শবে কদরের ফজিলত ও আমল A to Z
শবে কদরের ফজিলত ও আমল A to Z
এতেকাফের ফজিলত
যেমন
আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন-
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ
আমি
একে নাযিল করেছি শবে-কদরে। [সুরা ক্বদর - ৯৭:১]
وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ
শবে-কদর
সমন্ধে আপনি কি জানেন? [সুরা ক্বদর - ৯৭:২]
لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِّنْ أَلْفِ شَهْرٍ
শবে-কদর
হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। [সুরা ক্বদর - ৯৭:৩]
تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِم مِّن كُلِّ أَمْرٍ
এতে
প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে।
[সুরা ক্বদর - ৯৭:৪]
سَلَامٌ هِيَ حَتَّى مَطْلَعِ الْفَجْرِ
এটা
নিরাপত্তা, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। [সুরা ক্বদর - ৯৭:৫]
কদর রাত সম্পকে কয়েকটি হাদিস
বুখারী-৩৫ নং হাদিস শবে
কদরে গুনাহ মাফ হবে
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،
قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ يَقُمْ لَيْلَةَ
الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
".
আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ইরশাদ করেনঃ যে ব্যাক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় লায়লাতুল কদর-এ ইবাদতে রাত্রি
জাগরণ করবে, তার অতীতের গুনাহ্ মাফ করে দেওয়া হবে।
বুখারীর ২০১৭ নং হাদিস- শেষ
বেজোড় রাতে শবে কদর তালাশ কর
عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى
الله عنها ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " تَحَرَّوْا
لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِي الْوِتْرِ مِنَ الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ
".
আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা
রমযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদরের সন্ধান কর।
ঝগড়ার
কারনে তারিখ ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে ২৫/২৭/২৯ তারিখ
বুখারীর ২০২৩ নং হাদিস
عَنْ عُبَادَةَ بْنِ
الصَّامِتِ، قَالَ خَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِيُخْبِرَنَا بِلَيْلَةِ
الْقَدْرِ، فَتَلاَحَى رَجُلاَنِ مِنَ الْمُسْلِمِينَ، فَقَالَ " خَرَجْتُ
لأُخْبِرَكُمْ بِلَيْلَةِ الْقَدْرِ، فَتَلاَحَى فُلاَنٌ وَفُلاَنٌ، فَرُفِعَتْ،
وَعَسَى أَنْ يَكُونَ خَيْرًا لَكُمْ، فَالْتَمِسُوهَا فِي التَّاسِعَةِ
وَالسَّابِعَةِ وَالْخَامِسَةِ ".
উবাদা
ইবনুুস সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে লাইলাতুল কদরের (নির্দিষ্ট তারিখের) অবহিত করার জন্য বের
হয়েছিলেন। তখন দু'জন মুসলিম ঝগড়া করছিল। তা দেখে তিনি বললেনঃ আমি তোমাদেরকে
লাইলাতুল কদরের সংবাদ দিবার জন্য বের হয়েছিলাম, তখন অমুক অমুক ঝগড়া করছিল, ফলে তার
(নির্দিষ্ট তারিখের) পরিচয় হারিয়ে যায়। সম্ভবতঃ এর মধ্যে তোমাদের জন্য কল্যান
নিহিত রয়েছে। তোমরা নবম, সপ্তম ও পঞ্চম রাতে তা তালাশ কর।
নবীজি (দ) একবছর ২১ তারিখ
শবে কদর পান কপালে বৃষ্টির কারনে কাঁদা বুখারীর ২০২৭ নং হাদিস
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
الْخُدْرِيِّ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ
يَعْتَكِفُ فِي الْعَشْرِ الأَوْسَطِ مِنْ رَمَضَانَ، فَاعْتَكَفَ عَامًا حَتَّى
إِذَا كَانَ لَيْلَةَ إِحْدَى وَعِشْرِينَ، وَهِيَ اللَّيْلَةُ الَّتِي يَخْرُجُ
مِنْ صَبِيحَتِهَا مِنِ اعْتِكَافِهِ قَالَ " مَنْ كَانَ اعْتَكَفَ مَعِي
فَلْيَعْتَكِفِ الْعَشْرَ الأَوَاخِرَ، وَقَدْ أُرِيتُ هَذِهِ اللَّيْلَةَ ثُمَّ
أُنْسِيتُهَا، وَقَدْ رَأَيْتُنِي أَسْجُدُ فِي مَاءٍ وَطِينٍ مِنْ صَبِيحَتِهَا،
فَالْتَمِسُوهَا فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ، وَالْتَمِسُوهَا فِي كُلِّ وِتْرٍ
". فَمَطَرَتِ السَّمَاءُ تِلْكَ اللَّيْلَةَ، وَكَانَ الْمَسْجِدُ عَلَى
عَرِيشٍ فَوَكَفَ الْمَسْجِدُ، فَبَصُرَتْ عَيْنَاىَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم عَلَى جَبْهَتِهِ أَثَرُ الْمَاءِ وَالطِّينِ، مِنْ صُبْحِ إِحْدَى
وَعِشْرِينَ.
আবূ
সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
রমযানের মধ্যম দশকে ইতিকাফ করতেন। এক বছর এরূপ ইতিকাফ করেন, যখন একুশের রাত এল, যে
রাতের সকালে তিনি তাঁর ইতিকাফ হতে বের হবেন, তিনি বললেনঃ যারা আমার সঙ্গে ইতিকাফ
করেছে তারা যেন শেষ দশক ইতিকাফ করে। আমাকে স্বপ্নে এই রাত (লাইলাতুল কদর) দেখানো
হয়েছিল। পরে আমাকে তা (সঠিক তারিখ) ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। অবশ্য আমি স্বপ্নে দেখতে
পেয়েছি যে, ঐ রাতের সকালে আমি কাদা-পানির মাঝে সিজদা করছি। তোমরা তা শেষ দশকে
তালাশ কর এবং প্রত্যেক বেজোড় রাতে তালাশ কর। পরে এই রাতে আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষিত
হল, মসজিদের ছাদ ছিল খেজুর পাতার ছাউনির। ফলে মসজিদে টপটপ করে বৃষ্টি পড়তে লাগল।
একুশের রাতের সকালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কপালে
কাদা-পানির চিহ্ন আমার দু’চোখ দেখতে পায়।
শবে কদরের আমলসমুহ ও এতেকাফের গুরুত্ব
১)
লায়লাতুল ক্বদর একটি বরকত ময় রাত
২)
এ রাতে সারা বছরের ভাগ্য লিপিবদ্ধ করা হয় (তফসিরে সাভি ৬ষ্ঠ খন্ড
(ফিহা ইউফরাকু কুল্লু আমরিন হাকিম)
এ
রাতে আল্লাহ তায়ালা ফয়সালা করেন কাকে কি দিবেন, সে জন্য ভালো ফয়সালা করানোর জন্য
চেষ্টা প্রচেষ্টা করা দোয়া এবাদত করা দরকার।
৩)
ক্বদর এর আরেক অথ হল সম্মান বা সম্মানিত রাত (তফসিরে নঈমি)
৫) ক্বদরের রাতে দৃনিয়াতে এত অধিক সংখ্যক ফেরেশতা
নাযিল হয় যে পৃথিবীতে জায়গা সংকুলনা হয় না।
৬)
এ রাতের এবাদতের দ্বারা সারা জীবনের গুনাহ মাফ হয়ে যায় ( বুখারী হাদীস ২০১৪)
৭) এ এক রাতের এবাদতের ফলে ১ হাজার মাস এবাদতের
চেয়ে বেশী সাওয়াব পাওয়া যায় কিংবা ৮৪
বছর ৪ মাস অপেক্ষাও বেশী এবাদতের সাওয়াব হাসিল করা
যায়।
৮)এ
রাতে এবাদত কারীদের সাথে ফেরেশতাদের সরদার হযরত জিবরাইল (আঃ) মোসাফাহা করেন।
৯)
এ মোবারক রাতে প্রতিটি মুহুত শান্তি আর শান্তি যা একমাত্র উম্মতে মুহাম্মদীকে আল্লাহ রব্বুল আলামিন প্রিয় নবীর উসিলায় দান
করেছেন।
১০)শবে
ক্বদর এমন এক রাত যে রাতের বননা দিতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা গোটা ১টি সুরা নাযিল করেছেন সুরা ক্বদর।
১১)প্রিয়
নবী করিম (দঃ) এরশাদ করেন যে ব্যক্তি এ রাত থেকে বঞ্চিত রইল সে যেন সব কল্যান থেকে বঞ্চিত( ইবনে মাজাহ ১৬৪৪)
১২)তফসিরে
কুরতুবিতে বনিত রয়েছে এ রাতে এবাদত হাজার মাস রাত জাগা, দিনে রোযা রাখা, জান মাল
দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করা এবং নিজের ১ হাজার সন্তান শহীদ হওয়ার পর নিজে শহীদ
হওয়া থেকেও উত্তম।
১৩)তফসিরে
কুরতুবিতে আরো উল্লেখ রয়েছে, হযরত সুলায়মান (আঃ) ও যুলকারনাইন এর ১ হাজার রাজ্য
ছিল, আর শবে কদরে এবাদত এ ১ হাজার রাজ্য অপেক্ষাও উত্তম।
১৪)সম্মানিত
মুফাসিরগন বলেন এ রাতে এত রহমত আর রহমত যে সাপ বিচ্ছু ও বিপদাপদ থেকে বান্দা
নিরাপত্তা লাভ করে।
১৫)এ
রাতে সিদরাতুল মুনতাহার ফেরেশতারা জিবরাইল ফেরেশতার নেতৃত্বে ৪টি পতাকা নিয়ে অবতিন
হয় আর ১টি পতাকা মদীনা শরীফ নবীর রওজার উপর, ১টি পতাকা বায়তুল্লাহর উপর, ১টি পতাকা
বায়তুল মুকাদ্দাস এর উপর ১টি পতাকা তুরে সিনার উপর উড়িয়ে দেয়া হয়।
১৬)এ
রাতে ফেরেশতারা প্রত্যেক মুমিনদের ঘরে গিয়ে তাদেরকে সালাম পেশ করে।
১৭)এ
রাতে যে সব বান্দা দোয়া করে তাদের দোয়ার সাথে ফেরেশতারা আমিন বলে।
১৮)এ
রাতে প্রত্যেকটা সাধারন লোককে ক্ষমা করে দেয়া হয়। তবে মদপানকারী, মাতাপিতার
অবাদ্য, আত্মীয়তার সম্পকছিন্নকারী, হিংসা পোষনকারীকে ক্ষমা করা হয় না।
১৯)তফসিরে
রুহুল বয়ানে উল্লেখ রয়েছে এ রাত হল নিরাপত্তাময়ী রাত, এ রাতে রোগ শোক, অনিষ্ট
বিপদাপদ থেকে নিরাপত্তা রয়েছে।
২০)এ
রাতে শয়তানের অনিষ্ট করারও ক্ষমতা থাকে না এবং এ রাতে যাদুটোনা কারীদের যাদু টোনাও
কাজ করে না। এ রাত শান্তি আর শান্তি (তফসিরে রুহুল বয়ান ১০ খন্ড)
শবে কদর কোন কোন তারিখ?
রাসুলুল্লাহ
(দ) রমজান মাসের শেষ দশকের বেজোড় রাতে শবে কদর তালাশ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন সে
সুবাদে এ বছর বাংলাদেশে আগামী ২২ এপ্রিল, ২৪ এপ্রিল, ২৬ এপ্রিল, ২৮ এপ্রিল, ৩০
এপ্রিল এবং মধ্যপ্রাচ্যে ২১,২৩,২৫,২৭,২৯ এপ্রিল শবে কদর পালন করতে হবে।
#৭ রাত বা ৭ তারিখ
আবদুল্লাহ
বিন আব্বাস (রা) এক মজলিশে বসা ছিলেন সেখানে হযরত ওমর (রা) প্রশ্ন করলেন কে আছ যে
বলবে লাইলাতুল কদর কি? প্রত্যেকে নিজ নিজ মতামত পেশ করলেন
আবদুল্লাহ
বিন আব্বাসকে প্রশ্ন করলেন হে আবদুল্লাহ বিন আব্বাস আপনি কেন বলছেন না? তখন
আবদুল্লাহ বিন আব্বাস জবাব দিলেন হে আমিরুল মুমিনিন আমি বয়সে ছোট তাই বলাটা পছন্দ
করছিনা, তবে যদি আপনি অনুমতি দেন আমি শবে কদরের ব্যপারে কিছু বলতে পারি।
তাঁকে
অনুমতি দিলে তিনি বলেন-
#
(ইন্নাল্লাহা বিতরুন ইউহিব্বুল বিতরা) আল্লাহ বেজোড় তিনি বেজোড়কে পছন্দ করেন,
#আল্লাহ
দুনিয়া বানিয়ছেন ৭ দিনে
#সৃষ্টির
সেরা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন ৭ম দিনে
#আল্লাহ
যত রিজিক সৃষ্টি করেছেন ৭ম দিন
#আল্লাহ
আসমানও বানিয়েছেন ৭টি
#আল্লাহ
জমিনও বানিয়েছেন ৭টি
#আল্লাহ
কুরআনে যে সাবউল মাসানি সবচেয়ে স্পেশাল সুরা নাজিল করেছেন তাতেও ৭টি আয়াত (সুরা
ফাতেহা)
#কুরআন
৭ প্রকার সম্পর্কের জিকির করেছেন যাদের সাথে বিয়ে করা যায়েজ নাই
#
কুরআনে ৭ প্রকার লোকের বেরাছত বয়ান করেছেন
#
মানুষ আল্লাহকে যখন সিজদা করে ৭টি অংগের মাধ্যমে সিজদা করে
#মানুষ
হজ্ব ও ওমরাতে বায়তুল্লাহর চক্কর দেয় ৭ বার
#
সাফা মারওয়ায় সাঈ করে ৭ বার
#
শয়তানকে পাথর মারে ৭টি করে
#
আল্লাহ তায়ালা শবে কদরও রেখেছেন আখেরী ১০ রাত থেকে ৭ রাতে।
আবদুল্লাহ
বিন আব্বাস (রা) এর এই কথা শুনে হযরত ওমর (রা) আশ্চর্য্য হয়ে গেলেন, বললেন হে
বাচ্চা এটা সে কথা যা তুমি ছাড়া আর কেহ বয়ান করেনি।
কদরের
প্রস্তুতি:
রাসুলুল্লাহ
(দ) এর সাহাবী তাবেয়ী ও সালফে সালেহিন কদরের জন্য প্রস্তুতি কিভাবে নিতেন? ১)গোসল করা: তারা
এবাদতে একাগ্রতার জন্য রাতের শুরুতে গোসল করতেন।
যেমন
ইবনে জরির বয়ান করেন-
(কানু
এয়াসতাহিব্বুনা এয়াগতাছিলু কুল্লা লাইলা)
সলফে
সালিহিন প্রতি রাতে গোসল করা পছন্দ করতেন।
২) খুশবু লাগানো: এরপর খুশবু লাগাতেন, কারন এ রাতে আল্লাহর নুরানি ও মুকাদ্দাস
ফেরেশতারা মোসাফাহা করবেন, সে জন্য এমন অবস্থায় হওয়া উচিত যাতে ফেরেশতাদের কোন
কষ্ট না হয়।
৩) উত্তম পোষাক পরিধানঃ হাম্মাদ ইবনে সালমা বয়ান করেন - ছাবেতুল বনানি যিনি হযরত আনাস
(রা) এর সাগরেদ, তিনি সবচেয়ে উত্তম পোষাক এই কদরের উদ্দেশ্যে পরিধান করতেন আর
মসজিদে খুশবুদার করতেন, আর এই আশায় আল্লাহর সামনে দোয়াতে লিপ্ত হয়ে যেতেন, কখনো
নফল নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন, কখনো জিকির আযকারে লিপ্ত হয়ে যেতেন,
৪) বেশী বেশী দোয়া করাঃ এই রাতে বেশী বেশী দোয়া করা উচিত সে জন্য সুফিয়ান সওরী (রহ) বলতেন
(আদ্দোয়াউ ফি তিলকাল ল্লায়লা আহাব্বু ইলায়্যা মিনাস
সালাহ) এ রাতে বেশী বেশী দোয়া করা বেশী বেশী নফল নামাজ
থেকে বেশী ভালো লাগে,
৫)দোয়া করা- সিজদার দোয়াঃ ইবনে রজব (রহ) ফরমান এ রাতে এমন সব দোয়া করা উচিত যা নামাজে করা
হয়, অর্থ্যাৎ নফল নামাজ পড়বে আর সে নামাজের রুকু সিজদাতে বেশী বেশী তাসবিহ পড়বে
এবং সিজদাতে গিয়ে দোয়া করবে তা নামাজ ছাড়া দোয়ার চেয়েও আফযল হবে- যেমন
৬) সিজদার দোয়াঃ
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু
আনহু বলেন, সিজদায় বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ দোয়াটিও পাঠ করতেন-
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি কুল্লাহু দিক্কাহু ওয়া ঝুল্লাহু
ওয়া আউয়ালাহু ওয়া আখিরাহু ওয়া আলানিয়্যাতাহু ওয়া সিররাহু।’ (মুসলিম, মিশকাত)
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি আমার ছোট-বড়, পূর্বের-পরের
এবং প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সকল গোনাহ মাফ করে দাও।
৭)সিজদার
২য় দোয়া : উচ্চারণ
: আল্লাহুম্মা ইন্নি আ উজু বি-রিদাকা মিন সাখাতিকা ওয়া বি-মুআফাতিকা মিন
উকুবাতিকা ওয়া আউজুবিকা মিনকা লা উহসি ছানাআন আলাইকা আংতা কামা আছনাইতা আলা
নাফসিকা। (মুসলিম, মিশকাত)
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তোমার সন্তুষ্টির মাধ্যমে তোমার অসন্তুষ্টি হতে আশ্রয়
চাই। আর তোমার শাস্তি হতে পরিত্রাণ চাই। তোমার প্রশংসা করে শেষ করা যায় না। তুমি
সেই প্রশংসার যোগ্য, যেরূপ তুমি নিজেই করেছ।
’
৮)ধীর স্থিরভাবে নামাজ পড়া: শুধু দ্রুত রাকাত বৃদ্ধি করার চাইতে নামাজ লম্বা লম্বা কেরাত,
লম্বা লম্বা রুকু সিজদার মাধ্যমে করাই আফযল,
৯)
গারাইবুল কুরআন ১৮৭ পৃষ্ঠায় একটি দোয়ার কথা উল্লেখ আছে যা ৩ বার পাঠ করবেন ( লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল হালিমুল কারিম, সোবহানাল্লাহে রাব্বিস
সামাওয়াতিস সাবয়ে ওয়া রাব্বিল আরশিল আযিম)
অর্থাৎ
সহনশীল ও দয়ালা আল্লাহ ব্যতিত এবাদতের উপযোগী আর কেউ নাই, আল্লাহ তায়ালা পবিত্র
যিনি সপ্ত আসমান ও আরশে আযিমের মালিক ও প্রতিপালক।
১০)এশা
ও ফজর সারা বছর পরবেন তবে রমজানের শেষ ১০ দিন এশার ও ফজরের নামাজ জামাত সহকারে
পড়াটা কোনভাবেই ছারবেন না, কেননা মুসলিম শরীফে 656 নং হাদীস নবী করিম (দঃ) এরশাদ
করেন যে ব্যক্তি এশার নামাজ জামায়াত সহকারে পরল সে যে অধেক রাত জাগ্রত থেকে এবাদত
করল। যে ব্যক্তি ফযর জামায়ত সহকারে পরল সে যেন পুরা রাত এবাদত করল।
১১)
শবে ক্বদরের রাতে ৭ বার সুরা ক্বদর তেলাওয়াত করবেন- নুজহাতুল মাজালিশ নামক কিতাবের
১ম খন্ডের ২২৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে, হযরত আলী (রাঃ) বলেন যে ব্যক্তি শবে কদরে
সুরা ক্বদর ৭ বার পাঠ করবে তাকে আল্লাহ তায়ালা সব ধরনের বালা মসিবদ হতে নিরাপত্তা
দান করেন।৭০ হাজার ফেরেশতা তার জন্য জান্নাতের জন্য দোয়া করেন।
১২)
তিরমিযি শরীফের ৩৫২৪ নং হাদীস উম্মেহাতুল মুমিনিন আয়শা (রাঃ) শবে কদরের দোয়া
সম্পকে প্রশ্নের জবাবে নবী করিম (দঃ) এরশাদ করেন এভাবে দোয়া কর (আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুব্বুন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নি) অথ- হে আল্লাহ নিশ্চয়ই তুমি ক্ষমাশিল তুমি ক্ষমা পছন্দ কর তাই
আমাকে ক্ষমা কর।
১৩)
এ রাতে বেশী বেশী নফল এবাদত করবেন ২ রাকাত নিয়ত করে যত সম্বব নফল আদায় করবেন, যে
কোন সুরা দিয়ে এ নফল পড়া যাবে।
রমযানের
শেষ ১০ দিন প্রতি রাতে শবে কদরের নিয়তে ২ রাকাত অন্তত পরে নিবেন। আর ২৭শে রমজান
রাতে সারারাত জাগ্রত থেকে এবাদত করবেন।
হযুর
(দঃ) রমজানের শেষ ১০ দিন যখন আসত তখন তিনি এবাদতের জন্য পুন প্রস্তুতি নিয়ে নিতেন।
তিনি সেগুলোতে নিজে জাগ্রত থাকতেন আর পরিবারের সদস্যদেরও জাগাতেন।(ইবনে মাজাহ
১৭৬৮)
১৪)
শবে কদর এর ৫ রাতে, সহজ কয়েকটি আমল করবেন
ক)
অন্তত ১টি টাকা হলেও সদকা করবেন তাহলে ৮৩ বছর ৪ মাস ১ টাকা দান করার সাওয়াব পাবেন
খ)
অন্তত ২ রাকাত শবে কদরের নিয়তে নামাজ পড়বেন
গ)
এশারের নামাজ ও ফজরের নামাজ জামায়াতে পড়বেন
ঘ)
৩ বার সুরা এখলাস পাঠ করবেন তাহলে ১০০০ মাস পবিত্র কুরআন খতমের সাওয়াব লাভ করবেন।
ঙ)
১ বার দরুদ শরীফ পাঠ করবেন ১০০০ মাস দরুদ পাঠ করার সাওয়াব লাভ করবেন
চ)গুনাহ
মাফ চেয়ে দোয়া করবেন (আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আপওয়া ফাফু আন্নি) হে
আল্লাহ তুমি ক্ষমাকারী গুনাহ ক্ষমা করতে ভালবাস আমাকে ক্ষমা কর।
১৫)
নফল নামাজের মাঝে মাঝে কোরান তেলাওয়াত করবেন কুরআন তেলাওয়াত না পারলে বেশী বেশী
সুরা এখলাস পড়বেন
১৬)
অথবা নফল নামাজের মাঝে মাঝে বসে দরুদ শরীফ পাঠ করবেন আর নিজের জন্য পরিবার পরিজন
এর জন্য ও মুসলিম জাতির জন্য দোয়া করবেন।
قَالَ حَدَّثَنَا
أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "
مَنْ صَلَّى عَلَىَّ صَلاَةً وَاحِدَةً صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ عَشْرَ صَلَوَاتٍ
وَحُطَّتْ عَنْهُ عَشْرُ خَطِيئَاتٍ وَرُفِعَتْ لَهُ عَشْرُ دَرَجَاتٍ "
.
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে
ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ পাঠ করবে আল্লাহ তা’আলা তার উপর দশবার রহমত নাযিল
করবেন, তার দশটি শুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হবে এবং তাঁর জন্য দশটি মর্যাদা উন্নীত করা
হবে। (সুনানে নাসাই ১৩০০)
১৭)
যাদের জীবনে অনেক কাজা নামাজ রয়েছে তারা এ রাতে কাজা নামাজসমুহ ধারাবাহিক ভাবে
আদায় করে নিতে পারেন
# ওয়াইল উপত্যকা: যারা ইচ্ছাকৃত নামাজ কাজা করে তারা ওয়াইল নামক জাহান্নামের
উপত্যকার উপযুক্ত, যে উপত্যকা থেকে জাহান্নামও পানাহ চায়
#মাথা দ্বিখন্ডিত: নবী (দ) বলেন স্বপ্নে জিবরাইল ও মিকাইল ফেরেশতা একটি স্থানে নিয়ে
গেলেন,তাতে দেখতে পেলাম ১ ব্যক্তি শুয়ে আছে আরেক ব্যক্তি ১টি পাথর দিয়ে একের পর এক
তার মাথাকে দ্বিখন্ডিত করছে। সে সাজা প্রাপ্ত ব্যক্তির ব্যপারে প্রশ্ন করলে
ফেরেশতারা বলল যে কুরআন হিফজ করে ভুলে গেছে এবং ফরয নামাজের সময় ঘুমিয়ে পড়তো তার
এই শাস্তি কিয়ামত পযন্ত চলবে। (বুখারী ১৩৮৬,৭০৪৭)
জুমাতুল বিদাতে উমরী কাজা
রমজানের
শেষ জুমাতে অনেকে ২ রাকাত নামাজ পড়ে উমরী কাজার নিয়তে আর মনে করে তার জীবনের সব
কাজা নামাজ মাফ হয়ে গেছে এটা ভুল ধারনা
১৮)
সালাতুত তাসবিহ আদায় করবেন
সালাতুল
তাসবিহ নামাজের নিয়ম!!!
সালাতুল
তাসবিহ নামাজের নিয়মঃ সালাতুত তাসবিহ হাদীস শরীফে ‘সালাতুত তাসবীহ’ নামাযের
অনেক ফযীলত বর্ণিত আছে। এই নামায পড়লে পূর্বের গুনাহ বা পাপ মোচন হয় এবং অসীম
সওয়ার পাওয়া যাবে। রাসূলুল্লাহ সালল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় চাচা হযরত আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহুকে
এই নামায শিক্ষা দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে, এই নামায পড়লে আল্লাহ আয-যাওযাল আপনার
সকল গুনাহ মাফ করে দিবেন।
তিনি
বলেন, চাচা জান ! আপনি যদি পারেন, তবে দৈনিক একবার করে এই নামায পড়বেন। যদি দৈনিক
না পারেন, তবে সপ্তাহে একবার পড়বেন। যদি সপ্তাহে না পারেন, তবে মাসে একবার পড়বেন।
যদি মাসে না পারেন, তবে বছরে একবার পড়বেন। যদি এটাও না পারেন, তবে সারা জীবনে
একবার হলেও এই নামায পড়বেন ।
সালাতুল
তাসবিহ নামাজের নিয়মঃ চার রকাত । প্রতি রকাতে সূরা ফাতিহার পর, যে কোন সূরা পড়তে
পারেন। তবে এই নামাযে বিশেষত্ব এই যে, প্রতি রকাতে ৭৫ বার করে, চার রকাতে মোট ৩০০
বার তাসবীহ পড়তে হবে।
তাসবীহঃ
سُبْحاَنَ الله وَالْحَمدُ للهِ وَلآَ اِلَهَ اِلاَّاللهُ وَاللهُ اَكْبرُ উচ্চারণঃ সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়া লা-ইলাহা
ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার।
@
১ম রাকাত এ সানা পড়ার পরে তাসবীহ টি ১৫ বার পড়তে হবে
@
তারপর স্বাভাবিক নিয়মে সুরা ফাতিহা ও অন্য আরেকটি সুরা অথবা অন্তত তিন আয়াত পড়ার
পরে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে ।
@
এরপর রুকুতে গিয়ে রুকুর তাসবীহ পরার পরে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে
@
এরপর রুকু হতে দাড়িয়ে গিয়ে “রাব্বানা লাকাল হামদ” পড়ার পরে তাসবীহ টি ১০
বার পড়তে হবে ।
@
এরপর সিজদায় গিয়ে সিজদার তাসবীহ পরে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে ।
@
প্রথম সিজদা থেকে বসে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে ।
@
এরপর আবার সিজদায় গিয়ে সিজদার তাসবীহ পরে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে ।
@
তারপর একই ভাবে ২য় রাকাত পড়তে হবে, ( সুরা ফাতিহা পড়ার আগে তাসবীহ টি ১৫ বার পড়তে
হবে ।)
@
অতপর ২য়রাকাত এর ২য় সিজদার পর “আত্তহিয়্যাতু…”, দরুদ আর দোয়া পড়ার পরে সালাম না ফিরিয়ে , ২য় রাকাত এর মতো ৩য় এবং
৪থ রাকাত একই প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে (তাসবীহ টি ১৫ বার পড়ে স্বাভাবিক নিয়মে সুরা
ফাতিহা ও অন্য আরেকটি সুরা পড়তে হবে) ।
১৯)
শেষ রাতে তাহাজ্জুদের নামায পড়বে, যা দ্বারা মহান আল্লাহ পাক এর নৈকট্য হাছিল হয়।
হাদিসে
ইরশাদ হয়েছে, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ ওই ব্যক্তির ওপর রহমত নাজিল করেন,
যিনি রাতে নিদ্রা থেকে জেগে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন এবং তার স্ত্রীকে নিদ্রা
থেকে জাগিয়ে দেন। অতঃপর তিনি (তার স্ত্রী) তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন। এমনকি যদি
(স্ত্রী) ঘুম থেকে জাগ্রত হতে না চান, তাহলে তার মুখে পানি ছিটিয়ে দেন।’ -আবু
দাউদ ও নাসাঈ
তাহাজ্জুদ
নামাজ রাত দ্বিপ্রহরের পরে পড়তে হয়। মধ্যরাতে যখন লোকেরা গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন।
সুবহে সাদিক হয়ে গেলে এ নামাজ আর পড়া যায় না। অবশ্য তাহাজ্জুদ নামাজ রাত
দ্বিপ্রহরের আগে পড়লে সওয়াব কম পাওয়া যায়। রাতের শেষাংশে পড়লে সওয়াব বেশি
পাওয়া যায়।
তাহাজ্জুদ
নামাজ চার রাকাত পর্যন্ত পড়া যায়। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) তাহাজ্জুদ নামাজ কখনো
৪ রাকাত, কখনো ৮ রাকাত এবং কখনো ১২ রাকাত পড়েছিলেন। তবে দুই রাকাত-দুই রাকাত করে
তাহাজ্জুদ নামাজ কমপক্ষে ৪ রাকাত আদায় করা উচিত।
২০)
বেশী বেশী এসতেগফার পাঠ করবেন যা দ্বারা গুনাহ সমুহ মাফ হয়
আমাদের
নবী (সা.) অধিক পরিমাণে এস্তেগফার করতেন, যদিও আল্লাহ তাঁর পূর্বাপর সবকিছু ক্ষমা
করে দিয়েছেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) মৃত্যুর আগে
বেশি বেশি বলতেন, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া
বিহামদিহি, আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।’ (বোখারি ও মুসলিম)। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলের চেয়ে বেশি আর
কাউকে আমি ‘আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি’ বলতে দেখিনি। (নাসাঈ)। সাওবান
(রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজের সালামের পর তিনবার
‘আস্তাগফিরুল্লাহা’ বলতেন। (মুসলিম)।
২১)
কবরস্থান যিয়ারত করা, নিজের পিতা মাতার কবরের যেয়ারত করা তাদের মাগফেরাতের জন্য
দোয়া করা,
২২)
গরিব-মিসকীনকে দান ছদকা করবেন ও লোকজনদের খাদ্য খাওয়ানো।
দান-ছাদকা
করলে সম্পদ কমে না: আবু কাবশা আল আনমারী (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি শুনেছেন
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
”
مَا نَقَصَ مَالُ عَبْدٍ مِنْ صَدَقَةٍ
“ছাদকা
করলে কোন মানুষের সম্পদ কমে না।” (তিরমিযী, ইবনে মাজাহ)
২৩)
ফযরের নামাজ মসজিদের জামায়াতের সাথে আদায় করবেন, অনেকে সারা রাত নফল এবাদত করে
ফজরের নামাজ পড়ে না এতে কোন লাভ নাই। সারা রাতের জাগ্রত থাকাটা বৃথা হয়ে যাবে।
তাই
আসুন, এই বরকতময় রজনীতে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে আমরা আমাদের গোনাহ
মাফের সর্বোচ্চ সুযোগ কাজে লাগাই। রাতে ইবাদত-বন্দেগিতে নিজেকে নিয়োজিত করুন।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে সব মানুষের কল্যাণের জন্য প্রার্থনা করুন।
নিজের জন্য পরিবার পরিজনের জন্য তথাপি বিশ্বের সকল মুসলিমের জন্য দোয়া করুন।
আল্লাহ
সকলকে শবে ক্বদর নসিব করুন আমিন।
প্রঃ
জীবনে ১০/২০ বার শবে কদর পেলে কত বছরের এবাদত হবে?
-
যদি কেহ জীবনে ১০ বার শবে কদর লাভ করতে পারে তাহলে সে কাল হাশরের মাছে ৮৩৪ বছরের
এবাদত নিয়ে উঠবে, আর যদি ২০ বার শবে কদর পায় তাহলে ১৬৬৮ বছরের এবাদত নিয়ে উঠবে।
প্রঃ
এ রাতে সম্পূণ কুরআন কোথায় নাজিল হয়েছে?
- শবে কদরের রাতে সম্পূণ কুরআন লওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আসমানে
বায়তুল ইজ্জতে একত্রে নাজিল করেন এবং আবার দীঘ ২৩ বছরে প্রয়োজন মত হযরত জিবরাইল
(আ) এর মাধ্যমে সম্পূণ কুরআন আমাদের নবীর কাছে নাজিল হয়।
প্র: এই রাতে ফেরেশতারা কাদের সাথে মুসাফাহা ও সালাম করেন না
-
শবে কদরের রাতে হযরত জিবরাইল (আ) এর নেতৃত্বে ফেরেশতারা নাজিল হয় এবং প্রত্যেক
মুসলমান নর নারীকে সালাম বলে। কিন্তু যেসব ঘরে
(১)
মদপানকারী (২) আত্মিয়তার সম্পক ছিন্নকারী (৩) মা বাবার নাফরমান (৪) হিংসুক থাকে তাদেরকে
সালাম করেন না।
প্রঃ শবে কদর নিদৃষ্ট নয় কেন?
-
শবে কদর এর তারিখ বলার জন্য একদিন যদি এই মহান রাতটি নিদৃষ্ট থাকত আর জেনে শুনে
কেহ যদি এর কদর না করত তাহলে তার উপর আল্লাহর গযব নাজিল হত।
-
ইমাম ফখরুদ্দীন রাযি (রহ) তফসিরে কবীরে লিখেন
#আল্লাহ নিজের সন্তুষ্টিকে সকল নেক কাজের ভিতর লুকিয়ে রেখেছেন যাতে বান্দা
সব নেক কাজই করে
#নিজের ক্রোধকে গুনাহর কাজগুলোর মধ্যে গোপন রেখেছেন যাতে সব গুনাহ থেকে
মানুষ বেঁচে থাকে।
#আপন ওলীদেরকে সাধারণ মানুষের
মধ্যে লুকিয়ে রেখেছেন যাতে মানুষ সকল মানুষকে সম্মান করে
#দোয়া কবুল হওয়াকে দোয়া সমুহের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছেন যাতে মানুষ সব ধরনের
দোয়া করে
#ইসমে আযমকে নিজের নাম সমুহের মধ্যে লুকায়িত রেখেছেন যাতে সমস্ত নাম সমুহের
জিকির করে।
#সালাতুল ওসতা বা মধ্যবতী নামাযকে নামাজগুলির মধ্যে গোপন রেখেছেন যাতে
নামাযগুলোর প্রতি সকলে যত্নবান হয়
#মৃত্যুর সময়কে গোপন রেখেছেন যাতে বান্দা সদা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকে
#তেমনি শবে কদরকে গোপন রেখেছেন যাতে রমযানের সমস্ত রাতের প্রতি সম্মান
দেখায়।
প্রশ্ন:
এতেকাফ করলে কি লাভ?
#এতেকাফ করলে নিশ্চিত শবে কদর নসিব হবে কারন বান্দা যখন
এতেকাফের নিয়তে মসজিদে প্রবেশ করে যতদিন সে এতেকাফে থাকবে যতক্ষন এতেকাফে থাকবে
ততক্ষন সে এবাদতকারী হিসেবে গন্য হবে, সেখানে সে খাবার খেলে সেটাও এবাদত, ঘুমালে
সেটাও এবাদত বলে গন্য হবে।
# বাহিরের নেকীর সাওয়াবঃ
এতেকাফে থাকলে বাহিরের গুনাহ সমুহ থেকে বেঁচে থাকা যায়, আর সে এতেকাফে থাকার কারনে
বাহিরের কোন নেক আমল যদি করতে না পারে যেমন জানাযার নামাজে শরীক হতে পারলনা কিন্তু
এতেকাফে থাকার কারনে আল্লাহ তায়ালা তাকে সে সব নেক আমলেরর সাওয়াবও দান করেন।
#২ হজ্ব ২ ওমরার সাওয়াব
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,
(মান এতেকাফা ফি রামাদানা কানা কাহাজ্জাতাইত ওয়া ওমরাতাইন)
যে
ব্যক্তি রমাযান মাসে দশ দিন ইতিকাফ করবে, তার এই ইতিকাফ নেকী ও শ্রেষ্টত্বের
বিবেচনায় দুটি হজ¦ ও দুটি ওমরার সমপর্যায়ের হবে। [শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস:
৩৬৮০, ৩৬৮১]
# কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে
وَعَهِدْنَا إِلَى إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ أَن طَهِّرَا
بَيْتِيَ لِلطَّائِفِينَ وَالْعَاكِفِينَ وَالرُّكَّعِ السُّجُودِ
-‘আমি ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার ঘরকে
[বায়তুল্লাহকে] পবিত্র কর তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য।’
(সূরা বাকারা/১২৫)
উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর দুই জন জলীলুল কদর ও বড় মাপের নবীকে বায়তুল্লাহ
পুন:নিমার্ণের পর পরই ইতিকাফকারীদের জন্য তা পবিত্র করার নির্দেশ দিয়েছেন। এর
দ্বারাই মূলত ইতিকাফের গুরুত্ব ও মহত্ব আন্দায করা যায়।
#এতেকাফ আমাদের নবীজির সুন্নত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আমল দ্বারা। তিনি মদীনায় আগমনের
পর অন্য অনেক আমল মাঝে-মধ্যে ছেড়ে দিলেও ইন্তেকাল পর্যন্ত ইতিকাফের আমল কোন সময়
ছাড়েননি।
عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ
النَّبِيَّ كَانَ يَعْتَكِفُ الْعَشْرَ الأَوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ حَتَّى
تَوَفَّاهُ اللهُ ثُمَّ اعْتَكَفَ أَزْوَاجُهُ مِنْ بَعْدِهِ
আম্মাজান আয়েশা রা. বলেন, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
মৃত্য পর্যন্ত রমাযানের শেষ দশকের ইতিকাফ করেছেন। এরপর তার পূণ্যবতী জীবন
সঙ্গিনীগণও ইতিকাফ করেছেন। [বুখারী: হাদীস, ২০২৬; মসলিম: হাদীস, ১১৭২]
- এতেকাফ থেকে বের হয়ে মানুষের উপকার করা
সাহাবী ইবনে আব্বাস রা. মসজিদে নববীতে ইতিকাফ অবস্থায় ছিলেন।
এমতাবস্থায় জনৈক ব্যক্তি এসে তাঁকে সালাম দিয়ে চুপ করে বসে গেলন। তাকে দেখে ইবনে
আব্বাস রা. বললেন, ব্যাপার কি? তোমাকে খুব বিষন্ন ও চিন্তাক্লিস্ট মনে হচ্ছে ।
তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূলের চাচাত ভাই! হাঁ, নিশ্চয় আমি চিন্তিত ও পেরেশান। কারণ
জনৈক ব্যক্তির কাছে আমি ঋণী। এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর
রওজার দিকে ইশারা করে বললেন, ঐ কবর ওয়ালার ইজ্জতের শপথ, সেই ঋণ আদায়ের সামর্থ আমার
নেই। এ কথা শুনে ইবনে আব্বাস রা. বললেন, আমি কি তোমার জন্য তার কাছে সুপারিশ করব?
লোকটি বললেন, আপনি যা ভাল মনে করেন। এ কথা শুনে ইবনে আব্বাস রা. তৎক্ষণাত জুতা পরে
মসজিদের বাহিরে এলেন। এটি দেখে লোকটি বললেন, হযরত, আপনি হয়তো ইতিকাফের কথা ভুলে
গেছেন। তিনি বললেন, না; ভুলি নাই। (তখন তার চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরছিল) বেশি দিনের কথা
নয়, (মহানবীর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রওজার দিকে ইশারা করে বললেন) আমি এই
কবরওয়ালার নিকট শুনেছি, তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি নিজ মুসলিম ভাইয়ের কোন হাজত
পুরণার্থে রওনা হয় এবং তাতে সে চেষ্টা করে, তা তার দশ বছর ইতিকাফ করার চেয়েও উত্তম
হয়। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একদিন ইতিকাফ করে আল্লাহ তাআলা তার ও
জাহান্নামের মাঝে তিন খন্দক দূরত্ব সৃষ্টি করে দেন, যার দূরত্ব আকাশ ও জমীনের
মধ্যবর্তী স্থান হতেও বেশি। [শুআবুল ঈমান, বায়হাকী: ৩৬৭৯]
-এতেকাফের
প্রকারভেদ
এতেকাফ
৩ প্রকার
১) ওয়াজিব - যদি কেহ মান্নত করে আমার অমুক কাজ হলে আমি ১দিন এতেকাফ করব
যদি সে কাজ সফল হয় তখন তার জন্য ১দিন এতেকাফ করা ওয়াজিব আর সে এতেকাফ করার জন্য
আসরের নামাজ পড়ে মসজিদে ঢুকে যাবে আর রাতে সেহেরী খাবে এবং পরের দিন রোজা রাখবে আর
মাগরীব পড়ে বের হয়ে যাবে।
২) সুন্নত মুয়াক্কাদা আলাল কেফায়াহ- যদি এলাকা থেকে ১ জনও করে তাহলে সকলের দায়িত্ব
আদায় হয়ে যাবে, কেহ না করলে সকলেই গুনাহগার হবে। ২০ রমজান আসরের পর মসজিদে ঢুকবে
ঈদের চাঁদ দেখা গেলে বের হয়ে যাবে।
এতেকাফের
নিয়ত- আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রমযানুর মুবারকের আখেরী দশ দিনের সুন্নত এতেকাফ
এর নিয়্যত করছি।
৩) নফল এতেকাফ- যখনই মসজিদে ঢুকবেন এতেকাফের নিয়ত করবেন যতক্ষন মসজিদে থাকবেন কিছু
পড়ুন বা না পড়ুন সাওয়াব পাবেন। যখন মসজিদ থেকে বের হয়ে আসবেন তখনই এতেকাফ শেষ হয়ে
যাবে।
নিয়ত-
(নাওয়াতু সুন্নাতিল এতেকাফ)
-এতেকাফে
সতর্কতা
এতেকাফ
করার মকসদ হল দুনিয়াদারী থেকে সব ধরনের লেনদেন কেটে একমাত্র আল্লাহর সাথে জোড়া
লাগানো, তাই এতেকাফে বসে কথাবার্তা বলা, মোবাইলে ব্যস্ত থাকা, হাসাহাসি করা উচিত
নয়
মোল্লা আলী কারী বলেন (আল
কালামুল মুবাহু ফিল মাসজিদি মাকরুহুন এয়াকুলুল হাসানাত) অর্থ্যাৎ মসজিদে মুবাহ কথাবার্তা বলা মাকরূহ, নেকীগুলোকে গ্রাস করে
ফেলে।
আনাস
(রা) বলেন নবীজি এরশাদ করে (আদ্দাহাকু ফিল মাসজিদি জুলমাতুন
ফিল কাবারী) মসজিদে হাসার দ্বারা কবরে
অন্ধকার নেমে আসে। (আল জামেউস সগীর ৩২২ পৃ)
আল্লাহ
তায়ালা আমাদেরকে বদরী সাহাবীদের উছিলায় ক্ষমা করুন, তাদের রূহানি ফয়েজ আমাদের দান
করুন, তাঁদের উছিলায় আমাদের যাবতীয় নেক মকসদ পুরণ করুন। আগামী ২২,২৪,২৬,২৮,৩০
এপ্রিল শবে কদর তালাশ করার তৌফিক দান করুন এবং এতেকাফের মাধ্যমে নিশ্চিত শবে কদর
লাভ করার তৌফিক দান করুন।আমিন
১। রমজান হল ঢাল - জাহান্নাম
থেকে বাঁচানোর ঢাল
নাসাঈ
শরীফের ২২৩৩ নং হাদিস
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم "
الصِّيَامُ جُنَّةٌ
" .
রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ঢাল স্বরূপ।
২টি কারনে ঢাল ছিদ্র হয়ে যায়:
ঢাল জাহান্নাম থেকে বাঁচানোর ঢাল তবে এই ঢাল ২টি কারনে ছিদ্র
হয়ে যায়। (১) মিথ্যার মাধ্যমে (২) গীবতের মাধ্যমে। রোজা রাখা অবস্থায় যদি আমরা মিথ্যা
বলি আর গীবতে লিপ্ত হয়ে যায় তাহলে কেয়ামতের ময়দায়ে সে ছিদ্র ঢাল কি আমাদেরকে জাহান্নামের
আগুণ থেকে বাঁচাতে পারবে?
তাই আমাদের উচিত রোজা রেখে মিথ্যা কথা এবং গিবত থেকে বেঁচে
থাকা যাতে ছিদ্রহীন ঢাল নিয়ে আমরা কিয়ামতের ময়দানে উঠতে পারি।
১।
মৃত ভায়ের গোস্ত খাওয়ার মত ভয়াবহ গুনাহ
সুরা হুজরাত ১২ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন
وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ
তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা
না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা
তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। [সুরা
হুজুরাত - ৪৯:১২]
# যারা
রোজা রেখে গীবত করবে তাদের ক্ষুধা বেশী লাগবে, কারন গীবতের কারনে তার পেটে যে
সাহরী খেয়েছিল তা আর বরকতময় সাহরী থাকে না বরং তা পঁচা দুগন্ধময় হয়ে যায়।
২। গীবতের কারনে কবর আযাব
হয়
ইবনে মাজার ৩৪৯ নং
হাদিস
مَرَّ النَّبِيُّ ـ صلى
الله عليه وسلم ـ
بِقَبْرَيْنِ فَقَالَ
" إِنَّهُمَا
لَيُعَذَّبَانِ وَمَا يُعَذَّبَانِ فِي كَبِيرٍ
أَمَّا أَحَدُهُمَا
فَيُعَذَّبُ فِي الْبَوْلِ وَأَمَّا الآخَرُ
فَيُعَذَّبُ فِي الْغِيبَةِ "
.
আবূ
বাকারহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি
কবর অতিক্রম করার সময় বলেনঃ নিশ্চয় এই দু কবরবাসীকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে এবং তাদেরকে
কোন কঠিন অপরাধের জন্য শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। এদের একজনকে পেশাবের (অসতর্কতার)
কারণে শাস্তি দেয়া হচ্ছে এবং অপরজনকে গীবত করার কারণে শাস্তি দেয়া হচ্ছে।
৩।সবচেয়ে বড় সুদ হল গীবত করা
আবু দাউদ শরীফের ৪৮৭৬
নং হাদিস
عَنْ سَعِيدِ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ النَّبِيِّ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّ
مِنْ أَرْبَى الرِّبَا
الِاسْتِطَالَةَ فِي عِرْضِ الْمُسْلِمِ بِغَيْرِ
حَقٍّ
সাঈদ
ইবনু যায়িদ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
অন্যায়ভাবে কোনো মুসলিমের (গীবত করে তোহমত দিয়ে) মানসম্মানের হস্তক্ষেপ করা ব্যাপক
তর সুদের অন্তর্ভুক্ত (মহাপাপ)
৪।
যে গীবত করে আল্লাহ তাকে নিজ ঘরে হলেও অপমানিত অপদস্থ করে ছাড়বেন
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَا مَعْشَرَ مَنْ آمَنَ بِلِسَانِهِ، وَلَمْ يَدْخُلِ
الْإِيمَانُ قَلْبَهُ،
لَا تَغْتَابُوا الْمُسْلِمِينَ،
وَلَا تَتَّبِعُوا عَوْرَاتِهِمْ،
فَإِنَّهُ مَنِ اتَّبَعَ عَوْرَاتِهِمْ يَتَّبِعُ
اللَّهُ عَوْرَتَهُ،
وَمَنْ يَتَّبِعِ
اللَّهُ عَوْرَتَهُ
يَفْضَحْهُ فِي بَيْتِهِ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হে সেসব লোক যারা কেবল মুখেই ঈমান এনেছে
কিন্তু ঈমান অন্তরে প্রবেশ করেনি! তোমরা মুসলিমদের গীবত করবে না ও দোষত্রুটি তালাশ
করবে না। কারণ যারা তাদের দোষত্রুটি খুঁজে বেড়াবে আল্লাহও তাদের দোষত্রুটি
খুঁজবেন। আর আল্লাহ কারো দোষত্রুটি তালাশ করলে তাকে তার তার ঘরের মধ্যেই অপদস্থ
করে ছাড়বেন
৫। মেরাজে নবীজি গীবতকারীর যে আযাব হতে দেখেছেন
আবু দাউদের ৪৮৭৮ নং
হাদিস
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَمَّا
عُرِجَ بِي مَرَرْتُ بِقَوْمٍ لَهُمْ
أَظْفَارٌ مِنْ نُحَاسٍ يَخْمُشُونَ وُجُوهَهُمْ
وَصُدُورَهُمْ، فَقُلْتُ:
مَنْ هَؤُلَاءِ يَا جِبْرِيلُ، قَالَ: هَؤُلَاءِ
الَّذِينَ يَأْكُلُونَ
لُحُومَ النَّاسِ،
وَيَقَعُونَ فِي أَعْرَاضِهِمْ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মি‘রাজের রাতে আমি এমন এক কওমের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলাম যাদের
নখগুলো তামার তৈরী এবং তা দিয়ে তারা অনবরত তাদের মুখমন্ডলে ও বুকে আচড় মারছে। আমি
বললাম, হে জিবরীল! এরা কারা? তিনি বললেন, এরা সেসব লোক যারা মানুষের গোশত খেতো
(গীবত করতো) এবং তাদের মানসম্মানে আঘাত হানতো।
৬। প্রতিদিন সকালে অঙ্গ প্রত্যঙ্গ জবানকে অনুরোধ করে
তিরমীজি শরীফের ২৪০৭ নং
হাদিস
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
الْخُدْرِيِّ، رَفَعَهُ
قَالَ "
إِذَا أَصْبَحَ ابْنُ آدَمَ
فَإِنَّ الأَعْضَاءَ
كُلَّهَا تُكَفِّرُ
اللِّسَانَ فَتَقُولُ
اتَّقِ اللَّهَ
فِينَا فَإِنَّمَا
نَحْنُ بِكَ فَإِنِ اسْتَقَمْتَ اسْتَقَمْنَا
وَإِنِ اعْوَجَجْتَ
اعْوَجَجْنَا "
.
আবূ
সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষ সকালে ঘুম হতে উঠার
সময় তার সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিনীতভাবে জিহবাকে বলে, তুমি আমাদের ব্যাপারে
আল্লাহ্ তা'আলাকে ভয় কর। আমরা তো তোমার সাথে সম্পৃক্ত। তুমি যদি সোজা পথে দৃঢ়
থাক তাহলে আমরাও দৃঢ় থাকতে পারি। আর তুমি যদি বাঁকা পথে যাও তাহলে আমরাও বাঁকা
পথে যেতে বাধ্য।
রমজানের ঢালকে বাঁচানোর
উপায়
বুখারী
শরীফের ৬০১৮ নং হাদিস
مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ
بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ
الآخِرِ فَلْيَقُلْ
خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ ".
যে লোক আল্লাহ ও শেষ দিনে বিশ্বাস করে, সে যেন ভাল কথা বলে,
অথবা চুপ করে থাকে।
আপনি রোজা রেখে বেহুদা কথাবার্তা থেকে বেঁচে থাকবেন কথা
বললেই ভালো কথাই বলবেন, নতুবা চুপ থাকবেন তাহলেই আপনি ঢালটিকে হেফাজত করতে পারবেন।
যদি বিগত দিনে গীবত করে ফেলেন তাহলে তওবা করে আগামী শবে
কদরের জন্য প্রস্তত হয়ে যান।
কোন মন্তব্য নেই