ঘরে বরকত লাভের আমলসমুহ যে ঘরের নারী এ কাজ করে দুনিয়ার সকল নেয়ামত আল্লাহ সে ঘরে জমা করে দেন

ঘরে বরকত লাভের আমলসমুহ

যে ঘরের নারী এ কাজ করে দুনিয়ার সকল নেয়ামত আল্লাহ সে ঘরে জমা করে দেন



বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

সম্মানিত ভাই ও বোনেরা আমরা প্রত্যেকে চাই আমাদের ঘরে সুখ হউক শান্তি হউক, আল্লাহর নেয়ামত দ্বারা ঘর পরিপূণ হউক,

কিন্তু আমরা জানিনা ঘরকে কিভাবে সুখ শান্তির নীড়ে পরিণত করা যায়, কিভাবে ঘরকে একটি জান্নাতের টুকরা বানানো যায়।

মনে রাখবেন একটি ঘরকে শান্তির নীড় বানানোর জন্য ঘরের নারী পুরুষ সকলের ভুমিকা রাখতে হবে, তবে সবচেয়ে বেশী ভুমিকা রাখতে পারে ঘরে বসবাসকারী নারী।

আজকে আমি ঘরের নারীরা কি কাজ করলে ঘরটা স্বগ সুখে ভরে যাবে তা ইসলামী দৃষ্টিকোন থেকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব।

আজকের বিষয়টি প্রত্যেক নারী পুরুষের জানা খুবই জরুরী তাই কষ্ট হলেও প্রতিটি কথা খুব মনযোগ দিয়ে শুনার অনুরোধ রইল হতে পারে এই ভিডিও দেখার পর আপনার ঘরের সকল অশান্তি দুরীভুত হয়ে যাবে,

আবু দাউদ শরীফের ১৬৬৪ নং হাদীস  হজরত ইবনে আব্বাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেন, আমি কি তোমাকে মানুষের সর্বোত্তম সম্পদ সম্পর্কে অবহিত করবো না? তা হলো, নেককার স্ত্রী। সে তার দিকে তাকালে সে তাকে আনন্দ দেয় এবং তাকে কোন নির্দেশ দিলে সে তা মেনে নেয় এবং সে যখন তার থেকে অনুপস্থিত থাকে, তখন সে তার সতীত্ব ও তার সম্পদের হেফাজত করে

তিরমিযি ১১৫৯ নং হাদীস হজরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, আমি যদি কাউকে অন্য লোকের প্রতি সেজদা করার নির্দেশ দিতাম তাহলে অবশ্যই স্ত্রীকে তার স্বামীর প্রতি সেজদা করার নির্দেশ দিতাম

একজন স্ত্রী স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেখে বাড়ীর বাইরে বের হবেন না। তার আদেশ নির্দেশ মেনে চলবেন। তার প্রতি সর্বদা সম্মান ও ভালবাসা প্রদর্শন করবেন। কেননা, স্বামী তার কাছে সর্বদা সম্মানের পাত্র।

স্বামী স্ত্রীকে সর্বাবস্থায় মুচকি হাসিতে দেখতে পছন্দ করেন। সেজন্য, স্ত্রীর উচিৎ হাস্বোজ্জল করে থাকা। ঘোমরা মুখ না করে মুচকি হেসে স্বামীকে বরণ করার মাধ্যমে আদর্শ স্ত্রীর আদর্শতা প্রকাশ পায়। মহান আল্লাহ পাকের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার পাশাপাশি তিনি স্বামীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কারীনী হবেন।

স্ত্রী উত্তম চরিত্রের অধিকারীনী হবেন। ঝগড়া-বিবাদের সময় কখনও স্বামীর আওয়াজের উচ্চ আওয়াজে কথা না বলা আদর্শ স্ত্রীর বিশেষ গুণ। স্বামী দরিদ্র হলেও তাঁর দরিদ্রতার উপর ধৈর্য্য ধারণ করা এবং সম্পদশালী হলে তার সম্পদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। সর্বদা স্বামীর কল্যাণে প্রচেষ্ঠা ও কল্যাণকে পছন্দ করা এবং স্বামীর কল্যাণকে প্রকাশের প্রচেষ্ঠা করা। সত্য কথা বলার মাধ্যমে নিজেকে সুশোভিত করা এবং সর্বপর্যায়ে মিথ্যা বলা বা মিথ্যার উপর আশ্রয় নেয়া হতে বিরত থাকা আদর্শ রমণীর সর্বোত্তম গুণ। অন্যকে তিরষ্কার এবং ঠাট্রা, বিদ্রুপ থেকে সর্বদা বিরত থাকা। আদর্শ স্ত্রী হবেন নম্র, ভদ্র। অহংকার, গর্ব ও অহমিকা হতে সবসময় নিজেকে দূরে রাখবেন।

আল্লাহর প্রিয় হাবিব (দ) এরশাদ করেন দুনিয়ার মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে পছন্দনীয় জিনিষ হল ৩টি আর তা হল খুশবু, নেককার নারী, আর আমার চোখকে শীতলকারী হল নামাজ।

সে জন্য ওলামাকেরাম বলেন যে ঘরে নেককার নারী আছে চাই সে নারী মেয়ের সুরতে হউক, বা মায়ের সুরতে কিংবা স্ত্রীর সুরতে অথবা বোনের সুরতে আর সে যদি ওয়াক্ত মত নামাজ আদায়কারী হয় আর ঘরকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখে, দুগন্ধ বা ময়লা করে না রাখে, তাহলে দুনিয়ার সকল নেয়ামত আল্লাহ সে ঘরে জমা করে দেন।

আদশ স্ত্রী একই ভুল বারংবার করেনা, ভুল করে ফেললে শুধরে নেয় এবং সে ভুল যাতে সংঘটিত না হয় সেক্ষেত্রে সতর্ক থাকে, একজন উত্তম স্ত্রীর অন্যতম গুণাবলীর একটি। তিনি হবেন আল্লাহ পাকের যিকির কারীণী। সর্বদা তার জিহ্বা আল্লাহর যিকিরে মশগুল রাখবেন। স্ত্রী হবেন পুতঃপবিত্র, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। পোষাক-পরিচ্ছেদ এবং শারিরীকভাবে তা প্রকাশ পাবে। আল্লাহর বাণী, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁেচ থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন - (সুরা আল বাক্বারা ঃ ২২২)।

আদর্শ স্ত্রী স্বামীর অনুমতি ছাড়া নফল রোজা আদায় করবেন না

মুহরীম ছাড়া অন্য কাউকে স্বামীর অনুমতি ছাড়া তার বাড়ীতে বা রূমে প্রবেশ করতে দেয়না

স্বামীকে কখনও কোনভাবে কষ্ঠ দিবেন না।

স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেখে তার সম্পদের কোনকিছু কোথাও ব্যয় করবেন না।

আদর্শ স্ত্রীর গুণের অন্যতম একটি হলো স্বামীর পাশে অন্য কোন অপরিচিত  লোকের প্রশংসা করবেন না

আদর্শ স্ত্রীগণ স্বামীর সকল আদেশের অনুগতশীল হবেন।

তবে যদি কোন পাপ কাজের অথবা আল্লাহ ও তাঁর রাসুল পাকের বিরূদ্ধাচরণ কিছু হয় তা মানা যাবে না। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, কোন সৃষ্টির অনুগত হতে গিয়ে আল্লাহর অবাধ্য কোন কাজ করা যাবে না

স্বামী কখনো নিজের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য আহ্বান করলে সাথে সাথে সাড়া দেয়া একজন আদর্শ রমণীর উত্তম গুণাবলীর অন্যতম।

হজরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, কসম সেই সত্ত্বার যাঁর হাতে আমার প্রাণ। কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে যখন বিছানায় আহ্বান করে, কিন্তু সে তা অস্বীকার করে, নিঃসন্দেহে যে পর্যন্ত সে তার স্ত্রীর প্রতি সন্তুষ্ট না হয়, ততক্ষণ আসমানবাসী তার প্রতি অসন্তুষ্ট থাকেন -(মুসলীম ঃ ৩৪৩২)।

সর্বোপরি, আদর্শ স্ত্রীগণ স্বামীকে সন্তুষ্ট ও খুশি রাখবেন। আর এর মাধ্যমেই জান্নাত লাভের পথ সুগম করবেন। হাদীস শরীফের ভাষায়, হজরত উম্মে সালমাহ রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, স্ত্রীর প্রতি তার স্বামী সন্তুষ্ট ও খুশি থাকা অবস্থায় কোন স্ত্রীলোক মারা গেলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে -(তিরমিজি, রিয়াদুস সালেহীন ঃ ২৯২)।

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.