৫টি কারনে মানুষের পতন হয় বলেছেন রাসুলুল্লাহ (সা)

 

এই ৫টি কারনে মানুষের পতন হয় বলেছেন রাসুলুল্লাহ (সাঃ)



আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ

হাদীস শরীফের আলোকে যে সব কারনে মানুষের পতন হয় সে সব কারনসমুহ কি কি তা আজ  বিস্তারিত জানব ইনশা আল্লাহ

১) তিরমিজি শরীফের ২০৩২ নং হাদিস রাসূল (ছাঃ) বলেন, হে ঐ জামাআত! যারা মুখে ইসলাম কবুল করেছ, কিন্তু অন্তরে এখনো ঈমান মযবূত হয়নি। তোমরা মুসলমানদের কষ্ট দিবে না, তাদের লজ্জা দিবে না এবং তাদের গোপন দোষ অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হবে না। কেননা যে লোক তার মুসলিম ভাইয়ের গোপন দোষ অনুসন্ধানে নিয়োজিত হবে আল্লাহ তার গোপন দোষ প্রকাশ করে দিবেন। আর যে ব্যক্তির দোষ আল্লাহ প্রকাশ করে দিবেন তাকে অপমান করে ছাড়বেন, সে তার উটের হাওদার ভিতরে অবস্থান করে থাকলেও

তাহলে এই হাদীসে আমরা পতনের ১টি কারন পেলাম তা হল কোন মুসলমানের দোষ অনুসন্ধান করা। কারন আপনি যদি মুসলমানের দোষ অনুসন্ধানে লেগে থাকেন আল্লাহ আপনার দোষ সমুহ প্রকাশ করে দিবেন যা আপনার পতন ঘটিয়ে দিবে।

 

২) কোন একটি জাতি ধ্বংস হওয়ার আগে তাদের চিন্তা চেতনা ধ্বংস হয়ে যায়, সে জন্য হুজুর (দ) প্রথমে উম্মতের চিন্তা চেতনাকে উন্নত করার শিক্ষা দিয়েছেন, যেমন হুজুর (দ) এরশাদ করেন যে লোক এ অবস্থায় সকাল করেছে যে সে আমার উম্মতের কল্যানের জন্য কিছু চিন্তা করেনি, সে আমার উম্মতের দলভুক্ত নয়।

অর্থ্যাৎ হুজুর (দ) চিন্তা চেতনা এটাই দিয়েছে যে তোমাদের সকাল এই অবস্থায় যেন হয়, সবার আগে তোমরা আমার উম্মতের কল্যাণের ব্যপারে চিন্তা কর, যদি তোমরা এমনটি কর তাহলে আমার উম্মতের দলভুক্ত, না হয় আমার উম্মতের দলভুক্ত নও। আজ মুসলমানদের পতনের কারন হল আমরা হুজুর (দ) এর এই শিক্ষা ভুলে গেছি। আমরা অপর মুসলমানের কল্যাণ করা, মুসলমানের উপকার করা ভুলে গেছি। তাই সারা বিশ্বের মুসলমানদের এই অধপতন।

৩) ধ্বংসের আরেকটি কারন হল মুনাফেকি- হুজুর (দ) এরশাদ করেন যার মধ্যে ৪টি জিনিষ থাকবে সে খালেস মুনাফেক- আর মুনাফেকের স্থান হল জাহান্নামের সবনিন্ম স্তরে। আর যার ঠিকানা জাহান্নামের সর্বনিন্মস্তরে তার মত ক্ষতিগ্রস্থ আর কে হতে পারে? আর সে ৪টি জিনিষ হল

ক. আমানত রাখা হলে খেয়ানত করে  খ. কথা বললে মিথ্যা বলে  গ. চুক্তি করলে ভঙ্গ করে এবং ঘ. বিবাদে লিপ্ত হলে অশ্লীল গালি দেয়।

আফসুসজনক সত্য হল আজ মুসলমানদের মাঝে মুনাফেকির অভ্যাসগুলি খুব বেশী পরিলক্ষিত হয় যার কারনে মুসলমানদের এত অধপতন।

৪) এবার আসুন আরেকটি হাদিস শুনি যাতে মানুষের পতনের আরো ২টি কারন উল্লেখ করা হয়েছে।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে সম্বোধন করে বললেন- 'আমার উম্মতের উপর ঐ সময় খুবই কাছাকাছি, যখন অন্যান্য জাতি-গোষ্ঠীর লোকেরা তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে, যেভাবে লোকেরা খাবার গ্রহণে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

তখন এক সাহাবি জিজ্ঞাসা করলেন- হে আল্লাহর রাসুল! সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমাদের সংখ্যা কি এতই কম হবে যে, আমাদের ধ্বংসের জন্য অন্যান্য জাতি-গোষ্ঠীর লোকেরা একত্রিত হয়ে আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন- 'না', সে সময় তোমরা সংখ্যায় কম হবে না বরং সে সময় তোমাদের সংখ্যা অনেক বেশি হবে। কিন্তু তোমরা বন্যায় ভাসমান খড়কুটার মতো হালকা হবে। তোমাদের শত্রুুদের অন্তর থেকে তোমাদের প্রভাব দূর হবে আর হীনমন্যতা ও কাপুরুষতা তোমাদের ঘিরে ধরবে।


একজন সাহাবি জানতে চাইলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! কেন এ হীনমন্যতা আসবে?

তখন তিনি (প্রিয় নবি) বললেন- এ (দুইটি) কারণে যে-
- ঐ সময় দুনিয়ার প্রতি তোমাদের ভালোবাসা বেড়ে যাবে। আর

- মৃত্যুকে ভয় করতে থাকবে।'

 

৫ম কারন হল অহংকার- সুরা লুকমানের ১৮ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা কোনো উদ্ধত অহংকারীকে পছন্দ করেন না। অহংকার বা অহমিকা মানুষের অধপতনের অন্যতম কারণ। অহংকার বা অহমিকা হলো শয়তানের অন্যতম প্রধান কাজ। যে কারণে শয়তান সর্বোচ্চ সম্মানের স্থান থেকে চিরতরে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে গেল।

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.