ভয়ংকর ঘটনা-দাজ্জাল এর কাবা ঘরের তাওয়াফ Story of Dajjal

                 ভয়ংকর ঘটনা-দাজ্জাল এর কাবা ঘরের তাওয়াফ Story of Dajjal

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

সম্মানিত দশক মন্ডলী আপনারা দাজ্জাল সম্পর্কে অনেক আলোচনা বিভিন্ন মিডিয়ায় পাবেন, আজ আমি হাদীস শরীফের আলোক এমন একটি বিষয় আলোচনা করব যা আপনি ইতিপূবে মোটেও শুনেননি। আপনারা হেডিং থেকে অলরেডি বিষয়টি কিছুটা জানতে পেরেছেন যে দাজ্জালের কাবা ঘরের তাওয়াফ

কিন্তু আমরা জানি দাজ্জাল সব জায়গায় যেতে পারবে কিন্তু কিন্তু হারামে মক্কা ও হারামে মদিনায় দাজ্জাল প্রবেশ করতে পারবেনা। এমনকি আল্লাহ তায়ালা  ফেরেশতাদে্কে ডিওটি দিয়ে রেখেছে দাজ্জাল যাতে এই দুটি হারাম শরীফে প্রবেশ করতে না পারে।

কিন্তু বুখারী শরীফের ১টি হাদীস হাদীস নাম্বার হল ৬৫৫৩ নং হাদীস

عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُنِي أَطُوفُ بِالْكَعْبَةِ فَإِذَا رَجُلٌ آدَمُ سَبْطُ الشَّعَرِ بَيْنَ رَجُلَيْنٍ يَنْطِفُ رَأْسُهُ مَاءً، فَقُلْتُ مَنْ هَذَا قَالُوا ابْنُ مَرْيَمَ‏. فَذَهَبْتُ أَلْتَفِتُ فَإِذَا رَجُلٌ أَحْمَرُ جَسِيمٌ جَعْدُ الرَّأْسِ أَعْوَرُ الْعَيْنِ الْيُمْنَى، كَأَنَّ عَيْنَهُ عِنَبَةٌ طَافِيَةٌ، قُلْتُ مَنْ هَذَا قَالُوا هَذَا الدَّجَّالُ‏. أَقْرَبُ النَّاسِ بِهِ شَبَهًا ابْنُ قَطَنٍ "‏‏. وَابْنُ قَطَنٍ رَجُلٌ مِنْ بَنِي الْمُصْطَلِقِ مِنْ خُزَاعَةَ‏.

আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি একদা নিদ্রায় ছিলাম। তখন আমি আমাকে কাবা গৃহ তাওয়াফ রত অবস্থায় দেখতে পেলাম।

(অর্থ্যাৎ হুজুর নিজেও তাওয়াফ করছিলেন এমন স্বপ্ন দেখলেন)

 এমন সময় সোজা চুল বিশিষ্ট একজন পুরুষকে দু'জন পুরুষের মাঝখানে দেখলাম, যার মাথা থেকে পানি ঝরে পড়ছিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইনি কে? তারা বলল, ইবনু মারিয়াম। এরপর আমি ফিরে আসতে লাগলাম।

অর্থ্যাৎ হুজুর (দ) হযরত ঈসা (আ) কেও কাবা ঘরের তাওয়াফ করতে দেখলেন।

 এ সময় একজন লাল বর্নের মোটাসোটা, কোঁকড়ানু চুল বিশিষ্ট, ডান চোখ কানা ব্যাক্তিকে দেখলাম। তার চোখটি যেন ভাসমান আঙ্গুর। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ ব্যাক্তি কে? তারা বলল, এ হচ্ছে দাজ্জাল।

অর্থ্যাৎ হুজুর (দ) নিজেকে, হযরত ঈসাকে এবং দাজ্জালকে কাবা ঘরের তাওয়াফ করতে দেখেছেন,

আর আমরা সকলেই জানি আমাদের নবী সহ সকল নবীর স্বপ্নই অহি এবং সত্য। তা অসত্য হতেই পারেনা।

এখন হুজুর বলছেন আমি দেখেছি দাজ্জাল কাবাতুল্লাহর তাওয়াফ করছে, আর আগে আগে ঈসা (আ) তাওয়াফ করছে আর পিছে পিছে দাজ্জাল তাওয়াফ করছে।

তাছাড়া ইসা (আ) যেমন দুই ব্যক্তির কাঁধে হাত রেখেছে দাজ্জালও দুই ব্যক্তির কাঁধে হাত রেখেছে।

আবার অন্য হাদীস বলছে দাজ্জাল হারাম শরীফে প্রবেশ করতে পারবেনা।

সে জন্য যারা কুরআন ও হাদীসের মুল জ্ঞান থেকে দুরে তারা এসব কিছু পড়ে পড়ে গোমরাহ হয়ে যায়, হাদীসের অস্বীকার কারী হয়ে যায়, কারন তারা বাহ্যিক অথ দেখেই ভুল বুঝে হাদীসের মুল ও নিগুড় রহস্য সম্পর্কে ওয়াকেফহাল হতে পারেনা। অনেক বড় বড় জ্ঞানী লোকও এর দ্বারা ধোকায় পড়ে যায়, গোমরা হয়ে যায়। আজকাল বাজারে এমন অনেক বক্তাও আছে যাদের অনেক স্টাডি আছে, বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় বই পড়তে পড়তে প্রচুর তথ্যবহুল আলোচনা করতে পারে, যা মানুষকে অবাক করে, এমন তথ্যবহুল আলোচনা অনেক আলেম ওলামাও করতে পারেনা, তাই এসব আলোচকদের আলোচনা পাকলিক বেশী খায়, কিন্তু তাঁদের কুরআন হাদীসের মুল যে গভীর জ্ঞান তা না থাকায় তারা মানুষের কাছে ভুল বার্তা ভুলভাল বক্তব্য ছেড়ে দেয়, পাবলিকের সামনে কোন কথা বলতে হবে কোন কথা বলতে হবেনা তারা তা বুঝতে পারেনা, ভিন্নধর্মী হাদীসের মধ্যে কিভাবে সামাঞ্জস্য বিধান করতে হয় তারা তা জানেনা, ফলে এসব লোকের বক্তব্য শুনে অনেকে গোমরা হয়ে যায়।

সে জন্য মনে রাখবেন মুহাদ্দিসিনেকেরাম, মুফাসসিরিনেকেরাম, ওলামায়ে ইসলাম ওলামায়ে আসলাফ, তারা এসব বিষয়ে বিস্তারিত লিখে গেছেন তারা বলেছেন এই হাদীসটি বিলকুল সহিহ যে দাজ্জাল হারামাইণে প্রবেশ করতে পারবেনা, সাথে সাথে হুজুর (দ) দাজ্জাল যে কাবাঘর তাওয়াফ করছে সে স্বপ্নও সত্য,

তারা এই ২টি হাদীসের মধ্যে সামাঞ্জস্য বিধান করে লিখেন দাজ্জাল তখন হারামাইনে প্রবেশ করতে পারবেনা যখন সে দাজ্জাল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে, যখন সে নিজেকে নিজে দাজ্জাল হওয়ার ডিকলেয়ার করবে। যখন সে দাজ্জাল হওয়ার দাবীই করেনি তখন সে হারামাইনে প্রবেশ করতে কোন বাঁধা নাই। যখন হুজুর (দ) স্বপ্ন দেখেছেন তখনতো সে দাজ্জাল হিসেবে আত্মপ্রকাশই করেনি।

যেমন যখন ইবলিশ ফেরেশতাদের সাথে ছিল সে তখন জিনদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম জিন ছিল। এত বেশী আবেদ ও জাহেদ ছিল আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাদের সাথে জান্নাতে থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন। যতদিন সে অহংকার করেনি, আল্লাহর হকুম পালনে অস্বীকার করেনি, আদম (আ) কে সেজদা করতে অস্বীকার করেনি, সে ইবলিশ শয়তান হয়নি, তাই সে তখন জান্নাতে অবস্থান করতে পেরেছে,

তেমনি ভাবে দাজ্জাল দাজ্জাল হওয়ার আগে যদি সে মক্কায় যায় মদীনায় যায় আর তাকে যদি নবী করিম (দ) তাওয়াফ রত অবস্থায় স্বপ্নে দেখে তাতে কোন দ্বন্দ্বের অবকাশ নাই।

দাজ্জাল কেয়ামতের আগে যখন নিজেকে দাজ্জাল হিসেবে ঘোষনা দিবে তখন তার জন্য হারামাইনের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে, এর আগে সে হারামাইনে আসতেই পারে

তাই হাদীসে দেখা যায় মদীনার এক ইহুদী বালক যার নাম ইবনে সায়্যাদ সে জাদু ও ভেলকিবাজিতে খুব পারদর্শী ছিল। দাজ্জালের মধ্যে যে সব লক্ষন থাকার কথা রয়েছে, তার মধ্যে তার অনেকাংশই পাওয়া যেত। এ কারণে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেও ইবনে সায়্যাদের ব্যাপারে চিন্তিত থাকতেন এবং তার পরিচয় জানতে একাধিকবার তার কথাবার্তা শুনবার চেষ্টা করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত তার সম্পর্কে কোন সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেননি যে, ইবনে সায়্যাদই দাজ্জাল। অনুরূপভাবে শীর্ষস্থানীয় অনেক সাহাবীও ইবনে সায়্যাদকেই দাজ্জাল মনে করতেন।

অতএব দাজ্জালের কাবা তাওয়াফের ব্যাপারে আমার নবীর স্বপ্নও সত্য এবং দাজ্জাল আখেরী জামানায় যে হারামাইনে প্রবেশ করতে পারবেনা তাও সত্য।    

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.