মোবাইলের সহি ব্যবহার।Proper use guide of Mobile || Jaalhaq
মোবাইল এর ভয়ানক নেশা
জিন্দেগীতে যে জিনিষের সাথে আমরা সবচেয়ে বেশী সময় কাটাই তা হল আমাদের মোবাইল।
আমরা যেখানেই থাকিনা কেন, যা কিছু করিনা কেন, এটি আমাদের সাথেই থাকে।
চাই আমরা খানা খাই, মসজিদে যাই, গাড়ি চালাই, কিংবা অন্য যে কোন কাজ করিনা কেন এটি বেশীরভাগ সময় আমাদের হাতে থাকে।
যদি আপনি কোন জরুরী কাজ করেন এমন সময় যদি কেহ আপনাকে ডাকে তাহলে আপনি তার ডাকে সাড়া দেন না। কেননা আপনার কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
কিন্তু আপনি যতই জরুরী কাজ করুননা কেন, যখন আপনার ফোনের বেল বেজে উঠে, তখন আপনি সে ফোন উঠাতে অলসতা করেন না। সেটা আপনাকে দেখতেই হয়। না দেখে আপনি থাকতে পারেন না।
বন্ধুরা এখন একথা বলা ভুল হবেনা যে, মোবাইল ফোন বানানো হয়েছে আমাদের ব্যবহারের জন্য। কিন্তু সে মোবাইল ফোন এখন আমাদেরকেই ব্যবহার করছে।
মোবাইল ব্যবহার আমাদের কন্ট্রোলে থাকা উচিত। কিন্তু আমাদের সকলের জানা আছে, আমরা সকলে জানি যে মোবাইল ফোন কিভাবে আমাদের জিন্দেগীকে কন্ট্রোল করে যাচ্ছে।
> আমাদের সময় বরবাদ করে দিচ্ছে
> আমাদের কাজকে বরবাদ করে দিচ্ছে
> আমাদের দক্ষতাকে নষ্ট করে দিচ্ছে
> ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখা বরবাদ করে দিচ্ছে
> আত্মিয়দের প্রতি দায় দায়িত্বকে ধ্বংস করে দিচ্ছে
> কাছের মানুষের সাথে দুরত্ব সৃষ্টি করে দিচ্ছে
আমরা সবই জানি বুঝি তবুও আমরা এটাকে ব্যবহার করা কমাচ্ছিনা। এটি আমাদের জিন্দেগীর অংশে পরিণত হয়ে গেছে। বরং েএটি এখন এমন যেন এটি আমাদের শরীরেরই একটা অংশ। একে ছাড়া আমরা কোথাও যেতে পারিনা।
বন্ধুরা আমি এটা বলছিনা যে মোবাইল ফোন খারাপ, কোন কিছুই ভালো কিংবা খারাপ হয়না, আমাদের ব্যবহারের কারনেই তা ভালো কিংবা মন্দে পরিনত হয়।
মোবাইল একটি ভালো জিনিষ, তবে যদি সেটিকে সেনসিভেল ওয়েতে ব্যবহার করা হয।
আমরা যেভাবে মোবাইলকে ব্যবহার করি তার মধ্যে ৩০% ই শুধু আমাদের প্রয়োজনীয় কাজ হয়। বাকী ৭০% শুধু আমরা আমাদের মূল্যবান সময়কে বরবাদ করে থাকি।
কেননা ৭০% কেইসে আমরা মোবাইকে কন্ট্রোল করিনা। বরং মোবাইল আমাদেরকে কন্ট্রোল করে থাকে।
বন্ধুরা মোবাইল কোম্পানীগুলি তাদের এপ্লিকেশনগুলি এমন ভাবে ডিজাইন করে রেখেছে, সেগুলি মানুষকে আকড়ে ধরে রাখে।
এপ্লিকেশন ডিজাইনাররা এই বিষয়ে বেশী জোড় দেয় যে, যাতে ইউজার তাদের তৈরী এপ্লিকেশনের সাথে বেশী বেশী জুড়ে থাকে, আকৃষ্ট হয়ে থাকে।
তারা এমন ভাবে এপ্লিকেশন ডিজাইন করে রেখেছে যে সেগুলি ব্যবহার করার সময় আপনার সময়ের দিকে খেয়ালই যেন না থাকে। আপনি যেন সে এপ্লিকেশনের ভিতর ডুবে যান।
এবং আস্তে আস্তে এটি আপনার অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়।
সে জন্য আপনি আপনার মোবাইলের অপ্রযোজনীয় এপ্লিকেশনগুলি আন ইনষ্টল করে দিন। এবং এসবের নোটিফিকেশনগুলি বন্ধ করে দিন।
বন্ধুরা আরো একটি কথা মনে রাখবেন, মোবাইলকে আপনার মাথার পাশে রেখে কখনো ঘুমাবেন না।
আমাদের বাহানা হয় যে আমরা সকালে উঠার এলাম মোবাইলে লাগাই, আর এর ফলে এলাম বাজার সাথে সাথে এলাম বন্ধ করেই আমরা মোবাইলের নোটিফিকেশনগুলি দেখা আরম্ভ করে দিই।
আর এই ভাবেই আমাদের দিনের শুরু মোবাইল দিয়েই শুরু হয়। সকালে সুন্নত পদ্ধতিতে ঘুম থেকে উঠা এবং সুন্নত পদ্ধতিতে কাজ শুরু করার পথে এই মোবাইল অনেক বড় বাঁধা। যার ফলে আমাদের হায়াত রিযিক ও কাজে বরকত দুর হয়ে গেছে।
বন্ধুরা আমাদের উচিত সকালে উঠার জন্য মোবাইলের এলার্মের পরিবর্তে কোন একটি এলার্ম ঘড়ি ব্যবহার করা। তাহলে সকালে উঠে আমরা মোবাইল দেখার পরিবর্তে আমরা নামাজ কালাম দিয়ে আমাদের দিনের শুরু করতে পারি।
বন্ধুরা বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এমন হয় যে আমরা কোন কাজে মোবাইল হাতে নিলাম, কিন্তু দেখা গেল হোয়াটস আপ এ কোননা কোন মেসেজ শো করছে, সেটির রিপ্লাই করার পর আমরা ফেইসবুকে আমাদের সময় নষ্ট করা আরম্ভ করে দিই।
এইভাবে মোবাইলে আমরা এমনভাবে ডুবে যাই যে অনেক সময় আমাদের মনেও থাকে না যে আমরা মোবাইল কোন কাজের জন্য হাতে নিয়েছি।
বন্ধুরা মোবইলের সহিহ ব্যবহারের জন্য জরুরী হল যখনই কোন কাজের জন্য মোবাইল উঠাবেন তখন এটা মনে রাখবেন যেন মোবাইল কি কাজের জন্য হাতে নিয়েছেন। তারপর মোবাইলকে আনলক করার পর সে কাজটি করে মোবইল পুনরায় যথাস্তানে রেখে দেন।
বন্ধুরা মনে রাখবেন কোন কিছুই ভালো বা খারাপ হয়না, তবে আমাদের ব্যবহারের তারিকাই তাকে ভালো কিংবা মন্দ বানিয়ে দেয়।
আপনি মোবাইলের ব্যবহার ভালো কাজের জন্য করুন, নলেজ বাড়ানোর জন্য করুন, কিছু শিখার জন্য করুন।
যদি আপনি মোবাইল ব্যবহারের সিস্টেম বদলে ফেলেন, এর কন্ট্রোল নিজের হাতে নিয়ে নেন, একে একটি সেনসিবল ওয়েতে ব্যবহার করেন, তাহলে আপনার জীবনে যে পরিবর্তন আসবে তা আপনি নিজেই অনুভব করতে পারবেন।
কোন মন্তব্য নেই