শরীরে ১০টি সংকেত দেখলে বুঝবেন আপনি বেশীদিন বাঁচেন না। মৃত্যুর আগে ১০টি লক্ষণ।

শরীরে ১০টি সংকেত দেখলে বুঝবেন আপনি বেশীদিন বাঁচেন না। 

মৃত্যুর আগে ১০টি লক্ষণ।

 


বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, সকল প্রসংশা আল্লাহর জন্য, আমি স্বাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহর ছাড়া কোন মাবুদ নাই । তিনি এক তার কোন শরিক নাই,

আমি আরো স্বাক্ষ্য দিচ্ছি আমাদের নবী মুহাম্মদ (দ) আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসুল। তিনি সকল আম্বিয়া ও রাসুলদের ইমাম। হে আল্লাহ হুজুর পাক (দ) এর উপর এবং তার আল ও আয়ালের উপর রহমত বরকত ও সালামতি দান করুন।

 

আসসালামু আলাইকুম- জাল আল হক চ্যানেলের প্রিয় ভাই বোন ও সম্মানিত দর্শকবৃন্দ, একটি কথা সকলেই জানেন যে মৃত্যু একদিন না একদিন আসবে। কারো মৃত্যু আসে হঠাৎ করে, কারো মৃত্যু হয় দুর্ঘটনায়, কারো রোগের কারনে আর কারো ঘরের বিছানায়।

 

মৃত্যু থেকে কেহ পলায়ন করতে পারেনা, যখন মৃত্যুর সময় এসে যায় চাই সে বাদশা হউক বা গোলাম, চাই ধনী কিংবা গরীব, কাউকে মৃত্যু ছাড়েনা। চাই কঠিন দুর্ঘের মধ্যে নিরাপদ অবস্থান করুন কিংবা জমিনের নিচে বা আসমানের উপর অবস্থান করুক মৃত্যু যথাসময়ে আসবেই আসবে।

আজ আপনাদেরকে মৃত্যুর হাকিকতের ব্যপারে বলব তাছাড়া মৃত্যুর সে সব আলামতও বলব যাকে সায়েন্সও মান্য করে যে মৃত্যু আসার আগে এই আলামত সকলের মধ্যে প্রকাশ পায়। যদি এই আলামত প্রকাশ পায় তাহলে বুঝে নিবেন মৃত্যুর সময় নিকটবর্তী।

 

আজ এই টপিকস এর উপর বিস্তারিত কথা বলব। প্রত্যেকের কাছে অনুরোধ ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখবেন। যা অনেক তথ্যবহুল হবে।

 

খালেকে কায়েনাত আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সকলের জন্য মৃত্যুর সময় ও জায়গা নির্ধারিত করে দিয়েছেন।

 

আর মৃত্যু এমন এক জিনিষ যা দুনিয়ার সকলেই বিশ্বাস করে, চাই সে মুসলিম হউক কিংবা অমুসলিম। যদি কেহ মৃত্যুর ব্যপারে সন্দেহ পোষন করে তার নাম বোকার খাতায় লেখা হয়।

 

দুনিয়ার যত শক্তিশালী প্রাণীই হউক মৃত্যুর সামনে কাবু হয়ে যায়। সেখানে কারো কোন শক্তি চলেনা। মৃত্যু বান্দাকে শেষ করে দেয়, বাচ্চাদের এতিম করে দেয়, নারীদের বিধবা করে দেয়, দুনিয়ার প্রকাশ্য সাহারাকে খতম করে দেয়, অন্তরকে কম্পন করে, চোখকে অশ্রুসিক্ত করে দেয়, দুনিয়ার স্বাদকে নিঃসেশ করে দেয়, আশাকে নিরাশায় পরিণত করে দেয়, জালেমদেরকে জাহান্নামের কিনারায় পৌঁছে দেয়, আর মুত্তাকিদেরকে জান্নাতের বালাখানায় পৌঁছে দেয়।

 

মৃত্যু এমন পাওয়ারফুল যে সে বড়দের সম্মানও করেনা ছোটদের প্রতি মায়া করেনা, দুনিয়ার চৌধুরীদের ভয় করেনা, রাজা বাদশাদের ঘরে প্রবেশের অনুমতিও গ্রহন করেনা

 

যখনই আল্লাহর হকুম হয় তামাম দুনিয়াবি বাঁধাকে অতিক্রম করে সে হকুম পালন করে।

 

মৃত্যু নেককারকেও ছাড় দেয়না গুনাহগারকেও রেহায় দেয়না, আল্লাহর রাস্তায় জেহাদকারীকেও মৃত্যু আলিঙ্গন করে নেয়। আর যারা জিহাদে না গিয়ে ঘরে বসে থাকাকে নিরাপদ মনে করে তাদেরকেও মৃত্যু রেহায় দেয়না।

 

মৃত্যু এমন এক জিনিষ মৃত্যুর পর চোখ দেখতে পারেনা, মুখ বলতে পারেনা, কান শুনতে পারেনা, হাত পা কাজ করেনা, মৃত্যু রুহ ও শরীর এর সম্পককে ছিন্নকরে দেয়।

 

রুহের ব্যপারে কুরআনে আল্লাহর তায়ালা ঘোষনা দিয়েছেন রুহ শুধু আল্লাহক হকুম। মৃত্যুর সাথে সাথে মানুষের আমলের রেজিস্ট্রার বন্ধ হয়ে যায়।

 

তাছাড়া মৃত্যুর মুহুর্তে তওবার দরজা বন্ধ হয়ে যায় আর প্রতিদানের সময় শুরু হয়ে যায়। হুজুর আকরাম (দ) এরশাদ করেন - আল্লাহ তায়ালা বান্দার তওবা কবুল করেন যতক্ষণ তার সাখারাতের গরগরি না আসে।

 

আমরা প্রতিদিন প্রতি ঘন্টা প্রতি মুহুর্তে মৃত্যুর নিকটবর্তী হচ্ছি। বছর মাস আর দিন অতিবাহিত হলে আমরা বলি আমার বয়স বেড়েছে, কিন্তু হাকিকত হল আমাদের নির্ধারিত হায়াত থেকে প্রতিনিয়ত কমে যাচ্ছে।

 

মৃত্যু একটি বিপদও বটে যেমন আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন - তোমাদের মধ্যে যখন মৃত্যুর মসিবত চলে আসে (আল মায়েদা ১০৬)

 

আল্লাহ তায়ালা তার কালামে মৃত্যু এবং তার হাকিকতকে বয়ান করেছেন, যেমন সুরা ইমরানের ১৮৫ নং আয়াতে বলেন (কুল্লু নাফসিন জায়েকাতুল মওত) প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেহবে।

সুরা হজ এর ৬৬ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন আল্লাহই তোমাদের জীবন দান করেছেন। তিনিই তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন। আবার তিনিই তোমাদেরকে পুনরুত্থিত করবেন। তারপরও মানুষ অতি-অকৃতজ্ঞ!

 

সুরা লোকমানের ৩৪ নং আয়াতে বলেন- কেউই জানে না আগামীকাল তার জন্যে কী অপেক্ষা করছে এবং কেউ জানে না কোথায় তার মৃত্যু হবে। শুধু আল্লাহই সর্বজ্ঞ, সব বিষয়ে অবহিত।

সুরা এমরানের ১৪৫ নং আয়াতে বলেন- নিশ্চয়ই মৃত্যুর সময় নির্ধারিত। আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কারো মৃত্যু হতে পারে না।

সুরা কাফ এর ৪৩ নং আয়াতে বলেন- হে মানুষ! আমিই জীবন দান করি। আমিই মৃত্যু ঘটাই। আমার কাছেই সবাইকে ফিরে আসতে হবে।

সুরা জুমার ৮ নং আয়াতে বলেন- হে নবী ওদের বলুন, যে মৃত্যু থেকে তোমরা পালাতে চাচ্ছ, তোমাদেরকে সে মৃত্যুর মুখোমুখি হতেই হবে।

 

প্রিয় বন্ধুরা এবার আসুন মৃত্যুর কিছু আলামত জেনে নিই। যখন মৃত্যুর সময় এসে যায় তখন এই এ আলামত প্রত্যেকের মধ্যে প্রকাশিত হয়।  যেমন  অনুভুতি কমে যাওয়া, যখন রুহ শরীর থেকে বের হওয়ার জন্য সম্পূর্ণরুপে তৈরী হয়ে যায় অর্থ্যাৎ মৃত্যুর প্রায় ২৪ ঘন্টা আগে হাত পা ও হাঁটুর চামড়ার উপর অনুভুতি থাকেনা, যখন মৃত্যু এগিয়ে আসে তখন জিভ, নাক ও মুখ অসাড় হয়ে যায এবং তার শরীরের রং বদলাতে থাকে, শরীরের বর্ণ হলুদ ও হালকা লাল হয়ে যায়।

কারও মৃত্যুর আগে অনেক সময়েই চোখের সামনে নানান ধরনের দৃশ্য ভেসে ওঠে ৷ কারো কারো ক্ষেত্রে মৃত্যুর আগে শরীর থেকে  একটি অদ্ভূদ গন্ধ বের হয়

 

হযরত এয়াকুব (আ)  মালাকুল মউতের কাছ থেকে ওয়াদা নিয়েছেন, আমার রূহ হঠাৎ কবজ করিওনা বরং আমার মৃত্যু আসার আগে আমার কাছে দুত পাঠিও, বেশ কয়েক বছর পর হযরত এয়াকুব (আ) এর কাছে মালাকুল মউত রূহ কবজ করতে হাজির হলেন, এয়াকুব (আ) বললেন তুমি আমার কাছে ওয়াদামত দুত পাঠাওনি কেন? তুমি না আমার সাথে ওয়াদা করেছ?

তখন মালাকুল মওত বললেন- (১) আপনার সামনে কত লোক মৃত্যু বরণ করেছেন এসবইতো আমার দুত ছিল, যারা জীবিতদের খবর দিয়ে গিয়েছে তোমাকেও মরতে হবে, 

(২) আপনার দাড়ি সাদা রং ধারন করেছে এটাও আমার দুত, (৩) যখন চোখের জ্যোতি কমতে থাকে, (৪) যখন শরীর দুবল হতে থাকে, (৫) কথা বলতে আটকে যেতে থাকে, (৬) যখন স্মরণশক্তি দুবল হতে থাকে তখন বুঝে নাও মৃত্যুর পরওয়ানা সন্নিকটে।

এই ডুবন্ত সূর্য আমাদেরকে মৃত্যুর পয়গাম দিয়ে যাচ্ছে, দুপুরে কেমন উজ্জ্বল কিরন দিচ্ছিল কিন্তু ডুবার সময় যেন ফেকাশে হলুদ রং ধারন করে ডুবে যাচ্ছে আর আমাদেরকে পয়গাম দিয়ে যাচ্ছে সকলকেই এভাবেই একদিন চলে যেতে হবে।

 

হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু একবার হজরত কাব রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলেছিলেন, আমাকে মৃত্যুর অবস্থা সম্পর্কে কিছু বলুন। তখন হজরত কাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, মৃত্যু হলো কাঁটাদার গাছের মতো। কাঁটাযুক্ত সে গাছটি যখন মানুষের পেটে ঢোকানোর পর তার প্রতিটি কাঁটা শিরায় শিরায় লেগে যায়।

তখন একজন শক্তিশালী মানুষ যদি গাছিটি ধরে জোরে টেনে বের করার চেষ্টা করে। ওই মুহূর্তে শিরায় শিরায় বিদ্ধ হওয়া কাঁটার আঘাতের কষ্ট মানুষটি হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করে।

অনুরূপভাবে মানুষের মৃত্যুকালীন সময়ে মৃত্যুপথযাত্রীর কাছেও মনে হয় যেন, তার শরীরের গোশতগুলো যেন একটি  কাঁটার সঙ্গে বেরিয়ে আসছে। সে মৃত্যুযন্ত্রণা মানুষ হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করে থাকে।

 

সে মুহুর্তে তাকে কোন কিছু করার জন্য চাপাচাপি করা উচিত নয় শুধু পাশে বসে সে শুনে মত কলমা পড়তে হবে, কলমা পড়ার জন্য তাগাদা দেয়া যাবেনা, একবার পড়ে নিলে আর পড়ার দরকার নাই, তাছাড়া সে কষ্টের সময় তার সামনে উচ্চস্বরে কান্নাকাটি করাতে মৃত্যুপথযাত্রির কষ্ট আরো বেড়ে যায় তাই সেখানে কান্নাকাটি করাও উচিত নয়।

 

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সদা সর্বদা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকার তৌফিক দান করুন। আমাদের আজকের ভিডিওটি যদি ভালো লাগে বন্ধুদের কাছে শেয়ার করে ইসলাম প্রচারের কাজে সাহায্য করুন আর মৃত্যু সংক্রান্ত আরো কোন তথ্য জানতে চাইলে কমেন্টে অবশ্যই প্রশ্ন করুন। ধন্যবাদ

 

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.