মহানবী (দ) এর মুজেজা রহমত বরকত এর ৭০টি ঘটনা
বিষয়: মহানবীর(দ) বরকতসমুহ
নামের রবকত, হালিমার ঘরে বরকত,
হাতের বরকত, থুথুর বরকত, দোয়ার বরকত
"ওয়া মা 'আরসালনাকা ইল্লা রাহমাতাল্লিল 'আলামিন"
অর্থ: "আর আমি তো আপনাকে (মুহাম্মদ) বিশ্ববাসীর জন্য রাহমাত
হিসেবেই প্রেরণ করেছি"
[আল-আম্বিয়া, আয়াত:১০৭]
.
মা আমেনার গর্ভে থাকা অবস্থায় বরকত- জমজমের পানি উঠে আসা
আমেনা বলেন আমার গভে যে সন্তান ছিল আমি
বুঝতে পারতাম সে খুবই বরকতময়,কারন আমি যখন জমজমের পানি আনতে যেতাম তখন দেখতাম গাছগুলি
আমার দিকে ঝুকে আছে, আকাশের মেঘ আমাকে ছায়া দিচ্ছে, এমনকি আমি জমজমের পানি বালতি দিয়ে
তুলতে হতনা, আমি জমজম কুয়ার কাছে গেলেই পানি অটোমেটিক উপরে মুখ বরাবর উঠে আসত। মক্কার
কয়েকজন মহিলা তা বুঝতে পেরে তারাও আমার সাথে যেত পানি আনতে আমাকে জমজমের কাছে দাঁড়
করিয়ে রাখত যখন আমি জমজম থেকে সরে আসতাম তা আবার নিচে নেমে যেত। সুবহানাল্লাহ
(সবসে
আউলা ও আলা হামারা নবী,
সবসে
বালা ও আলা হামারা নবী
নবীজির মিলাদ তথা শুভাগমনের বৎসর 570 ঈসায়ী সনের নাম " সজীব
সঞ্জীবনী ও আনন্দের" বৎসরঃ
অর্থঃ
কোরাইশরা (নবীজি আগমনের পুর্বে) প্রচন্ড খরা ও বিরাট সংকটে ছিল৷ অতঃপর জমীন সবুজ
হয়ে গেল এবং গাছ-পালা ফুল-ফলে ভরে গেল৷ আর সর্বদিক হতে তাদের নিকট সচ্ছলতা আসতে
লাগল৷ সুতরাং যে বৎসর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুভাগমন করেছেন সে
বৎসরের নামকরণ করলেন " সানাতুল ফাতহি ওয়াল
ইবতিহাজ" অর্থাৎ "সজীব সঞ্জীবনী ও আনন্দের বৎসর"৷
সূত্রঃ
1• মাওয়াহেবে লাদুনিয়া শরহে বুখারী, ইমাম শিহাবুদ্দীন কুস্তুলানী,
1/119,
2• জুরকানী শরীফ, ইমাম জুরকানী, 1/197,
হালিমার
ঘরে মুহাম্মদের বরকত
আরবের প্রথা ছিল বাচ্চাদেরকে দুধ পান করানোর
জন্য ধাত্রি মা নিযুক্ত করা হত, মক্কার ধনী পরিবারের ছেলেদেরকে সকলে নিয়ে গেল হালিমা
সাদিয়া আর কাউকে না পেয়ে অপারগ হয়ে খালি হাতে ফিরে না গিয়ে মুহাম্মদকে নিয়ে গেল হালিমার
ঘরে মুহাম্মদকে নেয়ার পর তার ঘরে প্রচুর বরকত সে লক্ষ্য করল, পশুগুলির ওলান দুধে ভরে
গেল, হালিমার ছাগল ভেড়া গুলির পেট তাড়াতাড়ি ভরে যেত, সেগুলি প্রচুর দুধ দিতে লাগল,
অন্যান্য পশু গুলির পেট ভরতনা, তখন কবিলার অন্যান্যরা বলত হালিমার ছাগল ভেড়া যে জমিনে
চড়ে তোমাদের গুলিও সে জমিনে চড়াও কিন্তু দেখা যেত একই জমিনে হালিমার গুলির পেট ভরত
অন্যদেরগুলির পেট ভরতনা।সুবহানাল্লাহ!
হালিমার মেয়ে সীমার মুখে মুহাম্মদের বরকতের বননা ঘটনা-
হালিমার মেয়ে সীমা মাকে বলে মা আমার ভাই
মুহাম্মদকে আমার সাথে দাও সে সাথে গেলে আমার ছাগল চড়াতে কষ্ট হয়না কারন
(ক) তাকে কোলে নিয়ে সারাক্ষন
১টি মেঘ আমাকে ছায়া দেয়
(খ) সে সাথে থাকলে ছাগল ভেড়া
গুলি এলোপাথাড়ি ছুটাছুটি করেনা
(গ) এবং তাকে নিয়ে যখন আমি কোন
গাছের ছায়ায় বসি দেখি সবগুলি চারনভুমির পশু গুলি এসে গোল করে বসে আমার ভায়ের দিকে তাকিয়ে
থাকে।
হালিমার কবিলার রোগীরা মুহাম্মদের
ছোয়ায় সুস্থ হয়ে যেত হালিমার কবিলায় মুহাম্মদের বরকতের কথা প্রচার হয়ে গেল তাই
কারো কোন রোগ হলে তারা আসত মুহাম্মদের হাতের ছোয়া লাগলে সে ভালো হয়ে যেত,
(দোলনা ফেরেশতারা দোলাতো) হালিমা বলেন-
ইমাম কসতুলানি মাওয়াহেবে লাদুন্নিয়াতে লিখেন
যিনি বুখারীর শরাহ লিখেছেন- মুহাম্মদকে দোলনায় রাখলে সে দোলনা আমাদের দোলানোর দরকার
হতনা তা নিজে নিজে দুলত অথ্যাৎ ফেরেশতারা দোলা দিত,
আখোঁকা
তারা নামে মুহাম্মদ - চোখের তারা মুহাম্মদের নাম
দিলকা
উজালা নামে মুহাম্মদ- হৃদয়ের নুর মুহাম্মদের নাম (২)
ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম- (২)
পুছেগা
আল্লাহ লায়াহে কেয়া কেয়া?- আল্লাহ প্রশ্নকরবে কি কি এনেছ
পুছেগা
মাওলা লায়াহে কেয়া কেয়া?- মাওলা প্রশ্ন করবে কি কি এনেছ (২)
মে
ইয়ে কহুংগা নামে মুহাম্মদ - আমি বলব মুহাম্মদের নাম এনেছি
দিলকা
উজালা নামে মুহাম্মদ- অন্তরের নুর মুহাম্মদের নাম
আখোঁকা
তারা নামে মুহাম্মদ - চোখের তারা মুহাম্মদের নাম
দিলকা
উজালা নামে মুহাম্মদ- হৃদয়ের নুর মুহাম্মদের নাম
ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম- (২)
দুনু
জাহাকি দৌলত জু চাহু (৪) দুই জাহানে যে দৌলত চায়
করলো
অজিফা নামে মুহাম্মদ - মুহাম্মদ নামের অজিফা করে নাও
দিলকা
উজালা নামে মুহাম্মদ- হৃদয়ের নুর মুহাম্মদের নাম
আখোঁকা
তারা নামে মুহাম্মদ - চোখের তারা মুহাম্মদের নাম
দিলকা
উজালা নামে মুহাম্মদ- হৃদয়ের নুর মুহাম্মদের নাম
ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম- (২)
আল্লাহু
আকবার রাব্বুল উলানে (৪) - মহান প্রভু মহান আল্লাহ
হার
শায়পে লিকখা নামে মুহাম্মদ - সবকিছুতে লিখেন মুহাম্মদের নাম
দিলকা
উজালা নামে মুহাম্মদ- হৃদয়ের নুর মুহাম্মদের নাম
আখোঁকা
তারা নামে মুহাম্মদ - চোখের তারা মুহাম্মদের নাম
দিলকা
উজালা নামে মুহাম্মদ- হৃদয়ের নুর মুহাম্মদের নাম
ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম- (২)
রোজে
কিয়ামত মিজানু পুলপর- (৪) কেয়ামতের দিন মিজান ও পুলসিরাতে
দেগা
সাহারা নামে মুহাম্মদ - সহায় হবে মুহাম্মদের নাম
দিলকা
উজালা নামে মুহাম্মদ- হৃদয়ের নুর মুহাম্মদের নাম
আখোঁকা
তারা নামে মুহাম্মদ - চোখের তারা মুহাম্মদের নাম
দিলকা
উজালা নামে মুহাম্মদ- হৃদয়ের নুর মুহাম্মদের নাম
ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম- (২)
মুহাম্মদ নামের অলৌকিকত্ব ও রবকতসমুহ
আল্লাহ মানুষকে
সুন্দর অবয়বে সৃষ্টি করেছেন আর মানুষ যখন সিজদায় যায় তখন তার শরীরের গঠনটা হয়
মুহাম্মদ নামের আদলে।
আল্লাহ মানুষের
গঠন এর প্রসংশা করে বলেন
(লাকাদ খালাকনাল ইনসানা ফি আহসানে তাকভিম)
আমি মানুষকে
সবশ্রেষ্ট আকৃতিতে সৃষ্টি করেছি
এই মুহাম্মদ নাম
এর যে সংখ্যা ত্বত্য আছে তা গবেষনা করলে দেখা যায় এতে সারা দুনিয়ার আদম থেকে
কেয়ামত পযন্ত সকলই অন্তভূক্ত
যেমন মুহাম্মদ
এর বিপরীত সংখ্যা হল ৩১৪, আর দুনিয়াতে মোট রাসুল প্রেরিত হয়েছে ৩১৪ জন, আর সকল
রসুলের অধীনে প্রায় সোয়া একলক্ষ নবীর সমাবেণ আর সকল নবী ও রসুলের অধীনে সকল উম্মত
জমা হয়ে গেছেন। সুবহানাল্লাহ
আরো অবাক করা
তথ্য হল-
আল্লাহ
নামে ৪ অক্ষর, মুহাম্মদ নামেও ৪ অক্ষর, আর সে ৪ এর সাথে মিল রেখে আল্লাহ
গুরুত্বপূণ সবকিছুই ৪টি করে সৃষ্টি করেছেন, ৪ বড় ফেরেশতা, ৪ টি বড় আসমানি কিতাব,
৪টি বড় রসুল,
আল্লাহতেও
৩য় অক্ষরে তশদীদ, মুহাম্মদ এর ৩য় অক্ষরেও তশদীদ
আবার
কলমা (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) এর মধ্যে ১২ হরফ (মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ) এর মধ্যেও
১২ হরফ (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) এর ১২ হরফেও কোন নুকতা ওয়ালা হরফ নাই ((মুহাম্মাদুর
রাসুলুল্লাহ) এর ১২ হরফেও কোন নুকতা ওয়ালা হরফ নাই
যে
ব্যক্তি তার গর্ভবতী স্ত্রীর গর্ভের সন্তানের নাম 'মুহাম্মদ' রাখার সিদ্ধান্ত
নেবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে পুত্র সন্তান দান করবেন। আর যে ঘরে 'মুহাম্মদ' নামের
কোনো ব্যক্তি থাকবে, আল্লাহ তায়ালা সব সময় সে ঘরে বরকত অব্যাহত রাখবেন।
হজরত
ইবনে ওয়াহাব বলেন, আমি নিজের সাতটি সন্তানের নাম গর্ভাবস্থায়ই মুহাম্মদ রাখার নিয়ত
করেছি, এর বরকতে সব সন্তানই ছেলে হয়েছে। (কাশফুল গুম্মাহ ১/২৮৩)
কানযুল
উম্মালের ‘৪৫২১৩’ নং হাদীস শরীফে
এসেছে- ‘যে
ব্যক্তি বরকত লাভের আশায় আমার নামে নাম রাখবে, কিয়ামত পর্যন্ত তাঁর উপর রহমত
বর্ষিত হবে।
হাদীস রাসূলের মধ্যে আরো ইরশাদ হয়েছে যে, যদি কেউ কোন দস্তরখানা’য় ‘আহমদ’ অথবা
‘মুহাম্মদ’ লিখে রাখে, তবে ঐ স্থানে প্রতিদিন দু’বার
রহমত নাযিল হয়, সুবহানাল্লাহ্! (মুসনাদুল
ফিরদাউস, হাদীস নং ৫৬৫২৫)
মুহাম্মদ
শুধু
আরব নয় বহির্বিশ্বেও ‘মুহাম্মদ’ নামের জনপ্রিয়তাই সবচে বেশি। যা নিম্নোক্ত তথ্যই
প্রমাণ করে-
২০১৫ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী ইউরোপে সর্বাধিক
জন্মগ্রহণকারি শিশুর নাম ‘মুহাম্মদ’! (দৈনিক সংগ্রাম, ৫ সেপ্টেম্বর-১৬, সোমবার, আন্তর্জাতিক কলাম)
মুসলমানদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ ﷺ এর নামটি অনেক মুসলমান নিজের সন্তানের নাম হিসেবে রাখেন। এ নামটি
যুক্তরাজ্যে শীর্ষস্থান দখল করেছে। (দৈনিক প্রথম আলো, ২ ডিসেম্বর-১৪)
মুহাম্মদ
অর্থ প্রশংসিত। কোরআনে কারিমে এ নামটি চার বার এসেছে। সেগুলো হলো-
সূরা
আলে ইমরান- ১৪৪, (ওয়ামা মুহাম্মাদুন ইল্লার রাসুল)
সূরা
আহজাব- ৪০,
مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ
أَبَا أَحَدٍ مِّن رِّجَالِكُمْ وَلَكِن
رَّسُولَ اللَّهِ
وَخَاتَمَ النَّبِيِّينَ
وَكَانَ اللَّهُ
بِكُلِّ شَيْءٍ
عَلِيمًا
মুহাম্মদ তোমাদের কোন ব্যক্তির পিতা নন; বরং
তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত। [ সুরা আহযাব ৩৩:৪০ ]
সূরা মুহাম্মদ- ২
وَالَّذِينَ آمَنُوا
وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ
وَآمَنُوا بِمَا نُزِّلَ عَلَى مُحَمَّدٍ وَهُوَ
الْحَقُّ مِن رَّبِّهِمْ كَفَّرَ
عَنْهُمْ سَيِّئَاتِهِمْ
وَأَصْلَحَ بَالَهُمْ
আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে, সৎকর্ম সম্পাদন
করে এবং তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে মুহাম্মদের প্রতি অবতীর্ণ সত্যে বিশ্বাস করে,
আল্লাহ তাদের মন্দ কর্মসমূহ মার্জনা করেন এবং তাদের অবস্থা ভাল করে দেন। [ সুরা
মুহাম্মাদ ৪৭:২ ]
ও সূরা আল ফাতাহ এর ২৯ নং আয়াত।
مُّحَمَّدٌ رَّسُولُ
اللَّهِ وَالَّذِينَ
مَعَهُ أَشِدَّاء
عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاء
بَيْنَهُمْ
মুহাম্মদ
আল্লাহর রসূল এবং তাঁর সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর, নিজেদের মধ্যে পরস্পর
সহানুভূতিশীল।
কেয়ামতের দিন সকলকে নিজ নিজ নামে ডাকা হবে আর
হযরত আদমকে (আ) আবু মুহাম্মদ অথ্যৃাৎ মুহাম্মদের পিতা বলে ডাকা হবে।
আল্লাহ তায়ালা
কুরআনে সকল নবীকে নাম ধরে ধরে ডাক দিয়েছেন কিন্তু মুহামম্দ (দ) কে আদর করে ( এয়া মুজাম্মিল, এয়া মুদ্দাছির, এয়াছিন, তোহা) বলে
ডাক দিয়েছেন
ইবনে জওযী (রহ)
তার কিতাব আলওয়াফা বি আহওয়ালে মুস্তফা ১ম খন্ডের ২৬ পৃষ্ঠায় ৩নং হাদীসে উল্লেখ
করেন- এবং বায়হাকী দালায়েলুন নবুয়তের ১ম খন্ডের ৮৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন- হুযুর ﷺ এরশাদ করেন যখন
আদম (আ) এর সৃষ্টি হয়নি হাওয়া (আ) এর সৃষ্টি হয়নি, যখন আল্লাহ আরশ সৃষ্টি করলেন
তার আগেই আমার নুর সৃষ্টি করেছেন।
# যখন আরশ
সৃষ্টি হল সে আরশের নানান জায়গায় আমার নাম লিখা ছিল।
#এরপর জান্নাত
সৃষ্টি হল আর জান্নাতে প্রত্যেক দরজায় আমার নাম লিখা হল।
# জান্নাতের
গাছের প্রত্যেক পাতায় পাতায় আমার নাম লিখা হল।
এর অনেক বছর পর
হযরত আদম (আ) কে সৃষ্টী করা হল, যখন তাঁকে রূহ দেয়া হল তিনি মাথা তুলে আরশের দিকে
তাকালেন আর তিনি আরশের চৌখাটে আমার নাম দেখতে পেলেন।
তখন আদম (আ)
প্রশ্ন করলেন হে পরওয়ারদেগার সব জায়গায় মুহাম্মদ নাম দেখছি ইনি কে? তখন আল্লাহ
জবাব দিলেন হে আদম সে তোমার আউলাদদের মধ্যে হতে হবে তবে তোমার সকল আউলাদদের সরদার
হবে।
আদমের তওবা নামে মুহাম্মদের উছিলায়
আদম (আ) শানে
মুহাম্মদ জেনে ফেললেন, তারপর যখন হযরত আদম (আ) এর পক্ষ থেকে খাতা ছরজদ হল, ফলে আদম
ও হাওয়া কে পৃথিবীতে প্রেরণ করা হল সেখানে ৩০০ বছর পযন্ত আল্লাহর কাছে কেঁদে কেদেঁ
দোয়া করতে থাকলেন। এত বেশী কেঁদেছেন আজ পযন্ত এই দুনিয়ায় কেহ এত বেশী কাঁদেননি।
তারপর একদিন আসমানের দিকে তাকালেন আর তাতে হুযুর ﷺ এর নাম মোবারক
দেখে মনে পড়ল মুহাম্মদ ﷺ এর শানের কথা তারপর দোয়া করলেন মুহাম্মদ ﷺ এর অছিলায় আর
তখন আল্লাহ সে দোয়া কবুল করে নিলেন।
আল্লাহ্ আদমকে প্রশ্ন করলেন মুহাম্মদকে কিভাবে চিন?
মুহাদ্দেস ইবনে জওযী বণনা
করেন- হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) বর্ননা করেন- হাদীসটি মুসতদরক হাকেম-৪২২৮, তাবরানি
সহ অনেকেই রেওয়ায়েত করেছেন- হযরত আদম যখন মুহাম্মদ ﷺ এর অছিলা দিয়ে দোয়া করলেন তখন আল্লাহ বললেন
আদম তুমি এই নাম সম্পর্কে কিভাবে জানতে পারলে?
তখন আদম (আ) জবাব দিলেন হে বারি তায়ালা আমি সৃষ্টির পর থেকেই আরশ থেকে জান্নাতের
দরজা গাছ পাতায় পাতায় জান্নাতের দরজায় দেখেছি (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ)
তখন আমি বুঝে ফেললাম যার নাম আপনি নিজের নামের সাথে এভাবে জুড়ে রেখেছেন সে নিশ্চয়ই
তোমারই বড়ই প্রিয় নাম। তার তার উছিলা দিয়ে দোয়া করলাম ফলে আমার দোয়া কবুল হয়ে গেল।
#হযরত আবু বকর ছিদ্দিক নবীর নাম মোবারক শুনে চুমু খেতেন।
#আল্লামা জালালুদ্দীন রুমি লিখেন- বনি ইসরাইলের এম মৃত ব্যক্তির লাশ ময়লার স্তুপে দাফন ছাড়া ফেলে রাখা হল, সে ছিল খুবই খারাপ
লোক, আল্লাহ তায়ালা মুছা (আঃ) কে দাফনের নির্দেশ, মুসা (আ) সে এলাকায় গিয়ে জানতে পারেন সে ছিল খুবই খারাপ লোক কিন্তু
আল্লাহ পয়গাম্বরকে সে লোকের দাফন কাফনের ব্যবস্থা করতে বলেন, হযরত মুসা প্রশ্ন করেন
হে আল্লাহ যে মানুষের কাছে এত ঘৃণিত সে কি কারনে আপনার কাছে প্রিয় হল? তখন আল্লাহ তায়ালা
বলনে সে সে তাওরাত কিতাবে যেখানে আমার আখেরী নবী মুহাম্মদ এর
নাম পেত সেখানে চুমু খেত তার সে আমলটির কারনে আমি তার সকল গুনাহ মাফ করে দিয়েছি।
সুবহানাল্লাহ
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকেও নবীজিকে নিজের প্রাণের চেয়ে বেশী ভালবাসার তৌফিক দান
করুন। আমিন এবং তার নামের উছিলায় আমাদেরকে আযাব গযব থেকে নাজাত দান করুন আমিন।
হুজুরের চুল মোবারকের বরকত
হাদীস
শরীফের মধ্যে হুজুর (দ) এর চুল মোবারকের এমন এমন বরকতসমুহ উল্লেখ আছে যা শুনে
ঈমানদারের ঈমান বেড়ে যাবে, নবী প্রেমিকদের অন্তর শীতল হয়ে যাবে, বেদ্বীনগন ইসলাম
কবুল করে নিবে
#
বুখারী মুসলিমের মোত্তাফাক আলাই হাদীস- বুখারী ১৭১, মুসলিম ১৩০৫, সুনানুল কুবরা
লিল বায়হাক্বী ৯৪০০ নং হাদীস
وَعَنْ أَنَسٍ:
أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ أَتَى مِنًى فَأَتَى الْجَمْرَةَ
فَرَمَاهَا ثُمَّ أَتَى مَنْزِلَهُ بِمِنًى
وَنَحَرَ نُسُكَهُ
ثُمَّ دَعَا بِالْحَلَّاقِ
وَنَاوَلَ الْحَالِقَ
شِقَّهُ الْأَيْمَنَ
ثُمَّ دَعَا أَبَا طَلْحَةَ الْأَنْصَارِيَّ
فَأَعْطَاهُ إِيَّاهُ
ثُمَّ نَاوَلَ الشِّقَّ
الْأَيْسَرَ فَقَالَ
«احْلِقْ» فَحَلَقَهُ
فَأعْطَاهُ طَلْحَةَ
فَقَالَ: «اقْسِمْهُ
بَيْنَ النَّاسِ»
আনাস
(রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিনায় পৌঁছে প্রথমে
জামারাতে গেলেন এবং কংকর মারলেন। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
মিনায় উপস্থিত তাঁর তাবুতে এলেন এবং নিজের কুরবানীর পশুগুলো যাবাহ করলেন। তারপর
তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নাপিত ডেকে এনে তাঁর মাথার ডানদিক (তার
দিকে) বাড়িয়ে দিলেন। নাপিত তা মুগুন করলো। তারপর তিনি আবূ তলহা আল আনসারীকে ডেকে
এনে তা (চুলগুলো) দিলেন। এরপর (নাপিতের দিকে) মাথার বামদিক বাড়িয়ে দিলেন এবং
বললেন, মুণ্ডন করো। সে তা মুণ্ডন করলো।
তিনি মুন্ডিত চুল আবূ ত্বলহাহকে দিয়ে বললেন, যাও মানুষের মাঝে এগুলো বিলিয়ে
দাও।
উম্মে সালমা (রা) পানিতে চুল মোবারক চুবিয়ে দিতেন
হযরত ওসমান বিন আবদুল্লাহ (রাঃ)
বর্ণনা করেন, হযরত উম্মে সালমা যিনি মহানবী (দঃ) এর বিবি, উনার কাছে হুজুরের (দ) কিছু
চুল মোবারক ছিল, মদীনায় যখন কেহ অসুস্থ হয়ে যেত সে হযরত উম্মে সালমার কাছে চলে আসত
তিনি সে চুল মোবারক বের করে ১ পাত্র পানিতে তা চুবিয়ে দিতেন, আর সে পানি
রোগী পান করলে আল্লাহ তায়ালা তার বরকতে শেফা দান করে দিতেন।
হযরত আনাস জিহ্বার নিচে চুল
হযরত আনাস বিন মালেক (রা) হুজুর
(দ) এর বরকতময় চুল থেকে ১টি চুল নিজের ইন্তেকালের পর জিহ্বার নিচে রেখে দেয়ার জন্য
অছিয়ত করেন
ওমর বিন আবদুল আজিজ কাফনে চুল
হযরত ওমর বিন আবদুল আজিজ অসিয়ত
করেন হুজুরের চুল ও নখ মোবারক কাফনের ভিতর দেয়ার জন্য।
খালেদ বিন ওলিদের পাগড়িতে চুল মোবারক
সাহাবীদের মধ্যে এমন একজনের নাম
যিনি জীবনে কখনো যুদ্ধে পরাজয় বরন করেন নি, তিনি হলেন হযরত খালেদ বিন ওলিদ (রাঃ)। তাঁকে
সাইফুল্লাহ বা আল্রাহর তরবারী বলা হত। হযরত খালেদ বিন ওলিদের আরজু ছিল তিনি যেন আল্লাহর
রাস্তায় শাহাদাত বরণ করেন, কিন্তু সে আরজু উনার পুরা হয়নি, কারন কেহই তাঁকে হারাতে
পারত না। তিনি যে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করতেন সে যুদ্ধে জয়লাভ করতেন।
হযরত ওমর বিন রাফে আততাঈ তিনি এক
যুদ্ধে হযরত খালেদ বিন ওলিদের সাথে ছিলেন, হযরত ওমর বিন রাফে বলেন মনে হচ্ছিল এ যুদ্ধে
মুসলমানরা হেরে যাচ্ছে, এবারই প্রথম যে যুদ্ধে খালেদ বিন অলিদ আছে সে যুদ্ধে মুসলমানরা
পিছপা হচ্ছে, এদিকে মুসলমানগন যুদ্ধে পরাজিত হচ্ছে অদিকে হযরত আবু ওবায়দা মদীনায় ঘুমের
মধ্যে নবী করিম (দঃ) কে স্বপ্নে দেখছেন আর নবীজি আবু ওবায়দাকে বলছেন তুমি এখানে ঘুমাচ্ছ
আর আল্লাহর তরবারী খালেদ বিন ওয়ালিদের উপর মছিবত চলছে। স্বপ্ন দেখে জাগ্রত হয়ে হযরত
আবু ওবায়দা মদিনায় এলান করে দিলেন বললেন হে মদিনার মুজাহিদগন দ্রুত তৈরী হয়ে নাও হযরত
খালেদ বিন ওয়ালিদ এর সাহায্যে ঝাপিয়ে পরতে হবে। মদিনার মুজাহিদগন হযরত আবু ওবায়দার
সাথে যখন বের হলেন, পথিমধ্যে তারা এক দৃশ্য দেখল যে তাদের সৈন্যদলের কিছুটা আগে আগে
এক নেকাব বাঁধা ছওয়ারী অগ্রসর হচ্ছে, হযরত আবু ওবায়দা কয়েকজন সৈন্যকে পাঠালেন সে নেকাপ
পরিহিত ছওয়ারীকে পাকড়াও করার জন্য, নেকাব পরিহিত ছওয়ারী মুসলিম সৈন্যদেরকে তাঁর দিকে
আসতে দেখে বলল আমাকে কিছু করিও না আমি হলাম হযরত খালেদ বিন ওয়ালিদ এর বিবি, তারা জিজ্ঞেস
করল তুমি এমন বিপদের সময় কেন যুদ্ধের ময়দানের দিকে যাচ্ছ? তিনি জবাব দিলেন যখন আবু
ওবায়দা মুসলিম সৈন্যদের যুদ্ধে যেতে নির্দেশ দিলেন এবং বললেন যে হযরত খালেদ বিন ওয়ালিদ
বিপদে আছেন, একথা শুনে আমি পেরেশান হয়ে গেলাম কারন আল্লাহর এ সিংহের তো কোন দিন যুদ্ধের
ময়দানে বিপদ আসতে শুনিনি, আজ কেন এমন বিপদ আসল? তখন আমি হঠাৎ দেখতে পেলাম যে আমার স্বামী
হযরত খালেদ বিন ওয়ালিদ তার প্রিয় টুপিটি ঘরে রেখে গেছেন যে টুপির ভিতর নবী করিম (দঃ)
িএর চুল মোবারক সেলাই করা ছিল। যখনই তিনি কোন যুদ্ধে যেতেন সে টুপি সাথে করে নিয়ে যেতে
ভুলতেন না, আজ যখন তিনি বিপদে তখন আমি চিন্তা করলাম উনার টুপিটি আজ ঘরে ভুলে রেখে যুদ্ধে
চলে গেছেন, তাই আমি সে টুপি নিয়ে উনার কাছে ছুটে যাচ্ছি, হযরত খালেদ বিন ওয়ালিদ ও মুসলিম
সৈন্যরা পরাজয় বরণ করতে যাচ্ছেন এমন সময় হযরত খালেদ বিন ওয়ালিদের স্ত্রী উম্মে তামিম
সে টুপি নিয়ে উপস্থিত হলেন আর সে মহানবীর চুল মোবারকের বরকতময় টুপি পরিধান করে লড়াই
চালিয়ে গেলেন আর তাতেই মুসলমানরা ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হলেন এবং দিন শেষে মুসলমানরা পুর্ণাঙ্গ
বিজয় অর্জন করে নিলেন। সুবহানাল্লাহ।
সাহাবাগণ নবীর ঘাম মোবারককে আতর বানাতেন বরকত নিতেন
রহমতে
আলম নবী নুরে মুজাচ্ছাম
সাহাবিরা
আতর বানায় ঐ নবীজির ঘাম (২)
(হায়
হায়)
চিন মান জান কেমন আমার নবীজি
যাহার
পাগল চন্দ্র সুর্য তারকারাজি।
যাহার
পাগল চন্দ্র সুর্য তারকারাজি।
বাবা
আরো সুনবানি সুন্দর কাহিনি (২)
জান্নাতেরও
রুমে রুমে লেখা নবীর নাম ।
বল
জান্নাতেরও রুমে রুমে লেখা নবীর নাম । ঐ
হায়
হায় উস্তুনে হান্নানা একটা খেজুর গাছের নাম
যাকে
ধরে খুতবা দিতেন রাসুলে আকরাম
বল
যাকে ধরে খুতবা দিতেন রাসুলে আকরাম।
নবীর
বিরহে গাছ কাদিতে রহে
হতভাগ
হ ইল যত সাহাবা একরাম।(২) ঐ
হায়
হায় আমরা মানুষ হতভাগা নবী চিনিনা
পশু
পাখি নবী চিনে করিল কান্না
বল
পশু পাখি নবী চিনে করিল কান্না
বাবা
যে চিনেছে সে পেয়েছে
পাহাড়
পর্বত গাছ পালা দিয়েছে সালাম।(২) ঐ
হুজুর (দ) এর থুথু মোবারকের
বরকতসমুহ
মহানবী (দ) এর থুথু মোবারকের বরকতের হাজার
হাজার ঘটনা হাদীস ও সিরতের গ্রন্থ সমুহে পাওয়া যায় তা থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূণ ও অলৌকিক বিষ্ময়কর ১০ টি ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার
করব।
সাহাবাগণ হুজুরের চুল নখ থুথু অজুর পানি
এসব নেয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করতেন, এ ব্যপারে বুখারী শরীফের ২৫৪৭ নং হাদীসটি গুরুত্বপূণ
হুদায়বিয়াতে থুথু নিয়ে কাড়াকাড়ি-ওরওয়া গুপ্তচরের ভাষায়
হুজুর (দ) যখন মক্কায় ওমরা করতে গিয়ে হুদায়বিয়াতে অবস্থান নিলেন তখন মক্কা থেকে মুসলমানদের
অবস্থা দেখতে আসলেন ওরওয়া সে নবীর প্রতি সাহাবীদের ভালবাসা দেখে বিষ্মিত হল আর কুরাইশদের
গিয়ে বলল আমি দেখেছি তারা মুহাম্মদের প্রতি এতটাই শ্রদ্ধা ও ভালবাসা রাখে তিনি অজু
করলে সে পানি নিয়ে তারা কাড়াকাড়ি করে, তিনি থুথু ফেললে তা তারা মাটিতে পড়তে দেয়না,
ওরওয়া আরো বলেন আল্লাহর কসম! আমি অনেক রাজা বাদশাহর নিকটে প্রতিনিধিত্ব করেছি। কায়সার
(রোম) কিসরা (পারস্য) ও নাজ্জাশী (আবিসিনিয়ার) সম্রাটের নিকটে দূত হিসেবে গিয়েছি; কিন্তু
আমি আল্লাহর কসম করে বলতে পারি যে, কোন রাজা বাদশাহকেই তার অনুসরীদের ন্যায় এত সম্মান
করতে দেখিনি, যেমন মুহাম্মদের অনুসারীরা তাঁকে করে থাকে।
লজ্জাহীন মহিলা শ্রেষ্ঠ লজ্জাশীল হয়ে গেল
তাবরানী, খাসায়েসে কুবরা ৯ম খন্ড ৬২ পৃষ্ঠার
হাদিস= একবার মদীনার এক লজ্জাহীন মহিলা হুজুরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন হুজুর তখন ঝোলে
ভিজানো রুটি খাচ্ছিলেন সে মহিলা হুজুরের কাছে সেখান থেকে ১ টুকরা চাইল, আর হুজুর তাকে
১ টুকরা দিল কিন্তু সে মহিলা বলল আপনার মুখে যেটা আছে সেটা দিন হুজুর (দ) মুখ থেকে
বের করে তাকে দিলেন সে তা খেয়ে ফেলল এরপর সে মহিলা মদীনার মধ্যে লজ্জাশীলতায় শীর্ষে
পৌছে যায়। সুবহানাল্লাহ
বেহুশ শিশু হুশ এসে গেল
আবু য়ালা ও বায়হাকি খাসায়েসে কুবরার ২য়
খন্ডের ৩৬ পৃষ্ঠার হাদিস- হযরত উসামা ইবনে যায়েদ (রা) বলেন আমরা হুজুর (দ) এর সাথে
হজ্বে যাচ্ছিলাম যখন বাতনে রাওহায় পৌছলাম তখন এক নারী তার বেহুশ ১টি বাচ্চাকে নিয়ে
হুজুরের কাছে আসলেন আর বললেন এয়া রাসুলাল্লাহ এই শিশু জন্মের পর থেকে বেহুশ। হুজুর
সে শিশুটিকে হাতে ধরলেন আর থুথু দিলেন আর বললেন (উখরুজ এয়া
আদুউয়্যাল্লাহ) হে খোদার দুষমন বেরিয়ে আয়। ফলে শিশুটির হুশ ফিরে এলো। সুবহানাল্লাহ।
# অনেক ঘটনা হাদীস শরীফে পাওয়া যায় যাতে
হুজুর (দ) থুথু বা কুলি করে কুপে নিক্ষেপ করে শুস্ক কুপ পানিতে ভরে যায়।
থুথু দিয়ে মহিলার ২ মশক পানি থেকে শত শত সাহাবীর অজু গোসল
বুখারীর ৩৩৭ নং হাদীস যার সারসংক্ষেপ হল-
নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সফরে ছিলেন লোকেরা তাঁকে পিপাসার কষ্ট জানালো।
তিনি অবতরণ করলেন, আলী ও অন্য একজনকে ডাকলেন তারপর উভয়কেই পানি খুজে আনতে বললেন।
তাঁরা পানির খোজে বের হলেন। তাঁরা পথে এক মহিলাকে দুই মশক পানি উটের
উপর করে নিতে দেখলেন। তাঁরা জিজ্ঞাসা করলেনঃ পানি কোথায়? সে বললোঃ আমি ১ দিনের
রাস্তা দুর থেকে পানি নিয়ে আসছি। তাঁরা
বললেনঃ এখন আমাদের সঙ্গে চলো। সে বললোঃ কোথায়? তাঁরা বললেনঃ রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট।
তাঁরা তাকে নিয়ে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলেন তারপর নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি পাত্র আনতে বললেন এবং উভয় মশকের মুখ খুলে
তাতে পানি ঢাললেন এবং সে পানিতে কুলি করলেন
তারপর সে পানি মশকে ঢেলে দিলেন, সে মশকের নীচের মুখ
খুলে দিয়ে লোকদের মধ্যে পানি পান করার ও জন্তু-জানোয়ারকে পানি পান করানোর ঘোষণা
দিলেন। তাঁদের মধ্যে যার ইচ্ছা পানি পান করলেন ও জন্তুকে পান করালেন। অবশেষে এক
ব্যাক্তির গোসল ফরয হয়েছিল সে গোসলও করে নিল। সে মহিলা দাড়িয়ে দেখছিল যে তাঁর পানি
নিয়ে কি করা হচ্ছে। আল্লাহর কসম! যখন তাঁর থেকে পানি নেয়া শেষ হল তখন আমাদের মনে
হল, মশকগুলো পুর্বাপেক্ষা অধিক ভর্তি।
তারপর নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মহিলার জন্য কিছু একত্র কর। লোকেরা মহিলার
জন্য আজওয়া খেজুর, আটা ও ছাতু এনে একত্র করলেন। যখন তাঁরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ
খাদ্যসামগ্রী জমা করলেন, তখন তা একটা কাপড়ে বেধে মহিলাকে উটের উপর সওয়ার করালেন
এবং তাঁর সামনে কাপড়ে বাঁধা গাঁটরিটি রেখে দিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি জান যে, আমরা তোমার পানি মোটেই কম করিনি; বরং আল্লাহ তা’লাই আমাদের পানি পান করিয়েছেন।
এরপর সে তাঁর
পরিজনের কাছে ফিরে গেল। তাঁর বেশ দেরি হয়েছিল। পরিবারের লোকজন তাঁকে জিজ্ঞেসা করল,
হে অমুক! তোমার এত দেরি হল কেন? উত্তরে সে বললো একটা আশ্চার্যজনক ঘটনা! দু’জন লোকের সাথে আমার দেখা হয়েছিল। তাঁরা আমাকে সেই
লোকটির কাছে নিয়ে গিয়েছিল, যকে সাবি’ বলা হয়। আর সেখানে সে এসব করল। এ বলে সে মধ্যমা ও তর্যনী আঙ্গুল
দিয়ে আসমান ও যমীনের দিকে ইশারা করে বলল, আল্লাহর কসম! সে এ দু’টির সবচাইতে বড় জাদুকর, নয় তো সে বাস্তবিকই আল্লাহর
রাসূল। এ ঘটনার পর মুসলিমরা ওই মহিলার গোত্রের আশেপাশের মুশরিকদের উপর হামলা করতেন
কিন্তু মহিলার সাথে সম্পর্কযুক্ত গোত্রের কোন ক্ষতি করতেন না। একদিন মহিলা নিজের
গোত্রকে বললঃ আমার মনে হয় তারা ইচ্ছা করে তোমাদের নিষ্কৃতি দিচ্ছে। এ সব দেখে কি
তোমরা ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হবে না? তাঁরা সবাই মহিলাটির কথা মেনে নিল এবং ইসলাম
দাখিল হয়ে গেল।
উতবা ইবনে ফারকাদ এর শরীর থেকে নবীর থুথুর
বরকতে খুশবু ছড়াতো
হযরত উতবা ইবনে
ফারকাদ, যিনি হযরত ওমর (রা) এর খিলাফতকালে মোসেল জয় করেছিলেন তার স্ত্রীরা আতর
ব্যবহার করতেন স্বামীর সুগন্ধীর চেয়ে বেশী সুগন্ধী লাগার জন্য, কিন্তু স্বামীর
শরীর থেকে যে সুগন্ধী বের হত তাই শ্রেষ্ঠ সুগন্ধ ছিল, একদিন তাকে প্রশ্ন করা হল হে
উতবা তোমার শরীরে এত সুগন্ধী কিভাবে ছড়ায়? সে বলল একবার আমার শরীরে ফোশকা পড়ে তখন
নবীজির কাছে এর অভিযোগ করলে নবীজি মুখের থুথু মোবারক হাতে নিয়ে আমার পেটে ও পিঠে মালিশ
করে দেয় সেদিন থেকে আমার শরীর থেকে এমন সুগন্ধী সৃষ্টি হয়ে গেল এবং আমার রোগও ভালো
হয়ে গেল।
(খাসায়েসে কুবরা
২য়খন্ড, ৮৪ পৃ)
খন্দকে জাবিরের দাওয়াতে রুটির খামিরে ও গোস্তে থুথুর বরকত
বুখারীর ৩৮০২ নং
হাদীস
জাবির ইবনু
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন পরিখা খনন করা হচ্ছিল তখন আমি নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ভীষণ ক্ষুধার্ত অবস্থায় দেখতে পেলাম। তখন আমি
আমার স্ত্রীর কাছে ফিরে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, তোমার কাছে কোনো কিছু আছে কি? আমি
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দারুণ ক্ষুধার্ত দেখেছি। (এ কথা
শুনে) তিনি একটি চামড়ার পাত্র এনে তা থেকে এক সা' পরিমাণ যব বের করে দিলেন। আমাদের
গৃহপালিত একটি বকরীর বাচ্চা ছিল। আমি সেটি যবেহ্ করলাম এবং গোশত কেটে কেটে
ডেকচিতে ভরলাম। আর সে (আমার স্ত্রী) যব পিষে দিল। আমি আমার কাজ শেষ করে চললাম।
তখন সে (স্ত্রী)
বলল, আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীদের নিকট
লজ্জিত করবেন না। এরপর আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট
গিয়ে চুপে চুপে বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা আমাদের একটি বকরীর বাচ্চা যবেহ করেছি
এবং আমাদের ঘরে এক সা' যব ছিল। তা আমার স্ত্রী পিষে দিয়েছে। আপনি আরো কয়েকজন কে
সাথে নিয়ে আসুন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উচ্চ স্বরে সবাইকে বললেন,
হে পরিখা খননকারীগণ! জাবির খানার ব্যবস্থা করেছে। এসো, তোমরা সকলেই চল।
এরপর
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার আসার পূর্বে তোমাদের
ডেকচি নামাবে না এবং খামির থেকে রুটিও তৈরি করবে না। আমি (বাড়িতে) আসলাম এবং
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবা-ই-কিরাম সহ তাশরীফ আনলেন, এরপর
আমি আমার স্ত্রীর নিকট আসলে সে বলল, আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুন। (তুমি এ কি করলে?
এতগুলো লোক নিয়ে আসলে? অথচ খাদ্য একেবারে নগন্য) আমি বললাম, তুমি যা বলেছ আমি তাই
করেছি। এরপর সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে আটার খামির
বের করে দিলে তিনি তাতে মুখের লালা মিশিয়ে দিলেন এবং বরকতের জন্য দোয়া করলেন।
এরপর তিনি
ডেকচির দিকে এগিয়ে গেলেন এবং তাতে মুখের লালা মিশিয়ে এর জন্য বরকতের দোয়া করলেন।
তারপর বললেন, (হে জাবির) রুটি প্রস্তুতকারিনীকে ডাকো। সে আমার কাছে বসে রুটি
প্রস্তুত করুক এবং ডেকচি থেকে পেয়ালা ভরে গোশত পরিবেশন করুক। তবে চুলা থেকে ডেকচি
নামাবে না। তাঁরা (আগন্তুক সাহাবা-ই-কিরাম) ছিলেন সংখ্যায় এক হাজার। আমি আল্লাহর
কসম করে বলছি, তাঁরা সকলেই তৃপ্তি সহকারে খেয়ে অবশিষ্ট খাদ্য রেখে চলে গেলেন। অথচ
আমাদের ডেকচি পূর্বের ন্যায় তখনও টগবগ করছিল এবং আমাদের আটার খামির থেকেও পূর্বের
মত রুটি তৈরি হচ্ছিল।
জন্ম আমার নবীর যুগে হলে কেমন হতো
থুথু মোবারকের বরকত নিতাম আমি অধম
দুনয়নে রাসুলে (দঃ) পাক দেখিলে কেমন হতো…
আসতো ভেসে হযরতে বেলালের মধুর আযান
যে আযানে ছিল এমন প্রেম মুগ্ধ রহমান..২
দয়াল নবীর পিছে নামায পডলে কেমন হতো।।
দ্বীনি কতো আলোচনায় থাকতাম আমি অধম
সামনে রাসুলে (দঃ) পাক হতো পাশে সাহাবাগণ..২
বুবকর ওমর ওসমান আলীর সঙ্গী কেমন হতো।।
থুথুতে বরকতের আরো ঘটনা
(ক) হযরত ফোদাইক (রা) এর ২টি চোখ সাপের
ডিমে পা রাখার ফলে জ্যোতিহীন হয়ে যায় নবীজির থুথু মোবারকের বরকতে তিনি সুস্থ হয়ে যান
এবং মৃত্যুর আগ পযন্ত তাঁর চোখের জ্যোতি খুবই প্রখর ছিল। (বায়হাকি, তাবরানী, যুরকানী
আলাল মাওয়াহিব ৫ম খন্ড ১৮৮ পৃ)
(খ) হযরত মুসায়িব আল আসিন্না (রা) বলেন
আমার পেটে ব্যথা হলে আমি এক লোককে নবীর কাছে প্রেরণ করলাম নবীজি একটি পাথরে থুথু দেয়
সে পাথর আমার কাছে পাঠান আমি সে পাথর পানিতে ভিজিয়ে সে পানি পান করার সাথে সাথে সুস্থ
হয়ে যায় (খাসায়েসে কুবরা ২ খন্ড, ৭১ পৃ)
(গ) খায়বারে হযরত আলী (রা) চোখে প্রচন্ড
ব্যথা পান, হুজুর (দ) তার চোখে থুথু দেয়ার ফলে সুস্থ হয়ে যায় (বুখারী)
(ঘ)হযরত রিফাআ (রা) বলেন বদরের দিন আমি
চোখে তীরের আঘাত পাই, নবীজি থুথু লাগিয়ে দিলে চোখ সুস্থ হয়ে যায়। (খাসায়েসে কুবরা ১ম
খন্ড, ২০৫ পৃ)
(ঙ) মুহাম্মদ ইবনে হাতিবের সন্তানের হাতে
গরম ফুটন্ত হাড়ি পড়ে হাত পুড়ে যায় হুজুর (দ) তাতে থুথু মোবারক লাগিয়ে দিলে তা ভালো
হয়ে যায় (বুখারী, বায়হাকি)
এভাবে আরো অসংখ্য ঘটনা আছে যাতে থুথু মোবারকের
বরকত এর বননা পাওয়া যায়।
বরকতময় জীবনের জন্য মহানবীর দেয়া বরকতময় দোয়া ও আমল
১) সকালের কাজের জন্য নবীর দোয়া
হুযুর (দ) দোয়া করেছেন সকালের কাজের জন্য
(আল্লাহুম্মা বারিক
লি উম্মতি ফি বুকুরিহা) হে আল্লাহ আমার উম্মতের সকালের কাজে বরকত দান
কর। সে জন্য যারা সকালে জাগে আল্লাহ তাদের ধন দৌলত ও রিযিকে বরকত দান করেন।
যারা সকালে ঘুমিয়ে থাকে তাদের অভাব নেমে আসে।
২)
সুরা ওয়াকেয়া অভাব দুর করার সুরা
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
যে ব্যক্তি সূরা ওয়াক্বিয়াহ পাঠ করবে, সে কখনো ক্ষুধায় কষ্ট ভোগ করবে না।
এই সূরা পাঠ করলে দরিদ্রতা গ্রাস করতে পারেনা।
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন রাতে সূরা ওয়াক্বিয়াহ তেলাওয়াত করবে তাকে কখনো দরিদ্রতা
স্পর্শ করবে না। হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) তার মেয়েদেরকে প্রত্যেক রাতে এ সূরা তেলাওয়াত
করার আদেশ করতেন।
হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) মৃত্যুর আগে বলেন, তাদের
(ইবনে মাসউদের সন্তানদের) জন্য আমি সূরা ওয়াকিয়াহ রেখে গেলাম।
এই সূরা পাঠ করলে কেউ কখনো গরীব হবে না। মহানবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিরাত্রে সূরা ওয়াক্বিয়াহ তিলাওয়াত
করবে সে কখনো অভাবগ্রস্ত থাকবে না।
হাদিসে নারীদের এ সূরা শিক্ষা দেয়ার জন্য তাগিদ
দেয়া হয়েছে। মা আয়েশা (রাঃ)-কে এ সূরা পাঠের জন্য নির্দেশ করা হয়েছিলো। সূরা ওয়াক্বিয়াহ
জুমাবার পড়া যেতে পারে। এছাড়া রাতে পড়ার জন্যে হাদিসে বলা আছে।
৩। আত্মিয়তার সম্পর্ক মজবুত রাখা
আনাস
ইবন মালেক রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি তিনি ইরশাদ করেন,
« مَنْ سَرَّهُ
أَنْ يُبْسَطَ لَهُ فِي رِزْقِهِ أَوْ يُنْسَأَ لَهُ فِي أَثَرِهِ فَلْيَصِلْ
رَحِمَهُ».
‘যে ব্যক্তি কামনা করে তার রিজিক প্রশস্ত করে দেওয়া হোক এবং তার
আয়ু দীর্ঘ করা হোক সে যেন তার আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে।’ [বুখারী
: ৫৯৮৫; মুসলিম : ৪৬৩৯]
৪। দরুদ পাঠ করা
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরূদ পাঠেও রিজিকে প্রশস্ততা আসে। তোফায়েল ইবন উবাই ইবন কা‘ব
রাদিআল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন,
قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ
إِنِّى أُكْثِرُ
الصَّلاَةَ عَلَيْكَ
فَكَمْ أَجْعَلُ
لَكَ مِنْ صَلاَتِى
فَقَالَ « مَا شِئْتَ ». قَالَ قُلْتُ الرُّبُعَ.
قَالَ « مَا شِئْتَ
فَإِنْ زِدْتَ
فَهُوَ خَيْرٌ
لَكَ ». قُلْتُ النِّصْفَ.
قَالَ « مَا شِئْتَ
فَإِنْ زِدْتَ
فَهُوَ خَيْرٌ
لَكَ ». قَالَ قُلْتُ
فَالثُّلُثَيْنِ. قَالَ « مَا شِئْتَ فَإِنْ
زِدْتَ فَهُوَ
خَيْرٌ لَكَ ». قُلْتُ أَجْعَلُ
لَكَ صَلاَتِى كُلَّهَا.
قَالَ « إِذًا تُكْفَى
هَمَّكَ وَيُغْفَرُ
لَكَ ذَنْبُكَ »..
আমি
জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল, আমি আপনার প্রতি অধিকহারে দরূদ পড়তে চাই, অতএব
আমার দু‘আর মধ্যে আপনার দরূদের জন্য কতটুকু অংশ রাখব? তিনি বললেন, তুমি
যতটুকু চাও। কা‘ব বলেন, আমি বললাম, এক চতুর্থাংশ। তিনি বললেন, তুমি যতটুকু চাও।
তবে যদি তুমি বেশি পড় তা তোমার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম, অর্ধেক? তিনি বললেন,
তুমি যতটুকু চাও। তবে তুমি যদি বেশি পড় তা তোমার জন্য উত্তম হবে। কা‘ব বলেন,
আমি বললাম, তাহলে দুই তৃতীয়াংশ? তিনি বললেন, তুমি যতটুকু চাও। তবে তুমি যদি বেশি
পড় তা তোমার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম, আমার দু‘আর পুরোটা জুড়েই শুধু
আপনার দরূদ রাখব। তিনি বললেন,
قَالَ « إِذًا تُكْفَى
هَمَّكَ وَيُغْفَرُ
لَكَ ذَنْبُكَ »..
তাহলে তা তোমার সকল
সমস্যা সমাধানের এবং সকল অভাব ও প্রয়োজনের জন্য যথেষ্ট হবে এবং তোমার গুনাহ ক্ষমা
করা হবে। [তিরমিযী : ২৬৪৫; হাকেম, মুস্তাদরাক : ৭৬৭৭ (আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি ‘হাসান’ সহীহ।)]
৫। দুর্বলের প্রতি সদয় হওয়া বা সদাচার করা
একদিন এক সাহাবী এসে আরজ করল এয়া রাসুলাল্লাহ আমি আয় রোজগার করি
আমার ভাই করে না, তাঁর সকল খরচা আমাকেই বহন করতে হয়, তখন নবী করিম (দঃ)জবাবে যা
বললেন এই একটি বাণী নিয়েই একজন মানুষ সারা জীবন শান্তিতে কাটিয়ে দিতে পারবেন,
হুযুর ফরমান হতে পারে আল্লাহ তোমাকে রিজিক তোমার ঐ ভায়ের কারনে দিচ্ছেন যে ভাই
রোজগার করতে পারছে না।
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
« هَلْ تُنْصَرُونَ
وَتُرْزَقُونَ إِلاَّ
بِضُعَفَائِكُمْ » .
তোমাদের
মধ্যে থাকা দুর্বলদের কারণে কেবল তোমাদের সাহায্য করা হয় এবং রিজিক প্রদান করা
হয়। [বুখারী : ২৮৯৬]
৬। ইবাদতের জন্য ঝঞ্ঝাটমুক্ত হওয়া
আল্লাহর ইবাদতের জন্য
ঝামেলামুক্ত হলে এর মাধ্যমেও অভাব দূর হয় এবং প্রাচুর্য লাভ হয়। যেমনটি বর্ণিত
হয়েছে আবূ হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু কর্তৃক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন,
« إِنَّ اللَّهَ
تَعَالَى يَقُولُ
يَا ابْنَ آدَمَ تَفَرَّغْ لِعِبَادَتِى
أَمْلأْ صَدْرَكَ
غِنًى وَأَسُدَّ فَقْرَكَ
وَإِلاَّ تَفْعَلْ
مَلأْتُ يَدَيْكَ
شُغْلاً وَلَمْ
أَسُدَّ فَقْرَكَ
».
‘আল্লাহ তা‘আলা বলেন, হে আদম সন্তান, আমার ইবাদতের জন্য তুমি ঝামেলামুক্ত হও,
আমি তোমার অন্তরকে প্রাচুর্য দিয়ে ভরে দেব এবং তোমার দারিদ্র ঘুচিয়ে দেব। আর যদি
তা না কর, তবে তোমার হাত ব্যস্ততায় ভরে দেব এবং তোমার অভাব দূর করব না।’ [তিরমিযী
: ২৬৫৪; মুসনাদ আহমদ : ৮৬৮১; ইবন মাজা : ৪১০৭]
৭। আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা
সাধারণভাবে
আল্লাহ যে রিজিক ও নিয়ামতরাজি দান করেছেন তার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া করা এবং তাঁর
স্তুতি গাওয়া। কারণ, শুকরিয়ার ফলে নেয়ামত বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ
করেন,
﴿ وَإِذۡ تَأَذَّنَ رَبُّكُمۡ لَئِن شَكَرۡتُمۡ لَأَزِيدَنَّكُمۡۖ وَلَئِن كَفَرۡتُمۡ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٞ ٧ ﴾ [ابراهيم: ٧]
‘আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া
আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয়
আমার আযাব বড় কঠিন।’ {সূরা ইবরাহীম, আয়াত : ০৭}
আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা শুকরিয়ার বদৌলতে নেয়ামত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। আর বলাবাহুল্য
আল্লাহর বাড়ানোর কোনো সীমা-পরিসীমা নাই।
শোকর আদায় করার দোয়া
রাসুলুল্লাহ (দ) ফরমায়েছেন- ইবনু হিব্বানের
রেওয়ায়েত- ৮৬১।
(মান কালা হিনা ইউসবিহ,) যে ব্যক্তি সকালে
এটা বলে দেয়,
(আল্লাহুম্মা মা আসবাহা বি মিন নি’মাতিন,
আউ বি আহাদিন মিন খালকিকা, ফামিনকা ওয়াহদাকা লা শারিকালাকা, ফালাকাল হামদু ওয়ালাকাশ
শুকরু)
অর্থ্যাৎ- হে আল্লাহ যত নেয়ামত আপনি আমাকে
দান করেছেন অথবা আপনার সৃষ্টির মধ্যে যাকেই দান করেছেন, এই নেয়ামত নিশ্চয়ই আপনার পক্ষ
থেকেই। আপনার কোন শরিক নাই। যখন নেয়ামত আপনার পক্ষ থেকেই, তাহলে তারিফ আপনারই করা যায়।
আর শোকরই আপনারই করা যায়।
এই কথা গুলি দিনের শুরুতে যে বলে দেয়-
ফাকাদ আদ্দা শুকরা জালিকাল এয়াউম- আল্লাহ আযযা ওয়াজাল্লা সারা দিনের
শোকর আদায়কারী হিসেবে তাকে গণ্য করে নেন।
৮। অব্যর্থ দোয়া রাতে চোখ খুলে গেলে দোয়া যার জামানত নবী দিয়েছেন
সহিহ বুখারীর হাদীস - এমন এক দোয়া যে দোয়ার ব্যপারে আল্লাহ প্রিয় হাবিব
ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়ালিহি ওয়াসাল্লাম জামানত দিয়েছেন; রাতে চোখ খুলে গেলে বল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু লাহুল
মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়্যিন কাদির, সুবহানাল্লাহ ওয়ালহামদুলিল্লাহ
ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর) এতটুকু পড়ার পর যেই দোয়াই করুননা
কেন আল্লাহ তায়ালা তার দোয়াকে ফিরিয়ে দেন না। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় তুহফা, কারন
এ দোয়ার ব্যপারে আল্লাহ প্রিয় হাবিব ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়ালিহি ওয়াসাল্লাম জামানত
দিয়েছেন যে এই দোয়া ব্যর্থ হয়না।
এই দোয়াটির পর আপনার সকল আশার কথা, সকল পেরেশানির কথা, সকল অভাবের কথা,
সকল অভিযোগ আল্লাহর কাছে পেশ করুন, এটাই হল মোক্ষম সময়।.
৯। সম্পদ লোভহীন ভাবে অর্জন করা
বুখারীর
১৩৮৭ নং হাদীস- হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কিছু চাইলাম, তিনি আমাকে দিলেন,
আবার চাইলাম, তিনি আমাকে দিলেন, আবার চাইলাম, তিনি আমাকে দিলেন। তারপর বললেনঃ হে হাকীম,
এই সম্পদ শ্যামল সুস্বাদু।
-
فَمَنْ أَخَذَهُ
بِسَخَاوَةِ نَفْسٍ
بُورِكَ لَهُ فِيهِ، وَمَنْ
أَخَذَهُ بِإِشْرَافِ
نَفْسٍ لَمْ يُبَارَكْ لَهُ فِيهِ
-
যে
ব্যাক্তি প্রশস্ত অন্তরে (লোভ ছাড়া) তা গ্রহণ করে তার জন্য তা বরকতময়
হয়। আর যে ব্যাক্তি অন্তরের লোভসহ তা গ্রহণ করে তার জন্য তা বরকতময়
করা হয়না। যেন সে এমন ব্যাক্তির মত, যে খায় কিন্তু তার ক্ষুদা মেটেনা।
১০।
নামাজ পড়া এবং ঘরের লোকদের নামাজের হকুম দেয়া
وَأْمُرْ أَهْلَكَ
بِالصَّلَاةِ وَاصْطَبِرْ
عَلَيْهَا لَا نَسْأَلُكَ رِزْقًا
نَّحْنُ نَرْزُقُكَ
وَالْعَاقِبَةُ لِلتَّقْوَى
আপনি আপনার পরিবারের লোকদেরকে নামাযের আদেশ দিন এবং নিজেও এর ওপর অবিচল
থাকুন। আমি আপনার কাছে কোন রিযিক চাই না। আমি আপনাকে রিযিক দেই এবং আল্লাহ ভীরুতার
পরিণাম শুভ। [ সুরা ত্বা-হা ২০:১৩২ ]
হাত মোবারকের বরকতসমুহ
১)হযরত আলীর বুকে হাত: ইবনে মাজার হাদীস- হযরত
আলীকে ইয়েমের গভর্ণর করে পাঠানোর সময় হযরত আলী নিজের অপারগতা প্রকাশ করলে তার বুকে
নবীজি নিজের হাত রেখে দোয়া করলেন হযরত আলী বলেন এরপর খোদার কসম আমি আর কোন বিচার
ফয়সালায় অনুপরিমাণও ভুল করিনি
২)চুল কালো রয়ে গেল: হযরত মদলুক ফরাযী (রা) বলেন একবার হুজুর আমার
মাথার অগ্রভাগে হাত রেখে দোয়া করলেন, আমার আশেপাশের সবচুল সাদা হয়ে গেল কিন্তু
হুজুর এর হাত যে অংশে লেগেছে তা কালো রয়েগেল।
৩) আবু হুরায়রার চাদরে হাত দিয়ে মুষ্ঠি ভরে জ্ঞান ঢালা:
বুখারী মুসলিমের হাদিস-
আবু হুরায়রা ভুলে যাওয়ার অভিযোগ করলে হুজুর (দ) তার চাদরে মষ্ঠি ভরে ভরে কি যেন
ঢাললেন আর তা বুকে লাগাতে বললেন সেদিন থেকে আবু হুরায়রা কোন কিছু ভুলতেন না।
৪) বদরে শুস্ক কাঠ তরবারী হল: বায়হাকি শরীফের হাদীস- হযরত আকাশা ইবনে মিহসান এর তরবারী ভেঙ্গে
গেলে হুজুর তাকে নিজ হাতে একটি লাকড়ি দিলেন সেটা ধারালো তরবারীতে পরিণত হয়ে গেল,
তিনি সারা জীবন সে তরবারী দিয়েই জিহাদ করেন, সে তরবারীর নাম দিল (আউন)
সাহায্যকারী।
৫) চন্দ্র বিদিণ:
সুরা কামার- (ইকতারাবাতিস সাআতু ওয়ানশাক্কাল কামার) কিয়ামত আসন্ন, বিদিণ হয়েছে
চন্দ্র।
কাফিরদের দাবীতে নবীজি
হাতের ইশারায় চাঁদও দ্বিখন্ডিত করে দলেন।
৬) তাবুকে ৭টি খেজুর ২ দিন যাবৎ ১০ জনে:
হযরত বেলালকে তাবুকে
নবী (দ) খেজুর আনতে বললেন তিনি ৭টি খেজুর দিলেন তার উপর হুজুর (দ) হাত রাখলেন আর
আমরা হুজুরের হাতের নিচ থেকে খেতে লাগলাম বেলাল বলেন আমি খেজুরের বিচি বাম হাতে
রাখলাম দেখলাম আমি একাই ৫৪টি খেয়েছি, অন্যরাও খেয়েছে, ২য় দিনও এমনই করলাম অবশেষে
হুজুর (দ) এর হাতের নিচে সে ৭টি খেজুর পেলাম, ১টিও কমলানা।
৭) উম্মে মাবাদ এর দুবল ছাগল থেকে দুধ দোহন ওমরের জামানায় দুর্ভিক্ষেও
সে ছাগলে থেকে দুধ দোহন:
হযরত হিযাম ইবনে হিশাম
(রা) বলেন নবী করিম (দ) হিজরতে রসময় উম্মে মাবাদের কাছ থেকে খাদ্য কিনতে চাইলেন
কিন্তু তার কাছে ছিলনা, তখন নবী দেখলেন একটি খুবই দুবল ছাগল নবী তা থেকে দোহন এর
অনুমতি নিলেন তারা অবাক কারন সে ছাগল এতই ক্ষীন তা কখনো দুধ দিতে পারবেনা, নবী
ছাগল থেকে প্রচুর দুধ নিলেন, নিজে খেলেন উম্মে মাবাদকে দিলেন, েউম্মে মাবাদ যখন
স্বামী আসল স্বামীকে বরকতময় সে লোকের ঘটনা বললেন তখন তারা গিয়ে ইসলাম কবুল করলেন,
সে ছাগলটি ওমরের যুগেও ছিল আর উম্মে মাবাদ সে ছাগল থেকে দুইবেলা দুধ দোহন করেছেন
আজিবন। সুবহানাল্লহ (কানযুল উম্মাল)
কোন মন্তব্য নেই