পড়ালেখার প্রতি বাচ্চাদের এত অনিহা কেন? মা বাবার ৫টি বড় ভুল
পড়ালেখার প্রতি বাচ্চাদের এত অনিহা কেন? মা বাবার ৫টি বড় ভুল
প্রিয় দশক আসসালামু আলাইকুম! অনেক মা বাবা
চান সন্তানের মধ্যে পড়ালেখার আগ্রহ সৃষ্টি করতে, আমি ব’লব বাচ্চাদের মধ্যে পড়ালেখার
আগ্রহ বিলকুল সৃষ্টি করার চেষ্টা করবেন না।
যদি পেরেন্টস তাদের বাচ্চাদের মধ্যে পড়ালেখার
আগ্রহ তৈরী না করে তাহলে কি করবে? প্রত্যেকেই চাই তাদের সন্তান পড়ালেখা করে কামিয়াব
হউক। আর আপনারা জানেন কামিয়াবির সবচেয়ে বড় রাস্তা পড়ালেখার মাধ্যমে তৈরী হয়। কিন্তু
মা বাবারা যখন সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তাদের ভিতর পড়ালেখার আগ্রহ তৈরী করতে
চান কিন্তু অধিকাংশই সফল হন না।
প্রিয় দর্শক এই ভুল ধারনাকে দুর করে নিন একটি
উদাহারনের মাধ্যমে। যারা বাচ্চা তাদের উদাহারন হল বিচির মত। আপনি যখন কোন বিচিকে জমিনে
রোপন করেন, রোপনের পর আপনি অপেক্ষ করেন কখন এই বীজ চারা হয়ে মাটির উপর বেরিয়ে আসবে।
এখন আপনি যদি অপেক্ষা না করে সে বীজের ভিতর ইনজেকশন লাগাতে থাকেন যাতে এর ভিতর থেকে
বড় বড় ফল পাওয়া যায়, কিন্তু আপনার এই চেষ্টার দ্বারা আপনি সফল হবেন না বরং আপনি সে
বীজের ক্ষতি করবেন। প্রিয় দশক যে সব মা বাবা ছোট থাকতেই বাচ্চাদের মধ্যে পড়ালেখার আগ্রহ
তৈরী করতে খুব বেশী কড়াকড়ি করেন তারা মুলত এই ভুলটাই করেন, বীজের ভিতর ইনজেকশন লাগান।
এখন মা বাবারা কি করবেন? যেমনি ভাবে জমিনে
বীজ বপনের পর তা থেকে চারা বের হয়ে আসলে বাগানের মালি চারার খুব যত্ন নেন, তেমনি বাচ্চাকেও
একজন মালির মত মা বাবার যত্ন নিতে হবে। একজন ভালো ও দক্ষ মালির কারনে বাগান ফুলে ফলে
সুন্দর হয়ে যায়। আর পক্ষান্তরে কোন বাগানের মালি যদি আনাড়ি হয়, সে বাগানের সর্বনাশ
করে ছাড়ে। আমরা আমাদের বাচ্চাদের সর্বনাশ আমাদের অজ্ঞানতার কারনে করে ফেলি। একান্ত
আন্তরিকতা ও সন্তানের প্রতি ভালোবাসা থাকা সত্বেও জ্ঞানের স্বল্পতার কারনে আমরা বাচ্চাদের
ক্ষতি করে ফেলি।
প্রিয় দশক আপনি যদি চান আপনার সন্তানের ভিতর
পড়ালেখার আগ্রহ সৃষ্টি হউক, মনে রাখবেন আপনার সন্তানের ভিতর আল্লাহ তায়ালা কুদরতী ভাবে
জানার আগ্রহ সৃষ্টি করে রেখেছেন। এখন পিতা মাতার দায়িত্ব হল সন্তানকে ইনভাইরনমেন্ট
দেয়া। পরিবেশ তৈরী করে দেয়া। আর এই ইনভাইরন্টমেন্টের ব্যপারে আমি আজ ৫টি টিপস বলব এই
৫টি টিপস আপনি যদি খেয়াল রাখেন তাহলে দেখবেন বাচ্চার ভিতর যে আগ্রহ মওজুদ ছিল তা অটোমেটিক
বাহিরে বিকশিত হতে থাকবে।
দর্শক পড়ার শওক পয়দা করার জন্য আপনাকে বাচ্চার
প্রতি ফোকাস বাড়াতে হবে, আপনারা দেখবেন সুর্যের আলো সব কিছুর উপর পড়ে, কিন্তু কখনো
কোন কাগজ, লাকড়ি, শুকনু পাতাত এই আলো আগুন জ্বালায় না, কিন্তু ছোট একটি মেগনিফাই গ্লাস
যদি রাখেন যার ভিতর দিয়ে যদি সুর্যের আলো কোন কাগজে পড়ে তা আগুন জ্বালিয়ে দেয়। ফোকাসের
এত বেশী শক্তি। যদি আপনি বাচ্চােকে ফোকাস ঠিক করে দেন তাহলে যে পড়া সে ৬ ঘন্টায় দিতে
পারে না সে পড়া আপনাকে সে আধা ঘন্টায় শিখে দিতে পারবে। সে জন্য আপনি ৫টি কাজ করবেন
১। যখনই বাচ্চাকে পড়াতে বসাবেন তার আগে ২/৩
মিনিট ফিজিক্যাল একটিভিটি করাবেন, এটা মুলত তার মানসিক ও শারিরিক অলসতা দুর করার জন্য, এর ফলে তার পড়ায়
মনযোগ অনেকাংশে বেড়ে যায়।
আপনারা দেখবেন যেসব বাচ্চা দৌড় ঝাপ করে তারা
পড়াতেও একটিভ থাকে আর যারা অলস প্রকৃতির হয় তারা পড়াতেও অলস ও অমনোযোগি হয়।
২। মোবাইল এবং টিভি বিলকুল বন্ধ করে দিন।
কারন মোবাইল ও টিভিতে যে দৃশ্য সে দেখবে তার দিকে তার মনযোগ ভাগ হয়ে যাবে। বাচ্চারা
টিভি না দেখলেও এই টিভির শব্দও যেন তাদের কানে না যায়, এতে পড়ালেখায় বাচ্চার কনসানট্রেশন
নষ্ট হয়ে যায়। যেভাবে চারা গাছকে বিভিন্ন কীট
পতঙ্গ, গরু ছাগল থেকে হেফাজত করতে হয়, তেমনি বাচ্চাকেও পড়ালেখার সময় সব ধরনের শব্দ
সহ মনযোগী নষ্টকারী সব বিষয় থেকে দুরে রাখতে হবে।
৩। বাচ্চাদের পড়া শিখানোর আগে বসা শিখাতে
হবে, অনেক সময় ঘরে কয়েকজন বাচ্চা থাকে এখন সবগুলি বাচ্চাকেই যদি আপনি একসাথে বসিয়ে
দেন তাহলে তাদের িএভাবে ছেড়ে আপনি অন্য কাজে ব্যস্ত থাকেন তখন বাচ্চারা না পড়ে একে
অপরকে ডিস্টার্ব করা আরম্ভ করবে। তাই যদি একসাথে বসান তখন সাথে থাকবেন নতুবা আলাদা
আলাদা বসাবেন।
৪। বাচ্চা কোন রুলস ভঙ্গ করলে তখন আপনি তাকে
মুখের শব্দ দ্বারা নয় বরং ইশারায় কন্ট্রোল করা আরম্ভ করুন। পড়ার সময় কথা বলা আওয়াজ
করা থেকে বিলকুল বিরত থাকুন, তখন এমন শান্ত পরিবেশে বাচ্চা পড়ালেখায় ধ্যান দিতে গুরুত্ব
দিবে। আপনি যখন নিজেকে নিজে কন্ট্রোল করবেন চুপচাপ সব কাজ করবেন শুধু বাচ্চাদের খাতিরে,
তখন বাচ্চাও নিজে নিজে কন্ট্রোল করা শিখবে।
৫। বচ্চাদের দীর্ঘ সময় পড়ালেখায় মগ্ন না রেখে
তাঁদের মাঝে মাঝে ব্রেক দিবেন, এই ব্রেকে কি করতে দিবেন, তাদের ২/৩ মিনিটের জন্য ফিজিক্যাল
একটিভিটি করাতে পারেন, এই ধরনের ব্রেক আপনি প্রতি আধা ঘন্টা পর পর করাতে পারেন।
কোন মন্তব্য নেই