সুরা রহমানে ২টি পূর্ব ২টি পশ্চিম বলার রহস্য
কুরআনের আযব তথ্য-১০৯
সুরা রহমানে ২টি পূর্ব ২টি পশ্চিম বলার রহস্য
সম্মানিত দর্শক শ্রোতা মন্ডলী, পবিত্র কুরআন
এমন এক কিতাব যা আজ থেকে ১৪শত বছর আগে নাযিল হয়েছে, এ কিতাব আল্লাহ
নিজেই হেফাজত করার ওয়াদা করেছেন, আল্লাহ তায়ালা বলেন
(নাহনু নাজ্জালনাজ জিকরা ওয়াইন্না লাহু লাহাফিজুন) আমিই এ কুরআন নাজিল করেছি এবং আমিই এর হেফাজত করব। তাইতো আজো কুরআনে পাকে এর একটি জের জবর নকতাও কেউ পরিবর্তন করতে
পারেনি, ইনশা আল্লাহ কেয়ামত পযন্ত পারবেও না।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যতই উন্নতি করছে কুরআনের প্রতিটি বানী সত্য প্রমাণিত হচ্ছে, এক সময় জ্ঞান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অভাবে মানুষ কুরআনের অনেক বিষয়কে
অকল্পনীয় অসম্ভব মনে করত কিন্তু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে আজ কুরআন সত্য প্রমাণিত
মানুষের ধারনা মিথ্যা প্রমাণিত হচ্ছে।
আপ
আপনারা জেনে আশ্চর্য্য হবেন- চাঁদ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে ২৭ বার
আলোচনা হয়েছে, একবার ভেবে দেখুন কি বিষ্ময়কর মিল, এই সংখ্যাটি পৃথিবীর চারিদিকে চাঁদ
একবার ঘুরে আসতে ব্যায়িত দিন সংখ্যার সমান।
বৈজ্ঞানিকরা উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে এটাই প্রমাণ পেয়েছে পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরে আসতে চাঁদের সময় লাগে ঠিক ২৭ দিন, কিন্তু আমরা যেসব মানুষের তৈরী দিন পঞ্জিকা দেখতে পায় তার হিসাব মতে পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরে আসতে
চাঁদের সময় লাগে ২৯.৫দিন। কিন্তু কুরআনের বিশ্লেষনে উঠে এসেছে
২৭দিন, আর কুরআনের তথ্যই বৈজ্ঞানিক গবেষনায় সত্য প্রমাণিত হয়েছে। সুবহানাল্লাহ
সম্মানিত দর্শক মন্ডলী আমরা জা আল হক চ্যানেল এর মাধ্যমে এ ধরনের বিষয়গুলি বেশ
গুরুত্বের সাথে ধারাবাহিক ভাবে আলোচনা করে আসছি, গত
পর্বে আমরা পিপড়ার কথা বলার বিষয়ে আলোচনা করেছি, আজকে আমরা সুরা
রহমানের একটি আয়াতের দিকে লক্ষ্য করলে দেখতে পায় আল্লাহ তায়ালা ২টি পূর্ব বা উদয়াচল
এবং ২টি পশ্চিম বা অস্তাচলের কথা উল্লেখ করেছেন। যেমন
আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন (রাব্বুল মাশরিকাইনে ওয়া
রাব্বুল মাগরিবাইন)
رَبُّ الْمَشْرِقَيْنِ
وَرَبُّ الْمَغْرِبَيْنِ
আপনারা জানেন আরবীতে দ্বিবচন ব্যবহারের
বিধান আছে, এখানে পূর্ব পশ্চিম ২টি শব্দকে দ্বিবচন ব্যবহার
করা হয়েন ছে আমরা জানি সুর্য পূর্ব দিকে উদয় হয় পশ্চিম দিকে অস্ত যায় সে হিসেবে
সুর্যের উদয়স্থান ১টি অস্ত যাওয়ার স্তানও ১টি কিন্তু আল্লাহ তায়ালা কি কারনে দ্বিবচন
ব্যবহার করেছেন, আর আল্লাহ তায়ালার কোন কিছুই হেকমত থেকে খালি নয়, তাই এ বিষয়ে
অনেক গবেষনা হয়েছে এখনো হচ্ছে। বৈজ্ঞানিকগন ইতিমধ্যে প্রমাণ করেছেন সুর্য যদিও
পূর্ব দিকে উদিত হয় পশ্চিম দিকে অস্ত যায় কিন্তু প্রতিদিন এই একই সুর্য ঠিক একই
স্থান থেকে উদিত হয়না প্রতিদিনই সুর্যের উদয়স্থল ও অস্ত যাওয়ার স্থল ভিন্ন ভিন্ন
হয়।
তবে বছরে শুধু একদিন এমন আছে যেদিন
সুর্য পূর্বদিক থেকে সয়েবচেয়ে বেশী ব্যবধানে উদিত হয়। এবং বছরে একদিন পশ্চিম দিকে
সবচেয়ে বেশী ব্যবধানে অস্ত যায়।
এছাড়া ২১ মার্চ ও ২৩ সেপ্টেম্বর পৃথিবীর সব স্থানে দিন রাত সমান হয়। সেদিনে
দিন হয় ১২ ঘন্টার রাত হয় ১২ ঘন্টার। এই দিনে সুর্য বিষুবরেখা বরাবর অবস্থান করে।
এতে বুঝা যায় বছরে মাত্র ২ দিন সুর্য একই স্থান থেকে উদয় হয় অস্ত যায়।
এছাড়া আপনারা লক্ষ্য করলে দেখবেন শীত কালে সুর্য আমাদের থেকে দুর অবস্থান করে
এবং আমাদের ছায়াও লম্বা হয় অপরদিকে গৃষ্মকালে সুর্য আমাদের মাথার উপর দিয়ে অতিক্রম
করতে থাকে তাতে আমাদের ছায়া ছোট হয়, মুলত এভাবে প্রতিনিয়ত সুর্যের ডাইরেকশন
পরিবর্তন হতেই থাকে। এই যে শীত ও গ্রীষ্মকালীন সুর্যের উদয়স্থল ও অস্থ যাওয়ার
স্থান ভিন্ন ভিন্ন হয় সেটির উপর ভিত্তি করেই আল্লাহ তায়ালা ২টি উদয়স্থল এবং ২টি
অস্থ যাওয়ার স্থল বলে কোরানে বয়ান করেছে। সুবহানাল্লাহ। পবিত্র কুরআন যে আসেলই
একটি বিজ্ঞানময় আল্লাহর বানী তা আবারও প্রমাণিত হয়।
আবার প্রতিনিয়ত যেহেতু একটু একটু করে সুর্যের উদয়স্তাল ও অস্ত যাওয়ার স্তান
ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে সে জন্য হয়ত অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন শীত গ্রীষ্ম ২ কালে ২
স্থান থেকে সুর্য উদয় ও অস্ত যায় তাই সুরা রহমানে দ্বিবচন ব্যবহার হয়েছে কিন্তু
সারা বছর খেয়াল করলে দেখা যায় সুর্য অসংখ্য স্থান হতে উদয় ও অস্ত যায় সে প্রশ্নের
জবাব আমরা কুরআনের সুরা মায়ারিজ এর ৪০নং আয়াতে জানতে পারি যেমন আল্লাহ তায়ালা
এরশাদ করেন
فَلَا أُقْسِمُ بِرَبِّ
الْمَشَارِقِ وَالْمَغَارِبِ إِنَّا لَقَادِرُونَ
এখানে দেখুন আল্লাহ তায়ালা উদয়াচল ও অস্তাচলসমুহের শপথ করছেন
এতে বহুবচন ব্যবহার করে আল্লাহ তায়ালা সে সন্দেহও দুর করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ।
মোট কথা শীত ও গ্রীষ্ম কালে বড় ব্যবধানে সুর্য উদিত ও অস্ত যায়, তাই সুরা রহমানে আল্লাহ দ্বিবচন ব্যবহার করেছেন, আর প্রতিদিন সূর্য ছোট ছোট ভিন্নতা অবলম্বন করে উদিত ও অস্ত যায় তাই সুরা মায়ারিজে
আল্লাহ উদয় ও অস্ত যাওয়ার স্থান বহুবচন ব্যবহার করেছেন।
আল্লাহ তায়ালা জ্ঞানবানদের জন্য এই কুরআনে অনেক নিদর্শন রেখে দিয়েছেন। কিন্তু আজ মুসলমানরা কুরআনকে শুধু মৃত মানুষের রুহে সাওয়াব পৌঁছানো, গলায় তাবিজ বানিয়ে জিনের আছর থেকে রক্ষা পাওয়া, আয়াতুল কুরসি পড়ে রাতে চোর থেকে হেফাজতে থাকা এসব ছাড়া অন্য কোনভাবেই এ কুরআন
থেকে উপকৃত হতে চেষ্টা করছে না।
আসুন আমরা কুরআন নিয়ে গবেষনা করি কুরআনের আলোকে নিজের জীবন তথা গোটা বিশ্বকে সাজাই
এবং দুনিয়া ও আখেরাতে অফুরন্ত কল্যান হাসিল করি।
উত্তরমুছুন<a href=" www.youtube.com/watch?v=OCrwHQ0YXAMsurah al fil bangla translation | সুরাহ ফিল | Noor</a>