রমজানে নারীদের সকল গোপন মাসায়ালা

 

রমজানে নারীদের সকল গোপন মাসায়ালা

ভিডিও লিংক: https://youtu.be/fRtEh9RiQWw



রোজা রেখে বাচচাকে দুধ পান করানোর বিধান, ঔষধ বা বরি খেয়ে পিরিয়ড বন্ধ করে রোজা রাখার হকুম, গভবতী নারীদের রোজার বিধান সহ বেশ কিছু মেয়েলী মাসায়ালা আজ বিস্তারিত আলোচনা করব।

প্রথমত- রোযা রাখা অবস্থায় বাচ্চাদের দুধ পান করানোর বিধান

মনে রাখবেন রোযা রেখে বাচচাকে দুধ পান করালে রোযা ভঙ্গ হয় না

যদি বাচ্চাকে রোযা রেখে মা দুধ পান করায় তাতে মা খুব দুর্বল হয়ে যাবে আর রোযা রাখাটা অবম্ভব হয়ে পরবে অথবা যদি রোযা রেখে মা বাচ্চাকে দুধ পান না করান তাহলে বাচ্চা দুবল হয়ে যাবে এমতবস্থায় ধরনের মায়েরা রোযা ভঙ্গ করতে পারবে বাচ্চাকে দুধ পান করাবে আর রোযা সমুহ পরবর্তীতে কাজা আদায় করে দিবে

তবে মা যদি শক্তিশালি হয় বাচ্চাকে দুধ পান করানোর পরও সহজে রোজা পুরা করতে পারে তাহলে রোজা পুরা করা ফরজ

আর যদি এমন হয় বাচ্চা এক দেড় বছরের হয়ে গেছে এমন বাচ্চাকে যদি অন্য কোন পাউডার জাতিয় দুধ দিয়ে রাখা সম্ভব হয় তখনও মায়ের উচিত বাচ্চাকে পাউডার জাতিয় দুধ দ্বারা কিংবা অন্য কোন খাদ্য দিয়ে নিজে রোজা পুরা করা

মনে রাখবেন রমজানের রোজাকে হালকা জেনে যেন তেন ভেবে রোজা ভঙ্গ করাটা কবিরা গুনাহ সুতরাং যথাসম্ভব রোযা রাখার চেষ্টা করতে হবে একেবারে অপারগ হলে তখন শরীয়ত দুধ দানকারীনি মাদেরকে রোযা ভঙ্গ করার এজাযত দিয়েছে

) রোযা অবস্থায় পিরিয়ড হলে কি করা উচিত?

মনে রাখবেন রমজান মাস অত্যন্ত সম্মানিত মাস মাসের সম্মান করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জরুরী, তাই কোন বোনর যদি রোযার সময় পিরিয়ড হয় সেতো রোযা রাখতে পারবে না, দিনে খাওয়া দাওয়া করা তার জন্য যায়েজ, চাইলে সে লুকিয়ে লুকিয়ে খেতে পারে কিংবা সবার সামনেও খেতৈ পারে তবে আফযল হল লোকজনের সামনে খাওয়া দাওয়া না করা ঘরের অন্যান্য রোযাদারদের সামনে খাওয়া দাওয়া না করা, তারচেয়েও আফযল হল রমজানের সম্মানার্থে দিনে কোন কিছু না খাওয়া, এটা রোযার নিয়তে নয় বরং রমজানের সম্মানার্থে পিরিয়ড চলাকালিন দিনে কিছু খাওয়া দাওযা থেকে বিরত থাকা

আরেকটি কথা মনে রাখবেন পিরিয়ড হলে নামাজ এর কাজা করতে হয় না কিন্তু রোযার কাজা আদায় করতে হয় পিরিয়ড চলাকালিন যতগুলো রোযা ভঙ্গ হয়েছে সবগুলো রোযা পরবর্তীতে পুরন করে দেয়াটা লাযেম

তিরমিযির এক বর্ণনায় এসেছে- হযরত আয়েশা (রা.) আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসূল (সা.) এর যুগে ঋতুবর্তী হতাম, অতপর পবিত্রতা অর্জন করতাম, তিনি আমাদেরকে সওম বা রোজা কাজার নির্দেশ দিতেন, কিন্তু সালাত কাজার নির্দেশ দিতেন না হাদিস অনুযায়ীও ঋতুবর্তী মহিলা সিয়ামের কাজা পালন করবে, নামাজের কাজা করবে না (তিরমিজি)

আরেকটি মাসায়ালা মনে রাখবেন কোন বোন এর পিরিয়ড যদি রাতে বন্ধ হয়, সোবেহ সাদেক হওয়ার আগে, তার জন্য পরের দিনের রোযা রাখা ফরয চাই সে গোসল করে পাক হতে পারুক কিংবা না পারুক

কোনো মহিলা যদি জানে যে, আগামীকাল ভোরে ঋতুস্রাব হবে তবুও সে রোজা রাখার নিয়্যতে সাহরি খাবে; যতক্ষণ না পর্যন্ত সে স্রাব দেখে ঋতুস্রাব দেখার পরই কেবলমাত্র সে রোজা ভঙ্গ করতে পারবে

রমজান চলাকালে যে সকল মহিলার ঋতস্রাব দেখা দিবে তা স্বাভাবিকভাবে শেষ হতে দেয়া উচিত অতিরিক্ত ছাওয়াবের আশায় ওষুধ বা অন্য কোনো উপায়ে ঋতুস্রাবকালীন সময়কে কমানো বা ঋতস্রাব বন্ধ করা ঠিক নয়

তবে কেহ যদি বরি খেয়ে ঋতুস্রাব বন্ধ করে রেখে রমজানের রোজা রাখে তাহলে তার রোজা হয়ে যাবে।

 

যদি কোনো মহিলার চল্লিশ দিন পূর্ণ হওয়ার আগে নিফাস বন্ধ হয়ে যায়, সেদিন থেকেই গোসল করে পবিত্র হয়ে রোজা পালন করবে এবং নামাজ আদায় শুরু করবে পক্ষান্তরে কোনো মহিলার যদি চল্লিশ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও নিফাসের রক্ত দেখা দেয়, এটা নিফাস বলে গণ্য হবে না অতএব ৪০ দিন পর গোসলের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করে রোজা নামাজ শুরু করতে হবে

) গর্ভবতী নারীদের রোযা রাখার ব্যপারে বিধান

মনে রাখবেন যদি কোন নারী গভবতী হয় আর অভিজ্ঞ গাইনি ডাক্তার যদি বলে সে যদি রোযা রাখে তাহলে তার গভের সন্তান এর ক্ষতি হবে, কিংবা গভবতী মায়ের শরীর খারাপ হয়ে যাবে, অথবা পুর্বে যদি মা এর গর্ভবতী অবস্থায় রোযা রাখার কারনে সন্তানের ক্ষতি হয়েছে এমন অভিজ্ঞতা থাকে অথবা ডাক্তারও নিষেধ করেননি, আগেরও অভিজ্ঞতা নাই কিন্তু বর্তমানে গভবতী অবস্থায় রোযা রাখার পর প্রচন্ড দুবলতা অনুভব করছে তাহলে অবস্থায় গভবতী মা রোযা ভঙ্গ করতে পারবে আবার বলি () যদি অভিজ্ঞ ডাক্তার নিষেধ করে () পুর্বের অভিজ্ঞতা থাকে () বর্তমানের শারিরিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে গর্ভবতি মহিলা রোযা ভঙ্গ করতে পারবে পরবতীতে রোযাসমুহ কাজা আদায় করতে হবে

) রমজানে স্বামী স্ত্রীর বিধান

যে মহিলার উপর রোজা ফরজ হয়েছে, তার সম্মতিতে রমজানের দিনে স্বামী-স্ত্রীতে যৌনকার্য সংঘটিত হলে, উভয়ের উপর একই হুকুম কার্যকরী হবে (কাজা করতে হবে কাফ্ফারা দিতে হবে) কাজা ১টি কাফফারা লাগাতার ৬০টি আর স্বামী যদি জোর করে সহবাস করে তাহলে স্ত্রী শুধু কাজা আদায় করবে, কাফ্ফারা দিতে হবে না তবে স্বামীকে বিরত রাখার চেষ্টা করতে হবে যে সব পুরুষ লোক নিজেদেরকে সংযত রাখতে পারে না, তাদের স্ত্রীদের উচিত দূরে দূরে থাকা এবং রমজান দিবসে সাজ-সজ্জা না করা

) রমজানে বোনেরা সময় কিভাবে কাটাবেন?

এটি খুবই গরুত্বপুন একটি বিষয় বতমান হল মিডিয়ার যুগ যুগে গুনাহ করাটা খুবই সহজ, আর মিডিয়ার বরকতে তা আরো বেশী সহজ, পুরুষদের সময় বাহিরে হাটে মাঠে ঘাটে চলে যায় কিন্তু নারীরা সারাদিন ঘরে থাকে তাদের সময় কাটে না তখন তারা সময় কাটানোর জন্য বেছে নেয় মিডিয়াকে, সারা বছর টিবি, গান, মুভি, নাটক এসব দেখে তাদের সময় কাটে, প্রত্যেকের উচিত রমজান মাসে অন্তত এসব গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকা রমজান মাস হল আল্লাহর মাস মাসে কোরান নাযিল হয়েছে, তাই সকল মা বোনদের উচিত মাসে অন্তত একবার কোরান খতম দেয়া, পবিত্র কোরানের একটা হক রয়েছে পুরুষরা তারাবির মাধ্যমে রমজানে খতম দান করে কিন্তু মহিলারা তা থেকে বঞ্জিত তাই তাদের উচিত ঘরে রমজান মাসে নিজে নিজে অন্তত এক খতম দান করা সম্ভব হলে অথ তফসির সহ পুরা কোরান রমজান মাসে একবার পাঠ করা বেশী বেশী গুনাহ সমুহ মাফ চাওয়া কারন নবী করিম (দঃ) এর কাছে একদিন হযরত জিবরাইল (আঃ) এসে বললেন যারা রমজান মাস পেল কিন্তু গুনাহসমুহ ক্ষমা করাতে পারল না তাদের উপর লানত, তখন আমাদের প্রিয় নবীজি হযরত জিবরাইল (আঃ) এর কথার উপর বলেছেন আমিন সুতরাং প্রত্যেক মা বোনদের উচিত রমজান মাসকে গনিমত মনে করে বেশী বেশী নেক আমল, নামাজ কোরান তেলাওয়াত, এসতেগফার, নফল এবাদত, রাতে তারাবিহ সেহরীর সময় তাহাজ্জুদ, ইত্যাদির মাধ্যমে গোটা রজমান মাসকে অতিবাহিত করা এবং কাকুতি মিনতি করে নিজের কৃত গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়ত রমজানই হতে পারে জীবনের শেষ রমজান, সে কথা মনে করে রমজানকে গনিমত মনে করে তার যথা যথ সম্মান করার চেষ্টায় লিপ্ত থাকুন

আল্লাহ যেন মাসে আমাদের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেন এবং জাহান্নামের আগুন থেকে পরিত্রাণ দেন এবং জান্নাতের অধিবাসী হিসেবে ক্ববুল করে নেন আমীন

 

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.