বছরের শেষ জুমা। জুমার ফজিলত, আমল ও দোয়া দরুদ Ja al haq/ Moulana Mohammed...







৩০ আগষ্ট বছরের শেষ জুমা
জুমার ফজিলত দোয়া ও আমলসমুহ

ইসলামি শরিয়তের বিধানে জুমার দিনের
মাহাত্ম্য সীমাহীন। এই দিন মানব জাতির আদি পিতা- হজরত আদম (আ.) এর দেহের বিভিন্ন
অংশ সংযোজিত বা জমা করা হয়েছিল বলেই দিনটির নাম জুমা রাখা হয়েছে। জুমার দিনকে
আল্লাহ্পাক সীমাহীন বরকত দ্বারা সমৃদ্ধ করেছেন। এটি সপ্তাহের সেরা দিন। হাদিস
শরিফের বর্ণনা অনুযায়ী এই বরকতময় দিনটি আল্লাহ্পাক বিশেষভাবে উম্মতে মুহাম্মদিকে
(সা.) দান করেছেন। নবি করিম (সা.) ইরশাদ করেন
, সর্বাপেক্ষা উত্তম ও বরকতময় দিন হচ্ছে জুমার দিন। এই পবিত্র দিনে হজরত আদম
(আ.) কে সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং এই দিনে তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়। (মুসলিম
শরিফ)
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন
, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, জুমআ এবং রমজানের মধ্যবর্তী সময়ে যে সব গোনাহ
হয়ে থাকে তা পরবর্তী নামাজ
, জুমআ এবং রমজান (পালনে) সে সব মধ্যবর্তী
গোনাহসমূহের কাফফারা হয়ে থাকে। যদি কবিরা গোনাহ থেকে বেঁচে থাকে।
’ (মুসলিম, তিরিমজি)
উল্লেখিত হাদিসেরর আলোকে বুঝা যায় যে, কোনো ব্যক্তি যদি ফজরের নামাজ পড়ার পর পরদিন ফজরের নামাজ আদায় করে তবে এ সময়ে
মধ্যে করা সব (কবিরা গোনাহ ব্যতিত) গোনাহ আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দিবেন।
অনুরূপভাবে এক জুমআ থেকে অপর জুমআ এবং এক রমজানের রোজা আদায়ের পর থেকে পরবর্তী
রমজানের রোজা আদায় করে তবে ওই ব্যক্তির দ্বারা সংঘটিত পূর্ণ এক বছরের সব (কবিরা
গোনাহ ব্যতিত) গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে।
জুমআর দিন মুসলিম উম্মাহর জন্য রয়েছে
ফজিলতপূর্ণ অনেক আমল।
জুমার দিন ফজর থেকে মাগরীবের মধ্যবর্তী
সময়ে পবিত্র কোরানের সূরা ইয়াছিন
, সূরা হুদ, সূরা কাহাফ এবং
সূরা দোখান তেলাওয়াত কর
, এই সূরাগুলিতে
বর্ণিত বিষয়বস্ত্ত- অনুধাবন ও চিন্তাভাবনা করার বিশেষ ফজিলতের কথা হাদিস শরিফের
বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছে।
>> জুমআর দিনে সুরা কাহফতেলাওয়াত
করা
পবিত্র কুরআনুল কারিমের ১৫তম পারার ১৮নং সুরা এটি। যদি কেউ সম্পূর্ণ সুরাটি
তেলাওয়াত করতে না পারে তবে সে যেন এ সুরার প্রথম এবং শেষ ১০ আয়াত তেলাওয়াত করে।
ফজিলত

-
যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠ করবে তার
জন্য এক জুমা থেকে অপর (পরবর্তী) জুমা পর্যন্ত নূর হবে।
- যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ তেলাওয়াত
করবে
, সে আটদিন পর্যন্ত সর্বপ্রকার ফেতনা থেকে
মুক্ত থাকবে। যদি দাজ্জাল বের হয় তবে সে দাজ্জালের ফেতনা থেকেও মুক্ত থাকবে।
- এক জুমা থেকে অপর জুমা পর্যন্ত তার সব (কবিরা
গোনাহ ব্যতিত) গোনাহ মাফ হয়ে যাবে।
বাইহাকি শরিফে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ
করেছেন
, জুমার দিন সূরা হুদ
পাঠ করো।
 
তিবরানি শরিফের এক বর্ণনায় রয়েছে যে, যে ব্যক্তি জুমার দিনে বা
রাতে সূরা দোখান তেলাওয়াত করে
, আল্লাহ্পাক তার জন্য জান্নাতে একটা বিশেষ মহল নির্মাণ করেন।
>> জুমআর দিনে বেশি বেশি দরূদ পাঠ করা উত্তম ও ফজিলতপূর্ণ। যদি কোনো ব্যক্তি একবার দরূদ পড়ে তবে তার প্রতি ১০টি রহমত নাজিল
হয়।
রাসূলুল্লাহ্ (সা.) ইরশাদ করেছেন, জুমার দিনে ও রাতে আমার
প্রতি বেশি করে দরূদ শরিফ পাঠ করো। যে ব্যক্তি এরূপ দরূদ শরিফ পাঠ করবে
, হাশরের ময়দানে আমি তার
জন্য আল্লাহ সামনে সাক্ষ্য প্রদান করব এবং সুপারিশ করব। (বাইহাকি শরিফ)
নবি করিম (সা.) -এর সুসংবাদের ভিত্তিতেই
সাহাবায়ে কেরামের যুগ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আবেদ-জাহেদ বান্দাগণ জুমা দিবসে
সর্বাধিক দরূদ শরিফ পড়ে আসছেন। অত্যধিক দরূদ পঠিত হয় বলেই জুমার দিনকে
ইয়াওমুজ্জাহারা অর্থাৎ ফুলেল দিবস এবং জুমার রাতকে লাইলাতুজ জাহরা বা ফুলেল রজনী
নামে অভিহিত করা হয়।
আর যে ব্যক্তি জুমার দিন আসরের নামাজের পর ৮০ বার এ দরুদ পড়বে, তার ৮০ বছরের গোনাহ্ মাফ হবে এবং ৮০ বছর ইবাদতের সওয়াব তার আমলনামায় লেখা হবে।
আল্লাহুম্মা সাল্লি
আলা মুহাম্মাদিন নাবিয়্যিল উম্মিইয়্যি
, ওয়ালা আলি ওয়া সাল্লিাম তাসলিমাঅর্থ : হে আল্লাহ তুমি শান্তি ও রহমত বর্ষণ কর উম্মী নবী (যাকে হাতে কলমে
শিক্ষা দেওয়া হয়নি) মুহাম্মদ সা. এর ওপর ও তার পরিবার পরিবর্গের ওপর

>> জুমআর দিন দোয়া কবুলের কিছু সময় বা মুহূর্ত রয়েছে; সে সময়গুলোতে বেশি বেশি দোয়া ও ইসতেগফার করা।
বিশেষ করে

জুমআর দিন ও জুমআর নামাজ আদায় মুসলিম উম্মাহর
জন্য অনেক গুরুত্ব ও ফজিলতপূর্ণ দিন। এ দিনের প্রতিটি আমলই গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণেই
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুমআর নামাজ পরিত্যাগ করার ব্যাপারে
সতর্কতা জারি করেছেন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেছেন
, ‘যে ব্যক্তি (ইচ্ছা করে)
অলসতাবশত তিনটি জুমআ ছেড়ে দেবে
, আল্লাহ
তাআলা তার হৃদয়ে মোহর মেরে দেন।
’ (মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, মুয়াত্তা মালেক)
পরিশেষে...

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমআর নামাজ
আদায় করার তাওফিক দান করুন। জুমআর দিনের আমল ও করণীয়গুলো যথাযথ আদায় করার তাওফিক
দান করুন। জুমআর দিনে মর্যাদা ও ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে সবাইতে মাফ করে দিন। আমিন।

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.