মাসিকের পর আতর ব্যবহার। নারীদের পারফিউম ব্যবহারের বিধান। Perfume for wom...
মাসিকের পর নারীদের সুগন্ধী ব্যবহারের নিয়ম। নারীদের আতর ব্যবহারের বিধান। মহিলাদের পারফিউম ব্যবহারের বিধান
এক বদরী মহিলা ছিল, খুবই বুদ্ধিমতি ও সমজদার নারী ছিলেন, তিনি যখন তার মেয়েকে বিয়ে দিলেন তখন মেয়েকে বললেন আমার শুধু একটিিউপদেশ। তা হল তোমার শরীর থেকে, পোষাক থেকে, আচরন থেকে তোমার স্বামীর যেন কখনো দুর্গন্ধ অনুভব না হয়।
ইসলামের পূর্ব যুগে তত বেশী প্রসাধন সামগ্রী ছিল না, শুধু তেল ছিল, আতর ছিল, মিসওয়াক ছিল, কিন্তু তবুও নারীরা তাদের স্বামীদের জন্য এসব বিষয়ে খুবই যত্নবান ছিল, কিন্তু আফসুসের বিষয় হল আজকালকার নারীরা বাহিরে যাওয়ার সময় খুবই পরিপাঠি অবস্থায় বের হয়, সব ধরনের প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহার করে, কিন্তু ঘরের ভিতর অতীব নোংড়া ময়লা ও দুগন্ধযুক্ত কাপড় পরিধান করে থাকে, অথচ উচিত হল নারীরা তাদের স্বামীর জন্যই বেশী পরিপাঠি হয়ে সাজগুজ করে থাকবে।
এক হাদীসে এসেছে যে নারী পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে গোসল করে, আতর লাগিয়ে, পরিপাঠি হয়ে নিজের স্বামীর জন্য অপেক্ষায় থাকে, স্বামী ঘরৈ এসে স্ত্রীকে দেখে খুশী হয়ে যায় তখন সে নারী ঐ মুজাহিদের বরাবর সাওয়াব পায় যে শত্রুর সীমানায় ঘোড়া বেঁধে পাহাড়া দেয়।
আবার শুধু নারীরা পরিপাঠি হয়ে থাকবে তা নয় বরং পুরুষরাও দেখা যায় ঘরে অত্যন্ত নোংড়া ও এলোমেলো অবস্থায় থাকে ঘামের দুর্গন্ধ সিগারেটের দুর্গন্ধ নিয়ে স্ত্রীর কাছে যায়, অথচ সলফে সালেহিনদের অভ্যাস ছিল ভিন্ন যেমন-
একদিন হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর নিকট কোন মাসায়ালা জিজ্হেস করার জন্য আসলেন, তখন ছিল রাত, দেখলেন হযরত ইবনে আব্বাস গোসল করে সুন্দর জামা পরে, খুশবু লাগিয়ে বিলকুল তৈরী হয়ে আছে, ইবনে ওমর মনে করলেন হযরত হয়ত কোথাও সফরে যাচ্ছেন, তখন হযরত ইবনে আব্বাস বললেন আমি সফরে যাচ্ছিনা বরং অন্দর মহলে যাচ্ছি, সে জন্যই এত প্রস্তুতি, আমি যেমন পছন্দ করি আমার কোন খুশবুদার স্ত্রী হউক, পরিপাটি বউ হউক, আমার স্ত্রীও কি চাইতে পারে না যে তার স্বামী পরিপাটি হউক, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হউক? যদি আমার কাপড় থেকে দুর্গন্ধ বের হয়, শরীর থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়, তাহলে শুধু স্ত্রী স্বামীর জন্য সুগন্ধ ব্যবহার করে পরিপাটি হয়ে থাকলে লাভ কি? তখনতো স্ত্রীর মনে স্বামীর প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি হবে।
েআরো মনে রাখবেন নারীদের জন্য বাহিরে যেতে সুগন্ধ ব্যবহার নিষিদ্ধ কিন্তু নারী ঘরে তাঁর স্বামীর জন্য সুগন্ধী ব্যবহার করতে পারবে।
মহিলা আতর ব্যবহার করবে কেবল নিজের জন্য এবং নিজের স্বামীর জন্য। স্বামী যেন তার নিকট থেকে কোন দুর্গন্ধ না পায় তার খেয়াল রাখতে হয় তাকে। স্বামীর মনে যাতে কোন ঘৃণার বীজ বপন না হয় সে জন্য মাসিক শেষে মহিলাদেরকে লজ্জাস্থানে সুগন্ধি রেখে দুর্গন্ধ দূর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মাসিক বন্ধ হওয়ার পর মহিলা সারা শরীর ধুয়ে নেবে। পরে বস্ত্রখন্ড- বা তুলোর মধ্যে কোন সুগন্ধি লাগিয়ে লজ্জাস্থানে রেখে নেবে। যেমন বুখারী শরীফের ৩১৪, মুসলিমের ৩৩২ এবং মেশকাত এর ৪৩৭ নং হাদীস
وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ أَنَّ امْرَأَةً مِنَ الأَنْصَارِِ سَأَلَتِ النَّبِيَّ ﷺ عَنْ غُسْلِهَا مِنْ الْمَحِيضِ فَأَمَرَهَا كَيْفَ تَغْتَسِلُ قَالَ خُذِي فِرْصَةً مِنْ مِسْكٍ فَتَطَهَّرِي بِهَا قَالَتْ كَيْفَ أَتَطَهَّرُ؟ فَقَالَ تَطَهَّرِي بِهَا قَالَتْ كَيْفَ اَتَطَهَّرُ بِهَا؟ قَالَ سُبْحَانَ اللهِ تَطَهَّرِي بِهَا فَاجْتَذَبْتُهَا إِلَيَّ فَقُلْتُ لَهَاتَتَبَّعِي بِهَا أَثَرَ الدَّمِ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক আনসার মহিলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে হায়যের গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো। কীভাবে গোসল করতে হবে তিনি তাকে সে ব্যাপারে জানিয়ে দিলেন। তারপর বললেন, মিস্কের সুগন্ধিযুক্ত একখন্ড কাপড় নিয়ে তা দিয়ে ভালোভাবে পাক-পবিত্রতা অর্জন করবে। মহিলাটি বলল, আমি কীভাবে তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করবো? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করবে। সে আবার বললো, আমি তা দ্বারা কিভাবে পবিত্রতা অর্জন করবো? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, সুবহানাল্লাহ (এটাও বুঝলে না)! তা দ্বারা পবিত্রতা লাভ করবে। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বললেন, তখন আমি তাকে আমার দিকে টেনে আনলাম এবং (চুপিসারে) বললাম, রক্তক্ষরণের পর তা দ্বারা (গুপ্তাঙ্গের ভিতরের অংশ) মুছে নিবে (এতে দুর্গন্ধ দূর হবে)। (বুখারী ও মুসলিম)
পক্ষান্তরে স্বামী ছাড়া অন্য কোন পুরুষের জন্য সেন্ট্ ব্যবহার করা কোন মহিলার জন্য বৈধ নয়। বিশেষ করে পরপুরুষকে আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে কোন মেয়ে সুগন্ধি ব্যবহার করলে, সে ভালো মেয়ে নয়।
রাসুল (সাঃ) বলেন, ‘‘প্রত্যেক চক্ষুই ব্যভিচারী। আর মহিলা যদি (কোন প্রকার) সুগন্ধ ব্যবহার করে কোন (পুরুষদের) মজলিসের পাশ দিয়ে অতিক্রম করে তবে সে ব্যভিচারিণী।’’ আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে হিববান, ইবনে খুযাইমাহ, হাকেম, সহীহুল জা’মে হা/৪৫৪০
তিনি আরো বলেন, ‘‘সেই মহিলার কোন নামায কবুল হয় না, যে তার স্বামী ছাড়া অন্য কারোর জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করে; যতক্ষণ না সে নাপাকীর গোসল করার মত গোসল না করে।’’ আবূ দাঊদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, বাইহাকী
তদনুরূপ স্বামী মারা গেলে তার শোকপালনের সময়কালে বিধবার জন্য সর্বপ্রকার সুগন্ধি; সুবাসিত সাবান বা তৈলাদি ব্যবহার নিষিদ্ধ। এমন কি নিজের ছেলেমেয়ে বা অন্য কাউকে সেন্ট্জাতীয় কিছু লাগিয়ে দিতেও পারে না। যেহেতু সুগন্ধি হাতে এসে যাবে তাই।
কোন মন্তব্য নেই