জুমার খুতবা মহররম। আহলে বায়তের প্রতি ভালবাসা ইমাম হোসাইন টু ইমাম মাহদী


বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
মহররম এর ৩য় খুতবা
নবীর আউলাদের প্রতি ভালবাসা
কেয়ামতের বড় আলামত- ইমাম মাহদীর আগমন

রাব্বানা জালামনা আনফুছানা ওয়াইন লাম তাগফিরলানা ওয়াতারহামনা লানাকুনান্না মিনাল খাছিরিন
অর্থ্যাৎ হে আল্লাহ আমরা নিজেদের আত্মার উপর জুলুম করেছি, তুমি যদিেআমাদেরকে ক্ষমা না কর অনুগ্রহ না কর নিঃসন্দেহে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হব

সম্মানিত মুসল্লীবৃন্দ মনে রাখবেন দুনিয়া হল দুঃখকষ্ট, বিপদ আপদের স্থান
খুতবা ওয়ালা বলেন (ওয়া দারু কাছারাত কাছরান গাদারাত বিলহুসাইন ওয়াল হাসান)
অর্থ্যাৎ দুনিয়া এমন জগত যা হযরত হাসান হোসাইনের সাথেও বিশ্বাসঘাতকতা করেছে

হাসান হোসেন কে আপনারা কি জানেন?
হুযুর (দঃ) হযরত হাসান হোসেনকে কুস্তি লাগিয়ে দিল, হুযুর ইমাম হাসানকে কুস্তি শিখিয়ে দিচ্ছেন তখন ফাতেমা বলল এয়া রাসুলাল্লাহ হাসান বড় হোসেন ছোট আপনি শুধু হাসানকে উৎসাহ দিচ্ছেন শিখিয়ে দিচ্ছেন হোসেনকে উৎসাহও দিচ্ছেন না শিখিয়েও দিচ্ছেন না, তখন হুযুর ফরমালেন ফাতেমা চুপ কর যা আমি দেখছি তা যদি তুমি দেখতে তাহলে এভাবে বলতে না আমি হাসানকে শিখিয়ে দিচ্ছি আর হোসেন কে জিবরিলে আমিন শিখিয়ে দিচ্ছে সুবহানাল্লাহ

#হোসেন ইবনে আলী ছোট একদিন মসজিদে হুযুর খুতবা দিচ্ছিলেন ইমাম হোসেন মসজিদে আসার সময় হুছট খেয়ে পড়ে গেল হুযুর তৎক্ষনাৎ খুতবা বন্ধ করে হোসেনকে উঠালেন
#হযরত আবদুল্লাহ বিন সাদ্দাদ বয়ান করেন হুযুর একদিন সিজদায় ছিল সিজদা এমন লম্বা হয়ে গেল আমরা মনে করলাম হয়ত হুযুরের কাছে অহি নাজিল হচ্ছে কিংবা হুযুরের রুহ কবজ হয়ে গেছে, হযরত আবদুল্লাহ বিন সাদ্দাদ বলেন যখন আমি মাথা তুলে দেখলাম এমন দৃশ্য হোসেন বিন আলী হুযুরের পিঠের উপর বসে আছে আর হুযুর তাঁর জন্য সিজদাকে লম্বা করে দিলেন
সুবহানাল্লাহ সিজদা থেকে উঠলে আদরের নাতি পড়ে যাবে সে আশংকায় হুযুর (দঃ) সিজদা লম্বা করে দিলেন।
সুব#একদিন হুযুর এর কাঁধের উপর হোসেন বিন আলী ছওয়ার হয়ে গেলেন, হযরত ওমর বললেন ওয়াহ ওয়াহ কেমন ছাওয়ারী, তখন হুযুর বললেন ওমর ছাওয়ারী দেখছ যে ছাওয়ার হয়েছে তাঁর দিকেও দেখ অথ্যাৎ ছাওয়ারী যেমন উত্তম যে ছওয়ার হয়েছে সেও উত্তম (আল্লাহু আকবার)
# হযরত ওসামা বিন জায়েদ বিন হারেসা বলেন একদিন রাতে কোন এক প্রয়োজনে আমি হুযুরের কাছে গেলাম হুযুরের গায়ে একটি চাদর ছিল আর আমি হুজুরকে আমার প্রয়োজনের কথা বললাম হুযুর আমার প্রয়োজন পুরন করলেন কিন্তু আমিহুযুরের চাদরের ভিতর কিছু নড়াচড়া আঁচ করলাম, আমি আর থাকতে পারলাম না প্রশ্ন করলাম এয়া রাসুলাল্লাহ আপনার চাদরের ভিতর কি? হুযুর চাদর সড়ালেন আমি দেখলাম হুযুরের দুই পাশে দুই নাতি হাসান হুসেন হুযুরের কোলে বসে আছে এবং হুযুর ফরমালেন এরা আমার সন্তান আমার ফাতেমার সন্তান হে আল্লাহ আমি এদের ভালবাসি তুমিও তাদের ভালবাস যারা আমার এই দুইজন নাতীকে মহব্বত করে তাদেরকেও হে আল্লাহ তুমি মহব্বত কর
যারা তাদের সাথে মহব্বত রাখে তারা আমার সাথে মুহব্বত রাখে, যারা তাদের সাথে শত্রুতা রাখে তারা আমার সাথে শত্রুতা রাখে
আল্লাহ তায়ালা আহলে বায়তকে মহব্বত করা আমাদের জন্য ফরয করেছেন, যেমন আল্লাহ তায়ালা সুরা শুরা এর ২৩ নং আয়াতে এরশাদ করেন
قُل لَّا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا إِلَّا الْمَوَدَّةَ فِي الْقُرْبَى
অথ্যাৎ (হে রাসুল) বলুন, আমি আমার দাওয়াতের জন্যে তোমাদের কাছে কেবল আত্নীয়তাজনিত সৌহার্দ চাই।
ইমাম আহম্মদ, তাবরানি, হাকেম বর্ণণা করেন, যখন কোরআনের এ আয়াত নাযিল হলো তখন সাহাবীগণ আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আপনার যেসব আপনজনের প্রতি ভালবাসা পোষণ করতে এ আয়াতের মাধ্যমে আমাদের উপর ফরজ করা হয়েছে তারা কারা? মহানবী (দ.) বললেন, আলী ফাতেমা হাসান হোসাইন। তাঁরাই আমার আপনজন। ইবনে মাজায় বর্ণিত আছে, কোনো ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত মোমেন হতে পারবেনা যতক্ষণ পর্যন্ত সে আমাকে ভাল না বাসবে। আমার ভালবাসা অর্জন হবেনা, যে পর্যন্ত সে আমার আহলে বাইতকে ভালবাসবেনা। দায়লামি শরিফে আছে, নবী করিম (দ.) ইরশাদ করেন, তোমরা তোমাদের সন্তানকে তিনটি বিষয়ের আদব শিক্ষা দাও-১. তোমাদের নবীর প্রতি ভালবাসা, ২. নবীর আহলে বাইতের প্রতি ভালবাসা এবং ৩. কোরআন তেলাওয়াতের প্রতি ভালবাসা ও আকর্ষণ।
নবী বংশ ইমাম মাহদী
আমাদেরকে নবীকে যেমন ভালবাসতে হবে তেমনি নবীর পরিবার, আহলে বায়ত, নবীর বংশধরকে ভালবাসতে হবে, নবীর বংশধর এখনও দুনিয়ায় আছেন কেয়ামত আগে নবী বংশ থেকেই ইমাম মাহদী (আঃ) এর আগমন হবেন।
হযরত মুহাম্মদ (দঃ) কেয়ামতের ধরনের আলামত বয়ান করেছেন প্রকার হল ছোট আলামত আর ২য় প্রকার হল বড় আলামত, হাদীসে পাকের মাধ্যমে মহানবী (দঃ) এর ঘোষিত যে সব ছোট আলামত আমরা জানতে পারি তার প্রায় সবগুলি আলামতই ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়ে গেছে
ছোট
ছোট আলামত যা ইতিমধ্যে আমরা প্রকাশিত হতে দেখেছি

১) নানা ধরনের ফিতনা প্রকাশ ঘটবে। মুসলিম;
. আকাশ মিডিয়ার বিস্তার। ইবনে আবি শায়বা;
. ৩০ জন নবুয়তের দাবিদার, মহামিথ্যুকের প্রকাশ। বোখারি;
. সুখ-শৌখিনতা বৃদ্ধি ও দূর-দূরান্ত পাড়ি দেয়া সহজ হয়ে যাবে। আহমাদ;

 . খুন বেড়ে যাবে। মুসলিম;
. অন্তর থেকে আমানত উঠে যাবে। বোখারি;
. ইহুদিদের অনুকরণের প্রবণতা বেড়ে যাবে। বোখারি;
. ক্রীতদাসীর গর্ভ থেকে মালিকের জন্ম হবে। মুসলিম;
. স্বল্পবসনা নারীর সংখ্যা বেড়ে যাবে। মুসলিম;
১০. ছাগলের রাখাল, নগ্নপদের লোকেরা ও বস্ত্রবঞ্চিতরা অট্টালিকা বানাবেমুসলিম;
১১. চেনাজানা ও বিশিষ্ট লোকদের সালাম দেয়ার প্রচলন হবে। ইবনে খুজাইমা;
১২. ব্যবসার ব্যাপক বিস্তার ঘটবে। আহমাদ;
১৩. স্বামীর ব্যবসায় (শেয়ার হিসেবে) স্ত্রী যোগ দেবে। আহমাদ; ২৫.
১৪. মিথ্যা সাক্ষী বেড়ে যাবে। আহমাদ;
১৫. মানুষের অন্তরে হিংসা ও কৃপণতা বৃদ্ধি পাবে। আহমাদ; ১৬. প্রতিবেশীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে। আহমাদ
১৭. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নের প্রবণতা বাড়বে। আহমাদ; ১৮. অশ্লীলতার সয়লাব শুরু হবে। আহমাদ;
১৯. আমানতদারকে অবিশ্বাস আর খেয়ানতকারীদের বিশ্বাস করা হবে। হাকেম;
২০. সমাজের ভালো লোকেরা দ্রুত বিলুপ্ত হবে ও নিচু লোকদের উত্থান হবে। হাকেম;
২১. সম্পদ কোথা থেকে কীভাবে এলো তার বাছবিচার করবে না কেউ। বোখারি;
২২. পার্থিব উদ্দেশ্যে এলম শিখবে। তিরমিজি;
২৩. মানুষ স্ত্রীর কথা শুনবে, মায়ের কথা শুনবে না। তিরমিজি;
২৪. পিতাকে দূরে রেখে বন্ধুদের কাছে টানা হবে। তিরমিজি;
২৫. মসজিদে উচ্চৈঃস্বরে কথা বলা ও হৈহট্টগোলের প্রবণতা দেখা যাবে। তিরমিজি;
২৬. অপরাধী ও অসৎ লোকেরা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতা হবে। তিরমিজি;
২৭. সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি সমাজের নেতৃত্বে থাকবে। তিরমিজি;
২৮. মানুষকে শ্রদ্ধা করা হবে তার অনিষ্ট ও ক্ষতির ভয়ে। তিরমিজি;
২৯. ব্যভিচারকে অবৈধ মনে করা হবে না। বোখারি;
 ৩০. মদকে বৈধ মনে করা হবে। বোখারি;
৩১. গানবাজনার অবৈধতার ধারণা বিলুপ্ত হবে। বোখারি; ৩২. মৃত্যু কামনা বেড়ে যাবে। বোখারি;
৩৩. বেশি বেশি বজ্রপাত হবে। আহমাদ;
 ৩৪. মানুষ কোরআনবিমুখ হয়ে যাবে এবং অন্য বইয়ের কদর ও বিস্তার হবে। তাবরানি;
 ৩৫. বাজারগুলো নিকটবর্তী ও সবকিছু হাতের নাগালে হয়ে যাবে। আহমাদ;

আর এসব ছোট ছোট আলামত বৃদ্ধি পেতে পেতে বড় বড় আলামত প্রকাশিত হওয়ার আগ পযন্ত বৃদ্ধি পাবে আর বড় বড় আলামত সমুহের মধ্যে একটি হল ইমাম মাহদী (আঃ) এর আত্মপ্রকাশ
ইমাম মাহদী কোন যুগে আসবে?
রাসুলুল্লাহ (দঃ) ফরমান আমার পর খেলাফতের যুগ চলবে, এরপর  বাদশাহির জামানা চলবে, এরপর এমন হকুমত চলবে যে সব হকুমত মুসলমানদের উপরযুলুম করবে, এরপর এই দুই ধরনের হকুমতের জামানা শেষ হবে এরপর কি হবে হুযুর (দঃ) ফরমান (ছুম্মা তাকুনু খিলাফাতান আলা মিনহাজিন নবুয়্যাহ ছুম্মা ছাকাতা) অথ্যাৎ এর পর আবার খেলাফত আলা মিনহাজুন নবুওয়াহ কায়েম হবে কথা বলে হুযুর (দঃ) চুপ হয়ে গেলেন
সুতরাং সংক্ষেপ কথা হল হুযুর (দঃ) মোট ৫টি জামানার কথা বলেছেন
> নবুয়ত
> খেলাফত আলা মিনহাজুন নবুয়াহ
> বাদশাহী
> জালেম বাদশাহী
> পুনরায় খেলাফত আলা মিনহাজুন নবুয়াহ কায়েম হবে

# অপর একটি হাদীসে হুযুর (দঃ) এরশাদ করেন আমার পর ১২ খলিফা হবেন তবে যে সর্বশেষ খলিফা হবেন, যাকে উম্মতের ইমামত দান করা হবে, যাকে আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে  সর্বোচ্চ উন্নতির শীর্ষে পৌঁছানোর জন্য দায়িত্বদিবেন,েএবং সে খলিফার যুগে পবিত্র কুরানের সে ওয়াদা আল্লাহ তায়ালা পুরণ করে দিবেন, যা হুযুর (দঃ) এর সাথে আল্লাহ তায়ালা করেছেন
(হুয়াল্লাজি আরছালা রাসুলাহু বিল হুদা ওয়াদিনিল হক, লিইউজহিরাহু আলাদদ্দীনি কুল্লিহি ওয়ালাও কারিহাল মুশরিকুন) তিনি সে প্রভু যিনি মুহাম্মদ (দঃ) কে দ্বীনে হক সহ প্রেরণ করেছেন যাতে তিনি সমস্ত বাতিল ধর্মের উপর উপর বীজয়ী হন, যদিও মুশরিকগন কাফেরগন অমুসলিমগন খুবই অপছ্ন্দ করে
সুতরাং হাদীস দ্বারা স্পষ্ট বুঝা যায় ইমাম মাহদী (আঃ) যখন আসবেন তখন সারা পৃথিবীতে ইসলাম প্রতিষ্ঠা লাভ করবে, এবং বিশেষ করে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এর জামানায় যে সব বিষয় অপূর্ণাঙ্গ ছিল তা কেয়ামতের আগে ইমাম মাহদীর জামানায় পূর্ণতা লাভ করবে

ভুয়া ইমাম মাহদীর দাবীদার
যেহেতু হুযুর (দঃ) ইমাম মাহদীর সবগুলি আলামত বয়ান করে গেছেন সে সব আলামতকে পুঁজি করে পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশী লোক নিজেকে ইমাম মাহদী দাবী করেছেন
যেমন #আব্বাসীয় খেলাফত কালে মুহাম্মদ মাহদী আবু মনসুর নিজেকে ইমাম মাহদী হওয়ার দাবী করেছে
# ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে আবি আবদিল্লাহ মুহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ বরবরী নিজেকে ইমাম মাহদী হওয়ার দাবী করেছে লোকটি তৎকালীন যুগে অনেক বড় আলেম ছিলেন হাজার হাজার হাদীস তার মুখস্থ ছিলকুরানের হাফেজ ছিল, আর সে যখন কথা শুনে মানুষ খুব সহজেই প্রভাবিত হয়ে যেতকিন্তু সে এত ধোকাবাজ ছিল সে টাকা পয়সা দিয়ে কিছু লোক ভাড়া করে রাস্তার পাশে কিছু কবরস্থান খুঁড়ে তাতে বসিয়ে রাখত এবং সে রাস্তা দিয়ে সে নিজের লোকজন ভক্তদের নিয়ে যেত তখনকবর থেকে যারা আগে থেকেই বসে থাকত তারা আওয়াজ দিত যেখ ইমাম মাহদী যাচ্ছে আর ধরনের আওয়াজ শুনে সাধারন মানুষ তাকে সত্যি সত্যি ইমাম মাহদী বলে স্বীকার করে নিয়েছিল এমনকি যাদেরকে কবরে বসিয়ে এসব কথা বলাত তাদেরকে পরবর্তীতে হত্যা করে ফেলত যাতে সে যে ভুয়া তা প্রকাশ না হয়
#হিজরী ৪র্থ শতাব্দীতে ভুয়া ইমাম মাহদী হলেন ওবায়দুল্লা
# মুহাম্মদ বিন ইউসুফ জনপুরী হিন্দী হিজরী ১০ শতাব্দীতে আত্মপ্রকাশ করেন
# সুদানে মুহাম্মদ আহমদ সুদানী ইমাম মাহদী হওয়ার দাবী করেছেন
# হিন্দুস্থানে অপর এক ব্যক্তি যার নাম গোলাম আহমদ বিন গোলাম মর্তুজা নিজেকে ইমাম মাহদী হওয়ার দাবী করেছন
# ১৯৯৭ সালে মুহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ কাহতানি
তেমনি ভাবে কুয়েতে পাকিস্তানে অনেকে নিজেকে ইমাম মাহদী হওয়ার মিথ্যা দাবী করেছেন
বুঝা গেল অসংখ্য লোক নিজেকে যদিও ইমাম মাহদী দাবী করেছেন এখনও করছেন কিন্তু আমাদের প্রিয় নবী যে সব আলামত ইমাম মাহদীর ব্যপারে করেছেন সে সব আলামত এসব লোকদের মধ্যে পাওয়া না যাওয়ায় এরা যে মিথ্যাবাদী তা প্রমাণিত হয়

ইমাম মাহদী আসার আগে দুনিয়ার অবস্থা কেমন হবে?
আমরা যদি বর্তমানে সারা পৃথিবীর দিকে লক্ষ্য করি তাহলে দেখব এখনও আলহামদুলিল্লাহ অনেক দেশেই ইসলাম মুসলমানদের কর্তৃত্ব চলছে, কিন্তু ইমাম মাহদী আসার আগে সারা দুনিয়ায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, দুনিয়ায় জুলুমবাজ জালেমদের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে, সারা দুনিয়ার মানুষ মুক্তির জন্য হাহাকার করবে, হযরত আলী (রাঃ) বলেন ইমাম মাহদী আগমনের আগে এমন এক মহাযুদ্ধ সংগঠিত হবে তাতে পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ মানুষ মৃত্যু বরণ করবে চারিদিকে এমন জুলুম অত্যাচারে যখন মানুষ অতিষ্ট হবে, হতাশ হয়ে যাবে, সারা দুনিয়ায় বাতিলের শক্তি প্রবাভ বিস্তার করবে এমন সময় আল্লাহ তায়ালা ইমাম মাহদী (আঃ) কে দুনিয়ার বুকে প্রকাশ করবেন এবং তাঁর মাধ্যমে সারা দুনিয়ায় দ্বীন ইসলামকে পুণঃপ্রতিষ্ঠা করবেন এবং ইমাম মাহদী (আঃ) সারা দুনিয়ায় ইসলামী শাসন কায়েম করবেন এবং এই ইসলামী খেলাফতের রাজধানী হবে বায়তুল মাকদাস


কোন সাহাবী থেকে ইমাম মাহদী আগমনের হাদীস এসেছে?
মাহদী (আঃ) আসার ব্যপারে অসংখ্য সাহাবা থেকে হাদীস এসেছে,হযরত আবু হুরায়রা এছাড়া, হযরত হুজাফা বিন এয়ামান, হযরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস, জাবের বিন আবদুল্লাহ, আবু সাঈদ খুদুরী, ওসমান গনী, আবু ওমামা, হযরত জাবের, আবদুর রহমান বিন আউফ, ইমরান বিন হোসাইন (রাঃ) হযরত তালহা বিন ওবায়দুল্লাহ, হযরত আনাস বিন মালেক প্রায় ২০ জন সাহাবা থেকে ইমাম মাহদী আগমন সম্পর্কে হাদীস পাওয়া

ইমাম মাহদী (আঃ) এর আসার আগের আলামতসমুহ
ইমাম মাহদী (আঃ) তশরীফ আনার আগে দুনিয়ার সকল মানুষ হতাশায় ভুগতে থাকবে
ইমাম মাহদী আসার আগে দুনিয়ায় এক তৃতীয়াংশ লোককে হত্যা করা হবে, এক তৃতীয়াংশ মৃত্যু বরণ করবে দুনিয়াতে শুধু তৃতিয়াংশ লোক বাকী থাকবে আর তখন ইমাম মাহদী আাত্মপ্রকাশ করবেন
হাদীস শরীফে ইমাম মাহদী আসার আগে আল মালহামাতুল কুবরা তথা মহাযুদ্ধ হবে

সারা পৃথিবীতে জুলুম কুফুর ছেয়ে যাবে

ইমাম মাহদী ধরনের নাজুক মুহুর্তে মদীনা মুনাওয়ারায় জন্ম গ্রহণ করবেন,
এছাড়া আরো কিছু আলামত হাদীসে পাওয়া যায়, আল মালহামাতুল কুবরা বা মহাযুদ্ধ,  কুসতুনতুনিয়া বা ইস্তাম্বুল জয় হওয়া, দাজ্জাল প্রকাশিত হওয়া এই ৩টি বড় বড় ঘটনা মাসের মধ্যেই সংগঠিত হবে

হাদীসঃ হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ (দঃ) এরশাদ করেন (লা তাকুমুস ছাআতু হাত্তা এয়াতাকারাবাজ্জামান) কেয়মত ততক্ষন কায়েম হবে না যতক্ষন জামানা সংকীর্ণ না হবে কেমন সংকীর্ণ হবে?
রাসুলুল্লাহ (দঃ) ফরমান
(ফাতাকুনাছ ছানাতু কাশ শাহারি) বছর এমন ভাবে কাটবে যেন মাস কেটেছে
(ওয়াশ শাহারু কাল জুমুআতি) এক মাস সপ্তাহের মত কেটে যাবে
(ওয়া তাকুনুল জুমুআতু কাল এয়াউম) সপ্তাহ কাটবে দিনের মত


ইমাম মাহদী এসেছি কিনা কিভাবে বুঝবেন?
যুগে যুগে কালে কালে মানুষ বলে আসছে যে ইমাম মাহদী এসে গেছেন, আমি ইমাম মাহদীকে দেখেছি, এসব কথা না শুনে আসুন আমরা হুযুর পাক (দঃ) এর হাদীসে মোবারক এর মাধ্যমে এমন কিছু চিহ্ন সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি যা দ্বারা আমরা সহজে বুঝতে পারব যে ইমাম মাহদী চলে এসেছেন

হাদীস- রাসূলুল্লাহ (দঃ) এরশাদ করেন ইমাম মাহদী আসার জন্য ২টি চিহ্ন এমন তা হল যখন থেকে জমিন আসমান তৈরী হয়েছে তখন থেকে শুরু করে ইমাম মাহদীর আগমনের আগে কখনো এমনটি হওয়ার রেকর্ড নাই, এরশাদ হচ্ছে যখন রমজানের ১ম রাত আসবে সে চাঁদ গ্রহণ হবে এবং ১৫ রমজানে সুর্য গ্রহণ হবেএকই মাসে ১ম রমজানে চন্দ্র গ্রহণ হবে এবং ১৫ রমজান সুর্য গ্রহণ হবেএটা এমন আলামত যা ইতিপূর্বে কখনো হয়নি শুধু ইমাম মাহদীর জামানাতেই ঘটনা ঘটবে
এরপর রাসুলুল্লাহ (দঃ) এরশাদ করেন ফোরাত নদী থেকে এক স্বর্ণের পাহাড় বের হবে আর সে পাহাড়ের জন্য মানুষ যুদ্ধ করবে রাসুলুল্লাহ (দঃ) কঠোর ভাবে নিষেধ করে বলেন খবরদার যারা জামানা পাবে তারা যেন সে স্বর্ণের পাহাড়ের কাছেও না যায়

ইমাম মাহদীর ব্যপারে আসমানী ঘোষনা
অপর এক হাদীসে হুযুর (দঃ) এরশাদ করেন ইমাম মাহদীর ব্যপারে আসমান থেকে এক ঘোষনা শুনা যাবে, (আলা ইন্নাল হাক্কা ফি আলে মুহাম্মাদিন ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াছাল্লাম) খবরদার যারা হকপন্থী তারা মুহাম্মদ (দঃ) এর আহল বা বংশের লোকের সাথে হবে
আমরা জানি ইমাম মাহদী (আঃ) আমার নবীর বংশেরই লোক হবেন সৈয়দ বংশের হবেন সুবহানাল্লাহ ইমামে
ইমাম মাহদী আসার আগে সারা জাহান হত্যা, খুন, অন্যায়, অবিচার, জুলুম, মিথ্যায় ভরে যাবে
হুযুর (দঃ) এরশাদ করেন তখন আমার আউলাদ তথা ইমাম মাহদী আসবে এবং সে ন্যায় বিচার ইনসাফ আদল দ্বারা সারা দুনিয়া ভরিয়ে দিবে

ইমাম মাহদীর হুলিয়া কেমন হবে?
ইমাম মাহদী (আঃ) এর ব্যপারে যে সব কিতাব লিখিত হয়েছে তার মধ্যে হযরত মেহের আলী শাহ সাহেব (রহঃ) এর প্রসিদ্ধ কিতাব সাইফে চিশতিয়া সামছুল হেদায়াত ফি এছবাতি হায়াতুল মাছিহ প্রনিধানযোগ্য তাতে তিনি ইমাম মাহদী (আঃ) এর বেশ কিছু আলামত বয়ান করেছেন,  যেমন-

#যখন ইমাম মাহদী তশরীফ আনবেন তখন কাউকে দলিল দিয়ে প্রমাণ করতে হবে না যে ইনি ইমাম মাহদী
#ইমাম মাহদী (আঃ) এর কাছে হুযুর (দঃ) এর কোর্তা মোবারক থাকবে
# ইমাম মাহদীর (আঃ) এর কাছে হুযুর (দঃ) এর তলোয়ার ঝান্ডা হবে
#ইমাম মাহদী (আঃ) কে সবসময় একখন্ড মেঘ ছায়া দান করবেন
# আর সে মেঘখন্ড থেকে একজন ঘোষক ঘোষনা দিবেন (হাজাল মাহদি খলিফাতুল্লাহি ফাত্তাবিউহু) ইনি মাহদী আল্লাহর খলিফা তাঁকে অনুসরন কর
#ইমাম মাহদীর কারামত- একটি শুস্ক কাঠখন্ড জমিনে রোপন করবেন আর তা সাথে সাথে জীবিত হয়ে তাতে ফুল ফল ধরবে
# ইমাম মাহদী (আঃ) হুযুর (দঃ) এর আহলে বায়ত হতে হবেন
# ইমাম মাহদী (আঃ) এর জন্ম হবে মদীনা তাইয়্যেবা শরীফে 
# ইমাম মাহদী (আঃ) এর নাম হবে মুহাম্মদ, পিতার নাম হবে আবদুল্লাহ
# ইমাম মাহদী (আঃ) জামানায় বায়তুল মাকদস মুসলমানদের দখলে চলে আসবে
#ইমাম মাহদী (আঃ) মদীনা থেকে মক্কায় হিজরত করবেন এবং সেখান থেকে তিনি বায়তুল মাকদস যাবেন এবং বায়তুল মাকদসকে তিনি খেলাফতের মরকজ বানাবেন এবং সেখান থেকেই তিনি সবকিছু পরিচালনা করবেন
#ইমাম মেহেদী অত্যন্ত সুন্দর আকৃতির বুর্যুগ লোক হবেন, চেহেরা দেখে মনে হবে যেন উজ্জল নক্ষত্র, কথা বলার সময় তোতলামীর কারনে নিজের রানের উপর হাত মারবেন, চোখ গুলি দেখলে মনে হবে যেন সুরমা লাগিয়েছেন

দুই শতের পর বড় আলামত প্রকাশিত হবে
অপর এক হাদীসে এরশাদ হয়েছে কেয়ামতের আগে অসংখ্য কাজ্জাবিন হবে অর্থ্যাৎ মিথ্যুক হবে এরপর হুযুর বলেন (আল আয়াতু বাদাল মিআতাইন) ২শতের পর বড় আলামত প্রকাশিত হবে
ব্যপারে মুহাদ্দিসিনে কেরাম এর ভিন্ন ভিন্ন মতামত পাওয়া যায়, অনেক বলেন ২০০ এর পর বুঝাতে ২০০ হিজরীর পর,  তবে ইমামে রাব্বানি মুজাদ্দিদে আলফে সানি (রহঃ) দুই শতের রহস্য উম্মোচন করে বলেন তিনি গবেষনা করে নিজের মত প্রকাশ করেন যে ইমাম মাহদী ৩য় হাজার বছরে জন্ম গ্রহণ করবেন বর্তমান ১৪৪১ হিজরী তথা ২য় হাজার সাল চলছে হিজরী ২০০০ সাল পর থেকে শুরু হবে ৩য় হাজার সাল এটা শুধুই মুজাদ্দিদে আলফে সানী (রহঃ) এর মত কেননা তিনি বলেন যেহেতু ১ম হাজার সাল তথা ২০০ হিজরীর পর ইমাম মাহদী জন্ম গ্রহণ করেননি, এরপর এক হাজার সালের পর ২০০ হিজরী পার হলে তথা ১২শ হিজরী চলে গেল তবুও ইমাম মাহদীর দেখা মিলল না, তাই যেহেতু হযুর (দঃ) ২০০ এর পর বড় আলামত প্রকাশ হবে বলেছেন সে হিসেবে আগামী ২২০০ সাল পর্যন্ত প্রায় ৭৬০ বছর অপেক্ষা করতে হবে তবে এটা হল ইমামে রাব্বানীর ব্যাখ্যা আর ব্যাখ্যা যে ১০০% একুরেট হবে তা নয় হতে পারে ৩২০০ এর পর কিংবা ৪২০০ এর পর হবে সুতরাং ইমামে রাব্বানীর ব্যাখ্যা মত যদি ২২০০ হিজরী সালের পর ইমাম মাহদীর আগমন হয় তাহলে আরো প্রায় ৭৬০ সাল বাকী আছে

নাসার হিসাব মতে ২০২৬ সালে ইমাম মাহদীর আগমন
কিছু অনলাইন রিপোর্টে আমি পড়েছি নাসার হিসাব মতে ২০২৬ সালে যে রমজান আসবে তাতে ১ম রমজানে এবং ১৫ রমজানে চাঁদ গ্রহণ ও সুরজ গ্রহণ হবে, সে হিসেবে অনেবে মনে করছেন ইমাম মাহদী (আঃ) মদীনায় শরীফে জন্ম গ্রহণ করেছেন তিনি আগামী ২০২৬ সালে আত্মপ্রকাশ করবেন।

তবে এ বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভাল জানেন।


কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.