শবে কদরের ইমুশনাল বয়ান ২০২১

 

শবে কদরের ইমুশনাল বয়ান ২০২১


 

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ

আমি একে নাযিল করেছি শবে-কদরে। [সুরা ক্বদর - ৯৭:]

وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ

শবে-কদর সমন্ধে আপনি কি জানেন? [সুরা ক্বদর - ৯৭:]

لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِّنْ أَلْفِ شَهْرٍ

শবে-কদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। [সুরা ক্বদর - ৯৭:]

تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِم مِّن كُلِّ أَمْرٍ

এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে। [সুরা ক্বদর - ৯৭:]

سَلَامٌ هِيَ حَتَّى مَطْلَعِ الْفَجْرِ

এটা নিরাপত্তা, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। [সুরা ক্বদর - ৯৭:]

 

-সূরা কদরের শানে নুযুল :

একবার রাসূলুল্লাহ (সা.) বনী ইসরাইলের একজন সাধকের কথা আলোচনা করেন যিনি একহাজার মাস যাবত দিনের বেলা রোজা রেখে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করতেন এবং রাত জেগে আল্লাহর ইবাদাত করতেন কথা শুনে সাহাবারা খুব নিরাশ হয়ে পড়লেন তারা বললেন, আমাদের বয়স পূর্বের উম্মতদেরর তুলনায় খুবই কম আমরা কীভাবে তাদের মতো নেকআমল করে সওয়াব অর্জন করব প্রেক্ষিতে সূরাটি অবতীর্ণ হয় যাতে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর উম্মতদের মর্যাদার কথা আল্লাহ পাক ঘোষণা করেন

শবে কদরের কথা শুনে অনেক আম্বিয়াগনও শেষ নবীর উম্মত হওয়ার জন্য আকাংখা পোষন করেছেন। তাদের মধ্যে হযরত ঈসা (আ) এর দোয়া আল্লাহ তায়ালা কবুল করেছেন।

-লায়লাতুল কদর দামী হওয়ার কারন কি?

লায়লাতুল কদর এত দামী হওয়ার কারন হল এতে কুরআন নাজিল হয়েছে, যেমন আল্লাহ তায়ালা সুরা বাকারার ১৮৫ নং আয়াতে বলেন

شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيَ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَى

রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় অন্যায়ের মাঝে পার্থক্যকারী।

#মাস সমুহের মধ্যে সেরা হল রমজান কারন এতে কুরআন নাজিল হয়েছে

#রাত সমুহের মধ্যে সেরা হল শবে কদর কারন এই রাতে কুরআন নাজিল হয়েছে

#ফেরেশতাদের মধ্যে সেরা হল জিবরাইল কেননা জিবরাইল কোরআন বহন করেছেন

#মরুর দেশজজিরাতুল আরবএই কোরআনের স্পর্শেই পবিত্র আরব ভূমির সম্মান লাভ করেছে

#অলক্ষুনে দুর্ভোগময় খ্যাতইয়াসরিবএই কোরআনের বরকতেই পুণ্য ভূমিমদিনা মুনাওয়ারা সম্মানে ধন্য হয়েছে

#তাগুতের আখড়া পাপের আকর শিরক কুফরের শীর্ষ তীর্থস্থানবাক্কাএই কোরআনের তাজাল্লিতে পবিত্র মক্কা নগরীতে রূপান্তরিত হয়েছে

#এই কোরআনের পরশে স্বল্পমূল্য কাপড়েরগিলাফবুকে জড়ানোর সম্মান পাচ্ছে

# এই কোরআনের ছোঁয়ায় সাধারণ কাঠেররেহালসম্মানের চুমু পাচ্ছে

সর্বোপরি কোরআনের সংস্পর্শে একটি সাধারণ রাতলাইলাতুল কদরবাশবে কদররজনীর সম্মানে বিভূষিত হয়েছে। কোরআনের সঙ্গে যার যতটুকু সম্পর্ক সংস্পর্শ থাকবে, তিনি ততটুকু সম্মানিত মর্যাদার অধিকারী হবেন। প্রিয় হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘কোরআনওয়ালাই আল্লাহওয়ালা এবং তাঁর খাস ব্যক্তি। (বুখারি শরিফ)

#তিরমিয শরীফের ২৯১৩ নং হাদীস

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِنَّ الَّذِي لَيْسَ فِي جَوْفِهِ شَيْءٌ مِنَ الْقُرْآنِ كَالْبَيْتِ الْخَرِبِ ‏"‏ ‏

ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যার ভিতরে কুরআনের কিছু নেই সে বিরান ঘরের মত

 

-২৭ তারিখ শবে কদর (লায়লাতুল কদরে ৯ হরফ)

মুহাক্কিকগণ বলেন, আরবিতেলাইলাতুল কদরশব্দদ্বয়ে নয়টি হরফ বা আরবি বর্ণ রয়েছে; আর সুরা কদরেলাইলাতুল কদরশব্দদ্বয় তিনবার রয়েছে; নয়কে তিন দিয়ে গুণ করলে সাতাশ হয়, তাই সাতাশে রমজানের রাতে শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল (তাফসিরে মাযহারি)

 

-এ রাতে কি দোয়া পড়বেন?

হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! (সা.) আমি যদি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে আমি ওই রাতে আল্লাহর কাছে কী দোয়া করব? রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন; তুমি বলবে, আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া; ফাফু আন্নি অর্থাৎহে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; তাই আমাকে ক্ষমা করে দিন’ (ইবনে মাজা,

 

-শবে কদরের আমল হলো:

. নফল নামাজ [] তাহিয়্যাতুল অজু, [] দুখুলিল মাসজিদ, [] আউওয়াবিন, [] তাহাজ্জুদ, [] সালাতুত তাসবিহ [] তাওবার নামাজ, [] সালাতুল হাজাত, [] সালাতুশ শোকর অন্যান্য নফল ইত্যাদি পড়া . নামাজে কিরাত রুকু-সেজদা দীর্ঘ করা . কোরআন শরিফ [] সুরা কদর, [] সুরা দুখান, [] সুরা মুয্যাম্মিল, [] সুরা মুদ্দাচ্ছির, [] ইয়া-সিন, [] সুরা -হা, [] সুরা আর রহমান অন্যান্য ফজিলতের সুরাসমূহ তিলাওয়াত করা; . দরুদ শরিফ বেশি বেশি পড়া; . তাওবা-ইস্তিগফার অধিক পরিমাণে করা; . দোয়া-কালাম, তাসবিহ-তাহলিল, জিকির-আজকার ইত্যাদি করা; . কবর জিয়ারত করা; . নিজের জন্য, পিতা-মাতার জন্য, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব সব মোমিন মুসলমানের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং দেশ জাতির কল্যাণ সমৃদ্ধি কামনায় দোয়া করা

 

-তাহাজ্জুদ কুরআন তেলাওয়াত

তাছাড়া- রাতের শ্রেষ্ঠতম ইবাদত হলো তাহাজ্জুদ নামাজ কুরআন তেলাওয়াত করা। সুরা বনি ইসরাইল, ৭৯ নং আয়াতে আল্লাহ এরশাদ করেন

وَمِنَ اللَّيْلِ فَتَهَجَّدْ بِهِ نَافِلَةً لَّكَ عَسَى أَن يَبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَّحْمُودًا

রাত্রির কিছু অংশ কোরআন পাঠ সহ জাগ্রত থাকুন। এটা আপনার জন্যে অতিরিক্ত। হয়ত বা আপনার পালনকর্তা আপনাকে মোকামে মাহমুদে পৌঁছাবেন। [ সুরা বনী-ইসরাঈল ১৭:৭৯ ]

 


-তাহাজ্জুদের ওয়াক্তে 2 ফেরেশতা কি করে

হযরত সুফিয়ান সওরী (রহঃ) বলেন একবার আমার পক্ষ থেকে একটি গুনাহ হয়ে গেল সে জন্য মাস পযন্ত আমি তাহাজ্জুদ নামাজ থেকে মাহরুম হয়ে গেলাম, কোনভাবেই আমি তাহাজ্জুদের সময় উঠতে পারতাম না। আর আপনারা কি জানেন সে গুনাহ কি ছিল? এক যুবক মুনাজাত করছিল আর কাঁদছিল আমি তাঁর কান্না দেখে মনেমনে ভাবলাম যুবকটি কাঁদছেনা বরং রিয়া করছে, লোক দেখানো কান্না করছে। এই কু ধারনার গুনাহের কারনে আল্লাহ তায়ালা মাস পর্যন্ত আমাকে তাহাজ্জুদ থেকে মাহরুম করে দিলেন। এখন দেখুন আমরা সবকিছুতেই কু ধারনা, কেহ সত্যিকারের ভালকাজ করলেও বলি সে লোকে দানবীর বলার জন্য এসব করছে, কিংবা আপনি যদি সত্যিকার ভাবেই মসজিদের খেদমত করেন তখন মানুষ আপনার ব্যপারে কু ধারনা পোষন করে বলবে কি ব্যাপারে সামনে চেয়ারম্যন ইলেকশনে দাঁড়াবে মনে হয়, ধরনের বাজে কমেন্টের কারনে এখন মানুষ আর ভাল কাজ করতেও চায় না


আমরা সাহাবাগনের জীবনী দেখলে তাতে দেখতে পায় তারা সারাদিন পরিশ্রম করত কিন্তু তারপরও তাদের তাহাজ্জুদ নামাজ ছুটত না, সারাদিন জিহাদের ময়দানে ঘোড়ার পিঠে থাকত আর সারা রাত মুসল্লার পিঠে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আল্লাহকে রাজি করত। কিন্তু আমাদের নফস আমাদেরকে তাহাজ্জুদের মত েএত মহান নেয়ামত থেকে বলে ধোকা দেয় এটা নফল এবাদত কি দরকার রাত জেগে নামাজ পড়ার?


- তাহাজ্জুদে ২ দল ফেরেশতা

অথচ আল্লাহ তায়ালা রাতের যে সব ফেরেশতা তাদের ২টি দল বানিয়ে দেন তাদের দলকে আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ দেন তোমরা অমুক অমুক আমার বান্দাদের কাছে যাও এবং তাদেরকে নিজের পাখা দিয়ে মেরে ঘুম থেকে জাগিয়ে দাও, সে তাহাজ্জুদে উঠবে আমার সামনে গিরগির করে কেঁদে কেঁদে দোয়া করবে আমি তার ঝুলি ভরে দিব। তাই এসব লোক কোন এলাম কোন ঘড়ি ছাড়া ঘুমিয়ে পড়ে শেষ রাতে তাহাজ্জুদের সময় হঠাৎ করে তাদের চোখ খুলে যায়, এটা আল্লাহ প্রেরিত ফেরেশতা তাদের ডেকে দেন



আর ফেরেশতাদের ২য় গ্রুপকে আল্লাহ তায়ালা বলেন যাও অমুক অমুক আমার অপছন্দনীয় বান্দা আমি তাদের পছন্দ করি না তোমরা যাও আর তাঁদেরকে গভির ঘুমে আচ্ছন্ন করে দাও, এটা আমার নেক মকবুল বান্দাদের এবাদতের সময় আর আমি চাইনা কমবকত সময় তার চেহেরা ছুরত আমাকে দেখাক।তাই এসব লোক দেখবেন রাতের ১টা ২টা ৩টা পযন্ত জেগে থাকবে, টিভি দেখবে, গল্প করবে, চেটিং করবে, কিন্তু যখন তাহাজ্জুদের সময় হবে তার নিদ্রা এসে যাবে। সে গভির ঘুমে লুটিয়ে পড়বে, কারন এটা অত্যন্ত বরকতময় সময়, আল্লাহর রহমত নাযিলের সময়, আল্লাহর প্রিয় বান্দানের সাথে আল্লাহর সাক্ষাতের সময়, আর েএমন সময় নাফরমান কমবখত লোক গুলিকে আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাদের দ্বারা ঘুমে আচ্ছন্ন করে দেন



আমরা মনে করি আমরা তাহাজ্জুদ পড়ি না, এটা ভুল ধারনা বরং আমাদের দ্বারা এমন কিছু গুনাহ হয়ে যায় ফলে আল্লাহ তায়ালা সে বরকতময় ওয়াক্তে আমাদের চেহেরা দেখতে পছন্দ করেন না

 

-তাহাজ্জুদ পড়লে চেহেরা নুরানী হয় কেন?

হযরত হাসান রহঃ কে একজন প্রশ্ন করল হুযুর বলেন কি কারনে তাহাজ্জুদ নামাজ যারা পড়ে তাদের চেহেরা খুবই নুরানী হয়? (কালা লিআন্নাহুম খালাও লির রাহমান ফা আলবাছাহুম নুরুম মিন নুরীহি) হযরত হাসান জবাব দেন, সে একাকী নির্জনে রহমানের সাথে সময় কাটায়, আল্লাহ নিজের নুরকে সে বান্দার চেহেরায় পলিশ করে দেন



-তাহাজ্জুদের সময় কুরআন পড়া

সাহাবায়ে কেরাম রাতের বিভিন্ন প্রহরে কুরআন তেলাওয়াত করত, হাদীসে পাকে আছে মদিনার গলিতে রাতে কেহ যদি হাটত তাহলে সে শুনতে পেত মদিনার প্রতিটি ঘর থেকে তাহাজ্জুদ নামাজে কুরআন তেলাওয়াতের আওয়াজ শুনা যেত, মনে হত যেন ভ্রোমর গুন গুন আওয়াজ করছে



-সাহাবীর তেলাওয়াতে ঘোড়া লাফাতে লাগল-ফেরেশতা নেমে আসল

এক সাহাবি রাতে নামাজের মধ্যে কুরআন তেলাওয়াত করছিল পাশে চৌকিতে তাঁর ছোট বাচ্চাটিও শুয়ে ছিল তিনি যখন একটু উঁচু আওয়াজে তেলাওয়াত করতেন তখন ঘোড়াটি লাফাতে থাকত, তখন সাহাবি ঘোড়া বাচ্চাকে লাথি মারবে মনে করে কুরআন তেলাওয়াতের আওয়াজ ছোট করে ফেলতেন তখন ঘোড়াটি শান্ত হয়ে যেত। আবার যখন একটু আওয়াজ বড় করত তখন ঘোড়া আবার লাফাতে থাকত, এভাবে তিনি যখন সালাম ফিরালেন তখন তিনি দেখলেন তাঁর কাছেই সাদা কি একটা আলোর মত কিন্তু তা আসমান পযন্ত বিস্তৃত ছিল। ঘটনা দেখে তিনি হয়রান হয়ে গেলেন। সকালে গিয়ে নবী (আঃ) কে সব ঘটনা বললেন। তখণ নবী করিম (দঃ) ফরমালেন এটা ফেরেশতা ছিল যে তোমার কোরান তেলাওয়াত শুনার জন্য আসমান থেকে নেমে এসেছিল। যদি তুমি কুরআন পড়তেই থাকতে তাহলে মদিনার লোকজন নিজের চোখে ফেরেশতাকে দেখতে পেত




-ফেরেশতারা কুরআন পড়তে পারেনা -তেলাওয়াতকারীর মুখে মুখ লাগায়

ফেরেশতা কুরআন শুনে কিন্তু পড়তে পারে না, শুধুমাত্র জিবরাইল (আঃ) পড়তে পারেন শুনতে পারেন, জিবরাইল ফেরেশতা আমাদের নবী করিম (দঃ) এর সাথে রমজানে দউর করতেন। কিছু ফেরেশতা এমন আছেন যারা দুনিয়ার জমিনে কোথায় তেলাওয়াত হচ্ছে তা তালাশ করতে থাকে এবং যখন কোথাও বান্দা কুরআন তেলাওয়াত করেন তখন তারা সে তেলাওয়াতকারীর পাশে এসে জমা হয়ে যান এবং মনযোগ সহকারে শুনতে থাকেন,

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমাদের মিসওয়াক করার জন্য আদেশ দেয়া হয়েছে। কেননা যখন কোন বান্দা সালাতে দাঁড়ায় তখন তার কাছে ফেরেশতা এসে তার পিছনে দাঁড়ায় কুরআন পড়া শুনতে থাকে এবং তার নিকটবর্তী হতে থাকে, এমন কি ফেরেশতা তার মুখকে তেলাওয়াতকারীর মুখের সাথে লাগিয়ে দেয়। ফলে প্রত্যেক আয়াত ফেরেশতার পেটের ভিতর প্রবেশ করে (বাইহাকী)

 

একবার চিন্তা করুন আপনার মুখে যদি ফেরেশতা চুমু দেয় তাহলে আপনি কতই ভাগ্য বান



-তেলাওয়াত আল্লাহ শুনেন কারী বাসেতের ঘঠনা

হাদীসে পাকে আছে দুনিয়ার কোন গায়কের গান দুনিয়ার কেহ এত মনযোগের সাথে শ্রবণ করে না যতটুকু মনযোগের সাথে আল্লাহ পাক বান্দার কুরআনে পাকের তেলাওয়াত শ্রবণ করেন। (সুবহানাল্লাহ)

 

মিশরের প্রখ্যাত ক্বারী আবদুল বাসেত এর নাম আপনারা সকলেই জানেন তাঁর কুরআন তেলাওয়াত শুনলে বুঝবেন কিভাবে উনার তেলাওয়াত হৃদয়ের গভিরে পযন্ত আছর করে। তাঁর কাছে একজন প্রশ্ন করলেন হযরত আপনি এত সুন্দর করে কুরআন তেলাওয়াত করেন, আপনি কি কোন দিন কুরআনের কোন মুযেজা দেখেছেন? তিনি বলেন যে হ্যাঁ আমি কয়েক বার কুরানের মুযেজা নিজ চোখে দেখেছি তা মধ্যে একটি ঘটনা হল একবার মিশরের প্রেসিডেন্ট জামাল আবদলে নাসের উনার সাথে আমাকে রাশিয়া নিয়ে গেলেন, সেখানেতো মুসলমান নাই, সবাই কমিউনিষ্ট লোক। প্রেসিডেন্ট সেখানকার কাজকর্ম শেষ করে তাদেরকে বলল আমার একজন সাথি আছে সে আপনাদেরকে কিছু পড়ে শুনাবেন। তারাতো বুঝবে না তবুও আমি প্রেসিডেন্টের ইশারায় কুরআন পড়তে লাগলাম। আমি যখন তাদের সামনে রুকু তাদের সামনে পাঠ করা শেষ করলাম সেখানে দেখলাম সে মজলিশে প্রায় / জন লোক অঝোড় ধারায় কান্না করছে। অথচ তারা হল কমিউনিষ্ট যারা আল্লাহকেও মানে না এমন লোকের অন্তরে পযর্ন্ত কুরআনের তির আশ্চর্য্যজনকভাবে বিদ্ধ হতে আমি দেখেছি। যার ফলে তাঁদের চোখের পানির ফোয়ারা বইতে শুরু হয়ে গেল। প্রেসিডেন্ট তাদের প্রশ্ন করল তোমরা কাঁদছ কেন? তারা জবাব দিল আমরাতো বুঝিনি এখানে কি বলা হয়েছে, তবে কালামে এমন একটা অদ্ভুত শক্তি আছে আশ্চর্য্য আকর্ষন আছে যা সোজা আমাদের অন্তরে গিয়ে আছর করেছে যার পরিনতিতে আমরা কাঁদছি। একবার চিন্তা করুন যারা আল্লাহকে মানেন না তাঁদের অন্তরে যদি এভাবে কুরআনের প্রভাব প্রকাশিত হয়, যারা ঈমানওয়ালা তাঁদের অন্তরে কেমন আছর হতে পারে একবার চিন্তা করে দেখুন, তবে তাঁর জন্য দরকার কুরআনের প্রতি মহব্বত



-কুরআন সম্মান দেয় (ইকরা ওয়ারাব্বুকাল আকরাম) হযরত ওমরের উট চড়ানোর ঘটনা

হযরত ওমর এর ঘটনা তিনি একদিন তার লস্কর নিয়ে কোথাও যাচ্ছিলেন পথে মরুভুমির এক জায়গায় দাঁড়িয়ে গেলেন অনেকক্ষন কি যেন দেখছেন আর চিন্তা করছেন, তখন একজন প্রশ্ন করলেন হুযুর আপনি রোদে এখানে কেন দাঁড়িয়ে গেলেন? তখন হযরত ওমর (রাঃ) জবাব দিলেন আমি যখন ছোট ছিলামতখন আমার বাবার সাথে এখানে উট চড়াতে আসতাম কিন্তু আমি জানতাম না কিভাবে চড়াতেহয় আমার পিতা আমাকে বকাঝকা করত যে উমর তোমার দ্বারা কিছুই হবে না কারন তুমি সামান্য উটও চড়াতে যান না। যে উমর জাহেলি যুগে উট চড়াতে জানত না সে উমর আজ ইসলাম কুরআনের সদকায় আমিরুল মুমিনিন হয়ে গেছে। সুতরাং আল্লাহ তায়ালা কুরআনের সদকায় বান্দাকে দুনিয়াতেও ইজ্জত প্রদান করেন আখেরাতেরও ইজ্জত দান করেন

আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন (ইকরা ওয়ারাব্বুকাল আকরাম) তোমরা কুরআন পড় আল্লাহ তায়ালা তোমাকে সম্মান দান করবেন

-হযরত ওমরের বিরুদ্ধে স্ত্রীর অভিযোগ

একদিন হযরত ওমর (রা) অঝোর ধারায় কাঁদছে, স্ত্রী সন্তানকে পাঠালেন দেখ তোমার পিতা কেন কাঁদছে, সন্তান এসে প্রশ্ন করেন ওমর জবাব দেন বাহিরের সকলেই বলে ওমরের শাসন খুব মজবুত, খুব সুন্দর, কিন্তু আমি এই বাহিরের কাজ করতে গিয়ে ঘরের হক যথাযথ পালন করতে পারিনি, জানিনা আমি আমার ঘরের লোকদের কাছে কেমন? যদি আমার ঘরের লোকেরা আমাকে ক্ষমা না করে তাহলে আমি কিভাবে নাজাত পাব? এটা চিন্তা করেই আমি কান্না করছি, একথা যখন শুনলেন তখন স্ত্রী বললেন হে আমিরুল মুমিনিন সত্যিই আপনি আমার হক যথাযথ আদায় করেননি, যার জন্য আমি আল্লাহর আদালতে আপনাকে ক্ষমা করবনা, তবে ১টি শর্তে আমি আপনাকে ক্ষমা করতে পারি, হযরত বলেন কি? স্ত্রী বললেন হে ওমর যদি তুমি কাল কেয়ামতের ময়দানে জান্নাতের মালিক হও তাহলে আমাকে তোমার সাথে সুপারিশ করে জান্নাতে নিয়ে যাবে, আমি সারা জীবন তোমার খেদমত করেছি, তোমার কাপড় চোপড় ধুয়ে দিয়েছি, তোমার জন্য খাবার তৈরী করেছি, সে সব কাজের বাহানায় তুমি আমাকে তোমার সাথে জান্নাতে নিয়ে যাবে বলে ওয়াদা কর তাহলেই আমি তোমাকে ক্ষমা করব। সুবহানাল্লাহ।

আল্লাহ আমাদেরকেও স্ত্রীদের হকসমুহ আদায় করার তৌফিক দান করুন, এবং প্রত্যেককে এমন নেককার স্ত্রী দান করুন আমিন।

 

-বাদশা আওরঙ্গজেব ও বহুরূপী

এক বহুরূপী যে বিভিন্ন ভেশভুষা পরিবর্তন করলে মানুষ তাকে চিনতে পারত না, একদিন সে বাদশা আওরঙ্গজেবকে চ্যালেঞ্জ করলেন বাদশাজি আমি বহুরূপী আপনি আমার ভেশভুষা পরিবতনের পর চিনতে পারবেন না, যদি চিনতে না পারেন তাহলে আমাকে আমার এই দক্ষতার জন্য পুরস্কার দিতে হবে, বাদশা রাজি হলেন, সে বহুরূপি একদিন ভেশভুষা পরিবতন করে ফকির সেজে দরবারে আসলেন বাদশা চিনে ফেললেন, এভাবে বহুরূপী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভেশ পরিবর্তন করে বাদশার চোখে ধুলা দিতে চেষ্টা করে কিন্তু তার সব চেষ্টাই বৃথা যায়, এভাবে বেশ কিছুদিন চলে গেল, একদিন বাদশা আওরঙ্গজেব কোথাও সফরে বের হলেন রাস্তায় দেখলেন পাহাড়ের দিকে অনেক লোক আসা যাওয়া করছে, বাদশা জিজ্ঞেস করলেন এই পাহাড়ে কি হচ্ছে? সকলে বলল এই পাহাড়ে একজন আল্লাহওয়ালা আস্তানা গেড়েছেন সকলে উনার কাছে দোয়ার জন্য যাচ্ছে, বাদশাও দোয়ার জন্য সে পাহাড়ে চড়লেন, দেখলেন একবুযুগ কুরআন পড়ছেন  পোষাক আশাকও সুন্নতী, বাদশা আল্লাহওয়ালাকে সালাম দিলেন এবং উনার কাছে দোয়া চাইলেন, এবং সামান্য হাদিয়াও দিলেন, বাদশা যখন চলে যাচ্ছেন তখন সে লোক বাদশাকে পিছন থেকে ডাক দিয়ে বললেন বাদশাজি আপনি আজ আমাকে চিনতে পারেননি, আমি হলাম বহুরূপী, তখন বাদশা বললেন ঠিক আছে আগামী কাল তুমি দরবারে এসে তোমার পুরস্কার নিয়ে যেও, কিন্তু বহুরূপী বাদশাকে বলেন না জাহাপনা আপনি আর বহুরূপীর কাজ করবনা কারন, আমি আপনার চোখে ধুলা দেয়ার জন্য যখনই আমার নবীর সুন্নতী লেবাছ ধারন করেছি কুরআন পড়ার ভেশ ধরেছি এতেই আল্লাহ আমাকে এমন মর্যাদা দিয়েছেন যদি সত্যিকার খালেছ নিয়তে আমি আল্লাহকে খুশী করার জন্য নবীর সুন্নতকে আকঁড়ে ধরি, কুরআনকে আকড়ে ধরি তাহলে আমার কি সম্মান হবে।

 


আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন (ইকরা ওয়ারাব্বুকাল আকরাম) তোমরা কুরআন পড় আল্লাহ তায়ালা তোমাকে সম্মান দান করবেন

 

-সন্তানকে দ্বীন শিক্ষা দিন কুরআন শিক্ষা দিন

#মা বাবা সন্তানের জন্য লক্ষ টাকা খরচ করে, কি জন্য জবাব দিবে সন্তানের ভবিষ্যৎ ঠিক করছি। অনেক পিতা রাত দিন পরিশ্রম করছে সন্তানের পড়ালেখা টিউশন ফি দেয়ার জন্য, প্রশ্ন করেন কেন? জবাব দিবে সন্তানের ভবিষ্যৎ ঠিক করার জন্য। আর এই ভবিষ্যৎ কতদিন ২০/২৫ বছর। আর যেটা প্রকৃত ভবিষ্যৎ যে ভবিষ্যতের সময় সীমার কোন সীমা নাই সেটার কোন চিন্তাই নাই কোন মা বাবার

* আজ গিয়ে সন্তানকে প্রশ্ন করবেন সে দোয়া কুনুত জানে কিনা?

* আজানের পরের দোয়াটি জানে কিনা?

* আত্তাহিয়্যাত জানে কিনা?

* আয়াতুল কুরসি জানে কিনা?

* জানাযার নিয়ত, জানাযার দোয়া জানে কিনা?

* ছোট কালে কুরআন পড়েছিল এখন পড়তে পারে কিনা?

যে সন্তানকে লাখ লাখ টাকা খরচ করিয়ে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বানিয়েছেন, সে সন্তান আপনার আমার জানাযায় দাঁড়িয়ে বলবে মৌলভি সাহেব জানাযার নামাজের বাংলা নিয়তটা একটু বলে দিনহায়রে আফসুস।

 

- আজকাল দ্বীন শিখি তক করার জন্য

আজকাল আমরা দ্বীন শিক্ষা করি মানুষের সাথে তর্ক করার জন্য, আমাদের দ্বীনের আসল জ্ঞান নাই, কিন্তু ফেসবুক আর গুগুলে সাচ করে টুকটাক কিছু জানার চেষ্টা করি আর নিজের ফায়দা যেটা হবে সেটাকে গ্রহণ করি। যেটা নিজের জন্য সুবিধা সেটাকে গ্রহণ করি, কোনটাতে তাকওয়া কোনটাতে আল্লাহ খুশি সেটা আমাদের চিন্তায় নাই। আর এসব নিয়ে আজকাল বড়ই বাড়াবাড়ি।

 

-ঘোড়া গাধার স্টোরী

মাওলানা রোম একটি মোড়াল স্টোরি লিখে আমাদেরকে এসব মুর্খতাসুলভ তক বিতক না করার জন্য উৎসাহিত করেছেন।

মোরাল স্টোরি- মাওলানা রোম লিখেন একটি ঘোড়া আর একটি গাধার মধ্যে তক বিতক শুরু হল, বিশাল তক বিতক, এক পর্যায়ে সে তক বিতর্কের ফয়সালার জন্য বনের রাজা সিংহের কাছে গেল, সিংহ উভয়ের সব যুক্তি তর্ক শুনে বললেন ঘোড়ার যুক্তি মজবুত সুতরাং ঘোড়া উত্তির্ণ হয়েছে এবং সাথে সাথে ঘোড়ার জন্য শাস্তি নির্ধারণ হল যাবজ্জীবন কারাদন্ড, তখন ঘোড়া আশ্চর্য্য হয়ে বনের রাজাকে প্রশ্ন করল আমি জিতেছি তারপরও আমার শাস্তি কেন হবে? তখন বনের রাজা জবাব দিল তোমার শাস্তি এই জন্যে হবে কারন তুমি গাধার সাথে তক করেছ।

 

- আজকাল আমরা সামান্যতেই ঝগড়া করি- সাহাবীর ইসলাম গ্রহণের পর মায়ের খেদমত

এক সাহাবী বয়ান করেন আমি ইসলাম কবুলের আগে মায়ের সাথে দুব্যবহার করতাম কিন্তু যখন ইসলাম কবুল করলাম আমার মায়ের এতই সম্মান করা আরম্ভ করলাম তখন আমার মা খুশি হয়ে আমার আত্মিয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশীর কাছে আমার ইসলাম কবুল এবং চরিত্রের পরিবতনের কথা সকলকে বলতে লাগল আর আমার এই চারিত্রীক উন্নতি দেখে আমার অনেক আত্মিয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশী ইসলাম কবুল করেছেন।

কিন্তু দুঃখ জনক হলেও সত্যি আজ আমাদের অবস্থা হল আমাদের চরিত্র দেখে মানুষ দিন দিন দ্বীন ধম থেকে দুরে সরে যায়। নাউজুবিল্লাহ।

 

-মায়ের খেদমত ও হযরত ওয়ায়েজ করনীর কাছে আলী ও ওমরের দোয়া প্রাথনা

এক সাহাবী একদিন নবী করিম (দ) কে প্রশ্নকরলেন এয়া রাসুলাল্লাহ কেয়ামত কখন হবে? তখন নবী করিম (দ) জবাব দিলেন যখন সন্তান মাকে অপমান অপদস্থ করবে, তখন বুঝে নিবে কেয়ামত সন্নিকটে।

আজ আমাদের ঘরসমুহে মায়েরা বাবারা সন্তানের দ্বারা অহরহ অপমানিত অপদস্থ হওয়ার খবর শুনা যায়।

অথচ এই মায়ের খেদমতের কতবড় মর্যাদা হযরত ওয়ায়েজ করনীর ব্যপারটি আমাদের জন্য শিক্ষনীয়।

হযরত ওয়াজেয নবীজিকে নিজ চোখে দেখেননি, তিনি অসুস্থ মায়ের খেদমতের খাতিরে মক্কা মদীনায় আসতে পারেননি। কিন্তু নবীজিকে প্রাণের চেয়ে বেশী ভালবাসতেন।

আমাদের নবী যখন দুনিয়া থেকে ইন্তেকাল করবেন তার আগে হযরত আলী ও ওমর (রা) কে বললেন হে আলী হে ওমর তোমরা যখন ওয়ায়েজ করনীকে পাবে তাকে বলবে দোয়া করতে, কারন আল্লাহ তায়ালা তার দোয়া ফেরত দিতে পারেন না। সে ওয়ায়েজ করনীর আমল কি ছিল? অথচ তিনি সাহাবীও নন, তারপরও ‍উনার কাছে জলিলুল কদর ২ জন সাহাবীকে দোয়া চাওয়ার জন্য নসিহত করলেন। তিনি অধিক নামাজি ছিলেন না, অনেক বড় দানশীল ছিলেন না, অনেক বেশী হজ্বও করেননি, অনেক বেশী রোজাদারও ছিলেন না, উনার খাতায় শুধু একটাই আমল ছিল তিনি মায়ের খেদমত করেছেন। আর এই একটি আমলের কারনে আল্লাহ তায়ালা তাঁর সব দোয়াই কবুল করতেন। সেজন্য আল্লাহর নবী হযরত আলী ও ওমর (রা)কে নসিহত করে গেলেন যেন হযরত ওয়ায়েজ করনীকে পেলে তার দিয়ে যেন দোয়া করায়।

 

-সন্তানকে কাটূন দিয়ে চুপ করানো, মোবাইল দিয়ে চুপ করানোর পরিণতি

 

অতএব আমাদেরকে নিজেদেরকে দ্বীন শিখতে হবে, কুরআন শিখতে হবে, সন্তানদেরকে দ্বীন শিখাতে হবে, কুরআন শিখাতে হবে, আর সন্তানদেরকে মহব্বত দিতে হবে, আমরা সন্তানকে কাটুন দেখিয়ে চুপ করিয়ে রাখি, ছোট থেকে সন্তানকে কাটুন দেখিয়ে দেখিয়ে তার মেজাজটিই কাটুন এর মত হয়ে যায় ফলে সে নিজেকে টম মনে করে আর তার মা বাবা টিচার সকলেকেই জেরি মনে করে, সন্তান যখন মায়ের আদর যত্ন পাওয়ার কথা তখন তাকে স্কুলে পাঠিয়ে যেন বড় দায়িত্ব পালন করছি, ৩ বছর বয়স থেকেই মাসুম বাচচাগুলিকে পড়ার চাপে মেশিনে পরিণত করছি। ফলে এসব সন্তানের ভিতর মায়া মততা ভালবাসা সৃষ্টি হয়না, তারা বড় হয়ে মা বাবার সাথেও মেশিনের মত আচরন করে।

 

এবার আসুন এ রাতের আরো কিছু আমলের কথা বলি 

-সালাতুত তাসবিহ কাজা নামাজ

ছাড়া সালাতুস তাসবিহ এবং অন্যান্য নফল নামাজ আদায় করা যায়। অথবা যাদের জিম্মায় অনেক কাজা নামাজ আছে তারা সারা রাত নিজের কাজা নামাজ গুলি পড়তে পারেন

 

 

- ২ রাকাত সালাতুল হাজত

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে কোনো প্রয়োজন পূরণে নিজেই নামাজ পড়তেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। হাদিসে পাকে নামাজ পড়ার গুরুত্ব ওঠে এসেছে-

 

- হজরত হুজাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে যখন গুরুত্বপূর্ণ কোনো প্রয়োজন বা বিষয় (বিপদ-আপদ) চলে আসতো; তখন তিনি সঙ্গে সঙ্গে নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন।’ (আবু দাউদ)



এটাকে সালাতুল হাজতও বলা হয়, শবে কদরের রাতে নামাজটি কিভাবে পড়বেন এবং এর পর কিকি দোয়া করবেন তা আজ বিস্তারিত শিখাব


সালাতুল হাজত পড়ার জন্য নির্ধারিত কোনো নিয়ম, দিনক্ষণ বা সময় নেই। অন্যান্য নামাজের মতোই এটি পড়তে হয়। তবে নিষিদ্ধ সময় (সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত, দ্বিপ্রহর) মাকরুহ সময় ব্যতিত অন্য যেকোনো সময় তা পড়া যাবে। হাদিসে এসেছে-


রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির আল্লাহর কাছে বা মানুষের কাছে কোনো প্রয়োজন দেখা দেয়, সে যেন উত্তমরূপে অজু করে দুই রাকাআত নফল নামাজ আদায় করে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করে এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ পাঠ করে।’ (তিরমিজি)


সুতরাং রাকাত সালাতুল হাজতের নিয়ত করে প্রথমে সানা পড়বেন, তারপর আউজুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ পড়ে, সুরা ফাতেহা পড়বেন, তারপর যে কোন ১টি সুরা পড়বেন, রুকু সিজদা করে ২য় রাকাত একই নিয়মে পড়ার পর আত্তাহিয়্যাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে কয়েক বার দরুদ শরীফ পড়বেন এবং আল্লাহর প্রসংশা করবেন অথবা প্রসংশার নিয়তে বার সুরা ফাতেহা পড়বেন এরপর ১টি দোয়া নবীজি শিক্ষা দিয়েছেন সে দোয়াটি পড়বেন


অথবা নিজের ভাষায় বৈধ দোয়া করবেন

হাদীসের দোয়াটি হল-

 

ﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺍﻟْﺤَﻠِﻴﻢُ ﺍﻟْﻜَﺮِﻳﻢُ ﺳُﺒْﺤَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺭَﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺮْﺵِ ﺍﻟْﻌَﻈِﻴﻢِ ﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠَّﻪِ ﺭَﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﻣُﻮﺟِﺒَﺎﺕِ ﺭَﺣْﻤَﺘِﻚَ ﻭَﻋَﺰَﺍﺋِﻢَ ﻣَﻐْﻔِﺮَﺗِﻚَ ﻭَﺍﻟْﻐَﻨِﻴﻤَﺔَ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺑِﺮٍّ ﻭَﺍﻟﺴَّﻼَﻣَﺔَ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺇِﺛْﻢٍ ﻻَ ﺗَﺪَﻉْ ﻟِﻲ ﺫَﻧْﺒًﺎ ﺇِﻻَّ ﻏَﻔَﺮْﺗَﻪُ ﻭَﻻَ ﻫَﻤًّﺎ ﺇِﻻَّ ﻓَﺮَّﺟْﺘَﻪُ ﻭَﻻَ ﺣَﺎﺟَﺔً ﻫِﻲَ ﻟَﻚَ ﺭِﺿًﺎ ﺇِﻻَّ ﻗَﻀَﻴْﺘَﻬَﺎ ﻳَﺎ ﺃَﺭْﺣَﻢَ ﺍﻟﺮَّﺍﺣِﻤِﻴﻦَ


সবশেষে ফজরের নামাজ মসজিদে এসে জামাতে আদায় করবেন। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ক্ষমা করুন আমিন। আমাদের সকল এবাদত কবুল করুন আমিন।



 

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.