১০ প্রকার লোকের নামাজ কবুল হয়না। যাদের নামাজ কবুল হয়না। যাদের এবাদত কবুল হয়না
১০ প্রকার লোকের নামাজ কবুল হয়না। যাদের নামাজ কবুল হয়না। যাদের এবাদত কবুল হয়না
পবিত্র
কুরআন ও হাদীসে ১০ প্রকার লোকের কথা উল্লেখ আছে যাদের কোন নামাজ কবুল হয়না, তাদের
নামাজ তাদের কানের উপরও উঠেনা, সারা জীবন নামাজ পড়েও জাহান্নামে যেতে হবে - সে
হতভাগারা হলেন-
১।
যারা জৌতিষির কথা বিশ্বাস করে, গনকের কাছে যায়, পাখি দিয়ে ভাগ্য গননা করে পেপার
পত্রিকায় রাশিফলসমুহ বিশ্বাস করে তার ৪০ দিনের এবাদত কবুল হবেনা, কারন সে শরীয়তে
মুহাম্মদীর উপর কুফুরী করল।
"
مَنْ أَتَى عَرَّافًا
فَسَأَلَهُ عَنْ شَىْءٍ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلاَةٌ أَرْبَعِينَ
لَيْلَةً " .
নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আররাফ
(গণকের) কাছে গেল এবং তাকে কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করল, চল্লিশ রাত তার কোন সালাত
কবুল করা হয় না। (মুসলিম ৫৬২৭)
২। পলাতক দাস দাসী যদি মনিবের কাছ থেকে পালিয়ে যায় তখন তাদের নামাজ কবুল হয়না যেমন
মুসলিম শরিফের ১৩৪ নং হাদীস
" إِذَا أَبَقَ الْعَبْدُ
لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلاَةٌ "
নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন দাস পালিয়ে যায়, তখন তার সালাত
(নামায/নামাজ) কবুল হয় না।
৩। মদপানকারী, মদ বিক্রী কারীর নামাজ কবুল
হবেনা যেমন ইবনে মাজা ৩৩৭৭, তিরমিযী ১৮৬২, নাসায়ী ৫৬৬৪, ৫৬৭০, আহমাদ ৬৬০৬, ৬৭৩৪,
দারেমী ২০৯১, নং হাদীস
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ عَمْرٍو، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
ـ صلى الله عليه وسلم ـ " مَنْ شَرِبَ الْخَمْرَ
وَسَكِرَ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلاَةٌ أَرْبَعِينَ
صَبَاحًا
‘আবদুল্লাহ
ইবনে ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি শরাব পান করে এবং মাতাল হয়, চল্লিশ দিন
পর্যন্ত তার নামায কবুল হয় না।
৪। ঠিকমত অজু না করলে নামাজ কবুল হবেনা সুনানে
আদ দারা কুতনীর ২৫৮ নং হাদীস
عَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ ؛ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
- صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
- دَعَا بِمَاءٍ فَتَوَضَّأَ
مَرَّةً مَرَّةً
، وَقَالَ : " هَذَا
وَظِيفَةُ الْوُضُوءِ
، وَوُضُوءُ مَنْ لَمْ يَتَوَضَّأْ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلَاةٌ " . ثُمَّ
تَوَضَّأَ مَرَّتَيْنِ
مَرَّتَيْنِ ، فَقَالَ : " هَذَا
وُضُوءٌ مَنْ تَوَضَّأَهُ أَعْطَاهُ
اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ كِفْلَيْنِ
مِنَ الْأَجْرِ " . ثُمَّ
تَوَضَّأَ ثَلَاثًا
ثَلَاثًا ثُمَّ قَالَ : " هَذَا وُضُوئِي وَوُضُوءُ
الْمُرْسَلِينَ قَبْلِي
উবাই
ইবনে কা'ব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানি
নিয়ে ডাকলেন। তিনি উযুর অঙ্গগুলো একবার করে ধৌত করেন এবং বলেনঃ এটা উযুর নিয়ম
এবং যে ব্যক্তি এরূপ উযু করলো না, তার নামায কবুল হবে না। তারপর তিনি উযুর
অঙ্গগুলো দুইবার করে ধৌত করেন এবং বলেনঃ যে ব্যক্তি এরূপ উযু করবে মহামহিম আল্লাহ
তাকে দ্বিগুণ সওয়াব দান করবেন। তারপর তিনি উযুর অঙ্গগুলো তিনবার করে ধৌত করেন এবং
বলেনঃ এটা আমার উযু এবং আমার পূর্বেকার নবী-রাসূলগণের উযু।
৫।
তিরমিযি শরীফের হাদীসে আছে সে নারীর নামাজ কবুল হয়না যার উপর অসন্তুষ্ট অবস্থায়
স্বামী রাত কাটিয়েছে। যতক্ষণ স্বামী রাজি করে না নিবে ততক্ষন তার কোন নামাজ কবুল
হবেনা।
৬। তিরমিযির ৩৬০
নং হাদীস- যে ইমাম বা নেতাকে সম্প্রদায়ের লোকেরা অপছন্দ করে তার নামাজ তার কানের
উপরেও উঠবেনা। অর্থ্যাৎ কবুল হবেনা। একসময় এলাকার প্রধান জনপ্রতিনিধিই
মসজিদের ইমাম হতেন। ইমামতির সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত হচ্ছেন রাষ্ট্রপ্রধান। যেহেতু এখন
আর ইসলামী হুকুমত নেই, তাই এখন আর তেমনটা হয় না। এখানে ‘ইমাম’ শব্দ দ্বারা সব ধরনের জনপ্রতিনিধিকে বোঝানো হয়েছে, চাই তিনি
মসজিদের হোন কিংবা এলাকার হোন কিংবা রাষ্ট্রের বা বিশ্বের। যদি তাঁর অযৌক্তিক
ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে তাঁর অধীনস্থরা তাঁর ওপর অখুশি হয়, তাঁর ওপর অনাস্থা চলে
আসে। তাহলে তার নামাজ কবুল হবেনা।
তাই সব ধরনের
জনপ্রতিনিধিদের উচিত জনতার অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করা। জনবান্ধব হওয়া।
৭। যারা নামাজের হক আদায় করে না
নামাজ পড়ার সময় যারা নামাজের প্রতিটি রোকন তথা রুকু-সেজদা
যথাযথ আদায় করে না, তাদের নামাজও হয় না। হাদিসে এসেছে-
- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
‘হে মুসলিমরা!
ওই ব্যক্তির নামাজ হয় না; যে ব্যক্তি রুকু ও সেজদায় নিজেদের পিঠ সোজা করে না।’ (মুসনাদে
আহমদ, ইবনে মাজাহ)
৮। ইচ্ছাকৃত দেরী করে ওয়াক্তের শেষ মুহুর্তে
নামাজ পড়া
রাসূলুল্লাহ (দ:) ৩ বার বলেছেন, ‘এটা মুনাফিকের নামাজ,
এটা মুনাফিকের নামাজ, এটা মুনাফিকের নামাজ। সে আসরের সময় বসে সূর্য দেখতে থাকে। এমনকি
সেটা শয়তানের দু’টো শিংয়ের মাঝখানে পৌঁছে যায়। (অর্থাৎ সূর্যাস্তের সময় নিকটবর্তী
হয়) তখন সে উঠে চারটে ঠোকর মেরে নেয়। তাতে আল্লাহকে খুব কমই স্মরণ করা হয়।’ (বুখারি, মুসলিম ও মুসনাদে
আহমাদ)
৯। লোক দেখানোর জন্য নামাজ পড়া
এদের নামাজের ব্যপারে আল্লাহ সুরা নিসার ১৪২ নং আয়াতে
বলেন
إِنَّ
الْمُنَافِقِينَ
يُخَادِعُونَ
اللّهَ
وَهُوَ
خَادِعُهُمْ
وَإِذَا
قَامُواْ
إِلَى
الصَّلاَةِ
قَامُواْ
كُسَالَى
يُرَآؤُونَ
النَّاسَ
وَلاَ
يَذْكُرُونَ
اللّهَ
إِلاَّ
قَلِيلاً
অবশ্যই
মুনাফেকরা প্রতারণা করছে আল্লাহর সাথে, অথচ তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতারিত করে।
বস্তুতঃ তারা যখন নামাযে দাঁড়ায় তখন দাঁড়ায়, একান্ত শিথিল ভাবে লোক দেখানোর
জন্য। আর তারা আল্লাহকে অল্পই স্মরণ করে। [সুরা নিসা - ৪:১৪২]
এসব নামাজির
ব্যপারে সুরা মাউনেও আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন
فَوَيْلٌ
لِّلْمُصَلِّينَ
অতএব
দুর্ভোগ সেসব নামাযীর,
الَّذِينَ
هُمْ
عَن
صَلَاتِهِمْ
سَاهُونَ
যারা তাদের
নামায সম্বন্ধে বে-খবর;
الَّذِينَ
هُمْ
يُرَاؤُونَ
যারা তা
লোক-দেখানোর জন্য করে
১০। যারা
বিনা কারনে জামাত তরক করে একাকি নামাজ পড়ে
বুখারী ও
মুসলিমের হাদিস নবী করিম (দ) এরশাদ করেন আমার তো মনে চায় মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে
বলব এবং কাউকে নামাজ পড়াতে বলব আর আমি আগুনের অঙ্গার নিয়ে যাব, যে আজান শুনার পরও
মসজিদে জামাতে হাজির হওয়ার জন্য বের হয়নি- তার ঘর জ্বালিয়ে দিই।
কোন মন্তব্য নেই