ফিতরা বা সদকায়ে ফিতরের কিভাবে আদায় করবেন সকল নিয়মাবলী





সদকায়ে ফিতর
আদায় করা কি?
সদকায়ে ফিতর
এমন এক সদকা যা শরীয়ত আমাদের জন্য ওয়াজিব করেছেন, তিরমিযি শরীফের রেওয়াতে নবী করিম
(দঃ) এরশাদ করেন মদিনার গলিসমুহে ঘোষনা করে দাও যে সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব।

আর ইবনে মাজাহ
শরীফের হাদীস হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন নবী করিম (দঃ) সদকায়ে ফিতরকে ওয়াজিব
ঘোষনা করেছেন যাতে রোজার মধ্যে কোন ত্রুটি বিচ্যুতি হলে তার কাফফারা হয়ে যায়।

দায়লামী শরীফের
হাদীস নবী করিম (দঃ) এরশাদ করেন রোজা আসমান ও জমিনের মাঝে ঝুলন্ত থাকে যতক্ষন সদকায়ে
ফিতর আদায় করা না হয়।

অপর এক রেওয়ায়েতে
আছে এ সদকায়ে গরীবদের জন্য হৌরিশ আর হৌরিশ অর্থ হল খাবার বস্তু, কারন এ সদকা গ্রহণ
করে গরীবগনও ঈদের খুশীতে অংশীদার হতে পারেন।

সদকায়ে ফিতর
কখন আদায় করতে হবে?
সদকায়ে ফিতর
সারা জীবনের যে কোন সময় আদায় করা ওয়াজিব, মনে রাখবেন ফিতরার মুস্তাহাব ওয়াক্ত হল ঈদের
দিন সুবেহ সাদেক হতে শুরু করে ঈদের নামজের আগে আগে আদায় করে দেয়া কিন্তু কেহ যদি আদায়
করতে না পারে তাহলে িঈদের নামাজের পরেও আদায় করতে পারবে। আবার কেহ যদি রমজানেই আগেভাগে
আদায় করে দেয় তাহলেও আদায় হয়ে যাবে।

সদকায়ে ফিতর
কার উপর ওয়াজিব?
যে ব্যক্তি
ঈদের দিন সুবেহ সাদেক পাবে এবং যে মালিকে নিসাব হবে তার উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব।

গরীবরা কি
সদকায়ে ফিতর দিতে পারবে?
সদকায়ে ফিতরের
একটি মকসদ হল এর দ্বারা রোজার যে ত্রুটি বিচ্যুতী তার দুর হয়, সে হিসেবে ধনী গরীব সকলের
উপর সদকা ফিতর আদায় করা দরকার, তবে গরীবের উপর ওয়াজিব নয় ধনীর উপর ওয়াজিব, গরীব যদি
ফিতরা না দেয় গুনাহ হবে না ধনী না দিলে গুনাহগার হবে।

জাকাত ও ফিতরা
ওয়াজিব হওয়ার পার্থক্য কি?
জাকাতের ১টি
শর্ত ছিল মালে নামি তথা বৃদ্ধি পায় এমন মাল হওয়া শর্ত কিন্তু ফিতরা ওয়াজিব হওয়ার জন্য
মালে নামি হওয়া শর্ত নয়। সুতরাং কারো কাছে যদি প্রয়োজনীয় মাল ছাড়া অতিরিক্ত মাল নেসাব
পরিমান মূল্যের হয়ে থাকে তার উপর ফিতরা ওয়াজিব হয়ে যাবে। যেমন কারো কাছে নিত্য প্রয়োজনীয়
দ্রব্য ছাড়া অতিরিক্ত দামী দামী পাথরের অলংকার আছে, যার মূল্য প্রায় সাড়ে বাহান্ন তোলা
রুপার মূল্যের সমান তাহলে তার উপর ফিতরা ওয়াজিব।

সদকা ফিতর
কার কার দিতে হয়
মনে রাখবেন
যিনি মালিকে নিসাব তিনি নিজের এবং তার তত্থাবধানে যে সব নাবালেক বাচ্চা আছে তাদের ফিতরা
আদায় করবেন। ঘরে যারা বালেক আছেন, স্ত্রী আছেন, মা বাবা আছেন তাদের ফিতরা আদায় করা
এ লোকের উপর ওয়াজিব নয়, অতএব স্বামী যদি স্ত্রীর ফিতরা দিতে না চান আর স্ত্রী যদি নিজে
নিসাবের মালেক হন তাহলে স্ত্রী নিজের ফিতরা নিজে দিবেন,

তবে আমাদের
দেশে রেওয়াজ হল ঘরের যিনি কর্তা তিনি সকলের ফিতরা হিসাব করে সকলের পক্ষ থেকে আদায় করে
দেন, এভাবেও আদায় হবে তবে আমি বুঝাতে চাইছি কার পক্ষ থেকে আদায করা ওয়াজিব আর কার পক্ষ
থেকে আদায় করা ওয়াজিব নয় তা। মুলকথা হল যিনি নিসাবের মালিক তার উপর ওয়াজিব এবং তার
অধিনে যে সব নাবালেগ লোক, পাগল লোক আছে তাদের পক্ষ থেকে আদায় করা ওয়াজিব, বাকীদের পক্ষ
থেকে আদায় করা ওয়াজিব নয় তবে আদায় করে দিলে আদায় হয়ে যাবে।

রোজা না রাখলে
কি ফিতরা দিতে হয় না?
মনে রাখবেন
রোজা না রাখলেও ফিতরা ওয়াজিব। যদি মালিকে নিসাব হয়।

ফিতরা কত?
মনে রাখবেন
আপনি ঘরে যে আটা খান সে আটার ২ কেজি ৫০ গ্রাম এর মূল্য সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ। এখন আপনি
যদি ২ কেজি ৫০ গ্রাম আটা কাউকে দিয়ে দেন তাতেও ফিতরা আদায় হবে, কিংবা এর মুল্য যদি
দান করেন তাও হবে।

সদকায়ে ফিতর
কাদের দিবেন না?
মা বাবা দাদা
দাদি নানা নানি, ছেলে মেয়ে, নাতি নাতনি, স্বামী স্ত্রীকে স্ত্রী স্বামী সৈয়দ বংশীয়কে
দিতে পারবে না এ ছাড়া বাকী যারা গরীব চাই সে বোন হউক, ভাই হোক , মামা মামী , চাচা চাচী
সকলকে দিতে পারবে যদি গরীব হয়ে থাকেন।
এ সদকা কাউকে মালিক বানাতে
হবে তাই এ সদকা কোন মসজিদে দেয়া যাবে না

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.