জাহান্নামী সন্তানের আলামত। অবাধ্য সন্তান। পিতা মাতার হক।
জাহান্নামী সন্তানের
আলামত। অবাধ্য সন্তান। পিতা মাতার হক।
রাসুলুল্লাহ
(দ) এ দোয়া করেছেন যে হে আল্লাহ আমাকে এমন সন্তান থেকে বাঁচাও যে আমার জন্য বিপদের কারনে হবে, আমার জন্য রব হয়ে
যাবে, ২টি শব্দ এসেছে।
হযরত মুজাহেদ
বয়ান করেন (ইন্নাহুমাল আজওয়াজু ওয়াল আউলাদ ) যে সব আউলাদ মা বাবাকে মজবুর করে বাধ্য
করে যে আত্মিয়তার সম্পককে ছিন্ন করার জন্য। তখন পিতা মাতা সন্তানের মহব্বতের কারনে
সে আত্মিয়তার সম্পর্ককে নষ্ট করে ফেলে।
মুজাহাদের সাথে
সাথে সমরকন্দী (রহ) বয়ান করেন (ইন্নামা জাকারাল আমওয়ালা ওয়াল আউলাদ) আল্লাহ তায়ালা
মাল ও সন্তানের কথা এই জন্য জিকির করেছেন কারন কিয়ামতের দিন অধিকাংশ লোক যারা জাহান্নামে
যাবে মালের কারনে অথবা আউলাদের কারনে।
হযরত আবদুল্লাহ
বিন আব্বাস (রা) বলেন সন্তান যখন পিতার পাশে থাকে আর সন্তানের কাপড়ে যদি ময়লা লাগে
সে ময়লা যখন সে ঝাড়ে আর তা বাতাসে উড়ে যদি পিতার দিকে এসে যায় (কুতিবা ইনদাল্লাহে আক্কান)
সে সন্তানকে আল্লাহর কাছে নাফরমান সন্তান হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হয়।যদি তওবা না করে তাহলে
সে জাহান্নামে যাবে।
আর আজকাল আফসুস
এইজন্য যে অনেক সন্তান পিতা যখন কথা বলে তার সামনে নিজের জবান চালায় ছুরির মত। এমন
সন্তান হল ফিতনা। যে সন্তান দুনিয়াবি শিক্ষা নিয়ে মা বাবাকে সম্মান করা শিখে নাই। এমন
শিক্ষার কোন মূল্য নাই।
অথচ ইসলামে মা
বাবার প্রতি সম্মানের কত সুন্দর সুন্দর হাদীস আছে যেমন-
সহিহ বুখারী ও
মুসলিম খুলে দেখুন ৩ লোক গর্তের মধ্যে ফেসে গেল আল্লাহ তাদেরকে সে গর্ত থেকে বের করে
এনেছেন কোন আমলের বদৌলতে? একজন দোয়া করল হে আল্লাহ আমি একদিন দুধ নিয়ে ঘরে যেতে দেরী
হল দেখলাম আমার মা বাবা ঘুমিয়ে গেছে আমি মা বাবার ঘুম ভাঙ্গালাম না, আর আমি আমার মা
বাবাকে না খাইয়ে সন্তানদেরকে খাওয়ানো পছন্দ করলাম না, অথচ আমার বাচ্চারা কাঁদছিল -
কিন্তু আমার মা বাবা যখন ঘুম থেকে জাগ্রত হল আগে তাদের দুধ খাওয়ালাম তারপর আমার বাচ্চাদেরকে
খাওয়ালাম, হে আল্লাহ আমার সে আমল একমাত্র তোমার খুশির জন্য করেছি, এর বদলায় আল্লাহ
তাদেরকে সে গত থেকে বের হওয়ার রাস্তা করে দিলেন।
মনে রাখবেন যে
সন্তান মা বাবাকে গালি দেয় সে সন্তান হল ফিতনা। যে সন্তান তার মাকে লানত করে মাকে খারাপ
বলে সে সন্তানের উপর আল্লাহ তায়ালা লানত করেন।
ঐ আউলাদ ফিতনা
যার কারনে মানুষ অসুস্থ হয়ে যায়
ঐ আউলাদ ফিতনা
যার জন্য মানুষ পেরেশান হয়ে যায়, দুঃখী হয়ে যায়
ঐ আউলাদ ফিতনা
যার জন্য বাহাদুর মানুষও বোকা বনে যায়
ঐ আউলাদ ফিতনা
যার জন্য শিক্ষিত লোকও মুর্খের মত কাজ করতে থাকে
রাসুলে আকরাম
(দ) এর ফরমান (ইন্নাল আউলাদা মাবখালাতুন, মাজমানাতুন, মাজহালাতুন, মাখজানাতুন) সন্তান
এমন যে মানুষকে কৃপণ করে দেয়, বোকা বানিয়ে দেয়, জাহেল বানিয়ে দেয়, দুঃখ ভারাক্রান্ত
করে দেয়। এমন আউলাদ ফিতনা। এমন আউলাদ আমি চাইনা।
অথচ সন্তান লাভের
আকাংখা সকলেই করে- কিন্তু যে সন্তানের কারনে মা বাবা সব সময় টেনশনে থাকে না জানি কি
হয়, না জানি সন্তান কোন মসিবত নিয়ে আসে, না জানি কোন অঘটন ঘটায়, সন্তানের কারনে মা
বাবা সারাক্ষন আতংকে থাকে সে সন্তান ফিতনা।
নুহ (আ) জলিলুল
কদর পয়গাম্বর নিজের সন্তানকে ডাক দিলেন হে আমার সন্তান আমার সাথে নৌকাতে চলে আস, কিন্তু
সে সন্তান পিতার কথায় ভরসা করেনি, আল্লাহর শক্তির উপর বিশ্বাস ছিলনা, বরং বাহ্যিক বিষয়ের
উপর সে ভরসা করেছিল, নিজের জ্ঞান ও বুদ্ধির উপর নির্ভর করেছিল, তাই সে পিতাকে জবাব
দিয়েছিল আব্বাজান কি প্রয়োজন নৌকাতে উঠা- যখন পানি বৃদ্ধি পাবে আমি পাহাড়ের চুড়ায় উঠে
যাব সেখানে কি পানি পৌঁছতে পারবে? কিন্তু আল্লাহ তায়ালা সে পাহাড়ের চুড়াতেও পানি পৌঁছে
দিল আর তাকে ধ্বংস করে দিল।
যে সব সন্তান
কুরআন সুন্নাহর উপর বিশ্বাস করেনা, পিতা মাতার কথা মান্য করেনা, আল্লাহর উপর ভরসা করেনা
এমন সন্তান ফিতনা। অনেক মাবাবা আছে সন্তানের কারনে অতিষ্ট হয়ে দোয়া করে হে আল্লাহ আমি
সে দিন ২ রাকাত নামাজ পড়ে শোকর আদায় করব যেদিন আমার সন্তানের লাশ আমার সামনে আসবে আমি
তার কারনে খুবই কষ্টে আছি। এমন সন্তান আমি চাইনা। চিন্তা করুন সে মা বাবা কতটুকু দুঃখে
দুঃখি হয়ে এমন কথা বলতে পারে, এমন সন্তান ফিতনা যে সন্তান মা বাবাকে এমন কষ্ট দেয় যে
কষ্ট মা বাবা সহ্য করতে না পারে সন্তানের মৃত্যু কামনা করে। (আল আমান আল হাফিজ)
আল্লাহ আমাদেরকে
নেক আউলাদ দান করুন, যাদের সন্তান নাফরমান তাদেরকে ফরমাবরদার বানিয়ে দিন আমিন।
কোন মন্তব্য নেই