ভালো মৃত্যু ও খারাপ মৃত্যুর আলামত বা লক্ষণ, গুনাহগারের লাশ কি ভারি হয়ে যায়?
ভালো মৃত্যু ও খারাপ মৃত্যুর আলামত বা লক্ষণ, গুনাহগারের লাশ কি ভারি হয়ে যায়?
বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহিম! আসসালামু
আলাইকুম জা আল হকের প্রিয় বন্ধুরা, আশা করি
আপনারা ভালো আছেন।
আমার এটাই দোয়া যে আল্লাহ পাক আপনাকে
খাইর ও বরকতে রাখুক ছহি সালামত রাখুক আমিন।
বন্ধুরা মানুষ মরণশীল আর যখন আমাদের
প্রতিবেশী কিংবা কোন আত্মিয় স্বজন মৃত্যু বরণ করেন সেখানে গেলে আমরা নানান ধরনের কথা
শুনে থাকি, অনেকে বলে এই লোকটি নেককার কারন তার এই আলামত গুলি দেখা গেছে, অনেকে বলে
এই লোকটি গুনাহগার,
কিছু কিছু কথা যদিও ইসলাম সম্মত
কিন্তু বেশীরভাগ কথাই কল্পনা প্রসুত,লোক মুখে শোনা কথা
আমরা যদি কুরআন হাদীস থেকে জানতে
পারি কি কি চিহ্ন দেখা গেলে মানুষ নেককার হওয়া প্রমাণিত হয়, কি কি চিহ্ন দেখা গেলে
মানুষ গুনাহগার হওয়া প্রমাণিত হয় তাহলে আমাদের আর মৃত ব্যক্তির ব্যপারে ভুল ধারনা আসবেনা,
তাই আসুন আমরা আজ মৃত ব্যক্তির এমন সব চিহ্ন নিয়ে আলাপ আলোচনা করব যা থেকে বুঝতে পারা
যায় এই মৃত লোকটি নেককার ছিল,
অনেকে বলেন লাশ ভারি হয়ে গেলে লোকটি
গুনাহগার হওযার প্রমাণ বহণ করে সে কথাটি কি ইসলাম সম্মত কিনা তাও জানব ইনশা আল্লাহ
আশা করি এই গুরুত্বপূণ ইনফরমেটিভ
আলোচনাটি শেষ পযন্ত শুনে অনেক বড় ভুল ধারনা থেকে মুক্তি পাবেন।
প্রথমত মৃত নেককার হওয়ার লক্ষণ
গুলি শুনুন
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “আল্লাহ তাআলা যদি কোন বান্দার কল্যাণ চান তখন সে বান্দাকে ‘আসাল’ করেন। সাহাবায়ে কেরাম বলেন: আসাল কি? তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা বান্দাকে বিশেষ একটি ভাল কাজ করার তাওফিক দেন এবং এই আমলের উপর তার মৃত্যু ঘটান।[সহিহ আহমাদ (১৭৩৩০)
তাছাড়া ভালো মৃত্যুর আরো আলামত হল
# মৃত্যুর আগে কলমা নসিব হওয়া
# মৃত্যুর সময় কপালে ঘাম দেয়া
# জুমার রাতে বা জুমার দিন মৃত্যু বরণ
করা
# প্লেগ রোগে মৃত্যু বরণ করা
# শহিদি মওত যেমন পেটের পীড়া, পানিতে
ডুবে, কোন কিছু ধসে, এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে গিয়ে মৃত্যু বরণ করা
মৃত ব্যক্তি নেককার হওয়ার আরো ১টি আলামত
হল
জানাযায় অধিক লোক উপস্থিত হওয়া,
এবং তারা মৃত ব্যক্তির প্রশংসা করা, এটা মৃত ব্যক্তির জন্য সুসংবাদ ও তাঁর জান্নাতি
হওয়ার প্রতি শুভ লক্ষণ। হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.)
বলেন, নাসাঈ : (১৯৯১), তিরমিযি : (০২৯), নং হাদিস
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে কোন মৃত ব্যক্তির উপর মুসলমানদের বৃহৎ একটি জামাত
জানাযা পড়ে, যাদের সংখ্যা একশত পর্যন্ত পৌঁছে আরেক হাদিসে ৪০ জনের কথা আছে আর তারা
সবাই তার জন্য সুপারিশ করে (তার প্রসংশা করে), তবে অবশ্যই তার ব্যাপারে তাদের সুপারিশ
গ্রহণ করা হবে।
এবার আসুন খারাপ মৃত্যুর লক্ষণ
যারা দুর্ভাগা তারা আত্মহত্যা করে
মৃত্যু বরণ করবে
অথবা নেশা করতে করতে মারা যাবে,
হযরত আবূ হুরায়রা (রা.) কতৃক বর্ণিত নবী করীম (সাঃ) বলেন → মদ পান করার সময় মদ পানকারীর
ঈমান থাকেনা। (বুখারী ৬৩০২)
পিতা মাতার সাথে খারাপ আচার-আচরণত
অবস্থায় অথবা পিতা মাতা থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় কোনো সন্তানের মৃত্যু, এ ব্যপারে
হযরত আলকামার ঘটনা প্রসিদ্ধ যিনি মাকে কষ্ট দেয়ার কারনে কলমা পড়তে পারছিলেন না শেষে
নবী করিম (দ) এর কথা বৃদ্ধা মা আলকামাকে ক্ষমা করার ঘোষনা দিলে সে কলমা পড়ে মৃত্যু
বরণ করল।
তারপরের খারাপ মৃত্যুর লক্ষণ হল
কোন মহিলা বা স্ত্রী স্বামীকে অসন্তুষ্ট রেখে মৃত্যু বরণ করা।
এবং সব শেষ খারাপ মৃত্যুর লক্ষণ
হল যদি তার মৃত্যুতে মানুষ খুশি হয়ে যায়, তার জুলুম অত্যাচার থেকে বাঁচতে পারার জন্য
খুশি হয়।
এ গুলিই হল মুলত ভালো মৃত্যু ও
খারাপ মৃত্যুর কিছু কুরআন হাদীস সম্মত লক্ষণ বাকী কিছু লোক বলে লাশ ভারি হয়ে গেলে গুনাহগার
বা খারাপ মৃত্যুর লক্ষণ একথাটি ঠিক না বরং অনেক সময় মৃত্যুর সময় মুখ ও নাক খোলা থাকার
কারনে বাতাস ঢুকে লাশ ভারি হয়ে যায়, তাই মৃত্যুর সাথে সাথে মুখ বন্ধ করে দেয়া এবং নাকে
রুই জাতিয়া কিছুদিয়ে দেয়া উত্তম।
কোন মন্তব্য নেই