মিজানুর রহমান আজহারী সাহেবের প্রতি খোলা চিঠি
মিজানুর রহমান আজহারী সাহেবের প্রতি খোলা চিঠি
সম্মানিত বক্তা আসসালামু
আলাইকুম
আপনি মাঠে ময়দানে দেশে বিদেশে যুবক ও তরুনদের একজন জনপ্রিয় বক্তা হিসেবে খ্যাতি
লাভ করেছেন, আপনার এই জনপ্রিয়তা আরো
বেশী পরিলক্ষিত হয় মিডিয়ায়, আপনার শত শত বক্তব্য থেকে একটি বক্তব্য
আমার দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে, সে বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমার এই
খোলা চিঠি, আশা করব
আপনি আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে আমি নগন্যের খোলা চিঠি খানা
পড়বেন---
আপনি জানেন হযরত আলী (রাঃ)
বিশ্বনবীর (দঃ) চাচাত ভাই।
বিশ্বনবী (দঃ) যখন নবুয়ত প্রাপ্ত
হন তখন যে কয়জন এই নবুয়তি ও দাওয়াতী কাজে জান প্রাণ দিয়ে বিশ্বনবীকে সহযোগীতা করেন
তাঁদের মধ্যে হযরত আলী (রাঃ) অন্যতম।
হযরত আলী (রাঃ) ও বিশ্বনবীর
(দঃ) মধ্যে সম্পর্ক আরো গাঢ় হয় যখন হুযুর
(দঃ) নিজের আদরের মেয়ে হযরত ফাতেমাকে আলী
(রাঃ) সাথে বিয়ে দেন।
মদীনায় হিজরীত করার পর আনসার
ও মুহাজিরদেরকে একেক জনকে একেক জনের সাথে ভাই করে দিলেন হযরত আলী (রাঃ)কে বিশ্বনবী
(দঃ) নিজের ভাই বানিয়ে নিলেন।
আলী (রাঃ) এর ফজিলত সম্পর্কে
হাদীস গ্রন্থে অসংখ্য হাদীস আছে, তার মধ্যে ১টি হাদীস হল হযরত
জায়েদ বিন আরকম (রাঃ) হতে বর্ণিত এই বর্ণনাকে
প্রায় ৩০ জন সাহাবী বর্ণনা করেছেন তা হল বিশ্বনবী বলেন (মান কুনতু
মাওলাহু ফা আলিয়্যুন মাওলাহু) যার আমি মওলা তার আলী মওলা।
হযরত উম্মে সালমা (রাঃ) হতে বর্ণিত বিশ্বনবী
(দঃ) এরশাদ করেন (লা ইউহিব্বু
আলিয়্যান মুনাফিকুন ওয়ালা ইউবগিজু মুমিনুন) আলীর সাথে মুনাফেক
ভালবাসা রাখতে পারবে না, মুমিন বিদ্বেষ রাখতে পারবে না।
উক্ত হাদীসের ব্যপারে হযরত
আলী (রাঃ) নিজেই বলেন
- যদি আমি কোন মুমিনের নাকে তলোয়ার চালিয়ে দিই, তারপরও সে আমার সাথে বিদ্বেষ রাখতে পারে না। আর কোন মুনাফেককে যদি ধনভান্ডারের খাজানাও দিয়ে দিই তবুও সে
আমাকে ভালবাসতে পারবে না।
সুতরাং আলী (রাঃ) সাথে মহব্বত ঈমানের
আলামত, আর তাঁর সাথে বিদ্বেষ মুনাফেকির আলামত।
হযরত ইমরান বিন হুসেন (রাঃ) বর্ননা করেন,
হুযুর (দঃ) এরশাদ করেন
(ইন্না আলিয়্যান মিন্নি ওয়া আনা মিনহু ওয়া হুয়া অলিয়্যু কুল্লি মুমিনিন)
অবশ্যই আলী আমার থেকে এবং
আমি আলি থেকে এবং আলী প্রত্যেক মুমেনের অলি বা অভিভাবক।
বিশ্বনবী (দঃ) হযরত আলী (রাঃ) কে কেয়ামত পর্যন্ত
হক বাতিল চিনার মাপকাঠি বলে দিয়েছেন- হযরত আলী (রাঃ)
হতে বর্ণিত তিনি বলেন একদিন বিশ্বনবী (দঃ)
আমাকে দেখলেন এবং বললেন হে আলী তোমার উদাহারন হযরত ঈসার মত, হযরত ঈসা (আঃ) কে নিয়ে ২ প্রকারের
লোক ধ্বংস হয়ে গেছে, কিছু লোক তাঁর সাথে বিদ্বেষ পোষন করেছে,
(এমনকি ঈসার (আঃ) মায়ের উপর
মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে,) ফলে তারা ধ্বংস হয়েছে, আর একদল ঈসাকে (আঃ) এত বেশী মহব্বত
করেছে যে তার ব্যপারে তা বলেছে যা সে নয়, তাঁকে আল্লাহর পুত্র
বলে দিয়েছে।(নাউজুবিল্লাহ)
ফলে তারাও ধ্বংস হয়েছে।
হযরত আলী (রাঃ) কে নিয়েও ২ দল বরবাদ হয়ে যাবে একদল হিংসা করে অপর দল অতিভক্তি করে। তাই আমাদের চেক করতে হবে আমাদের অন্তরে যেন হযরত আলীর প্রতি
কোন ধরনের সামান্যতমও হিংসা বিদ্বেষ বেয়াদবী প্রকাশ না পায় পক্ষান্তরে এমন অতিরঞ্জিত
কথাও যেন প্রকাশ না পায় যা তাঁর শানের বিপরীত।
জনাব মিজানুর রহমান আজহারী সাহেব আপনার কাছে অতিব সম্মানের সাথে অনুরোধ করছি আপনি
হাজার হাজার তরুন আপনাকে ফলো করে, আপনি
হযরত আলী (রাঃ) ও হযরত ওমর (রাঃ) এর ব্যপারে আপনার মুখ থেকে বের হওয়া মদ খাওয়া সংক্রান্ত
বিষয়গুলি আরো গভীর ভাবে গবেষনা করবেন এবং বিষয়টি স্পষ্ট করবেন। এমন যেন না হয় বর্তমান যুগে যেভাবে তরুন সমাজ যুব সমাজ নেশাগ্রস্থ
হয়ে যাচ্ছে, ইয়াবার নেশায় বুদ হয়ে
ঘুরে ফিরছে, তারা যেন এসব কথায় উৎসাহিত না হয়, তারা যেন এটা না ভেবে বসে যে বড় বড় সাহাবারা নেশা করেছে আমরা করলে দোষ কি?
তাই এসব বিষয় নিয়ে খোলা মাঠে বক্তব্য দেয়াটা আদৌ সমীচীন হচ্ছে কিনা আবার
একটু বিবেচনা করবেন।
আল্লাহ আমাদের সকলকে সঠিক দ্বীন প্রচারের এবং সঠিক দ্বীন বুঝার তৌফিক দান করুন
সালামান্তে
মোহাম্মদ নিজাম উদ্দীন।
surah maun bangla translation | সূরা আল-মাউন | Noor
উত্তরমুছুন