সুবহানাল্লাহ! ফেরেশতারা ১০০০ বছর বেহুশ পড়ে ছিল। jaal haq || Bangla Islam...
ইমাম গাজ্জালি (রহঃ) এর দাকায়েকুল আখবার নামক কিতাবে মৃত্যু সৃষ্টির রহস্য সম্পর্কে উল্লেখ আছে
আল্লাহ তাআলা সর্ব প্রথম মৃত্যুকে সৃষ্টি করে ৭০ হাজার জিঞ্জীর দ্বারা আবদ্ধ করে ৭০ হাজার পর্দার আড়ালে রেখে দিয়েছিলেন। সেই জিঞ্জীর এত বড় ছিল যে একটা তেজী ঘোড়া সহস্র বছর পাড়ি দিলেও তার একটি প্রান্ত অতিক্রম করতে পারবে না। ফেরেশতাগণ কেউই জিঞ্জীরের শব্দের ভয়ে মৃত্যুর কাছে যেতো না। আর মৃত্যু যে কি জিনিস তারা সেটা জানতোই না।একদিন আল্লাহ তাআলা সকল ফেরেশতাদের ডেকে মৃত্যুকে পর্দার আড়াল থেকে উন্মোচন করলেন। মৃত্যুর এমন ভয়ংকর ছুরত দেখে ফেরেশতারা বেহুশ হয়ে গেল, আল্লাহ তায়ালা ১০০০ বছর পর তাদের হুশ ফিরিয়ে দিলেন,
ফেরেশতাগণ জিজ্ঞেস করলো, “হে আল্লাহ এর থেকে বড় কিছু কি আপনি সৃষ্টি করেছেন।” তখন মহান আল্লাহ তাআলা বললেন - “আমি মৃত্যুকে সৃষ্টি করেছি এবং আমি এর চেয়েও বড়।” অতঃপর আল্লাহ তাআলা আজরাঈল (আঃ)
কে বললেন, “হে আজরাঈল! আমি তোমাকে মৃত্যুর উপর ক্ষমতাবান করলাম।” তখন আজরাঈল (আঃ) বললেন, “হে আল্লাহ! আমার কি এমন ক্ষমতা আছে যে আমি মৃত্যুকে আয়ত্তে রাখতে পারি?” তখন আল্লাহ তাআলা আজরাঈল (আঃ) কে মৃত্যুর চেয়েও সহস্র গুন শক্তি প্রদান করলেন। ফলে আজরাঈল (আঃ) মৃত্যুকে স্বীয় ডান হাতের মুঠোয় আবদ্ধ করে ফেললেন। আর তখন থেকে আজরাঈল (আঃ) এর নাম হল মালাকুল মউত অর্থাৎ মৃত্যুর অধিপতি। তারপর মালাকুল মউত আল্লাহর কাছে আবেদন করলেন, “হে আল্লাহ! আপনি আমাকে যে ক্ষমতা দিয়েছেন তা আমি আসমান ও জমিনের সর্বত্র ঘোষনা করতে চাই।” আল্লাহ তাআলা মালাকুল মউতকে অনুমতি দান করলে তিনি বজ্র কন্ঠে ঘোষনা করলেন, " হে সৃষ্ট জীব! আমি সেই মৃত্যু যে বন্ধু বান্ধব, পিতা মাতা, ভাই বোন, স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাই। ঘর বাড়ি, দালান কোঠা ধ্বংস স্তুপে পরিনত করি। তোমরা গগনস্পর্শী অট্টলিকায় থাকলেও আমি তোমাদের কাছে পৌছাবো। সকলকেই আমার স্বাধ গ্রহন করিতে হইবে"।
৭। আজরাইল সারা বিশ্বে একই সময় এত প্রাণ কিভাবে কবজ করেন?
গোটা পৃথিবী হজরত আজরাইল (আ.)-এর কাছে দানাভর্তি ছোট্ট পেয়ালার মতো। আল্লাহ মহান যখন যে দানাটি উঠিয়ে নেওয়ার জন্য তার প্রতি হুকুম প্রদান করেন, তৎক্ষণাৎ তিনি তা বাস্তবায়ন করেন। গোটা পৃথিবী আজরাইলের (আ.) চোখের সামনে উপস্থিত। আদেশ হওয়া মাত্র হজরত আজরাইল (আ.) জান কবজ করেন।
পবিত্র কোরআনে আরো ইরশাদ হয়েছে,
إِذَا جَاء أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ
تَوَفَّتْهُ رُسُلُنَا وَهُمْ لاَ يُفَرِّطُونَ
تَوَفَّتْهُ رُسُلُنَا وَهُمْ لاَ يُفَرِّطُونَ
অবশেষে যখন তোমাদের কারো মৃত্যু উপস্থিত হয় তখন আমার প্রেরিতরা তার মৃত্যু ঘটায় এবং তারা এতে কোনো ত্রুটি করে না। (সুরা আনআম, আয়াত— ৬১)।
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে আবি হাতেম ও ইবনে আবি শায়বা (রহ.) হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণনা করেন— উক্ত আয়াতে রুসুল শব্দ দ্বারা রুহ কবজ করার সময় হজরত আজরাইলের সঙ্গে উপস্থিত সহকারী ফেরেশতাগণকেই বোঝানো হয়েছে। হজরত রবি ইবনে আনাস (রহ.) বলেন, রুহ কবজ করার সময় মালাকুল মউতের সঙ্গে তাঁর সহকারী হিসেবে একদল ফেরেশতা উপস্থিত থাকেন। কিন্তু হজরত আজরাইলই (আ.) মূল দায়িত্ব পালন করেন। রুহ কবজ করার পর রুহকে রহমতের ফেরেশতা অথবা আজাবের ফেরেশতার হাতে সোপর্দ করা হয়।
কোন মন্তব্য নেই