গোসলের সম্পূর্ণ নিয়ম মহিলাদের ১০টি মারাত্মক ভুল

 গোসলের সম্পূর্ণ নিয়ম

মহিলাদের ১০টি মারাত্মক ভুল



গোসলের সম্পূণ নিয়ম জানার জন্য এই ভিডিও নিজেও দেখুন এবং অন্যদেরকেও শেয়ার করুন।
নারী ও পরুষের গোসলের অসংখ্য ভুল এই ভিডিওর মাধ্যমে সংশোধন হয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ।
গোসল ফরয হয়, স্বামী স্ত্রীর মিলন, স্বপ্নদোষ, নারীদের হায়েজ ও নেফাস থেকে বিরত হওয়ার পর গোসল ফরয হয়।
অনেকে প্রশ্ন করেন অনেক মহিলা ডাক্তারের কাছে গেলে ইন্টারনাল চেকাপ করায় তাতে কি গোসল ওয়াজিব হবে কিনা? এর জবাবে ফোকাহায়ে কেরাম বলেছেন এতে নারীদের গোসল ওয়াজিব হবেনা।
নারীদেরও স্বপ্নদোষ হয়-
উম্মু সালামাহ্ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু সালামাহ্ একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন,
- হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ তা'আলা হক কথা বলতে লজ্জাবোধ করেন না। তাই মহিলাদের যখন স্বপ্নদোষ হয় তখন কি তার উপর গোসল করা জরুরি?
- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ, যখন সে বীর্য দেখবে।

- (এ কথা শুনে) উম্মু সালামাহ্ (রাযিঃ) বললেন, “ইয়া রাসূলাল্লাহ! মহিলাদেরও কি স্বপ্নদোষ - হয়"? তিনি বললেন: তোমার উভয় হাত ধূলিময় হোক! তাহলে তার সন্তান কেমন করে তার সদৃশ হয়?”
[সহীহ মুসলিম, হাদিস নম্বরঃ [599]
উল্লেখ্য যে, সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ কথাও বলেছেন যে,
مَاءَ الرَّجُلِ غَلِيظٌ أَبْيَضُ وَمَاءَ الْمَرْأَةِ رَقِيقٌ أَصْفَرُ
“সাধারণত পুরুষের বীর্য হয় গাঢ় ও সাদা এবং স্ত্রীলোকের বীর্য হয় পাতলা ও হলদে।” (সহীহ মুসলিম হা/ ৩১১)
সুতরাং বুঝা গেল পুরুষের মত নারীরাও যদি ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে কাপড়ে কোন মনি বা বীর্যের কোন চিহ্ন দেখতে পায় তাহলে সেটা স্বপ্নদোষের আলামত বা চিহ্ন।সুতরাং সে নারীর জন্য গোসল করা ফরয হয়ে যাবে।
তবে যদি স্বপ্নদোষ হয়েছে তা তার মনে আছে কিন্তু এতে কোন ধরনের চিহ্ন সে তার কাপড়ে যদি দেখতে না পায় তাহলে গোসল ফরয হবেনা।

গোসলের ফরয ৩টি
(১) কুলি করা
(২) নাকে পানি দেয়া
(৩) সমস্ত শরীরে পানি প্রবাহিত করা

গোসলের সুন্নত ৫টি
(১)দুই হাত কব্জিসহ ধোয়া
(২) ইস্তিঞ্জা করা। যে স্থানে নাপাক লেগে আছে তা ধোয়া
(৩) নাপাকি দুর করার নিয়ত করা
(৪) প্রথমে অজু করে নেয়া
(৫) সমস্ত শরীরে ৩ বার পানি প্রবাহিত করা

গোসলের পরিপূণ নিয়ম হল
মানুষ যখন নাপাক থাকে তখন আল্লাহর জিকির করা মকরুহ। তবে এটা এমন মকরুহ নয় যে মানুষ তাতে গুনাহগার হবে, তবে উত্তম হল কুলি করে নেয়া। সে জন্য বাথরুমে প্রবেশের আগে কুলি করে নিবেন এবং বাথরুমে প্রবেশের আগেই বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়ে নিবেন।
তারপর বাম পা দিয়ে বাথরুমে প্রবেশ করবেন, বাথরুমে প্রবেশের পর আর কোন ধরনের দোয়া পড়া ও কথা বলা যাবেনা। অনেকে মনে করে গোসল করার জন্য কলমা পড়তে হয় কলমা না পড়লে পাক হবেনা, এটা সম্পূণ মূখসুলভ ধারনা।
প্রথমে মনে মনে নিয়ত করবেন মুখে উচ্চারন করে নয়, বরং মনে মনে বলবেন আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এবং নাপাকি দুর করার জন্য গোসল করছি। কিন্তু কেহ যদি নিয়ত ছাড়াও গোসল করে তবুও সে পাক হয়ে যাবে তবে সে গোসলের যে ছওয়াব তা থেকে বঞ্চিত হবে।
সবার আগে দুই হাত কব্জি পযন্ত ধৌত করবেন, এরপর ইস্তিঞ্জা করে নিবেন, এর পর শরীরের যে নাপাক দেখা যায় তা ধৌত করবেন, এরপর নামাজের অজুর মত অজু করে নিবেন, এই অজুর মধ্যে গোসলের ২টি ফরয যেমন কুলি করা ও নাকে পানি দেয়াও আদায় হয়ে যাবে, আর কুলি করার সময় গড়গড়া সহকারে কুলি করবেন এবং নাকে পানি দেয়ার সময় উপরের দিকে শ্বাস টেনে পানি উপরের দিকে টেনে নিবেন। অজুর পর সমস্ত শরীর অল্প পানি দিয়ে তেলের মত মলে নিবেন। এরপর সারা শরীরে ৩ বার পানি প্রবাহিত করুন, শরীরে পানি প্রাবিহত করার সময় প্রথমে ডান দিকে ৩ বার পানি ঢালবেন, এরপর বামে ৩ বার পানি ঢালবেন। এবং মাথা ও বাকী শরীরে ৩ বার পানি প্রাবিহত করবেন। আর পানি প্রবাহিত করার সময় শরীরকে মলতে থাকাও সুন্নতে করিমা।
এটা হল সুন্নত তরিকা, এখন কেহ যদি এসব তরতিব মান্য না করে এমনিতেই সারা শরীরে পানি প্রবাহিত করে দেয় তাতেও গোসল হয়ে যাবে তবে সুন্নতের ছাওয়াব থেকে সে বঞ্চিত হবে।

গোসলের মকরুহ ৩টি
(১) গোসলের সময় বেশী পানি খরচ করা
(২)সতর খোলা অবস্থায় কথা বলা এবং কিবলার দিকে মুখ করা পিঠ করা।
(৩) সুন্নতের খেলাফ গোসল করা
যদি সারা শরীরের ১ চুল বরাবর জায়গাও গোসলের সময় শুকনু থেকে যায় তাহলে গোসল পরিপূর্ণ হবেনা।
গোসলের সময় মহিলারা তাদের চুল খোপা ও অলংকারের বিষয়ে আরো কয়েকটি বিষয় জেনে রাখবেন তা হল-
এক. খোঁপা বা বেনী খোলা ব্যতীত যদি চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছে যায়, তাহলে খোঁপা বা বেনী খুলতে হবে না। তবে মাথার চুল যদি বেশী ঘন হয় এবং শক্ত করে বাঁধা থাকে আর তা না খুললে যদি চুলের গোড়ায় পানি না পৌঁছে তাহলে অবশ্যই চুল খুলে গোসল করতে হবে।
দুই. চুল যদি খোলা থাকে তাহলে সব চুল গোড়া পর্যন্ত ভিজিয়ে গোসল করবে, একটি চুলের গোড়া শুকনা থাকলেও গোসল হবে না।
তিন. হাতের আংটি, গলাবন্ধ এবং এসব অলংকার যা ছিদ্র করে পরা হয়, যেমন-নাকফুল, কানের দুল প্রভৃতি তাহলে এসব অলংকার নাড়াচাড়া করে তাঁর নীচে পানি পৌঁছাতে হবে।
চার- যদি নখে আটা লেগে শুকিয়ে যায় কিংবা নখ পালিশ লাগানো থাকে আর তার নিচে যদি পানি না পৌছে তাহলে গোসল হবেনা।

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.