নাউজুবিল্লাহ! মসজিদে ২০টি জঘন্য অপরাধ । মসজিদের আদব।মসজিদে যেসব কাজ নিষিদ্ধ

         নাউজুবিল্লাহ! মসজিদে ২০টি জঘন্য অপরাধ । মসজিদের আদব।মসজিদে যেসব কাজ নিষিদ্ধ

৮২% লোক মসজিদে ২০ জঘন্য গুনাহ করে



১।মসজিদে উচ্চস্বরে কথা বলা ঝগড়া বিবাদ করা সবচেয়ে বড় অপরাধ

বুখারী শরীফের ৪৫৬ নং হাদীস হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু একবার দেখলেন- দুই জন লোক (মদিনার) মসজিদে নববিতে উঁচু আওয়াজে কথা বলছেন। তিনি বললেন- তোমরা কোন্ জায়গার লোক? তারা বললো- আমরা তায়েফের অধিবাসী।

হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন- তোমরা যদি মদিনার অধিবাসী হতে, তাহলে আমি বেত দিয়ে তোমাদের শাস্তি দিতাম! কেননা তোমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মসজিদে উঁচু স্বরে কথা বলছ?

একটি হাদিসে মসজিদে উচ্চ আওয়াজ ও চেঁচামেচিকে কিয়ামতের নিদর্শন হিসেবে উল্লিখিত হয়েছে।

 

২। অজু করে অজুর পানি মসজিদের ফ্লোরে ফেলা, অজুর অংগ থেকে যে পানি ঝড়ে পড়ে তা আমাদের শরীর থেকে নাজাসাতে হুকমিয়া নিয়ে ঝড়ে পড়ে তাই অজু করার পর অংগ থেকে পানি মসজিদের ফ্লোরে ফেলা মাকরুহে তাহরিমি। গুনাহের কাজ।

৩।মসজিদের আদব বুঝেনা এমন অবুঝ শিশুকে এবং পাগলকে রাসুলুল্লাহ (দ) মসজিদ থেকে দুরে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই এমন অবুঝ শিশু যে মসজিদে এসে উচ্চস্বরে কান্না করতে থাকবে কিংবা মসজিদে পেশাব পায়খানা করে দিবে, নামাজিদের সামনে গিয়ে বসে যাবে, জামায়াতের সময় ছুটাছুটি করবে, সকল নামাজিদের নামাজে বিঘ্ন ঘটাবে এমন অবুঝ বাচ্চাদেরকে  মসজিদে আনা যাবেনা। তবে যদি মসজিদের আদব কায়দা বুঝে এমন বুঝ ব্যবস্থা হয় তখন নিয়ে আসা উচিত যাতে তারা নামাজের জন্য মসজিদে অভ্যস্থ হ,য় নতুবা পরের প্রজন্ম মসজিদমুখী হবে না ।

৪।জামায়াত ধরার জন্য অনেকে মসজিদে দৌঁড়াতে থাকে এটাও জঘন্য অপরাধ যেমন সহিহ বুখারী শরীফের হাদীস হজরত আবু কাতাদা (রা.) বলেন, একদা আমরা হজরত নবী করিম (সা.)-এর সঙ্গে নামাজ আদায় করছিলাম, এমন সময় শোরগোল শোনা গেল। নামাজ শেষে নবী (সা.) বললেন, (তোমাদের কী হয়েছে?) তারা বলল, নামাজের জন্য তাড়াহুড়ো করছিলাম। নবী (সা.) বলেন, এমন করো না; যখন নামাজে আসবে, তখন শান্তভাবে আস; যা পাবে তা পড়ে নেবে, আর যা ছুটে যাবে তা পূরণ করে নেবে।

৫। নামাজের সামনে দিয়ে হাটাচলা করা- একাকি নামাজ পড়ার সময় সামনে সুতরা দেয়া উচিত, সুতরা না থাকলে তার সামনে দিয়ে গমন করা মারাত্মক গুনাহের কাজ। বুখারী শরীফের হাদীস- আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যদি নামাজেরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে অতিক্রমকারী (ব্যক্তি) জানতো; এটা তার কত বড় অপরাধ, তাহলে সে নামাজে থাকা ব্যক্তির সামনে দিয়ে অতিক্রম করার চেয়ে চল্লিশ (দিন/মাস/বছর) দাঁড়িয়ে থাকা উত্তম মনে করতো।

৬। আযান হওয়ার পর নামাজ না পড়ে বিনা কারনে মসজিদ থেকে বের হওয়াও গুনাহের কাজ। এ বিষয়ে মুসলিম শরীফের হাদীস হজরত আবু শাশা (রহ.) বলেন, আমরা সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.)-এর সঙ্গে মসজিদে বসেছিলাম, অতঃপর মুয়াজ্জিন আজান দিল। তারপর এক ব্যক্তি উঠে বেরিয়ে যেতে লাগল। অতঃপর হজরত আবু হুরায়রা (রা.) তার দিকে চেয়ে থাকলেন, যতক্ষণে সে মসজিদ থেকে বের না হলো। তারপর তিনি বললেন, 'এ ব্যক্তি আবুল কাসিম [নবী (সা.)]-এর অমান্য করল। 

৭। মুখে, শরীরে ও কাপড়ে দুর্গন্ধ নিয়ে মসজিদে আসাও জঘন্য অপরাধ- বিশেষ করে কাঁচা পিয়াজ, রসুন, সিগারেট খেয়ে ভালো করে মিসওয়াক করা ছাড়া নামাজে চলে আসা উচিত নয়। নবী করিম (সা.) বলেন, 'যে ব্যক্তি এ খবিস (মন্দ) চারা গাছের কিছু খেল, সে যেন আমাদের মসজিদের কাছে না আসে। কারণ ফেরেশতারা কষ্ট পান তা দ্বারা, যা দ্বারা আদম সন্তান কষ্ট পায়। ' -আল জামে: ৬০৯১

৮। মসজিদে হারানো বস্তু খোঁজা এটা জঘন্য অপরাধ। সহিহ তারগিব ও তারহিবের ২৯১ নং হাদীস নবী করিম (সা.) বলেন, 'যদি তোমরা কাউকে মসজিদে কোনো কিছু বিক্রি কিংবা খরিদ করতে দেখ, তাহলে বল, আল্লাহ যেন তোমার ব্যবসায় লাভ না দেন। আর যদি কাউকে সেখানে হারানো বস্তু খুঁজতে দেখ, তাহলে বল, আল্লাহ যেন তোমাকে তা ফিরিয়ে না দেন। '

৯। মসজিদে ভিক্ষা করা,মসজিদ হল আল্লাহর কাছে চাওয়ার জায়গা তাই মসজিদে এসে আল্লাহর কাছে না চেয়ে বান্দার কাছে চাওয়া জঘন্য কাজ যেমন আল্লাহ তায়ালা সুরা জিন এর ১৮ নং আয়াতে এরশাদ করেন

وَأَنَّ الْمَسَاجِدَ لِلَّهِ فَلَا تَدْعُوا مَعَ اللَّهِ أَحَدًا

এবং এই ওহীও করা হয়েছে যে, মসজিদসমূহ আল্লাহ তা'আলাকে স্মরণ করার জন্য। অতএব, তোমরা আল্লাহ তা'আলার সাথে কাউকে ডেকো না। [সুরা জ্বীন - ৭২:১৮]

১০।মসজিদে দুনিয়ার স্বার্থ নিয়ে হালকাবন্দী হয়ে বসাও জঘন্য অপরাধ

তাবরানীর ১০৩০০ নং হাদীস

আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, শেষ জামানায় এমন সম্প্রদায়ের লোকের আবির্ভাব হবে, যারা মসজিদে হালকাবন্দী হয়ে বসবে, তাদের লক্ষ্য হবে দুনিয়া। তোমরা তাদের সাথে বসবে না। কারণ, তাদের মধ্যে আল্লাহর জন্য কোন প্রয়োজন নাই।

এসব ছাড়াও আরো বেশ কিছু মসজিদের আদবের খেলাফ কাজ প্রায় মানুষ করে থাকে যেমন-

(১১) মসজিদে সামনের কাতারে খালি রেখে পিছনের কাতারে দাঁড়ানো, (১২) কাতার সোজা না করা, (১৩) মোবাইলের রিংটোন বন্ধ না করা, (১৪) মসজিদে দুনিয়াবি কথা বলা, (১৫) পরে এসে মানুষের কাঁধের উপর দিয়ে ডিঙ্গিয়ে সামনে যাওয়া, (১৬)মসজিদের দেওয়ালে বা পিলারে হেলান দিয়ে বসা, (১৭) মসজিদের দেওয়ালে বা কার্পেটে নাকের ময়লা মুছা,  (১৮) ডান পা দিয়ে মসজিদে প্রবেশ না করা, বাম পা দিয়ে বের না হওয়া, (১৯) মসজিদে ঢুকার ও বের হওয়ার দোয়া না পড়া, (২০) পায়ের জুতা মসজিদে ঢুকালে সে জুতা থেকে কাদা ময়লা মসজিদের ফ্লোরে ফেলা।

আল্লাহ আমাদেরকে মসজিদের আদব রক্ষা করার তৌফিক দান করুন মসজিদে গিয়ে এসব গুনাহের কাজ থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন। আমিন।   


আমাদের ইউটিউব চ্যানেলসমুহের লিংক: সাবস্ক্রাইব করে পাশে থাকার অনুরোধ রইল

1) https://www.youtube.com/c/jaalhaq

2) https://www.youtube.com/allbangla1

3) https://www.youtube.com/c/Allahwalamedia

4) https://www.youtube.com/channel/UCpM_MlVrvE59Qia2XESn9AQ



আমাদের ব্লগ সমুহ

https://myjaalhaq.blogspot.com/

https://allbangladua.blogspot.com



আমাদের ফেসবুক পেজসমুহ

https://www.facebook.com/Jaalhaqbd

https://www.facebook.com/AllBanglaDua

https://www.facebook.com/karamatbd



আমাদের ফেসবুক গ্রুপ

https://www.facebook.com/groups/jaalhaqbd

 

ইনস্টাগ্রাম

https://www.instagram.com/jaalhaq.bd/

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.