নামাজকে শ্রেষ্ঠ বানানোর ২৭টি শ্রেষ্ঠ কৌশল







শ্রেষ্ঠ নামাজের ২৭টি কৌশল
নামাজের খুশু(একাগ্রতা) উন্নয়নের ২৭ টি চমৎকার উপায়

https://youtu.be/26uD7PYIGd0



আল্লাহ রব্বুল আলামিন বলেন (কাদ আফলাহাল মুমিনুনাল্লাজিনা
হুম ফি সালাতিহিম খাশিউন) মুমিনগন সফলকাম হয়ে গেছে যারা নিজেদের নামাজে বিনয় নম্র। 


অপর আয়াতে বলেন (আল খাশিয়িনা ওয়াল খাশিয়াত) এরা সে সব নারী পুরুষ যারা বিনীত ভাবে আল্লাহর সামনে নত হয়


খুশু ওয়ালাদের কাছে নামাজটা অত্যন্ত আনন্দের এবং উপভোগের িন্তু গরুত্বপূণ বিষয়টি আজকাল হারিয়ে গেছে সহিহ আত তারগিবের একটি হাদীস রসুলুল্লাহ (দঃ) বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্য থেকে সবপ্রথম যা উঠিয়ে নেয়া হবে তা হল খুশু


প্রত্যেক নামাজির জন্য খুশু ধীরস্থিরীতা খুবই জরুরী খুশু একাগ্রতা ধীরস্থিরতা নামাজে কিভাবে স্থায়ী করা যায় আজ সে বিষয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব যা আপনার নামাজকে শ্রেষ্ঠ নামাজে রুপ দিবে ইনশা আল্লাহ

যথাযথভাবে নামাজের প্রস্তুতি নেয়া

আযান শুনলে আযানের জবাব দেয়া

আযানের পর দোয়া পাঠ করা

উত্তমরুপে অযুর আগে বিসমিল্লাহ পাঠ করা অযুর পরে কলেমা শাহাদাত পাঠ করা

অযুর পর দেয়া পাঠ করা ( আল্লাহুম্মাজ আলনি মিনাত্তাওয়্যাবিনা ওয়াজ আলনি মিনাল মুতাতাহহিরিন) অথ্যাৎ হে আল্লাহ তুমি আমাকে তাদের মত কর যারা অনুতাপ করে এবং নিজেদের পবিত্র করে

সুন্দর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পোষাক আরামদায়ক পোষাক পরিধান করা যেমন আল্রাহ বলেন (এয়া বনি আদামা খুজু জিনাতাকুম) অথ্যাৎ হে বনি আদম নামাজের সময় সাজসজ্জা গ্রহণ কর 

সুগন্ধ ব্যবহার করা

আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে আগে থেকেই নামাজের জন্য অপেক্ষা করা

নামাজের কাতার সোজা করা

১০ নামাজের প্রতিটি কাজ ধীরস্থির ভাবে আদায় করা হযরত আবু কাতাদাহ (রাঃ ) বর্ণনা করেন, যে রসুলুল্লাহ (দঃ) এরশাদ করেন নিকৃষ্টতম নামাজ হল সেই নামাজ যে নামাজে চুরি করা হয় তিনি জিজ্ঞাসা করলেন হে আল্লাহর রসুল নামাজে কিভাবে চুরি করা হয়? রসুলুল্লাহ (দঃ) উত্তর দিলেন ঠিকমত রুকু সিজদা না করাই হল নামাজে চুরি

১১ নামাজে মৃত্যুর কথা মনে করা রসুলুল্লাহ (দঃ) আবু আইয়ুব (রাঃ) কে উপদেশ দেন, যখন তুমি নামাজে দাড়াও তখন তুমি তোমার বিদায়ী নামাজ আদায় করা এর অর্থ্ হল এটা ভেবে নামাজ পড়া যে এটাই তাঁর শেষ নামাজ 

১২ নামাজে পড়া সুরা কেরাত দোয়া তাসবিহ গুলির অর্থের দিকে খেয়াল করা 

১৩এক আয়াত থেকে অন্য আয়াতের মাঝখানে বিরতি দেওয়া, অথ্যাৎ আয়াতগুলি ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়া

১৪ অত্যন্ত সুন্দর সুরে তরতিল সহকারে নামাজের সুরা কেরাত পাঠ করা

১৫ নামাজে যখন সুরা কেরাত পাঠ করা হয় তখন এটা অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে বান্দা মুলত নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে কথোপকথন করছে, আল হাকিম আল মুসতাদরাক এর একটি হাদীস রসুলে আরবী (দঃ) এরশাদ করেন যখন কেউ নামাজে দাঁড়ায় সে আল্লাহর সাথে কথা বলে সুতরাং সে কিভাবে কথা বলছে তার দিকে খেয়ালা রাখা উচিত

১৬ নামাজে দাঁড়ানোর সময় সামনে কোন আড়াল বা প্রতিবন্ধক রাখা যাকে ছুতরা বলে সহিহ আল জামের ৬৫০ নং হাদীস রসুলুল্লাহ (দঃ) বলেন নামাযের সময় তোমাদের কারো সামনে যদি কোন প্রতিবন্ধক থাকে তবে সে যেন এর কাছাকাছি হয় কারন, এতে শয়তান তাকে বিরক্ত করতে ব্যর্থ হয় 

১৭ নামাজে নম্রতার আরেকটি উপায় হয় দাঁড়ানোর সময় ডান হাতকে বাম হাতের উপরে রাখা আলেমগন বলেছেন বিশেষ ভঙ্গি হল বিনয়ী একজন কৃতজ্ঞ ফকিরের ন্যায়

১৮ সিজদার স্থানে তাকানো, হযরত আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত রসুলুল্লাহ (দঃ) তাঁর মাথাকে সামনের দিকে কাত করে দৃষ্টিকে অবনত রেখে এবং মাটির দিকে তাকিয়ে নামায আদায় করতেন, (আল হাকিম ৪৭৯)

১৯ শয়তানকে থুথু নিক্ষেপ করা- আবুল আস (রাঃ) বণনা করেন, একদিন তিনি রসুলুল্লাহ (দঃ) কে বললেন হে আল্লাহর রসুল আমি যখন নামাজে দাঁড়াই শয়তান আমাকে বিরক্ত করে, এবং তিলাওয়াতে আমি বিভ্রান্ত হই, রসুলুল্লাহ (দঃ) জবাবে বললেন, এই শয়তানের নাম খানজাব তুমি যদি তার উপস্থিতি বুঝতে পার, তবে (আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইবে, এবং তোমার বাম দিকে বার থুথু (শুকনো থুথু) ফেলবে আবুল আস বলেন এরপর আমি তাই করলাম এবং আল্লাহ শয়তান থেকে আমাকে হেফাজত করলেন (মুসলিম ২২০৩)

২০ নামাজে দাঁড়ানোর আগে আশে পাশে মনযোগ নষ্ট করে এমন কিছু থাকলে তা সড়িয়ে ফেলা হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, ঘরের পাশ্ব ঢাকার জন্য আয়শা (রাঃ) এর ১টি পরিশোভিত রঙ্গিন পর্দা ছিল রসুলুল্লাহ (দঃ) বললেন এটা আমার কাছ থেকে সরিয়ে নাও, কারন আমি যখন নামাজ পড়ি তখন এটির সাজসজ্জা আমার মনযোগ নষ্ট করে (বুখারী, ফতহুল বারী)

এর উপর ভিত্তি করে নামাজে একাগ্রতা নষ্ট হয় এমন সবকিছু থেকে বেঁচে থাকা চাই এমন জায়গায় নামাজ আদায় করার চেষ্টা করতেহবে যেখানে শোড়গোল, যাতায়াত, গল্পগুজব, প্রচন্ড রোদ, এসব থাকবে না

২১ সামনে খাবার প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে তখন খানা না খেয়ে নামাজে না দাঁড়ানো রসুলুল্লাহ (দঃ) বলেন খাবার প্রস্তুত সম্পন্ন হলে তোমরা নামায পড় না (মুসলিম)

২২ প্রকৃতির ডাক (প্রস্রাব পায়খানার) বেগ নিয়ে নামাজ না পড়া রসুলুল্লাহ (দঃ) পেশাব পায়খানার বেগ নিয়ে নামাজ পড়তে নিষেধ করেছেন ( ইবনে মাজাহ ৬১৭

২৩ নামাজের হালতে উপরের দিকে না তাকানো

২৪ নামাজে হাই আসলে তা যথাসম্ভব রহিত করা রসুলুল্লাহ (দঃ) বলেছেন, নামাজে হাই সাধ্যমত ঠেকাও, কারন শয়তান তোমাদের ভিতর ঢুকে যায় (মুসলিম ২২৯৩) আর শয়তান যদি ঢুকে যায় তাহলে নামাজের খুশু ধ্বংসে সে সফল হবে

২৫ নামাজে মাজা কোমরে হাত না রাখা- রসুলুল্লাহ (দঃ) বলেছেন এটি দোযখিদের অঙ্গভঙ্গি (বায়হাকি)

২৬ নামাজে পশুদের আচরন না করা যেমন কাকের মত টুকুর টুকুর সিজদা না দেয়া, সিজদায় কুকুরের মত হাত জমিনে বিছিয়ে না দেয়া, উটের বসার মত একই স্থানে নামাজ না পড়া, বরং মসজিদের বিভিন্ন স্থানে নামাজ পড়া উত্তম

২৭ নামাজে দাঁড়ানোর সময় মনে মনে খেয়াল রাখতে হবে আমি আল্লাহকে দেখছি আর আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়েছি, আর আল্লাহকে যদি দেখা সম্ভব না হয় তাহলে অবশ্যই আল্লাহ আমাকে দেখছেন এমন চিন্তা মনে রেখে নামাজে দাড়ানো 



খুশু একটি খুব গুরুত্বপূণ বিচায বিষয়, আল্লাহ সাহায্য ছাড়া তা সম্ভব নয় খুশু থেকে বঞ্চিত হওয়া অনেক বড় একটা বিপদ তাই রসুলুল্লাহ (দঃ) প্রায়ই দোয়া পাঠ করতেন (আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন ক্বলবিন লা ইয়াখশা) হে আল্লাহ খুশু নেই এমন আত্মা থেকে আমি তোমার আশ্রয় প্রাথনা করছি (তিরমিযি ২৭৬৯)

আশা করি এসব বিষয় খেয়াল রেখে নামাজ পড়লে নামাজে একাগ্রতা আসবে, খুশু আসবে, আল্লাহর কাছে কবুলযোগ্য শ্রেষ্ঠ নামাজ হবে আল্লাহ আমাদের সকলের নামাজের খুশুর উন্নয়ন করে নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করুন আমিন

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.