মুর্খের অজু বনাম জ্ঞানী লোকের অযু। অজু/ অযু করার নিয়ম। The correct rules of ablution
অযু/অজু/ওযু করার ব্যপারে পাবলিক কতটা মূর্খ! আফসোস
পরিপূর্ণ অজু
সে করবে যে পরিপূর্ণভাবে অজু করা শিখেছে। আমাদের অসংখ্য ভাই মসজিদে গিয়ে পাশের জনকে
দেখে দেখে অজু শিখে। একজন পানি নিয়ে খুব জোরে মুখের উপর মারে, আপনিও তাকে দেখে মারেন,
আবার একজন মাথা মাসেহ করার সময় শুধু ১ হাত মাসেহ করে দিল আপনিও ১ হাত মাথায় মাসেহ করে
দিলেন, আপনি জানেন না সুন্নত তরিকা মতে অজু কোনটা।
অনেক লোক দেখবেন
পানির নল খুলে দিয়ে মিসওয়াক করছে, পানি অপচয় হচ্ছে সেদিকে খেয়াল নাই অথচ এভাবে পানি
অপচয় করা হারাম, এভাবে অসংখ্য ভাই আছেন যাদের শুদ্ধ করে অজু করার নিয়ম জানা নাই।
আল্লাহ তায়ালা
অজুর ফরায়েজ বয়ান করতে গিয়ে ৩টি অংগ ধোয়ার জন্য হকুম দিয়েছেন, চেহেরা, কুনুই সহ দুই
হাত এবং টাকনু সহ দুই পা, আর ১টি অংগ মাথা মাসেহ করার হকুম দিয়েছেন।
৩টি অংগের ব্যপারে
ফাগছিলু বলা হয়েছে আর মাথার ব্যপারে ফামছিহু মাসেহ করার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু অধিকাংশ
লোক ধোয়া আর মাসেহ করার পার্থ্যক্যও জানে না তাই দেখবেন মুখ ধোয়ার সময় ফরয হল কপালের
উপরের চুলের গোড়া থেকে থুথুনির নিচ এবং দুই কানের কিনারা পযন্ত ধোয়া ফরয এখন দেখবেন
হাতে পানি নিয়ে মুখের সামনের অংশে মারে আর পাশের অংশে মাসেহ করে দেয় এভাবেই মুখ অর্ধেক
ধৌত করে আর অর্ধেক মাসেহ করে, তেমনি হাত ধোয়ার সময় উপরে পানি ঢালে আর নিচের দিকে ভিজা
হাত দিযে মাসে করে দেয়, পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ও পায়ের তালুর নিচে পানি পৌঁছেছে কিনা
তার হিসাব নাই। এভাবে আজীবন অজু করে নামাজ আদায় করে, কোন দিন একজন আলেমে দ্বীনকে জিজ্ঞেস
করে নেয়না কিভাবে অজু করতে হয।
অজু করার সুন্নত
তরিকা হল-
১) প্রথমে বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম পড়বেন
২) এরপর দুই হাত
কব্জিসহ ধৌত করবেন
৩) এরপর ডান হাতে
পানি নিয়ে ১ বার কুলি করে মিসওয়াক করবেন এবং মিসওয়াকের পর আরো ২ বার কুলি করবেন এবং
গড়গড়া করে নিবেন।
৪) এরপর ডান হাতে
পানি নিয়ে নাকে সে পানি শ্বাস টেনে নিবেন পানি যেন নাকের নরম হাড্ডি পযন্ত পৌঁছে যায়।
এবং বাম হাতের কনিষ্ঠা ও বৃদ্ধা আঙ্গুল দ্বারা নাক সাফও করে নিবেন।
অনেকে শুধু নাকে
পানি দেয় সে পানি শ্বাস টেনে নরম হাড্ডি পযন্ত পৌঁছায়না।
৫) এরপর সমস্ত
মুখমন্ডল ধৌত করা ফরয। সুতরাং সমস্ত মুখমন্ডল ধৌত করতে হবে যদি চেহেরার কিছু অংশে পানি
প্রবাহিত না করে ভিজা হাতে মাসেহ করা হয তাহলে ফরয আদায় হবেনা।
সাধারণ মানুষ
মুখ ধোয়ার সময় হাতে পানি নিয়ে চোখের উপর মারে আর চোখ থেকে নিজের দিকে পানি গড়িয়ে পরে,
আর সে কপাল ও গালের দুই পাশে মাসেহ করে নেয়, ফলে মুখের সামনের অংশ ধৌত হয় আর মাথা ও
পাশের অংশ মাসে হয়। ধৌত করার ফরয পুরণ হয়না।আর এভাবে অযু আমাদের হবেনা।
আর চেহেরা হল
যেখান থেকে মাথার চুলের সীমা সেখান থেকে দুই পাশে কানের কিনারা পযন্ত এবং এদিকে থুথুনির
নিচ পযন্ত
সেজন্য চেহেরা
ধৌত করার সময় দুই হাতে পানি নিয়ে চেহেরা একটু সামনের দিকে ঝুকাবেন এবার দুই হাতের পানি
কপালের উপর যেখানে চুল জমে সেখানে নিয়ে ছাড়বেন। তাহলে পানি কপালের উপর থেকে প্রবাহিত
হয়ে নিচের দিকে প্রবাহিত হবে এবং সমস্ত মুখমন্ডল ধৈৗত হবে। এরপর আরেকবার পানি নিয়ে
ডান দিকে প্রবাহিত করতে হবে এবং পরে বাম দিকে প্রবাহিত করতে হবে। যাতে সমস্ত মুখমন্ডলে
পানি প্রবাহিত হয় এভাবে আপনার চেহেরা একবার ধৌত হল। এভাবে একই নিয়মে আরো ২ বার পানি
প্রবাহিত করলে মোট ৩ বার মুখমন্ডল ধৈৗত হবে। আর কেহ যদি ১ বার ধৌত করে তাহলে ফরয আদায়
হবে সুন্নত আদায় হবেনা।
৬) এরপর দুই হাত
কুনুই সহ ধৈৗত করতে হবে সে জন্য দেখবেন পানির নল থেকে পানির ধার এক স্থানে পড়ছে আর
অন্য হাত দিয়ে মানুষ পানি দিয়ে হাতের অপর অংশ মাসেহ করছে, সে জন্য পানির নল খুলে দিয়ে
হাত চালাতে হবে যাতে পানির ধার সমস্ত হাতে পরিপূণভাবে প্রবাহিত হয।
হাত ধৌত করার
অথ হল প্রতিটি লোমের উপর পানি প্রবাহিত হতে হবে, এখন হাতের তালুতে পানি নিয়ে উপরের
দিকে পানি প্রবাহিত করে হাতের পিঠের উপর অপর হাত দিয়ে অধিকাংশ লোক মাসেহ করে তাহলে
তার হাত ধোয়া হলনা, এবং অজুও হলনা।
৭) এরপর মাথা
মাসেহ করতে হবে মাথা মাসে হরার সুন্নত তরিকা হল দুই হাতের ৩/৩ আঙ্গুল দিয়ে মাথার উপর
মাসেহ করবে আর হাতের তালু দিয়ে পিছন থেকে সামনের দিকে মাসে করে আনবে এবং দুই হাতের
শাহাদাত আংগুল দিয়ে মাসেহ করবে কানের ভিতর আর বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে কানের পিঠে মাসেহ
করবে এবং হাতের পিঠ দ্বারা ঘারে মাসে করবে ঘারে মাসেহ করার সময় সামনে থেকে পিছনে নিয়ে
যাবে যদি পিছন থেকে সামনের দিকে টানেন তাহলে গলা সহ মাসেহ হয়ে যায় যা মকরুহ কাজ।
৮) পা ধোয়ার সময়ও
দেখাবেন উপরে নল খুলে পানি প্রবাহিত করে আর পায়ের নিচের অংশে একটু গত টাইপের থাকে তাই
পানি উপরে পরলে সেটা নিচে গিযে সব অংশে প্রবাহিত হয়না তাই অনেকে উপরে পানি ঢেলে নিচের
অংশে মাসেহ করে দেয়, সে জন্য পা ধোয়ার সময় উপরেও পানির ধার প্রবাহিত করতে হবে নিচে
পায়ের তালুতেও পানির ধার প্রবাহিত করতে হবে। যাতে সব অংশে পানি প্রবাহিত হয় এবং পা
ধোয়ার সময় পায়ের আংগুলের ফাঁকে যাতে পানি পৌঁছে সে জন্য বাম হাতের কনিষ্ঠা আংগুল দ্বারা
পায়ের আংগুল খেলাল করে দিতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই