হযরত ইবরাহিম (আ) কি মিথ্যা বলেছিলেন?

 হযরত ইবরাহিম (আ) কি মিথ্যা বলেছিলেন?

মহানবী (দ) কি মিথ্যা বলেছিলেন?



হযরত ইবরাহিম (আ) পরিস্থিতির শিকার হয়ে ৩ স্থানে ৩টি কথা বলেছিলেন তেমনি মহানবী (দ) এর জীবনের ২টি ঘটনাও বাহ্যিক দৃষ্টিতে মিথ্যা মনে হয় এই মহান ২ জন জলিলুল কদর পয়গাম্বরের জীবনের সে ৫টি ঘটনাকে অনেকে মিথ্যার প্রলেপ দেয়ার সাহস দেখায় আজ আপনাদের সামনে বিষয়গুলির সঠিক হাকিকত উম্মোচন করব যেমন-

 

মহামনীর (দ)এর - প্রথম ঘটনাটি

শামায়েলে তিরমিযির ২৪০ নং হাদীসে , মুসান্নাফ আবদুর রাজ্জাকের ১৯৬৮৮ নং হাদীস, সহিহ ইবনে হিব্বানের ২২৭৬ নং হাদীসে আছে

 

হযরত আনাস বিন মালেক (রা) বয়ান করেন এক গ্রাম্য লোক যার নাম ছিল জাহের বিন হারাম (রা), তিনি গ্রাম থেকে মদীনায় যখনই আসত নবী করিম (দ) এর জন্য হাদিয়া নিয়ে আসতেন, আর নবী করিম (দ) ও তাঁকে বিনিময়ে নানান উপহার সামগ্রি দিতেন।

 

হুজুর (দ) বলতেন জাহের আমার গ্রাম্য বন্ধু আর আমি তার শহুরে বন্ধু।

 

হযরত জাহের (রা) এর চেহেরা সুরত খুবই অসুন্দর ছিল, একদিন নবী (দ) বাজারে গিয়ে দেখলেন তিনি বাজারে কিছু বিক্রী করছেন, নবী করিম (দ) পিছন থেকে গিয়ে তাকে বগলের নিচ দিয়ে হাত দিয়ে ঝাপটে ধরলেন আর বলতে লাগলেন আমি এই গোলামটি বিক্রী করব কেহ কি আছেন কিনবেন? জাহের (রা) যখন বুঝতে পারলেন তাকে পিছন থেকে যিনি ধরেছেন তিনি হলেন রহমাতুলিল আলামিত (দ) তখন তিনি নিজের পিট খানা হুজুর (দ) এর বুকের সাথে লেপটে রাখলেন  আর বললেন এয়া রাসুলাল্লাহ কেহ যদি আমাকে কিনে তাহলে তার লোকসান হবে কারন আমিতো সুন্দর না, বিশ্রী। আমার মধ্যে অনেক খুঁত ত্রুটি আছে।

 

তখন নবী করিম (দ) জবাবে বললেন হে জাহের তুমি দুনিয়ার মানুষের দৃষ্টিতে বিশ্রী ত্রুটিযুক্ত কিন্তু আল্লাহর নিকট তুমি ত্রুটিমুক্ত  আল্লাহর দৃষ্টিতে তুমি বিশ্রি নও। বরং তুমি আল্লাহর কাছে খুবই পছন্দের।

 

এ হাদীসে দেখা যায়  হযরত জাহের বিন হারাম (রা) আযাদ সাহাবী কিন্তু হুজুর (দ) তাঁকে গোলাম বললেন এখানে বাহ্যিক দৃষ্টিতে এটা মিথ্যা মনে হলেও হাকিকতান প্রত্যেকেই কিন্তু আল্লাহর গোলাম।

 

#২য় ঘটনা-

ছুবুলুল হুদা ওয়ার রেশাদ কিতাবের ৭ম খন্ডের ১১৪ পৃষ্ঠায় ১টি হাদীস খুবই মজার

হযরত জায়েদ বিন আসলাম (রা) হতে বর্ণিত তিনি বলেন এক নারী যার নাম উম্মে আইমন তিনি নবী করিম (দ) এর কাছে এসে বললেন এয়া রাসুলাল্লাহ (দ) আমার স্বামী আপনার সাথে সাক্ষাৎ করতে চান, নবী করিম (দ) প্রশ্ন করলেন তোমার স্বামী কে? সেই কি তোমার স্বামী যার চোখের মধ্যে কিছু অংশ সাদা আছে? সে মহিলা বলল না এয়া রাসুলাল্লাহ আমার স্বামীর চোখে কোন সাদা নাই। তখন হুজুর (দ) ফরমালেন প্রত্যেক লোকের চোখেই কিছু অংশ সাদা থাকে।

এখানে নারীটি মনে করেছে নবী (দ) তার স্বামীর চোখে কোন রোগের কথা বুঝাচ্ছেন, কিন্তু হুযুর (দ) এর উদ্দেশ্য ছিল চোখের সে সাদা অংশ যা সব মানুষের মধ্যে থাকে।

 

হযরত ইবরাহিম (আ)

১। উনার স্ত্রী সারা (রা) কে নিজের বোন বলে পরিচয় দেয়া - আদমের দিক থেকে সকলেই ভাই বোন

 

২। মেলায় যাওয়ার সময় অসুস্থ বলা- মুলত শারিরিক অসুস্থতা নয় বরং নিজে আন্তরিকভাবে এসব মুর্তিপঁজা অপছন্দ করত বিধায় মানসিক অসুস্থতার কথা বলেছেন

 

৩। মুর্তি নিজে ভেঙ্গে বড় মুর্তি ভেঙ্গেছে বলা- এটা মুলত এই জন্য ছিল যাতে তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পারে যে মুর্তিরা কিছুই করতে পারেনা।

 

অর্থ্যাৎ বাহ্যিক অর্থে মিথ্যা মনে হলেও হাকিকতান তা ছিল সত্য। তাই আল্লাহ তায়ালা হযরত ইবরাহিম (আ) কে সত্যবাদী বলে সার্টিফিকেট দিয়ে সুরা মরিয়মের ৪১ নং আয়াতে বলেন

وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّهُ كَانَ صِدِّيقًا نَّبِيًّا

আপনি এই কিতাবে ইব্রাহীমের কথা বর্ণনা করুন। নিশ্চয় তিনি ছিলেন সত্যবাদী, নবী। [সুরা মারঈয়াম - ১৯:৪১]

সুতরাং মুসলমানের আকিদা হল আম্বিয়াকেরাম মাসুম তারা সকল গুনাহ মিথ্যা দোষ ত্রুটি এসব থেকে পুত পবিত্র। তাই আম্বিয়াকেরামের ব্যপারে মিথ্যা বলেছেন বলা যাবে না।  

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.