এসব মুর্খের কুরবানী। যে সব কারনে কুরবানী হয়না
এসব মুর্খের কুরবানী।
যে সব কারনে কুরবানী হয়না
১। জ্ঞানী লোক কুরবানী করে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার
নিয়তে, মুখ লোক কুরবানী করে লোক দেখানোর জন্য
মুখদের
কুরবানী সংক্রান্ত কিছু মুর্খতাসুলভ ডায়লগ
(ক) প্রতিবছর কুরবানি
করে আসছি এ বছর না করলে কেমন দেখায়?
(খ) কুরবানী না করলে
লোকে কি বলবে?
(গ) আমি কুরবানি না
করলে সন্তানরা মন খারাপ করবে।
২। জ্ঞানী লোক কুরবানী করার সময় মানুষের বাহবা
চাননা, বড় পশু খরিদ করে এলাকায় নাম কামাতে চান না, মুখ লোক বাহবা পাওয়ার জন্য এলাকায়
নাম কামানোর জন্য হাট থেকে বড় পশুটি কিনে আনেন।
৩।জ্ঞানী লোক কুরবানী পশুর গোস্ত নিজেও খায় আত্মিয়
স্বজনকেও বিলি করে গরীবদেরকেও দান করেন, আর মুখ লোক গরু কিনার আগে ডিপ ফ্রিজ কিনে,
গোস্ত সংরক্ষণ করে সারা বছর খাওয়ার জন্য
৪।জ্ঞানী লোকেরা যার উপর কুরবানী ওয়াজিব তার পক্ষ
থেকে কুরবানী দেয়, আর মুখরা যার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয় তার পক্ষ থেকে কুরবানী দেয় আর
যার উপর ওয়াজিব তার পক্ষ থেকে কুরবানী দেয়না।
যেমন অনেক সময় দেখা যায় স্বামীর কাছে কোন সম্পদ
নাই, স্বামী চাকরী করে মাসে ২০ হাজার টাকা বেতন পায়, আর সে ২০ হাজার টাকা ঘর খরচে চলে
যায়, পক্ষান্তরে স্ত্রীর কাছে ১ ভরি স্বণ আছে সাথে সামান্য নগদ টাকাও আছে এখন হিসাব
করে দেখা যাবে স্ত্রীর কাছে সব মিলিয়ে ১ লক্ষ টাকার সম্পদ আছে তাই তার উপর কুরবানী
ওয়াজিব স্বামীর জন্য ওয়াজিব নয়, এমন ক্ষেত্রে উচিত মহিলার পক্ষ থেকে কুরবানী করা, কিন্তু
আমাদের সমাজে দেখা যায় যার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয় তার পক্ষ থেকে কুরবানী করে।
৫।কুরবানীতে
নাম দেয়ার ক্ষেত্রেও মুখরা ভুল করে
সন্তানের জন্য
মা বাবার পক্ষ থেকে কুরবানী করা ওয়াজিব নয়। কুরবানী ওয়াজিব হল যিনি নিসাবের মালিক তার।
কিন্তু আমাদের সমাজে দেখা যায় নিসাবের মালিক ছেলে কুরবানী করছে মায়ের,
বা বাবার। যিনি নিসাবের মালিক আগে উনার জন্য ওয়াজিব হল নিজের ওয়াজিব আদায় করবে তারপর
অতিরিক্ত হিস্সা যদি থাকে তাতে অন্যান্যদের নাম দিবে।
৬। মুখরা কুরবানীর অংশিদারে হিস্সার টাকায়ও ভুল করে
উদাহারন স্বরুপ ৭ জনে মিলে ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে ১টি গরু কিনল ৬ জনে
৫ হাজার করে ৩০ হাজার দিল ১ জন বলল ভাই আমি গরিব আমার কাছে ৩ হাজার আছে, তখন একজন বলল
ঠিক আছে তুমি ৩ হাজার দাও বাকী ২ হাজার আমি দিব অির্থ্যাৎ আমি মোট ৭ হাজার দিব আর অতিরিক্ত
২ হাজারের গোস্ত আমি নিব, তাহলে কুরবানী হবে না। যত জনই কুরবানী করেন ৭ ভাগের এক ভাগে
ভাগ করে টাকার হিসাব করতে হবে, যেমন ৩ ভাই মিলে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে গরু কিনল একজন দিল
৩ হিস্সার টাকা ৩০ হাজার, ২য় জন দিল ১ হিসস্সার
টাকা ১০ হাজার ৩য় জন দিল ৩ হিসস্সার টাকা ৩০ হাজার তাহলে সহিহ হবে, এখন ৭০ হাজারের
গরুতে ১ ভাই ১৫ হাজার এক ভাই ৩৫ হাজার আরেক ভাই ২০ হাজার দিলে যেহেতু হিসস্সার টাকা
৭ ভাগের ভাগ হচ্ছে না তাই কুরবানী হবে না।
৭।মুর্খরা কুরবানী করার পর গোস্ত ভাগ করাতেও ভুল করে
যদি একাধিক শরীক থাকে তাহলে গোস্ত ভাগ করবে ওজন করে। অনুমান বা আন্দাজ করে নয়। কারণ অনুমান করে ভাগ করলে বেশকম হতে পারে, যা গুণাহের কারণ।
৮। মুখরা কুরবানীর সময় কসাইকে বেতন দিতেও ভুল করে
যে কসাই গোস্ত তৈরি করে দিবে তাকে আলাদাভাবে কাজের জন্য মজুরি দিতে
হবে। মজুরি হিসেবে কোরবানীর গোস্ত দেয়া জায়েজ নেই। তার প্রাপ্য মজুরি দেয়ার পর লিল্লাহ
গোস্ত আলাদা দেবে।
৯। কাজের লোককে কুরবানীর গোস্ত খাওয়ানোর ব্যপারেও মুখরা ভুল করে
যেমন
কুরবানীর পশুর কোনো কিছু পারিশ্রমিক হিসাবে দেওয়া জায়েয নয়। গোশতও পারিশ্রমিক হিসেবে কাজের লোককে দেওয়া যাবে না। আপনার কোন একজন কর্মচারী
কাজ করে ২ বেলা খাবার ও ৫ হাজার টাকা বেতনে, এখন ২ বেলা খাবারও তার বেতন, এখন
কুরবানির সময় সে কর্মচারীকে শুধু কুরবানির গোস্ত দিয়ে খাবার দেয়া যাবে না বরং অন্য
১টি তরকারীও সাথে দিতে হবে। -আহকামুল কুরআন জাস্সাস ৩/২৩৭, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪, আলবাহরুর রায়েক ৮/৩২৬, ইমদাদুল মুফতীন
১০। মৃত্যুর আগে কেহ কুরবানীর অসিয়ত করে গেলে সে ব্যপারেও মুখরা
ভুল করে
মৃতের পক্ষ থেকে কুরবানী করা জায়েয। মৃত ব্যক্তি যদি ওসিয়ত না করে থাকে তবে সেটি নফল কুরবানী হিসেবে গণ্য হবে। কুরবানীর স্বাভাবিক গোশতের মতো তা নিজেরাও খেতে পারবে এবং আত্মীয়-স্বজনকেও দিতে পারবে। আর যদি মৃত ব্যক্তি কুরবানীর ওসিয়ত করে গিয়ে থাকে তবে এর গোশত নিজেরা খেতে পারবে না। গরীব-মিসকীনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই