নাফরমান ছেলেকে Good বানানোর ওজিফা ও দোয়া। 7 Qurani Dua To Make Your Chi...
নাফরমান ছেলেকে নেক বানানোর ওজিফা
কুরআন হাদীসের ৮টি দোয়া
আজ কুরআন থেকে ৭টি দোয়া এবং হাদীস থেকে ১টি দোয়া পেশ করব, যা প্রত্যেক মা বাবার জন্য খুবই গুরুত্বপূণ। যাতে সন্তান নেক হয় নাফরমান না হয়, সন্তান জান্নাতে যাবার জরিয়া হয়। সন্তান যাতে জাহান্নামে যাওয়ার মাধ্যম না হয়।
মানুষ তার জিন্দেগীতে সন্তানকে নিজের সবচেয়ে বড় অর্জন মনে করে। আর মানুষ তার জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ নিজের সন্তানদের জন্য খরচ করে থাকে। তাছাড়া প্রত্যেক পিতা মাতা তাদের সন্তানদের জন্য উত্তম সম্পদ রেখে যাওয়ার চিন্তা করে থাকে।
কিন্তু যদি আউলাদ নেক হয় তাহলে সে মা বাবার জন্য সদকায়ে জারিয়া হয়, আর সে নেক আউলাদ মা বাবার কষ্টের কামাইকে ভালো কাজে ব্যবহার করে। আর যদি আউলাদ বিগরে যায় তাহলে জিন্দেগীতেও পেরেশানির কারন এবং পরবর্তীতেও রেখে যাওয়া সম্পদের খেয়ানতকারী হয়। আর সে জন্য বদনামের বাগীদার হতে হয়। মে জন্য খাচ করে সন্তানের জন্য কুরআন ও সুন্নতের দোয়া সমুহ করতে থাকা উচিত।
নবী (দ) এরশাদ করেন ৩ প্রকারের লোকের দোয়া কবুল হয়, আর তা কবুলের ব্যপারে কোন সন্দেহ নাই। মজলুমের দোয়া, মুসাফিরের দোয়া এবং বাবার দোয়া তাদের সন্তানের জন্য। (আদাবুল মুফরদ ২৪)
তেমনি ভাবে কোন পিতা যদি তার সন্তানের জন্য বদদোয়া দেয় তাও কবুল হেয় যায়, সে জন্য নবী করিম (দ) এরশাদ করেন তোমরা তোমাদের সন্তানদের বদদোয়া দিও না। হতে পারে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে দোয়া কবুল হওয়ার মুহুত।আর তখন তোমার সে বদদোয়া কবুল হয়ে যাবে। আর যদি এমন বদদোয়া কবুল হয়ে যায় তা পরবর্তীতে কঠিন পেরেশানির কারন হতে পারে।
নিশ্চয় আউলাদ হওয়া এটা বান্দার প্রতি আল্লাহর অনেক বড় এহসান। সে জন্য দেখা যায় আউলাদ যদি নেককার হয় তখন সে সন্তান মা বাবার জন্য চক্ষু শিতলকারী হয়। নবী (দ) হযরত হাসান ও হুসাইনকে নিজের ফুল বলতেন, (এই দুজন আমার দুনিয়ার ২টি ফুল) অপর এক হাদীস থেকে জানা যায় আউলাদ মানুষের উত্তম অর্জন। যেমন মসনদে আহমদের ২৪১৩৫ নং হাদীস ( ইন্না আউলাদাকুম মিন আতিয়াবি কাসবিকুম, ফাকুলূ মিন কাসবি আউলাদিকুম) অর্থ্যাৎ তোমাদের আউলাদ তোমাদের সবচেয়ে উত্তম কামাই, সুতরাং তোমাদের আউলাদের কামাই থেকে খাও।
তেমনি ভাবে কন্যা সন্তান লালন পালনও মা বাবার জন্য জান্নাত কামাই করার সহজ পন্থা। এবং সাথে সাথে এ কথাও মনে রাখা দরকার আউলাদ একটি রেসপনসিভিলিটি কারন এদের ব্যপারে মা বাবাকে জিজ্ঞাসা করা হবে। তাদের তরবিয়াত কিভাবে করেছেন। বিশেষ করে সন্তানের তরবিয়তের ব্যপারে মাকে দায়িত্বশীল বলা হয়েছে, যদিও মা ও বাবা দুইজনই জিম্মাদার। তবে নারীকে তাদের বাচ্চার ব্যপারে জিজ্ঞাসা করা হবে। সে তাদের তরবিয়ত লালন পালন কিভাবে করেছে? সে জন্য আমাদের প্রত্যেকের জন্য জরুরী আমরা আমাদের বাচ্চাদের দ্বীনি ও দুনিয়াবী উভয় প্রকারের উত্তম তরবিয়ত শিক্ষা দান করি।
এবার দেখা যায় নেক আউলাদের জন্য কি দোয়া আছে তা শিখে নিই। সন্তান জন্ম গ্রহণের আগে পড়বেন (রব্বি হাবলি মিনাস সোয়ালিহিন) হে আমার পরওয়ারদিগার আমাকে একজন নেক আউলাদ দান করুন। (সুরা সাফফাত)
তেমনি ভাবে হযরত জাকারিয়া (আ) নেক সন্তানের জন্য যে দোয়া করেছেন যা সুরা আল ইমরানের ৩৮ নং আয়াতে উল্লেখ আছে
رَبِّ هَبْ لِي مِن لَّدُنْكَ
ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاء
হে, আমার পালনকর্তা! তোমার নিকট থেকে আমাকে পুত-পবিত্র সন্তান দান কর-নিশ্চয়ই তুমি প্রার্থনা শ্রবণকারী। [ সুরা ইমরান ৩:৩৮ ]
দোয়াটি বেশী বেশী পড়া সুতরাং যারা নেক আউলাদ কামনা করেন তাদেরও উচিত এই দোয়া করতে থাকা।
তেমনি ভাবে শয়তান থেকে রক্ষার জন্যও দোয়া করা উচিত, যেমন হযরত মরিয়াম (আ) এর মা তার জন্মের সময় এই দোয়া পড়েছেন
وِإِنِّي أُعِيذُهَا بِكَ
وَذُرِّيَّتَهَا مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ
( (ওয়া ইন্নি ওইজুহা বিকা ওয়া জুররিয়্যাতাহা মিনাশ শায়তানির রাজিম)
আর আমি তাকে ও তার সন্তানদেরকে তোমার আশ্রয়ে সমর্পণ করছি। অভিশপ্ত শয়তানের কবল থেকে। [ সুরা ইমরান ৩:৩৬ ]
তেমনি ভাবে আউলাদ আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় কবুল হওয়ার দোয়া করা উচিত যেমন হযরত মরিয়াম এর মা তার জন্য দোয়া করেছিলেন
رَبِّ إِنِّي نَذَرْتُ لَكَ مَا فِي
بَطْنِي مُحَرَّرًا فَتَقَبَّلْ مِنِّي إِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
রাব্বি ইন্নি নাজারতু লাকা মা ফি বাতানি মুহাররারান ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নাকা আনতাস সামিউল আলিম
হে আমার পালনকর্তা! আমার গর্ভে যা রয়েছে আমি তাকে তোমার নামে উৎসর্গ করলাম সবার কাছ থেকে মুক্ত রেখে। আমার পক্ষ থেকে তুমি তাকে কবুল করে নাও, নিশ্চয়ই তুমি শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞাত। [ সুরা ইমরান ৩:৩৫ ]
তেমনি ভাবে ইবরাহিম (আ) তার সন্তানের খাবারে বরকতের দোয়া করেছেন যেমন বুখারী শরীফের (আল্লাহুম্মা বারিক লাহুম ফিল লাহামে ওয়াল মা) হে আল্লাহ তুমি তার খাবার গোস্ত ও পানিতে বরকত দান কর।
তেমনি ভাবে সন্তানের ফরমাবরদারির দোয়াও করা উচিত যেমন সুরা বাকারার ১২৮ নং আয়াত
]
رَبَّنَا وَاجْعَلْنَا مُسْلِمَيْنِ
لَكَ وَمِن ذُرِّيَّتِنَا أُمَّةً مُّسْلِمَةً لَّكَ وَأَرِنَا مَنَاسِكَنَا
وَتُبْ عَلَيْنَا إِنَّكَ أَنتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
পরওয়ারদেগার! আমাদের উভয়কে তোমার আজ্ঞাবহ কর এবং আমাদের বংশধর থেকেও একটি অনুগত দল সৃষ্টি কর, আমাদের হজ্বের রীতিনীতি বলে দাও এবং আমাদের ক্ষমা কর। নিশ্চয় তুমি তওবা কবুলকারী। দয়ালু। [ সুরা বাকারা ২:১২৮ ]
ঠিক তেমনি ভাবে সন্তানের সংশোধনের দোয়া করা উচিত
সুরা আহকাফের ১৫ নং আয়াতে আছে
رَبِّ أَوْزِعْنِي أَنْ أَشْكُرَ
نِعْمَتَكَ الَّتِي أَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلَى وَالِدَيَّ وَأَنْ أَعْمَلَ
صَالِحًا تَرْضَاهُ وَأَصْلِحْ لِي فِي ذُرِّيَّتِي إِنِّي تُبْتُ إِلَيْكَ
وَإِنِّي مِنَ الْمُسْلِمِينَ
হে আমার পালনকর্তা, আমাকে এরূপ ভাগ্য দান কর, যাতে আমি তোমার নেয়ামতের শোকর করি, যা তুমি দান করেছ আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে এবং যাতে আমি তোমার পছন্দনীয় সৎকাজ করি। আমার সন্তানদেরকে সৎকর্মপরায়ণ কর, আমি তোমার প্রতি তওবা করলাম এবং আমি আজ্ঞাবহদের অন্যতম। [ সুরা আহক্বাফ ৪৬:১৫ ]
তেমনি ভাবে আউলাদ নামাজী হওয়ার জন্য দোয়া করা উচিত
যেমন সুরা ইবরাহিমের ৪০ নং আয়াত
رَبِّ اجْعَلْنِي مُقِيمَ
الصَّلاَةِ وَمِن ذُرِّيَّتِي رَبَّنَا وَتَقَبَّلْ دُعَاء
হে আমার পালনকর্তা, আমাকে নামায কায়েমকারী করুন এবং আমার সন্তানদের মধ্যে থেকেও। হে আমাদের পালনকর্তা, এবং কবুল করুন আমাদের দোয়া। [ সুরা ইবরাহীম ১৪:৪০ ]
কোন মন্তব্য নেই