টিকটিকি ও মাকড়সা মারলে কি হয় ? Tiktiki & Makorsa Mara Kemon





মাকড়সা ও টিকটিকি মারলে কি হয়?

অনেকে প্রশ্ন করেন ঘরে মাকড়সা যে জাল বানায় তাতে ঘর ময়লা হয় ঘর পরিস্কার রাখার জন্য মাকড়সা মারা কি জায়েজ, আমরা শুনেছি মাকড়সা মারা জায়েজ নাই কেননা তা হিজরতের সময় হুযুর (দঃ) এর মহব্বতে কাজ করেছে, টিকটিকি বা গিরগিটকে মারা কি জায়েজ? কারন গিরগিট হযরত ইবরাহিম (আঃ) এর আগুনকে প্রজ্জলিত করার জন্য ফুক মেরেছিল।

মাসায়ালা হল- মাকড়সা যদি ঘরে সমস্যা সৃষ্টি করে তাহলে তা মারা জায়েজ, এগুলিকে না মারার কোন দলিল নাই, যে কোন প্রাণী যখন ক্ষতি করে তখন তা মারতে পারবেন।

আর টিকটিকির ব্যপারে বা গিরগিটের ব্যপারে সহিহ মুসলিমের হাদীস যখন হযরত ইবরাহিম (আঃ) এর জন্য আগুন জ্বালানো হচ্ছিল তখন সে তাকে প্রজ্জলিত করার জন্য ফুক মারছিল, বুখারী শরীফের ৩০৭৪ নং হাদীসে (লি ওয়াজাগিল ফুয়াইছিক) নিকৃষ্টতম ফাসিক বলে অভিহিত করেছেন।

বুখারী শরীফের ৩০৭৫ নং হাদীস (আমারাহা বিকাতলিল আওজাগ)

সাঈদ ইবনু মূসাইয়্যাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, উম্মে শারীক (রাঃ) তাঁকে খবর দিয়েছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে গিরগিট বা রক্তচোষা জাতীয় টিকটিকি হত্যা করার আদেশ দিয়েছেন।

এই হাদীসের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ওলামায়ে কেরাম বলেন টিকটিকি এবং রক্তচোষা জাতিয় প্রাণী যেমন গিরগিট, এসব প্রাণীর মধ্যে মানুষের প্রতি দুষমনি ভরা আছে, এগুলিকে মনুষ্য দুষমন জানোয়ারও বলা হয়। এগুলি সুযোগ পেলেই মানুষের ক্ষতি করে। সে জন্য হুযুর (দঃ) টিকটিকি মারার হকুম দিয়েছেন, তেমনি গিরগিটেরও একই হকুম যা টিকিটিকির হকুম।

হুযুর (দঃ) বলেন যে এক আঘাতে মারতে পারবে সে ৭০টি নেকি পাবে, কোন কোন বণনায় ১০০টি নেকির কথা উল্লেখ আছে, আর যত আঘাত বাড়বে তত নেকি কমবে, এর কারন যে কোন জানোয়ারকে যত কম কষ্ট দিয়ে মারা হবে তত উত্তম। বেশী কষ্ট দেয়া কাম্য নয়। সে জন্য ক্ষতিকর প্রাণী মারার সময় এমন পদ্ধতি অবলম্বন করা উচিত যাতে সে প্রাণীর কষ্ট কম হয়, যত কম কষ্ট দিবেন তত নেকী বেশী হবে।

যেমন মুসলিম শরীফের ৫৬৫১ নং হাদীস (মান কাতালা ওয়াজাগাতান, ফি আউয়্যালি দারাবাতিন ফালাহু কাজা ওয়া কাজা হাসানাতান, ওয়ামান কাতালাহা ফিত দারবাতিস ছানিয়া ফালাহু কাজা ওয়া কাজা হাসানাতান লিদুনিল উলা)

عَنْ أَبِي، هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَنْ قَتَلَ وَزَغَةً فِي أَوَّلِ ضَرْبَةٍ فَلَهُ كَذَا وَكَذَا حَسَنَةً وَمَنْ قَتَلَهَا فِي الضَّرْبَةِ الثَّانِيَةِ فَلَهُ كَذَا وَكَذَا حَسَنَةً لِدُونِ الأُولَى وَإِنْ قَتَلَهَا فِي الضَّرْبَةِ الثَّالِثَةِ فَلَهُ كَذَا وَكَذَا حَسَنَةً لِدُونِ الثَّانِيَةِ ‏"‏ ‏.‏
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রথম আঘাতে যে ব্যক্তি কাকলাস মেরে ফেলবে, তার জন্য রয়েছে এত এত পরিমাণ সাওয়াব। আর যে ব্যক্তি দুই আঘাতে তাকে মেরে ফেলবে, তার জন্য এত এত পরিমান সাওয়াব, প্রথমবারের চাইতে কম। আর যদি তৃতীয় আঘাতে মেরে ফেলে, তা হলে তার জন্য এত এত পরিমাণ সাওয়াব তবে দ্বিতীয়বারের চাইতে কম।

অতএব টিকটিকি ও রক্তচোষ জাতিয় প্রাণী মারা জায়েজ ও সাওয়াবের কাজ, আর মাকড়সা যদি ক্ষতির কারন হয় মজবুর অবস্থায় মারতে হয় তাহলে জায়েজ বিনা কারনে জায়েজ নয়, মারার সময় খেয়াল রাখবেন জুলুম যেন না হয়।



কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.