বয়ফ্রেন্ড বনাম বাবা, একটি অনুপ্রেরণামুলক গল্প, বাস্তব ঘটনা

 বয়ফ্রেন্ড বনাম বাবা, একটি অনুপ্রেরণামুলক গল্প, বাস্তব ঘটনা



মনোয়ার জামা হলেন ইন্ডিয়ার একজন মটিভেশনাল স্পিকার, তিনি এখন একজন প্রতিষ্ঠিত ধনাঢ্য লোক তিনি ইন্ডিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের সামনে একটি বক্তব্য রাখেন যে বক্তব্য শুনে হাজারো ছাত্র ছাত্রীর লাইফ চেইঞ্জ হয়েছে, আপনি শুনে দেখুন হয়ত আপনার লাইফও চেঞ্জ হতে পারে।

জনাব মনোয়ার জামা সাহেব নিজের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন-  আমার ঘটনা বলি; আমার পকেটে ১টি পয়সাও থাকতনা এমন খারাপ সময়ও কাটিয়েছি। আমার বাবার শারিরিক অনেক সমস্যা ছিল; প্রায় সময় নানান সমস্যার কারনে হাসপাতাল নিয়ে যেতাম। বাবাকে হাসপাতাল ভর্তি করে কত মানুষের কাছে যে হাত পেতেছি তার কোন হিসাব নাই। হাসপাতালের খরচ মিটাতে মানুষের দ্বারে দ্বারা ঘুরেছি। কারন তখন আমার কাছে টাকা ছিলনা।

 আজ আমার কাছে বাবার চিকিৎসা করানোর জন্য টাকা আছে, কিন্তু আমার বাবা আজ বেঁচে নাই। কারন আমি পয়সা কামাই করতে দেরী করে ফেলেছি।

 আপনারা এখন থেকেই খুব বেশী মেহনত করুন, পয়সা কামাই করুন, আপনার আব্বু আম্মুর শখগুলি পুরণ করুন, তাদেরকে দেশ বিদেশ ঘুরান, হজ্ব করান, ওমরা করান, ভালো ভালো জায়গায় নিয়ে যান।

 একবার আমার আব্বুকে মোটর সাইকেলে করে হাসপাতাল নিয়ে যাচ্ছিলাম, যখন একটি কেএফসি টাইপের রেস্টুরেন্টের পাশ দিয়ে যাচ্চিলাম আমার বাবা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, এই রেস্ট্রুরেন্টে কি পাওয়া যায়, আমি বুঝতে পারছি আমার বাবার ক্ষুধা লেগেছে, তাই আমাকে এই কথা জিজ্ঞেস করছে, কিন্তু তখন আমার পকেটে কোন টাকা পয়সা ছিলনা তাই বুকে ভিষন কষ্ট হয়েছিল, অথচ আমি তখন ২৫ বছরের যুবক, আমার পকেটে আমার বাবার জন্য ২৫ টাকা দিয়ে একটি বারগার কিনার পয়সা সেদিন ছিলনা। একবার ভাবুন কতটুকু কষ্ট তখন আমি অনুভব করেছিলাম? অথচ সে সময় মেহনত করে কামিয়াব হওয়ার কথা ছিল, পকেট ভর্তি টাকা থাকার কথা ছিল, কিন্তু আমার পকেটে একটা কানাকড়িও সেদিন ছিলনা।

 আমাদের অনেক ২০/২৫ বছরের যুবকের আজ একই অবস্থা, আমাদের যুবক যুবতী, ছাত্র ছাত্রীরা রোজগার করে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার চিন্তা করেনা, সে সময়টা তারা শুধু হিরো হিরোইন এর চর্চায়, মোবাইলে গেইম আর মুভি দেখায় মূল্যবান সময় নষ্ট করে ফেলে।

 সেদিন আমি কত কষ্ট পেয়েছি, অথচ সে সময় মাত্র ২৫ টাকায় আমার বাবাকে একটা বার্গার খাওয়াতে পারতাম, কিন্তু আমার পকেটে সেদিন ২৫ টাকা ছিলনা, আমি তখন আশা করছিলাম ইস আমার পকেটে যদি আজ ২৫ টাকা থাকত, তাহলে আমি আমার অসুস্থ বাবাকে ১টা বার্গার খাওয়াতে পারতাম।

 আজ আমার অনেক টাকা তাই আমি একটি এতিম খানায় নিয়মিত বাচ্চাদের খাবার খাওয়াই, কিন্তু তবুও আমার মনে শান্তি লাগেনা কারন সেদিন আমি আমার অসুস্থ বাবার জন্য সামান্য খাবারের ব্যবস্থা করতে পারি নাই।

 আজ আমার বাবা নাই কিন্তু আপনারা যারা শুনছেন বা এই আরটিক্যাল পড়ছেন আপনাদের কাছে আপনাদের আব্বু আছেন, তাই আজ থেকেই কিছু একটা করুন, মেহনত করুন, কামিয়াবির জন্য প্রচুর চেষ্টা করুন, আপনার আব্বু আম্মুকে খুশি দিন, তারা দেখতে চান আপনি সফল হয়েছেন।

 কিন্তু আপনি কামিয়াবি অর্জন করার পিছে না ছুটে বয়ফ্রেন্ড গালফ্রেন্ডের চক্করে লাইফ বরবাদ করে ফেলেন, আপনাকে এই পজিশনে আনার পিছনে আপনার মা বাবা কতইনা পরিশ্রম করেছেন, আর আপনি মুহুর্তে আপনার মা বাবাকে ভুলে বয়ফ্রেন্ডের চক্করে পরে পালিয়ে যান, আপনি একবার চিন্তা করেননা কে আপনাকে এই দুনিয়ার মুখ দেখিয়েছেন, কত কষ্টের বিনিময়ে আপনার মা আপনাকে জন্ম দিয়েছেন, ২০০ হাড্ডি একসাথে ভেঙ্গে গেলে যে কষ্ট সে রকম কষ্ট সহ্য করেই আপনার মা আপনাকে জন্ম দিয়েছেন।

 আর একজন অপরিচিত ছেলে এসে আপনাকে কথার জালে ফাসিয়ে দিল আর আপনি  মা বাবাকে ছেড়ে ঘর থেকে পালিয়ে গেলেন। আপনি জানেনই না আপনার মা আপনার বাবা আপনার জন্য কি? আপনাকে এটা ভালো ভাবে বুঝতে হবে যে জিন্দেগী আসলে কি জিনিষ। জীবনে কি কি এচিভ/অর্জন করতে হবে।

 প্রতিটি সেকেন্ডকে মূল্যবান মনে করে মেহনত করতে হবে। লাইফে নতুন নতুন সফলতা অর্জনের মাধ্যমে দুনিয়ার বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। আর তার জন্য খুব বেশী প্রয়োজন পড়ালেখা। জ্ঞান চর্চা। এই জ্ঞানই এমন জিনিষ যা দ্বারা আপনি ইজ্জত সম্মান প্রভাব প্রতিপত্তী অর্জন করতে পারবেন।

 এটা হল জ্ঞান বিজ্ঞানের যুগ। জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা করে জবরদস্ত শিক্ষক, জবরদস্ত ডাক্তার, জবরদস্ত আলেম হয়ে যান। ২৪ ঘন্টার মধ্যে ২০ঘন্টা মেহনত করুন, তাহলেই আপনি কিছু একটা আশা করতে পারেন। নাহয় এমন সময় আসবে আপনার মা বাবা বৃদ্ধ হয়ে যাবে তাদের চিকিৎসা করানোর জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে কিন্তু পয়সা পাবেন না আর বিনা চিকিৎসায় আপনার সামনে আপনার মা বাবা মারা যাবে।

 মা বাবা মারা যাওয়ার পর যদি হুশ ফিরে আসে আর মেহনত করতে থাকেন তখন যদি সফলতা আসে সে সফলতায় আপনি কাকে দেখাবেন? তাই আজ থেকেই খুব মেহনত করুন খুব পয়সা কামাও, মা বাবাকে সফল হয়ে দেখাও তাদের জন্য খরচ কর আর গরীবদের জন্য খুব বেশী খরচ কর।

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.