মদীনা তায়্যেবার আদাব, বিষ্ময়কর ফজিলত আশ্চয্যজনক ঘটনাবলী
মদীনা তায়্যেবার আদাব, বিষ্ময়কর ফজিলত,
আশ্চয্যজনক ঘটনাবলী
ভুমিকাঃ মদীনাতুল মুনাওয়ারায় আমাদের আঁকা করিম (দঃ) ১১ বছর অবস্থান করেন,
মদীনা হল আমাদের প্রিয় নবীর হিজরতের শহর।
এখানে ঐ ঐতিহাসিক মসজিদ অবস্থতি যা হুযুর (দঃ) নিজ হাতে বানিয়েছেন।
মক্কা ও মদীনার মর্যাদা
মক্কা খলিলুল্লাহ আবাদ করেছেন মদীনা হাবিবুল্লাহ আবাদ করেছেন
মক্কা রসুলুল্লাহর জন্মস্থান মদীনা আবাসস্থান
মক্কাতে আল্লাহ জালালিয়ত দৃষ্টিগোছর হয়, মদীনায় আল্লাহর জামালিয়ত দৃষ্টিগোছর হয়।
যেমন মক্কার লোকদের সাথে কথা বললে তা বুঝতে পারবেন, তারা বেশী জালাল বা রাগ রাগ ভাব, কিন্তু মদীনার লোকদের মাঝে দেখবেন মহব্বত আতিথেয়তা।
মক্কাতুল মুকাররমা আল্লাহর ঘর, মদীনায়ে তাইয়্যেবা রসুলুল্লাহর ঘর।
মক্কায় ১ রাকাতে ১ লক্ষ আর মদীনায় ১রাকাতে ৫০ হাজারের সমান।
মক্কার যেমন অনেক নাম মদীনারও অনেক নাম তাইয়্যেবা, তাবা, মুনাওয়ারা।
ওগো মদীনা মনোয়ারা
কে বলে তুমি মরুভুমী কে বলে তুমিসর্বহারা
ওগো মদীনা মনোয়ারা
দুনিয়ার মধ্যে সবচেয়ে ফজিলতময় জায়গা কোনটি?
সকল ওলামায়ে কেরাম এ ব্যপারে একমত যে সারা দুনিয়ায় যত জায়গা আছে ৭ আসমান ৭ জমিন এমনটি আল্লাহর আরশের চাইতে ফজিলতমন্ডিত দুনিয়ায় ১টি অংশ আছে তা হল যেখানে আমাদের প্রিয় নবী শুয়ে আছেন জমিনের সে অংশটুকু এমনকি কাবাতুল্লাহ থেকেও এ অংশটি আফযল।
সুরা তওবায় মদীনার বয়ান আছে যেমন সুরা তওবায়
(মা কানা লি আহলিল মাদিনাতি ওয়ামান হাউলাহুম মিনাল আরাবি ইলা আখেরলি আয়াত)
হুযুর (দঃ) যখন জেহাদ করার জন্য মদীনা থেকে বাহিরে তশরীফ নিয়ে গেলেন তখন যারা এ মদীনায় রয়ে গিয়েছিল তাদের জন্য জায়েজ ছিলনা হুযুরের অনুপস্থিতিতে মদীনায় অবস্থান করা।
কুরানে মদীনার বর্ণনা এভাবেও এসেছে
(লা উকছিমু বিহাজাল বালাদ ওয়া আনতা হিল্লুম বিহাজাল বালাদ) এ শহরের কসম কেননা আপনি এ শহরে অবস্থান করছেন।
কোন কোন মুফাসসিরের মতে এখানে আল বালাদ দ্বারা মদীনাকে বুঝানো হয়েছে।
মদীনা শরীফের ব্যপারে সকল ইসলামের ইতিহাসের কিতাবসমুহে বয়ান আছে, তবে ২টি কিতাব এমন যাতে মদীনা শরীফের বর্ণনা সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি বয়ান করা হয়েছে।
১) হযরত ছমহুদী (রহঃ) ৯২২ হিঃ তিনি ইন্তেকাল করেন তাঁর লিখিত কিতাব খোলাছাতুল ওয়াফা বি আখবারি দারিল মুস্তাফা তিনি মদীনা শরীফের ইতিহাস আদাব সম্পর্কে অত্যন্ত বিস্তারিত বয়ান করেছেন এ
কিতাবে। এ কিতাবে ইমাম ছমহুদী (রহঃ) মদীনা শরীফের ৯৫টি নাম জিকির করেছেন।
২) হযরত আবদুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী (রহঃ) এর কিতাব জজবুল কুলুব ইলা দিয়ারিল মাহবুব মদীনা মুনাওয়ার ইতিহাস ও ফজিলতের ব্যপারে খুবই চমৎকার কিতাব।
মদীনাকে এয়াছরিব বলার কাফফারা
এয়াছরিব অর্থ হল অলুক্ষনে
নাতের মধ্যে বলা হয়
এয়াছরিব নামে ছিলা তুমি অলুক্ষনের দেশ
বড়ই মারাত্মক যে ছিল তোমার পরিবেশ (২)
আরে নবীর ছোয়ায় হলে তুমি শাহে মদীনা
সব ভুলিব কিন্তু তোমায় ভুলতে পারিনা।
আমার সোনার মদীনা আমার প্রাণের মদীনা
সব ভুলিব কিন্তু তোমায় ভুলতে পারিনা
ভুলিনি ভুলবনা ভুলতে পারিন,
(I can not forget you dear Madina)
যখন এ শহরে আমাদের নবীজি হিজরত করলেন তখন থেকে এটি আল মাদিনাতুল মুনাওয়ারা হয়ে গেল। মুহাদ্দিসিনে একরাম বলেন এখন কেহ যদি মদীনাকে অলুক্ষুনে শহর বলে এয়াছরেব বলে তাহলে তার কাফফারা স্বরুপ তাকে ১০ বার বলতে হবে মদীনা মুনাওয়ারা।
হুযুর (দঃ) এরশাদ করেন তোমরা এখন আর এ শহরকে এয়াছরিব বলিও না এ শহর হল তাবা, এ শহর তাইয়্যেবা, তায়েবা, এর অর্থ হল পাক পবিত্র শহর। সুবহানাল্লাহ।
মদীনা ভাট্টির মত
হুযুর (দঃ) মদীনার ব্যপারে আরো এরশাদ করেন আমার এ মদীনা মুনাওয়ারা ভাট্টির মত। যেভাবে ভাট্টি লোহার ময়লাকে দুর করে দেয়, তেমনি ভাবে আমার মদীনা মুনাওয়ারা মুনাফিকদেরকে এবং যাদের ঈমানের মধ্যে দুর্বলতা আছে তাঁদেরকে বের করে দেয়
আসল কথা হল মদীনা মুনাফিককে পছন্দ করেনা মুনাফিকরাও মদীনাকে পছন্দ করে না,
আমরা মদীনার দিওয়ানা, মদীনাওয়ালার দিওয়ানা তাই আমাদের মুখেও শুধু মদীনা মদীনা
মদীনা মদীনা বলি কান্দে মম পাপিয়া
মদিনা নামের তসবিহ ফিরি গলে লইয়্যা
মদীনার ধুলা বালি মনে লয় দুহাতে তুলি
সারাটি অঙ্গে মাখি দুঃখ তাপি ভুলিয়া
মদীনার উহুদ পাহাড়
জান্নাতে যাবে।
হুযুর বলেন আমি উহুদ পাহাড়কে ভালবাসি একবার সাহাবাগন প্রশ্ন করল এয়া
রাসুলাল্লাহ সব পাথর জাহান্নামের ইন্ধন হবে এমন কোন পাথর বা পাহাড় কি আছে যা
জান্নাতে যাবে? হুযুর বলেন হ্যাঁ এমন এক পাহাড় আছে যা জান্নাতে যাবে তা হল উহুদ
পাহাড় যে পাহাড় মদীনায় অবস্থিত।।
মদীমদীনার মুনাফিক ও যলযলাঃ
হুযুর (দঃ) আরো এরশাদ করেন- কেয়ামতের আগে একটি যলযলা আসবে সে যলযলার পর মদীনায় অবস্থিত সকল মুনাফিক ও দুর্বল ঈমানদারগন মদীনা ছেড়ে পালিয়ে যাবে।
মদীনার মুনাফিকদের লাশ
মুহাদ্দিসিনে কেরাম বয়ান করেন মদীনায় যে সব মুনাফিক আছেন তারা যখন মৃত্যু বরণ করেন তাদেরকে যদি মদীনায় দাফন করা হয় তাদের সে লাশ ফেরেশতাগন সেখান থেকে বের করে দেন এবং সেখানে অন্য স্থান থেকে কোন মুমিন মুত্তাকিকে এনে রেখে দেন।
হিজরতের সময় মহানবীর মদীনার জন্য দোয়া
হিজরতের সময় হুযুর (দঃ) কাবা ঘরের দিকে তাকিয়ে বললেন হে রাব্বে কারিম আমার নজরে এ কাবা ঘর জমিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রিয় স্থান হে আল্লাহ আমি এখন যে দিকে হিজরত করছি সে জায়গাটাকেও জমিনের সবচেয়ে প্রিয় টুকরা বানিয়ে দাও।
মদীনার নামসমুহ ও একে কি নামে ডাকবেন?
মদীনা তাবা তায়েবা তাইয়্যেবা ছাড়াও আরো অসংখ্য নাম রয়েছে, বাইতে রাসুল, মাহবুবা, হাবিবা, হারাম,
আছেমা- যে শহরের হেফাজতের জিম্মা আল্লা নিয়েছেন, আছেমার অপর অর্থ হল রাজধানী।
মাছুমা- আল্লাহ তায়ালা এ শহরকে দাজ্জাল এর ফিতনা থেকে মাহফুজ রাখবেন তাই এর নাম মাছুমা।
সৈয়্যেদুল বুলদান- সারা বিশ্বের সকল শহরের সরদার।
মদীনাতুন্নবী (দঃ) এভাবে ৯৫টি সুন্দর সুন্দর নাম মদীনার রয়েছে। সুবহানাল্লাহ। প্রত্যেক ঈমানদারের উচিত এ মদীনা শরীফের নাম নেয়ার সময় মদীনা তাইয়্যেবা, মদীনা মুনাওয়ারা, মদীনা পাক, মদীনা শরীফ এভাবে বলা।
মদীনা মক্কা থেকে কিভাবে আফযল হতে পারে?
মক্কা আল্লাহর ঘর আর মদীনা হল রসুলুল্লাহর ঘর, আর পৃথিবীর সকলে এ বিষয়ে একমত যে আল্লাহর যত মাখলুক আছেন সকল মাখলুক থেকে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়তম মাখলুক হলেন হুযুর (দঃ) তাই হুযুর (দঃ) যে স্থানে শুয়ে আছেন সে স্থানটি আল্লাহর কাছে আল্লাহর ঘরের চাইতেও আফযল। এতে কোন ধরনের এতেরাজ নাই। এরপরও যাদের অন্তরে নবীপ্রেম নাই তারাই এসব বিষয়ে বিতর্ক করে।
সফর থেকে মদীনায় আসার সময় মহানবীর অবস্থা মদীনার প্রতি মহানবীর মহব্বত
হুযুর (দঃ) মদীনাকে পরে পছন্দ করেছেন হুযুরের আগে
মদীনাকে আল্লাহ পছন্দ করেছেন। সে জন্যই আল্লাহ তার মাখলুকের সবচেয়ে প্রিয় সৃষ্টি
তাঁর হাবিববে কেয়ামত পর্যন্ত মদীনাতেই থাকার ব্যবস্থা করেছেন।
হুযুর মদীনাকে কেমন মহব্বত করতে তা বুখারী মুসলিম
এর মুত্তাফাক আলাই হাদীস শুনলে বুঝতে পারবেন-
হুযুর (দঃ) যখনই কোন সফর কিংবা জিহাদ থেকে মদীনার বাহির থেকে মদীনার দিকে আসতেন যখনই
মদীনার প্রতি দৃষ্টি পড়ত তিনি নিজের ছাওয়ারীর স্পীড বাড়িয়ে দিতেন, নিজের চাদর মোবারক চেহেরা থেকে সরিয়ে দিতেন আর বলতেন (হাজিহি আরওয়াহু তাইবা) মুলত মদীনার বাতাস থেকে মদীনা তাইয়্যেবার খুশবু নিতেন
সুনহানাল্লাহ হু।
হুযুর (দঃ) এরশাদ করেন (মান সাবারা আরা আজাহা) যে মদীনায়ে তাইয়্যেবার মুশকিল সময়ে সবর করল কিয়ামতের দিন আমি তার জন্য শাফায়াত করব।
সে জন্য মদীনা শরীফে কোন ধরনের কষ্ট হলে তাতে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করা নিষেধ, মদীনার কোন কিছু অপছন্দনীয় এমন বলা নিষেধ।
মদীনার দই টকঃ
এক বুযুর্গ মদীনায় গিয়ে দই খেল আর বলল মদীনার দই টক, সে রাতে তিনি হুযুর (দঃ) কে স্বপ্নে দেখলেন তিনি সে বুযুর্গের প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশকরল, তখন বুযুর্গ হুযুরকে বলল হুযুর আপনি আমার উপর নারাজ কেন? তখন হুযুর তাঁকে বলল তোমার আমার শহরের দই ভাল লাগে না?
সে জন্য হুযুর (দঃ) এরশাদ করেছেন যে মদীনার কষ্টের মাঝে সবর করল তার জন্য আমি কেয়ামতের দিন সুপারিশ করব।
মদীনায় মৃত্যু বরণের ফজিলতঃ
হুযুর (দঃ) এরশাদ করেন (মানিস তাতাআ আয়্যামুতা বিল মাদিনাতে ফাল এয়ামুত বিহা) যে ব্যক্তি মদীনায় মৃত্যু বরণ করার সামর্থ রাখে সে যেন মদীনায় শেষ সময় পার করার চেষ্টা করে কেননা যে মদীনায় মৃত্যু বরণ করবে কেয়ামতের দিন আমি তার জন্য শাফায়াত করব।
ইমাম মালেকের ১ বার হজ্ব করার কারনঃ
ইমাম মালেক (রহঃ) মদীনার বাসিন্দ অনেক বড় ফিকার ঈমাম, উনি জীবনে মাত্র ১ বার হজ্ব করেছেন, এর কারন হিসেবে তিনি বলেন হজ্ব একবার আদায় করা ফরয, কিন্তু আমি ভয় করি হজ্বে গিয়ে যদি আমার মৃত্যু মদীনার বাহিরে হয়ে যায়, আমি চাই আমার মৃত্যুটা মদীনাতে হউক সে আশায় আমি মদীনা থেকে বাহিরে যাওয়াটা পছন্দ করি না।
হযরত ওমর (রাঃ) এর দোয়া
হযরত ওমর (রাঃ) একটি দোয়া করতেন (আল্লাহুম্মারজুকনি শাহাদাতান ফি ছাবিলিক ওয়াজায়াল মাউতি ফি বালাদি রাসুলিক) হে আল্লাহ আমাকে আপনার রাস্তায় শাহাদাত নসিব করুন আর আমাকে আপনার রসুলের শহরে মৃত্যু নসিব করুন।
মদীনায় দাজ্জালের ফিতনাঃ
হুযুর (দঃ) এরশাদ করেন মদীনা মুনাওয়ারা দাজ্জালের ফিতনা থেকে মাহফুজ থাকবে। দাজ্জালের বাহিনি উহুদ পাহাড়ের কাছে আসলে আল্লাহর ফেরেশতারা তাদেরকে মদীনায় ঢুকতে দিবে না, তারা সেখান থেকে ফিরে যেতে বাধ্য হবে।
মদীনার মাটিতে শেফাঃ
হুযুর (দঃ) মদীনার মাটির ব্যপারে এরশাদ করেন মদীনার মাটিতে শেফা রয়েছে। হযরত মজদুদ্দিন ফিরোজাবদী (রহঃ) বলেন একবার আমার সবচেয়ে প্রিয় গোলামটি প্রচন্ড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গেল, অনেক ধরনের চিকিৎসার পরও তার জ্বর ভালো হচ্ছিল না তখন আমি মদীনা মনোয়ারার খাকে শেফা ১ গ্লাস পানির সাথে মিক্স করে তাকে পান করানোর সাথে সাথে তার জ্বর ভাল হয়ে গেল। সুবহানাল্লাহ।
হুনায়ন যুদ্ধে মালে গনিমত বন্টন ও আনসারদের মনোভাব
হুযুর (দঃ) হুনায়নের যুদ্ধ লব্দ সম্পদ মালে গনিমত যখন বন্টন করছিলেন তখন মক্কা থেকে আগত নব নব কিছু মুসলমানকে বেশী দিলেন, তখন কতিপয় আনসার যুবক চিন্তা করতে লাগল হুযুর (দঃ) মদীনা থেকে হয়ত মক্কা বীজয় করে মুহাজিরদের নিয়ে মক্কায় চলে যাবেন, আমরা একা হয়ে যাব তখন তাদের এ মনোভাব হুযুর জানতে পেরে মদীনার সকল আনসারদের একত্র কলে ভাষন দিলেন বললেন (এয়া মাশারাল আনসার, আলা তারদাউনা এয়া মাশারাল আনসার,)
হে মদীনার আনসার তোমরা কি এ কথার উপর রাজি নও, অন্যান্য লোকেরা দুনিয়ার মাল দৌলত নিয়ে যাবে আর তোমরা আল্লাহর রসুলকে নিজেদের সাথে নিজেদের শহর মদীনা মনোয়ারায় নিয়ে যাবে?
হুযুরের এমন বক্তব্য শুনে মদীনার আনসারগণ এতই খুশী হলেন যা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়।
বায়তুল মাকদেস ও মসজিদে নববী
হুযুর (দঃ) এরশাদ করেন কেয়ামতের আগে মদীনা মুনাওয়ারা বিরান হয়ে যাবে, আল্লাহর রাসুল বলেন যখন দেখবে বায়তুল মকদস মুসলমানদের হাত থেকে গিয়ে ইহুদীদের দখলে চলে যাবে ইহুদীদের দ্বারা বায়তুল মকদস আবাদ হবে তখন মদীনা মুনাওয়ারায় মসিবতের পাহাড় নাযিল হবে। এবং তখন মদীনা মুনাওয়ারায় অনেক ক্ষতি করবে এবং অনেক বড় এক যুদ্ধ শুরু হবে যা ইমাম মেহেদী (আঃ) এর প্রকাশ হওয়ার আগে আগে শুরু হবে। যাকে হাদীসে পাকে আল মালহামা বলা হয়েছে।
প্রিয় হাজেরিন অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আমরা সে যুগ পার করছি, বায়তুল মাকদাস মুসলমানদের থেকে হাতছাড়া হয়ে গেছে, ইহুদীরা দখল করে নিয়েছে আর তাতে তারা আবাদ করা আরম্ভ করে দিয়েছে। ওয়াল্লাহু আলামু ওয়া রাসুলুহু আলামু।
তাছাড়া হুযুর (দঃ) এটাও এরশাদ করেছেন মদীনা থেকেই ঈমান ইসলাম প্রচার শুরু হয়েছে আর কেয়ামতের আগে সারা পৃথিবী থেকে ঈমান মদীনাতে এমনভাবে ফিরে আসবে যেভাবে সাপ তার গর্তে পুনরায় ফিরে আসে।
মসজিদে নববীর ইতিহাস ফজিলতঃ
বর্তমানে মসজিদে
নববী অনেক বড়, মুলত হুযুর (দঃ) এর জামানায়
গোটা মদীনা শহরই মসজিদে নববীর ভিতর ঢুকে গেছে। হুযুর (দঃ) এরশাদ করেন
যদি আমার এ মসজিদ বড়
হতে হতে ইয়েমেন পর্যন্তও হয়ে যায় তবুও এটি আমারই মসজিদ হবে। সুতরাং বর্তমানে মসজিদে নববী হুযুরের সেই ছোট্ট মসজিদ নাই তবুও এর গোটা যে বিশাল এরিয়া আছে বর্তমানে পুরাটাই মসজিদে নববী হিসেবেই গন্য এর এর যে কোন অংশেই আপনি নামাজ পড়লে মসজিদে নববীর ফযিলত প্রাপ্ত হবেন। তবে আপনারা ভাল করে খেয়াল করলে দেখবেন হুযুরের জামানায় মসজিদে নববীর যতটুকু সীমানা ছিল সে সীমানা গুলিতে যে সব পিলার আছে তাতে গোল্ডেন কালারে লেখ আছে (হাজা হুদুদে
মসজিদে নববী (দঃ) ।
ওয়ালিদ বিন আবদুল মালিক বিন মারওয়ান এর
জামানায় মসজিদে নববী সম্প্রসারণ করার স্বার্থে হুযুর (দঃ) এর রওজার
আশে পাশে উম্মাহাতুল মুমিনিনগনের যে সব ঘর যার জিকির কুরানে রয়েছে এবং সুরাতুল হুযরাত নামে গোটা ১টি সুরা নাজিল হয়েছে সে সব হুজরা মোবারকসমুহ ভেঙেগ ফেলা হয়, বর্তমানে যদি
কেহ মসজীদে নববীতে জেয়ারতের সুযোগ হয় সেখানে মিউজিয়াম আছে তাতে সে সব ঘরসমুহের ডামি বানানো আছে যা দেখলে বুঝতে পারবেন হুযুরের ঘরসমুহ কতইনা সাদাসিদা ছিল।
সুলতান নুরুদ্দীন (রহঃ) এর সময়কার ঘটনা মহানবীর লাশ চুরী
সুলতান নুরুদ্দীন
জঙ্গী (রহঃ) এর সময়কার
একটি ঘটনা যা আকাবিরে মুহাদ্দিসিন তাদের স্বীয় কিতাবে উল্লেখ করেছেন, শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দেস দেহলভী (রহঃ) তাঁর যযবুল
কুলুবেও এ ঘটনা নকল
করেছেন।
সুলতান নুরুদ্দীন (রহঃ) এর ব্যপারে
বর্ণিত আছে হযরত ওমর বিন আবদুল আজিজের পর একজন সফল মুসলিম রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে সুলতান নুরুদ্দীন এর নাম প্রথমে চলে আসে। তিনি খুব বেশী দুরুদ শরীফ পাঠ করতেন। তাহাতাহাজ্জুদ গুজার ছিলেসারা দুনিয়ার এত মুসলিম রাষ্ট্র্রপ্রধান থাকা সত্বেও হুযুর (দঃ) সুলতান নুরুদ্দীনের
স্বপ্নে আগমন করলেন এবং তাকে স্বপ্নে ২ জন লোকের
চেহেরা দেখানো হল, এবং ফরমালেন
আমাকে এ দুইজন লোক
থেকে হেফাজত কর।
সুলতান নুরুদ্দীন
তাঁর উজিরের সাথে যখন এ স্বপ্নের কথা
আলোচনা করলেন উজির বললেন চলুন আমরা মদীনার দিকে ১৬ হাজার সৈন্য নিয়ে রওয়ানা দিলেন, সুলতান নুরুদ্দীন বললেন এ কথা কাউকে
প্রকাশ করা যাবে না, সেখানে গিয়ে
ব্যবস্থা করতে হবে, সুলতান নুরুদ্দীন
যখন মদীনায় পৌঁছেন দেখেন মদীনায় গত রাতে ভুমিকম্প হয়েছে প্রচুর বৃষ্টিপাতও হয়েছে, লোকজন মদীনা শরীফে ভুমিকম্প হওয়ায় খুবই পেরেশান, তিনি মদীনার যত জেয়ারতকারী আছেন সকলকে দাওয়াত দিলেন এবং সকলকে নিজের হাতে উপহার বন্টন করলেন, কিন্তু সুলতান নুরুদ্দীন স্বপ্নে দেখা সে ২ জন লোককে
দেখলেন না, তিনি জিজ্ঞেস
করলেন আর কেউ কি বাকী আছেনে যারা আমার দাওয়াতে আসেনি। তখন লোকজন বলতে লাগল ২ জন বুযুর্গ
আছে তারা রাত দিন এবাদতে মশগুল থাকে, সুলতান নরুদ্দীন নিজেই উনাদের সাথীদের নিয়ে সেখানে উপস্থিত হলেন তাদের ঘরে ঢুকে দেখলেন সে ঘরটি হুযুর (দঃ) এর রওজার
খুবই নিকটে ছিল, সুলতান নুরুদ্দীন
তাদের দেখেই বলে উঠলেন এরাই সে লোক যাদের চেহেরা আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। অতঃপর মদীনার প্রশাসনিক লোকজনকে খবর দেয়া হল তারা এসে সে ঘর যখন তালাশ করা আরম্ভ করল দেখা গেল তারা যে বিছানায় ঘুমাতো সে বিছানার নিজে বড় এক পাথর সে পাথর সরানো হলে দেখা গেল একটি সুরঙ্গ নাউজুবিল্লাহ। সে সুড়ঙ্গ তারা ৩ বছর যাবৎ করে আসছিল প্রতি রাতে অল্প অল্প করে মাটি
তুলে তারা থলেতে ভরে জান্নাতুল বাকী জেয়ারতের নামে সেখানে রেখে আসত, রাতের
অন্ধকারে করে আসছিল তাদের উদ্দেশ্য ছিল হুযুর (দঃ) এর শরীর
মোবারক রওজা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া, তারা প্রায় হুযুরের রওয়ার একেবারে নিকটে পৌঁছে গেলে ভুমিকম্প শুরু হয়ে যায় এবং তারা সে রাতে ফিরে আসে, আর পরের
দিনই তারা গ্রেফতার হয়। সুবহানাল্লাহ। এ ঘটনার পর
সুলতান নুরুদ্দীন এত বেশী কান্না করলেন, কারন সারা দুনিয়ায় অসংখ্য মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধান আছেন কিন্তু হুযুর (দঃ) উনাকেই এ
কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন। ৫৫০ হিজরী সনে এ ঘটনা সংগঠিত
হয় হযরত নুরুদ্দীন জঙ্গীর মাজার দামেস্কে অবস্তিত।
গুনাহ মাফের জন্য হুযুরের দরবারে হাজিরি
(ওয়ালাউ আন্নাহুম ইজ জালামু আনফুসাহুম)
অনেকে বলতে
পারে এ আয়াত হুযুরের
জীবদ্ধশায় কিন্তু সাহাবাদের আমল থেকে আমরা জানতে পারি এ আয়াত হুযুরের
ইন্তেকালের পরও কার্যকর যেমন হাদীস শরীফে আছে-
এক আরাবী
মসজিদে নববী শরীফে এসে হুযুর (দঃ) এর সাথে
সাক্ষাৎ করতে চায়, সাহাবাগন তাকে
সামনে যেতে বলে তিনি সামনে যেতে যেত একদম হুযুরের রওজার পাশে চলে আসে, সেখানে হযরত্
আলীকে সে আরাবী হুযুরের সাথে সাক্ষাতের দরখাস্ত করে আলী (রাঃ)
সে আরাবীকে হুযুরের কবরে আনোয়ারকে দেখিয়ে দেয়, মুলত সে
আরাবী জানত না হুযুর (দঃ) এর বেছাল
হয়েছে, সে যখন দেখল হুযুর এর কবর তখন সে এত বেশী কান্না করল যে কাঁদতে কাঁদতে সে বেহুশ হয়ে পড়ে গেল, যখন হুশ
ফিরে আসল সে উঠে চলে যাচ্ছিল তখন হুযুরের কবরে আনোয়ার থেকে আওয়াজ আসল (ক্বাদ গুফিরা
লাকা) তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে।
নবীজির ইন্তেকালের পর রওজা মোবারকের প্রতি সাহাবাদের আদব কেমন ছিল?
হযরত বেলাল ও নবীজির রওজাঃ হযুর (দঃ) যখন ইন্তেকাল
করলেন হযরত বেলাল (রাঃ) নবীর বিরহ
সহ্য করতে না পেরে মদীনা থেকে শাম দেশে চলে গেলেন, বেশ কয়েম মাস পর তিনি মদীনায় হুযুরের জেয়ারতে আসলেন, বেলালকে দেখে হযরত আবু বকর (রাঃ)
নবীর সামনে হযরত বেলাল যে আযান দিত সে আযান দেয়ার অনুরোধ করলেন, কিন্তু বেলাল অপারগতা প্রকাশ করলেন বললেন হে আমিরুল মুমিনিন আমি যখন আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ বলতাম তখন হুযুরের চেহেরার দিকে দেখে দেখে বলতাম এখন যখন এ কলমা পড়ব
হুযুরের চেহেরা দেখতে পাব না তখন আমি আর হুশ ঠিক রাখতে পারব না, কিন্তু সে
সময় ইমাম হাসান ও ইমাম হোসেন
হুজরা থেকে এসে গেলেন তারা নবীজির কলিজার টুকরা নাতি, তারা যখন অনুরোধ করতে রাগল চাচা আমার নানা জানের সামনে আপনি যে আযান দিতেন সে আযানটা একটাবার দেন, তখন হযরত
বেলাল আযান দেয়া শুরু করলেন বেলাল এর কন্ঠ শুনে মদীনায় হৈচৈ পড়ে গেল সকলে দৌঁড়ে দৌঁড়ে মসজিদে নববীর দিকে ছুটে আসল যখন হযরত বেলাল আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলাল্লাহ বলছিল তখন গোটা মদীনা শহরে মসজিদে নববীতে এমন কান্নার রোল পরে গেল মনে হচ্ছিল আজই হুযুর (দঃ) ইন্তেকাল করেছেন, আর বেলালও কাঁদতে কাঁদতে বেহুশ হয়ে পড়ে গেল আযান শেষ করতে পারল না।
এমনই ছিল
সাহাবাদের মহব্বত ও ভালবাসা।
আবু আইয়ুব আনসারীর কান্নাঃ হযরত মারওয়ান বিন হাকাম দেখলেন এক লোক নবীজির রওজার পাশে বসে বসে জারো কাতার কান্না করছেন তিনি তাকে পিছন থেকে ধরলেন বুঝাতে চাইলেন এখানে কাঁদিও না, তিনি মুখ
ফিরালেন মারওয়ান দেখলেন যিনি কাঁদছেন তিনি হলেন হুযুরের সাহাবী হযরত আবু আইয়ুব আনসারী, তখন আবু আইয়ুব বললেন ( ইন্নি লাম আতিল হাজর, ওয়ালাম আতিল লুবান, ইন্নামা জিইতু রসুলাল্লাহে ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াছাল্লাম) অথ্যাৎ আমি কোন পাথর কিংবো কোন ইটের কাছে বসিনি আমি রসুলুল্লাহর কাছে এসেছি।
মদীনায় এজিদের হামলা ও হযরত সাঈদ বিন মুসায়্যেব (রাঃ)
এজিদী বাহিনি
মসজিদে নববীতে কারবালার ঘটনার পর হামলা করে মসজিদে নববীতে তারা তাদের ঘোড়া বাঁধে, এজিদি বাহিনির ভয়ে কেহ মসজিদে নববীতে আসতে পারত না, হযরত সাঈদ
বিন মুসায়্যেব (রাঃ) বলেন আমি
পাগলের বেশ ধরে মসজিদে নববীতে অবস্থান করছিলাম এজিদি বাহিনি আমাকে পাগল ভেবে ছেড়ে দেয় আমি আল্লাহর কসম করে বলছি যখনই নামাজের সময় হত তখন হুযুর (দঃ) এর রওজা
মোবারক থেকে আমি আযানের আওয়াজ শুনতাম।
নবীর রওজায় উচ্চ আওয়াজঃ আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন (লা তারফাউ আসওয়াতাকুম ফাউকা ছাউতিন নবিয়্যি) তোমরা তোমাদের কন্ঠস্বর নবীর আওয়াজের উপর উচ্চ করিওনা) এ আয়াতের হকুম
নবীর বেছালের পরও মওজুদ, তাই খেয়াল করবেন মদীনা শরীফের মধ্যে একটা নিস্তব্দতা বিরাজ করে। শোর চিৎকার খুবই কম।
একদিন এক
লোক হুযুরের বারেগাহের পাশে বড় আওয়াজে কথা বলছে দেখে হযরত ওমর (রাঃ)
তাকে ধমকি দিলেন। সুবহানাল্লাহ।
মদীনায় সেলফিঃ
মুলতঃ নবীজির রওজা হল অত্যন্ত আদবের স্থান, এখানে সকাল সন্ধ্যা ৭০ হাজার ফেরেশতা প্রতিদিন হাজিরি দেন, যেখানে দুনিয়ার
বড় বড় ওলিআল্লাহগন পর্যন্ত অত্যন্ত আদবের কারনে চোখ তুলতে সাহস করেনা, সেখানে আজ আমরা গিয়ে নবীর রওজার সামনে ছবি তুলি ভিডিও বানিয়ে থাকি, নাউজুবিল্লাহ।
হাদীসঃ হুযুর (দঃ) এরশাদ করেন
(তুরাদু আলাইয়্যা আমালাকুম) তোমাদের আমলসমুহ আমার কাছে পেশ করা হয় যদি তাতে ভাল দেখি আমি খুশিহই এবং শোকর আদায় করি, আর যদি
খারাপ দেখি তাহলে আমি গুনাহ মাফ চাই।
সুতরাং আমাদের
আমল যে নবীর কাছে পেশ করা হয়, যে নবীর
রওজায় গিয়ে মাফ চাইলে নবীও যদি আমাদের জন্য মাফ চান তাহলে আল্লাহ গুনাহ মাফ করে দিবেন বলে ঘোষনা করেছেন তখন আমাদের প্রত্যেকের উচিত সে দরবারে অত্যন্ত আদব বজায় রাখা এবং সেখানে নিজের গুনাহ সমুহ ক্ষমা করানোর জন্য বার বার হাজিরি দিয়ে গুনাহ মাফ চাওয়া, যদি একবার হুযুরের নজরে করম পড়ে যায় তাহলে আপনার বেড়া পার।
নবীজির রওজায় কোন দিকে ফিরে দোয়া করা উচিত?
আব্বাসীয় খেলাফতের
বাদশা আবু জাফর মনসুর হযরত ইমাম মালেক (রহঃ) প্রশ্ন করল
আমি কি নবীজির রওজার সামনে নবীজির চেহেরার দিকে ফিরে দোয়া করব নাকি কেবলার দিকে ফিরে দোয়া করব?
ইমাম মালেক (রহঃ) এ প্রশ্নে
জবাব দিলেন (ওয়ালিমা তাছরিফু? ওয়াজহাকা আনহু?) তুমি হুজুরের দিক থেকে নিজের চেহেরা কিভাবে ফিরিয়ে নিবে? (ওয়াহুয়া ওয়াছিলাতুকা ওয়া ওয়াছিলাতু আবিকা আদম আলােইহিস সালাম) তিনি তোমারও অছিলা তোমার বাবা আদম (আঃ)
ও অছিলা। (বাল ইসতাকবালহু) সুতরাং তুমি হুযুরের দিকে নিজের চেহেরা ফিরিয়ে নাও হুযুরের চেহেরাকে নিজের কেবলা বানিয়ে নাও। আল্লাহ তোমার জন্য হুযুরের শাফায়াত কবুল করবেন।
মসজিদে নববীর পিলার (উসতুয়ানা) পরিচিতি
মসজিদে নববীতে
দেখবেন হুযুর (দঃ) এর রওজা
মোবারকের কাছাকাছি আশা পাশে যে সব পিলার আছে সে সব পিলারের উপর সবুজ রং এর উপর গোল্ডেন কালারের কিছু লেখা আছে তাতে পিলার সমুহের নাম এসব নাম ও পিলারের সাথে
মসজিদে নববীর কিছু ঘটনা জড়িত আছে।
উসতুয়ানায়ে সারির: সারিরুন
অর্থ হল খাট, পালং এ
পিলারটি আপনি যদি মসজিদে নববীতে গিয়ে হুযুরের রওজার পাশে যান এবং কেবলার দিকে আপনার মুখ হয় তাহলে আপনার ডান দিকে প্রথম ১টি পিলার দেখতে পাবেন তাতে লেখা আছে উসতুয়ানায়ে সারির। এখানে হুযুর (দঃ) এতেকাফ করতেন
আর এখানে হুযুরের বিছানা বা খাট স্থাপন করা হত তাই এখানের পিলারটির নাম করণ হয়েছে উসতায়ানায়ে সারীর।
উসতুয়ানায়ে উফুদঃ উসতুয়ানায়ে
সারির এর সামান্য পিছনে আসলে আরো ১টি পিলার রয়েছে যার নামকরণ করা হয়েছে উসতুয়ানায়ে উফুদ। হুযুর (দঃ) এর জামানায়
হুযুরের সাথে অন্যান্য কবিলা বা দেশ থেকে কোন দল উপদাল যখন দেখা করতে আসত তাদের সাথে হুযুর (দঃ) এখানে সাক্ষাৎ
করতেন কথা বলতেন।
উসতুয়ানায়ে আলীঃ উসতুয়ানায়ে
উফুদের পাশে অন্য একটি পিলার তার নাম উসতুয়ানায়ে আলী, এ পিলার
যেখানে সেখানে হযরত সৈয়্যূদুনা হযরত আলী (রাঃ)
হুযুরের বডি গার্ড হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকতেন।
উসতুয়ানায়ে তওবাঃ আরো
একটু ডানে আসলে ১টি পিলার যার নাম উসতুয়ানায়ে তওবা, যা হযরত আবু লুবাবা (রাঃ) এর ঘটনা
যিনি নিজেকে এ পিলারের সাথে
বেঁধে ফেলেছিলেন এবং কুরানে মজিদের আয়াত নাজিল হয়েছিল।
উসতুয়ানায়ে আয়শা সিদ্দিকাঃ
নবী করিম (দঃ) একদিন এরশাদ
করলেন আমার মসজিদে এমন একটি জায়গা আছে যে ব্যক্তি সে স্থানে ২ রাকাত নফল
নামাজ পড়বে এবং দোয়া করবে তার সে দোয়া বাতিল হবে না, অবশ্যই কবূল
হবে, সাহাবাগন খুবই
আকাংখা প্রকাশ করল সে জায়গাটি সম্পর্কে জানার জন্য, সকলের মনে একটা আকাংখা সৃষ্টি হল, কিন্তু হুযুর
সে স্থানটি কোনটি তা না বলে হুযুর (দঃ) নিজের হুজরা
মোবারকে তশরীফ নিয়ে গেলেন, কিছুক্ষন পর আয়শা সিদ্দিকা বাহিরে এসে একটি স্থানে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া আরম্ভ করে দিলেন, তখন সাহাবাগন বুঝতে পারলেন এটাই সে জায়গা যেটির কথা কিছুক্ষন আগে হুযুর (দঃ) বলেছেন। সে স্থানে ১টি পিলার আছে তার নামকরণ করা হয়েছে উসতুয়ানায়ে আয়শা।
উসতুয়ানায়ে হান্নানার ঘটনাঃ
হুযুরের জীবদ্ধশায়
তিনি এক খেজুর গাছের খুঁটির সাথে হেলান দিয়ে খুতবা দিতেন, এক সাহাবী একদিন ১টি কাঠের মিম্বর নিয়ে এলেন হুযুর সে মিম্বরে দাঁড়িয়ে খুতবা দিতে লাগলেন, হঠাৎ উটের বাচ্চা যেমন তার মাকে হারিয়ে করুন সুরে কান্না করে সেরকম কান্নার আওয়াজ আসতে লাগল সকল সাহাবা আশ্চর্য্য হয়ে এদিক সেদিক তাকাতে লাগল কে কাঁদছে বুঝতে পারছিলনা,
হুযুর (দঃ) মিম্বর থেকে
নেমে সে খুঁটির কাছে গিয়ে সে খুঁটিটি জড়িয়ে ধরলে এমন ভাবে হেচকি দিতে দিতে সে খুঁটিটি শান্ত হল যেমন কান্নারত সন্তানকে মা কোলে নিলে শান্ত হয়। হুযুর সে মরা খুঁটির সাথে কথা বললেন তাকে জিজ্ঞেস করলেন যদি তুমি চাও আমি তোমাকে মদীনার বাগানে লাগিয়ে দিতে পারি তুমি ফল ফুলে ভরপুর হবে অথবা তুমি যদি চাও আমি তোমাকে জান্নাতের বাগানে লাগিয়ে দিতে পারি সেখানে নবী ছিদ্দিকগন জান্নাতীগন তোমার ফল খাবে, খেঁজুর খুঁটি ২য় অপশন পছন্দ করল অতঃপর হুযুর (দঃ) সে খুঁটিটিকে
মিম্বরের সামনে মাটি খুঁড়ে সেখানে দাফনের ব্যবস্থা করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ।
হায় হায় উসতুনে হান্নানা একটা খেজুর গাছের নাম
যাকে ধরে খুতবা দিতেন রাসুলে আকরাম (২)
ও ভাই নবীর বিরহে গাঁছ কাঁদিতে রহে
হতভাগ হইল যত সাহাবা একরাম
আল্লাহ তায়ালা
আমাদেরক হুযুর (দঃ) এর রওজা
মোবারক জেয়ারতের সৌভাগ্য নসিব করুন আমিন।
কোন মন্তব্য নেই