকালে এশরাকের ৪ রাকাত নফল
আদায় করে। এ এশরাকের নামাজ পড়ার সময় হল সুর্য্য উদিত হওয়ার প্রায় ২০-৩০ মিনিট পর।
সুতরাং দিনের শুরুতে এ ৪ রাকাত নফল পড়ে নিতে হবে যাতে আমাদের সকল কাজে আল্লাহর
সাহায্য আমাদের সাথে থাকে। বিশেষ করে ঘরে যারা মা বোনেরা আছেন তারা চিন্তা করেন
আমার ঘরের কাজে আমাকে সাহায্য করার মত কেউ নেই, আমি একাকি সংসারের সকল কাজ সামলাতে
হয়। সে সব মা বোনেরাও সকালে ৪ রাকাত ইশরাকের নামাজ পড়ে নিলে আল্লাহ তায়ালা সে সব
মা বোনের ঘরের সকল কাজে সাহায্যকারী হবেন। তাদের কাজে বরকত হবে, কাজে কোন ধরনের
ক্লান্তি লাগবে না।
আমরা যে কাজই করি না কেন সে কাজের
শেষে যে ফলাফল বের হবে সদা তা আমাদের মাথায় রাখতে হবে, আমরা কোন বিষয়টি এচিভ করব?
সেটা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে যাতে আমরা সে কাজটি পরিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পারি।
তৃতীয় পয়েন্টটি হল- যে সব নারী বুদ্ধিমতী তারা তাদের কাজকে
প্র্রায়োরিটির ভিত্তিতে করে, গুরুত্বপূণ কাজ কোনটি কোনটি আগেভাগে করতে হবে , যারা
নিজের খেয়াল মত কাজ করে কোন কাজটি জরুরী সেটিকে গুরুত্ব না দেয় তাহলে কাজে বরকত
হবে না, একটি উদাহারন দিলে আপনারা বিষয়টি বুঝতে পারবেন, একজন শিক্ষক তাঁর ছাত্র
ছাত্রীদেরকে কাজের প্রয়োরিটি বুঝানোর জন্য একটি বালতি নিলেন আর তাতে ইট ভর্তি
করলেন, তখন তিনি স্টুডেন্টদের প্রশ্ন করল তোমরা বলতো দেখি এ বালতিতে অন্য কিছু কি
রাখা সম্ভব? সকলে জবাব দিল না এ বলতি পুরাটাই ইট দ্বারা ভর্তি হয়ে গেছে। এবার
শিক্ষক ছোট ছোট কংকর নিয়ে বড় ইটের মাঝে মাঝে যে ফাঁকা ছিল তাতে রেখে দিলেন। এবং
ছাত্রদের বললেন তোমরাতো বলেছ বালতিতে আর কিছুই নেয়া যাবে না অথচ এর মধ্যে আমি
অনেকগুলি কংকরও রেকে দিলাম। এবার বল এখানের ভিতর আর কিছুকি নেয়া যাবে? স্টুডেন্ট
জবাব দিল না আর মোটেও জায়গা নাই। এবার শিক্ষক বালি নিয়ে কংকর ও েইটের মাঝে জায়গা
আছে তাতে ভরে দিলেন। এবং ছাত্রদের বললেন তোমরাতো বলেছ কোন জায়গা নাই, অথচ এতে আমি
অনেকগুলি বালিও নিয়ে নিলাম। এবার শিক্ষক বলল এবার বল এতে আর কোন কিছু রাখা যাবে
কিনা? ছাত্ররা বলল না একদম জায়গা নাই। কিন্তু শিক্ষক পানির জগ নিলেন আর সে বালতিতে
ঢাললেন, আর বললেন তোমরাতো বলেছ বালতিতে আর কিছুই রাখা যাবে না অথচ দেখ আমি জগ
ভর্তি পানি তাতে রেখে দিলাম। এবার শিক্ষক ছাত্রদের বলল তোমরা বল এ কাজটি থেকে
তোমরা কি শিক্ষা পেয়েছ? তারা বলল আমরা শিখলাম বালতির মধ্যে কিভাবে অনেকগুলি জিনিষ
রাখা যায়। শিক্ষক বললেন না আমি তোমাদের এ কাজটির দ্বারা এটাই শিক্ষা দিলাম যে, প্রয়োরিটি
হল মুল জিনিষ, যদি আমি বালতির মধ্যে সবার আগে পানি নিতাম তাহলে এতে এতকিছু একসাথে
আসত না। আমি প্রয়োরিটির ভিত্তিতে এতে প্রথমে ইট তারপর কংকর তারপর বালি এবং সবশেষে
পানি ঢাললাম ফলে সবকিছু এতে এসে গেল।
সুতরাং আমাদের কাজেরও একই অবস্থা যদি
আমরা সারাদিন প্রয়োরিটি ব্যতীত কাজ করি তাহলে আমাদের কাজে বরকত হবে না, কাজ শেষ
হবে না, কিন্তু যদি প্রয়োরিটির ভিত্তিতে কাজ করি তাহলে ১টি কাজের সময়ের ভিতর
কয়েকটি কাজ সহজেই শেষ করে ফেলতে পারব।
আজ আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল হল
আমরা সাময়িক কাজসমুহে ঢুবে থেকে আসল কাজ ভুলে যাই। সাময়িক বা ওয়াক্তি কাজকে বলে
আরজেন্ট ওয়ার্ক, আর আসল কাজকে বলে ইনপোর্টেন্ট কাজ। এখন আমরা আরজেন্ট কাজের কারনে
ইনপোটেন্ট কাজকে ভুলে যাই।
যেমন আপনার ইনপোটেন্ট কাজ হল বাচ্চাকে
স্কুলে নিয়ে যাওয়া, এমন সময় খবর পেলেন
মার্কেটে কাপড়ের অফার চলছে, তো আপনি বাচ্চাকে স্কুলে বা মাদরাসায় না নিয়ে ইনপোটেন্ট
কাজ ফেলে বাজারে ছুটে গেলেন অফার থেকে কাপড় কিনতে। মনে রাখবেন বিশেষ করে নারীদের
ইনপোটেন্ট কাজ হল সন্তানকে তরবিয়ত করা, স্বামীকে রাজি করা, নিজের নফসকে তাজকিয়া বা
পবিত্র করা, আল্লাহর এবাদত করা, আখেরাতের জন্য প্রস্তুতি নেয়া। এ সবই হল ইনপোটেন্ট
কাজ অথচ দেখা যায় আমাদের মা বোনেরা আরজেন্ট কাজের ফাঁদে পড়ে নামাজ পড়ার সময়ও পায়
না।
মনে রাখবেন সাকসেসফুল পারসন সে যারা
ইনপোটেন্ট কাজকে মনে রাখে আর তা ভুলে যায় না। ৩টি বিষয় মনে রাখবেন, জিন্দেগীর
কামিয়াবির জন্য ৩টি সিড়িঁ তা হল- নিজের কাজসমুহকে প্রয়োরিটির ভিত্তিতে সাজানো, দ্বিতীয়ত
সেগুলিকে ধাপে ধাপে সমাধান করা, এবং তৃতীয়ত জীবনটাকে একটা শৃংখলার মধ্যে নিয়ে
আসা।
কোন মন্তব্য নেই