কুরআনের আযব তথ্য-১১৪। ১২ প্রকার ক্বলব অন্তর হার্ট আল্লাহ অপছন্দ করেন। Ja...







১২ প্রকার অন্তর আল্লাহ পছন্দ করেন না
ক্বলব সম্পর্কে রাসুল পাক (দ)  বলেন : ক্বলব হলো সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গেঁর বাদশা।” ( মেরকাত শরীফ ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা-৬২)



অর্থাৎ একটি দেশের বাদশাহ ভাল হলে দেশের
প্রজারাও যেমন ভাল হতে বাধ্য হয়
, তদপ্রু একটি
মানুষের ক্বলব বা অন্তর ভাল হলে নিজের কাজ কমর্ও ভাল হয়ে যায়। অপর দিকে একটি
মানুষের ক্বলব খারাপ হলে তার কর্মকান্ডও খারাপ হয়ে যায়। পবিত্র কুরানে পাকে আল্লাহ
তায়ালা
১২ প্রকার ক্বলব বা অন্তরের
পরিচয় তুলে ধরছেন যে সব অন্তরকে আল্লাহ পছন্দ করেন না আসুন জেনে নিই সে সব অন্তর
কি কি? এবং নিজেরা এমন অন্তরের অধিকারী হওয়া থেকে আত্মরক্ষা করি
অসুস্থ অন্তর, যাদের ব্যপারে আল্লাহ সুরা বাকারায় এরশাদ করেন (ফি কুলুবিহিম মারাদুন ফাজাদাহুমুল্লাহু মারাদা) তাদের
অন্তরে রোগ আছে আর আল্লাহ তাদের রোগকে আরো বাড়িয়ে দেন
,
প্রিয় বন্ধুরা জানেন কিসের রোগ? শাহওয়াতের
রোগ
শিরিকের রোগ, গুনাহের রোগ, আর সে যদি তওবা না করে তাহলে
আল্লাহর আযাবের হকদার হয়ে যায়
যার অন্তর ভাল তার কাছে মুহাম্মদ (দঃ)
এর তরিকা, ইসলামের তরিকা, ইসলামী কৃষ্টি কালচার, তাহজীব তামুদ্দুন পছন্দ হবে
আর যার অন্তর নোংড়া তার কাছে ইসলাম ভাল লাগবে না তারা পর্দা প্রথার বিরোধীতা করে, নারী পুরুষকে এক কাতারে দাঁড় করাতে চায়, বেহায়াপনার করালগ্রাসে এ জাতীকে ধ্বংস করে দিতে চায়, এসব অসুস্থ মনের অধীকারীরা আজ গোটা জাতীকে অসুস্থ করে রেখে দিয়েছে
(ক্বালবুল আমা) মৃত অন্তর-
অন্ধ অন্তর
প্রশ্ন হয় অন্তরও কি অন্ধ হয়? হ্যাঁ এমন
অনেক লোক আছে যাদের ২টি
সুন্দর চোখ আছে কিন্তু তাদের ক্বলব বা
অন্তর অন্ধ
যাদের অন্তর অন্ধ হয় তারা হকসমুহকে দেখে না যারা কোরান ও হাদীসকে মানে
না তাদের অন্তর অন্ধ এ ব্যপারে আল্লাহ তায়ালা কুরানে মাজিদের সুরা হজ্বের ৪৬ নং
আয়াতে এরশাদ করেন
 لَا تَعْمَى الْأَبْصَارُ
وَلَكِن تَعْمَى الْقُلُوبُ الَّتِي فِي الصُّدُورِ
বস্তুতঃ চক্ষু তো অন্ধ হয় না, কিন্তু
বক্ষ স্থিত অন্তরই অন্ধ হয়। [
 সুরা
হাজ্জ্ব ২২:৪৬
 ]
আল্লাহ আমাদেরকে ক্বলবের অন্ধত্ব থেকে হেফাজত করুন

এমন ক্বলব বা অন্তর যার কাছে কেয়ামতের
ব্যপারে কোন ভয় থাকে না
, সে পরকালের জন্য কোন প্রস্তুতিও গ্রহণ করে না,
ছুটির দিন কেহ তাস খেলছে, কেহ লুডু খেলছে,
কেউ ক্যাসিনোতে গিয়ে জুয়া খেলছে,
ও মুসলমান ভায়েরা! মুমিনের জন্য ছুটি নাই, যখনই সময় পাবেন তখনই আখেরাতের জন্য সামান জোগাড়ে লেগে যেতে হবে, ছুটির দিন কুরান নিয়ে বসুন কুরান পড়ুন, হাদীস পড়ুন,
বাচ্চাদের নিয়ে নামাজ শিখুন, আল্লাহর রাসুলের জীবনি
নিয়ে আলোচনা করুন
কেহকি এমনতর ছুটি কাটিয়েছেন?
আজ কয়জন ছেলে মেয়ে পাবেন যারা ছুটির দিন বাবাকে বলে বাবা আজ আপনি ঘরে আছেন আমাদেরকে
নবীদের জীবিনী সাহাবীদের গল্প শুনিয়ে দিন
আফসুস আজ আমাদেরও ইসলাম সম্পর্কে জানার আগ্রহ নাই আমাদের সন্তানদেরও নাই, আমাদের মন ও দেমাগ আজ পশ্চিমাদের হাতের খেলনা, তারা মিডিয়া, ওয়েবসাইট খেলাধুলা, মুভি, ড্রামা, গানা বাজানা এসবে
ব্যস্ত করে রেখেছে
, আর আখেরাতকে ভুলিয়ে রাখতে তারা সক্ষম হয়ে
গেছে
ক্বলবুল আছেম-গুনাহগার অন্তর, পাপী অন্তর, সুরা বাকারার ২৮৩ নং আয়াতে আল্লাহ এরশাদ করেন
وَلاَ تَكْتُمُواْ
الشَّهَادَةَ وَمَن يَكْتُمْهَا فَإِنَّهُ آثِمٌ قَلْبُهُ وَاللّهُ بِمَا
تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ
তোমরা সাক্ষ্য গোপন করো না। যে কেউ তা গোপন করবে, তার
অন্তর পাপপূর্ণ হবে। তোমরা যা করা
, আল্লাহ সে সম্পর্কে খুব জ্ঞাত। [ সুরা বাকারা ২:২৮৩ ]
ক্বালবুল মুতাকাব্বির- অহংকারী অন্তর, সুরা মুমিন
৫৬ নং আয়াতে এসব অন্তরের ব্যপারে আল্লাহ এরশাদ করেন
إِنَّ الَّذِينَ يُجَادِلُونَ فِي آيَاتِ
اللَّهِ بِغَيْرِ سُلْطَانٍ أَتَاهُمْ
ۙ إِن فِي صُدُورِهِمْ إِلَّا كِبْرٌ مَّا هُم
بِبَالِغِيهِ
ۚ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ ۖ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ
নিশ্চয় যারা আল্লাহর আয়াত সম্পর্কে বিতর্ক করে তাদের কাছে
আগত কোন দলীল ব্যতিরেকে
, তাদের
অন্তরে/ক্বলবে আছে কেবল
অহংকার/আত্নম্ভরিতা, যা
অর্জনে তারা সফল হবে না। অতএব
, আপনি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় তিনি সবকিছু
শুনেন
, সবকিছু
দেখেন। [
 সুরা মুমিন
৪০:৫৬
 ]
আল্লাহ আমাদের অন্তরকে অহংকারী থেকে পবিত্র রাখুন
ক্বলবুন গালিজ- এমন শক্ত অন্তর যার অন্তরে কখনো নম্রতা আসেনি,
সে কখনো কান্না করে না, এমন শক্ত দিল কখনো মুসলমানের
কষ্টে তার মনে দয়া আসেনা
, নিজের অপরাধমুলক, জালেমানা কাজ কর্মে তার মনে কখনো অনুশুচনা সৃষ্টি হয়না
আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন

فَبِمَا رَحْمَةٍ مِّنَ اللَّهِ لِنتَ لَهُمْ ۖ وَلَوْ كُنتَ فَظًّا غَلِيظَ الْقَلْبِ
لَانفَضُّوا مِنْ حَوْلِكَ
ۖ
আল্লাহর রহমতেই আপনি তাদের জন্য কোমল হৃদয় হয়েছেন
পক্ষান্তরে আপনি যদি রাগ ও কঠিন হৃদয় হতেন তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন
হয়ে যেতো।
অন্তরকে নম্র করুন আল্লাহর মাখলুকের
ব্যপারে নম্রতা প্রদশন করুন সারা দুনিয়ায় মানুষের মনে আপনার জন্য মহব্বত সৃষ্টি
হয়ে যাবে।
৭। ক্বালবুল গাফেল- অবহেলাকারী অন্তর,
কিসের প্রতি অবহেলা জানেন? সে ক্বলব নামাজের প্রতি, কুরআনের প্রতি, ইসলামী জ্ঞানের
প্রতি অবহেলাকারী। আর এ ধরনের অন্তর শয়তানের আশ্রয়স্থল।
 হাদিসে পাওয়া যায় :
‘‘শয়তান প্রতিটি
মানুষের ক্বলবের মধ্যে হাটু গেড়ে বসে থাকে। যখন সে জিকির শুরু করে তখন সে পালিয়ে
যায়। আবার যখন আল্লাহর জিকির থেকে গাফেল হয় তখন শয়তান আবার ক্বলবে ফিরে এসে
ওয়াসওয়াসা (কুমন্ত্রনা) দিতে থাকে।
’’
৮।মহরাঙ্কিত ক্বলব- যাদের অন্তরে তালা
লাগানো যারা হকের কথাও শুনেও হক মানেও না তাদের ব্যপারে আল্লাহ সুরা বাকারার ৭ নং
আয়াতে বলেন
]
خَتَمَ اللّهُ عَلَى
قُلُوبِهمْ وَعَلَى سَمْعِهِمْ وَعَلَى أَبْصَارِهِمْ غِشَاوَةٌ وَلَهُمْ عَذَابٌ
عظِيمٌ
আল্লাহ তাদের অন্তকরণ এবং তাদের কানসমূহ বন্ধ করে দিয়েছেন, আর
তাদের চোখসমূহ পর্দায় ঢেকে দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। [
 সুরা বাকারা ২:৭ ]
ক্বালবুল কাছি- পাথরের মত অন্তর, তাদের
সামনে কেহ ছটফট করতে করতে মরে গেলেও তাদের তাতে কোন পরওয়াই নাই
, তারা কেমন? আল্লাহ সুরা মায়েদার ১৩ নং আয়াতে বলেন
]
فَبِمَا نَقْضِهِم
مِّيثَاقَهُمْ لَعنَّاهُمْ وَجَعَلْنَا قُلُوبَهُمْ قَاسِيَةً يُحَرِّفُونَ
الْكَلِمَ عَن مَّوَاضِعِهِ وَنَسُواْ حَظًّا مِّمَّا ذُكِّرُواْ بِهِ
অতএব, তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের দরুন আমি তাদের উপর অভিসম্পাত করেছি
এবং তাদের অন্তরকে কঠোর করে দিয়েছি। তারা কালামকে তার স্থান থেকে বিচ্যুত করে
দেয় এবং তাদেরকে যে উপদেশ দেয়া হয়েছিল
, তারা তা থেকে উপকার লাভ করার
বিষয়টি বিস্মৃত হয়েছে। [
 সুরা মায়েদা ৫:১৩ ]
১০ দশম অন্তর যা আল্লাহর পছন্দ নয় তা হল আল ক্বালবুল আগলাফ, পর্দা
পরিহিত ক্বলব, আল্লাহ
এদের ব্যপারে সুরা বাকারার ৮৮ নং আয়াতে বলেন

وَقَالُواْ قُلُوبُنَا
غُلْفٌ بَل لَّعَنَهُمُ اللَّه بِكُفْرِهِمْ فَقَلِيلاً مَّا يُؤْمِنُونَ
তারা বলে, আমাদের হৃদয় অর্ধাবৃত। এবং তাদের কুফরের কারণে আল্লাহ
অভিসম্পাত করেছেন। ফলে তারা অল্পই ঈমান আনে। [
 সুরা
বাকারা ২:৮৮
 ]
১১
যে অন্তর সদা মন্দ চিন্তা করে, সে কোন কিছুতে ভাল দেখে না সব সময় নেগেটিভ চিন্তা করে, যার চিন্তা চেতনা নষ্ট সে সবকিছুতেই কোন না কোন খারাপ দেখতে পায়, এমন দিল আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদের অন্তর সব সময় স্পষ্ট বিষয় গুলি থেকে ফায়দা হাসিল না করে বক্র বিষয়গুলিকে নাড়াচাড়া করে ফেতনা ছড়ায় যেমন সুরা আল ইমরানের নং
আয়াতে আল্লাহ তাদের অন্তরের ব্যপারে বলেন
هُوَ الَّذِيَ أَنزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ آيَاتٌ
مُّحْكَمَاتٌ هُنَّ أُمُّ الْكِتَابِ وَأُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ فَأَمَّا الَّذِينَ
في قُلُوبِهِمْ زَيْغٌ فَيَتَّبِعُونَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ ابْتِغَاء الْفِتْنَةِ
وَابْتِغَاء تَأْوِيلِهِ وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيلَهُ إِلاَّ اللّهُ
তিনিই আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছেন।
তাতে কিছু আয়াত রয়েছে সুস্পষ্ট
, সেগুলোই কিতাবের
আসল অংশ। আর অন্যগুলো রূপক। সুতরাং যাদের অন্তরে কুটিলতা রয়েছে
, তারা অনুসরণ করে ফিৎনা বিস্তার এবং অপব্যাখ্যার উদ্দেশে
তন্মধ্যেকার রূপকগুলোর। আর সেগুলোর ব্যাখ্যা আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানে না।
১২ক্বলবুল মুরিব: যে
অন্তর সদা সন্দেহ পোষন করে এমন অন্তরকে আল্লাহ পছন্দ করেন না সুরা তওবার ৪৫ নং আয়াতে এদের ব্যাপারে আল্লাহ এরশাদ করেন
إِنَّمَا
يَسْتَأْذِنُكَ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ
وَارْتَابَتْ قُلُوبُهُمْ فَهُمْ فِي رَيْبِهِمْ يَتَرَدَّدُونَ
 
নিঃসন্দেহে তারাই আপনার কাছে অব্যাহতি
চায়
, যারা আল্লাহ ও
রোজ কেয়ামতে ঈমান রাখে না এবং তাদের অন্তর সন্দেহগ্রস্ত হয়ে পড়েছে
, সুতরাং সন্দেহের আবর্তে তারা ঘুরপাক খেয়ে চলেছে। [ সুরা তাওবা ৯:৪৫ ]
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এসব অন্তরের অধিকারী হওয়া থেকে রক্ষা করুন আমিন

1 টি মন্তব্য:

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.