স্বামী গালি দিলে স্ত্রী জবাব দিলে কি গুনাহ হবে? চপ্পল উল্টে গেলে কি বরকত চলে যায়?

 স্বামী গালি দিলে স্ত্রী জবাব দিলে কি গুনাহ হবে? চপ্পল উল্টে গেলে কি বরকত চলে যায়?



এক বোন জানতে চেয়েছেন যদি স্বামী গালি গালাজ করে সব সময় ঘরে উচ্চবাচ্চ করে তখন স্ত্রীর করনীয় কি? যদি স্ত্রী স্বামীর সে কথায় জবাব দেয় তাহলে গুনাহ হবে কিনা?

মনে রাখবেন যদি এক হাতি মারে সেটা হয় থাপ্পর আর যদি ২ হাত দিয়ে মারা হয় তা হবে মারপিট, মুলত এটা এক প্রকার যুদ্ধই বলা যায়।

যদি এক পক্ষ থেকে যুলুম হতে থাকে আর অপর পক্ষ চুপ থাকে কমপক্ষে ঘর টিকে থাকে, তবে তাতে যদি জুলুম বেড়ে যায় তখন বড়দেরকে জানান,

কিন্তু স্ত্রী যদি নিজেই জবাব দিতে আরম্ভ করে আমরা কখনো দেখিনি যে এর পর ঘরের পরিবেশ ভালো হয়ে গেছে। কেননা স্বামী গালি দিলে স্ত্রীর যেমন সহ্য হচ্ছে না, তেমনি স্ত্রীও গালির জবাবে গালি দিলে স্বামীরও সহ্য হবেনা, তখন শয়তান স্বামীর দেমাগে সেটাকে বসিয়ে দেয়, এবং শয়তান স্বামীকে বার বার মনে করিয়ে দেয়, স্বামীকে রাগিয়ে দেয়, এবং শেষ পযন্ত মামলা তালাক পযন্ত গড়ায়।

এ ধরনের অহরহ ঘটনা আমরা দেখতে পায় তালাকের পর মহিলা মুফতি সাহেবের কাছে আসে আর কেঁদে কেঁদে বলে হুজুর আমার ভুল হয়ে গেছে, আমি স্বামীর মুখের উপর জবাব দিয়ে দিলাম, আর স্বামী রাগ করে আমাকে তালাক দিয়ে দিল, েএখন আমি তালাককে বরদাশ করতে পারছিনা, কারন আমার বুড়া মা বাবা ছোট ভাই বোন আছে তাদের কি হবে, আমার ভবিষ্যৎ কি হবে? আমার ছোট ছোট বাচ্চাগুলির কি হবে?

অর্থ্যাৎ গরম গরম জবাব দেয়ার সময় হুশ থাকেনা পরে হুশ ফিরে আসলে তখন বুঝতে পারে স্বামীর গালি গালাজ বরদাশ করে নেয়াটাই ভালো ছিল।

আবার আমি এটাও বলছিনা যে সীমাহিন জুলুম সহ্য করতে থাকুন আর জবাবে আপনি কিছুই করবেন না, বরং আপনি জবাবটা কৌশলে দিতে হবে, সাথে সাথে জবাব দিবেন না বরং বরদাশত করে নিবেন, যখন স্বামীর মেজাজ ভালো হবে মুড ভালো থাকবে তখন ভালোবাসা ও মহব্বতের সাথে স্বামীকে কৌশলে বুঝাতে হবে, যেমন বলবেন আপনি যা আমার সাথে করছেন তা খুবিই কষ্টকর, এ ধরনের আচরন যদি আমাদের মেয়ের সাথে তার স্বামী করে কিংবা আপনার বোনের সাথে যদি তার স্বামী করে আপনার বনের জামাই যদি তাকে সব সময় গালি গালাজ করে তাহলে কি আপনার পছন্দ হবে? এভাবে পেয়ার মহব্বতের সাথে বুঝিয়ে দেখুন।

মুখের উপর জবাব দেয়ার দ্বারা সমাধান হয়না, সবর করার দ্বারা অবশ্যই আল্লাহর গায়েবী সাহায্য আপনার সাথে থাকবে।একসময় আল্লাহ তায়ালা তার অন্তরে রহমত ঢেলে দিবেন।এবং আপনার স্বামী নিজের ভুল বুঝতে পারবেন। আর যে সব পুরুষ নারীকে দুবল মনে করে তাকে গালি দিচ্ছে তার উপর জুলুম করছে তারা অবশ্যই গুনাহে কবিরা কারী হিসেবে খাতায় নাম লেখাচ্ছে। তাছাড়া ঘরের মধ্যে স্বামী স্ত্রী সব সময় ঝগড়া করলে সে সব অভ্যাস ঘরের ছোট ছোট বাচ্চাদের মধ্যেও আছর করে যা তাদের মানসিক ভাবে অসুস্থ করে দিবে। হতে পারে আপনার ঘরে তালাক হয়নি, কিন্তু আপনার মেয়ে যদি স্বামীর সাথে মুখে মুখে তক করা দেখে তা  শিখে সে যখন শাশুড় বাড়ী যাবে খোদা নাখাস্তা সে যদি স্বামীর সাথে তক করতে গিয়ে তালাক খেয়ে বসে তখন কি করবেন? সে জন্য ঘরকে সুন্দর করার জন্য ঘর বাঁচানোর জন্য, সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য স্বামী স্ত্রীকে ঘরে সুন্দর পরিবেশ বজায় রেখে চলতে হবে।

আরেক বোন জানতে চেয়েছেন চপ্পল যদি উল্টে যায় তাতে ঘর থেকে বরকত চলে যায় এমন কোন কি হাদিস আছে?

আমাদের সমাজে এ ধরনের অনেক কথা প্রচলিত আছে যা আমরা শুনতে পাই,  তার মধ্যে এটাও একটা প্রচলিত কথা যে চপ্পল উল্টে গেলে ঘর থেকে বরকত চলে যায়, দেখুন যেসব কাজ করলে ঘর থেকে বরকত চলে যায় সে সব কাজ আমরা অহরহ করে থাকি আর কিছু কাজের সাথে রহমত ও বরকতের কোন সম্পক নাই সে সব কুসংস্কারে আমরা ডুবে থাকি। কেহ যদি বলে তাকে প্রশ্ন করুন যদি এমন কিছু হয় তাহলে কোথায় লিখা আছে বলতে বলুন। এধরনের আরো অনেক কুসংস্কার আছে যেমন পা হেলিও না বরকত চলে যাবে, জুতার উপর জুতা উঠে গেলে সফর করতে হবে, জুতা উল্টা হয়ে গেলে আল্লাহর লানত নাজিল হয়। নাউজুবিল্লাহ। অথচ বরকত চলে যাওয়ার কারন কুরআন ও হাদীসে পরিস্কার বয়ান আছে যেমন মিথ্যা বলা, রিযিকের বেহুরমতি করা, নাশোকরি করা, নামাজ না পড়া। এসবই হল ঘরের বরকত চলে যাওয়ার কারন।

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.