আপনার নিকট এ ৪টি জিনিষ থাকলে আপনিই সেরা ভাগ্যবান।
যার নিকট এ ৪টি জিনিষ আছে সে দুনিয়ার সবচেয়ে
ভাগ্যবান
প্রথমত
সৌভাগ্যবান ব্যক্তি হল যার আছে নেককার
সৎচরিত্রবান স্ত্রী
হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
“চারটি বিষয়কে সামনে রেখে মেয়েদেরকে বিয়ে করা হয়ঃ তার ধন সম্পদ, তার বংশমর্যাদা, তার রূপ-সৌন্দর্য ও তার ধর্মপরায়নতা। এক্ষেত্রে ধর্মপরায়ন স্ত্রী লাভে বিজয়ী হও, তোমার হাত কল্যাণে ভরে যাবে।” [বুখারী ও মুসলিম]
প্রকৃত
সম্পদ কী তা বুঝে নিতে তাই ভুল করবেন না রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেনঃ
সমগ্র
পৃথিবীটাই সম্পদে পরিপূর্ণ। এর মধ্যে কল্যাণকর ও উত্তম সম্পদ হল চরিত্রবান নেককার
স্ত্রী। মুসলিম
দ্বিতীয়ত
সৌভাগ্যবান ব্যক্তি হল যার আছে নেককার সন্তান’
হাদীছ শরীফ প্রিয় নবীর (দ) ইরশাদ মুবারক
রয়েছে- “মানুষ যখন মারা যায়, তখন তার আমলের ধারা বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু তিনটি আমলের ধারা জারি থাকে, যা বন্ধ হয় না। ১. ছদকায়ে জারিয়াহ, ২. এমন ইলম, যার দ্বারা উপকার সাধিত হয় ৩. নেক সন্তান। যে তার পিতা-মাতা উনাদের জন্য দোয়া করে। সুবহানাল্লাহ!
সৎ,
বিনয়ী ও নিষ্ঠাবান আদর্শ সন্তান আল্লাহর পক্ষ থেকে নেয়ামত ও রহমত স্বরূপ। একজন
আদর্শবান নেককার সন্তানের জন্যে সমাজ-রাষ্ট্রের নিকট পিতামাতার সুনাম সুখ্যাতি
প্রভাব প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পায়। আবার অসৎ চরিত্রের দুষ্টু লোভী প্রতারক বখাটে বদকার
মাদকাসক্ত সন্তানের জন্যে সমাজ রাষ্ট্রের নিকট পিতামাতাকে হেয় প্রতিপন্ন, অপদস্ত ও
অপমানিত হতে হয়। অনেক অভিভাবকই সন্তানের শৈশবকালে পড়াশুনার ক্ষেত্রে গুরুত্ব
প্রদান করলেও নৈতিক মূল্যবোধ চর্চার প্রতি মনোযোগ দেন না। অনেকের কাছে
সামাজিকীকরণের বিষয়টি পুরোপুরি উপেক্ষিত থাকে। ফলে অনেক সন্তানই পড়াশুনা শেষ করার
পূর্বে বখে যায়। অশ্লীল ও মন্দ কাজে জড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যেক
পিতা মাতার উচিত তার সন্তানকে সঠিক ধর্মীয় শিক্ষা ও সামাজিক ভ্রাতৃত্ববোধের সাথে
পরিচয় করিয়ে দেওয়া। আইনস্টাইন, গ্যালিলিও কলোম্বাসের মতো বিজ্ঞানীদের সকল প্রকার
বিস্ময়কর আবিষ্কারের কাহিনী পড়ার জন্যে সন্তানকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি
অলি-আউলিয়া, নবী-রাসূল ও সাহাবীদের জীবনী পড়ার প্রতি সন্তানদের আগ্রহ সৃষ্টি করতে
হবে। মানবতা ও মানবিকতার কাজের প্রতি সন্তানের আগ্রহ বৃদ্ধি করতে হবে। তাহলে
সন্তান সন্ততি একটি ভারসাম্যপূর্ণ জীবন ব্যবস্থার মধ্যে বেড়ে উঠবে।
তৃতীয়ত
সৌভাগ্যবান ব্যক্তি হল যার আছে সৎ ও চরিত্রবান বন্ধু
আল্লাহ
পাক সুরা তাওবার ১১৯ নং আয়াতে এরশাদ করেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ وَكُونُواْ مَعَ الصَّادِقِينَ
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক।
ভালো ও দুষ্ট বন্ধু জীবনকে কতটা প্রভাবিত করতে পারে, রাসুল (সা.) তা উপমার মাধ্যমে মানবচক্ষুকে দেখিয়েছেন। তিনি বলেন, 'ভালো এবং দুষ্ট বন্ধু মিশক্ (সুগন্ধি) বহনকারী ও হাঁপরে ফুঁকদাতা (কামার) ব্যক্তির মতো। মিশক্ বহনকারী ব্যক্তির অবস্থা তো এমন যে সে হয়তো এ মিশক্ তোমাকে উপহার দেবে অথবা তুমি তার থেকে তা খরিদ করবে অথবা তুমি তার থেকে এর সুঘ্রাণ লাভ করবে। আর হাপরে ফুঁকদাতা ব্যক্তি হয়তো সে তোমার কাপড় জ্বালিয়ে দেবে কিংবা তুমি তার কাছ থেকে দুর্গন্ধ পাবে। ' (বুখারি ও মুসলিম)
ভাল বন্ধুর ব্যপারে মনিষিদের
অনেক দামী দামী উক্তি রয়েছে
ডক্টর এ.পি.জে আব্দুল কালাম বলেন- একটি ভালো বই একশ জন বন্ধুর সমান । কিন্তু
একজন ভালো বন্ধু একটি লাইব্রেরীর সমান ।
অবস্থায়।-ইমাম জমখশরী (রহ.) এর বাণী বীরের পরীক্ষা হয় যুদ্ধের ময়দানে, বন্ধুর
পরীক্ষা হয় বিপদের সময় এবং বুদ্ধিমানের পরীক্ষা হয় ক্রোধান্বিত
হযরত আলী (রা.) বলেন- সেই তোমার সত্যিকার বন্ধু, যে তোমার সঙ্গে থাকে। তোমার
কল্যাণের জন্য নিজের ক্ষতি করে। হঠাৎ করে তোমার অবস্থা শোচনীয় হলে সে নিজের সুখ বিসর্জন
দিয়ে তোমাকে সুখ দান করে।
মোট কথা একজন ভাল নেককার বন্ধু যার আছে সে আসলেই সৌভাগ্যবান।
চতুর্থত ঐ ব্যক্তি সৌভাগ্যবান যে ব্যক্তি ঈমানদার
এ প্রসঙ্গে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (দরুদ.) বলেছেন, ‘যে
ব্যক্তি মনেপ্রাণে, বিশ্বাসের সঙ্গে একবার কালেমা পাঠ করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’
বস্তুত একজন মানুষের জন্য চিরস্থায়ী জীবনে অনন্তকালের জন্য জান্নাত লাভের চেয়ে বড় আর
কিছু হতে পারে না। সেই হিসেবে বলা যায়- ঈমান হলো মানুষের বড় সম্পদ। ঈমান লাভ ভাগ্যের
বিষয়। মুসলমান হতে পারা ভাগ্যের ব্যাপার। এ গর্বের কথাই ধ্বনিত হয়েছে পবিত্র কোরআনে
কারিমের সুরা হা মিম সিজদার ৩০ নং আয়াতে।
إِنَّ الَّذِينَ قَالُوا رَبُّنَا اللَّهُ ثُمَّ اسْتَقَامُوا تَتَنَزَّلُ عَلَيْهِمُ الْمَلَائِكَةُ أَلَّا تَخَافُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَبْشِرُوا بِالْجَنَّةِ الَّتِي كُنتُمْ تُوعَدُونَ
নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ, অতঃপর তাতেই অবিচল থাকে, তাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ হয় এবং বলে, তোমরা ভয় করো না, চিন্তা করো না এবং তোমাদের প্রতিশ্রুত জান্নাতের সুসংবাদ শোন।
অতএব
পূণ আলোচনার সারাংশা হল ইসলামের দৃষ্টিতে যিনি ঈমানদার, যার কাছে আছে নেককার স্ত্রী,
যার আছে নেককার সন্তান এবং নেককার বন্ধু সেই হল প্রকৃত সৌভাগ্যবান। বিশিষ্ট কলামিষ্ট, লেখক, গবেষক ও ইসলামী চিন্তাবিদ
Blog
https://myjaalhaq.blogspot.com/
Google+ Link
https://plus.google.com/u/0/+JAALHAQ
Youtube link
https://www.youtube.com/c/jaalhaq
Facebook Link
https://www.facebook.com/JaalhaqTV
কোন মন্তব্য নেই