নারীদের পোষাক কেমন হওয়া উচিত? ইসলাম ও কোরআন কি বলে?
নারীদের পোষাক কেমন হওয়া উচিত? ইসলাম ও কোরআন কি বলে?
إِنَّ الَّذِينَ يُحِبُّونَ أَن تَشِيعَ الْفَاحِشَةُ فِي الَّذِينَ آمَنُوا لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
যারা পছন্দ
করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে ব্যভিচার প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে ইহাকাল ও পরকালে
যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না। [সুরা নুর - ২৪:১৯]
আপনারা
জানেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী, যেমন খুশি তেমন কাপড় পরিধান করার শীষক
কর্মসূচী পালন করে, তাদের হাতে নানান ধরনের প্লেকাড দেখা যায়। মুলত তারা পোষাকের স্বাধিনতা
চায়, যেমন খুশি তেমন পোষাক এর মধ্যে বোরখা, হিজাব কিন্তু নাই। তাদের পোষাকের স্বাধীনতায়
আছে বেহায়াপনা।
এরা
জানেনা নারীদের সম্মান আছে পর্দাতে। নারীদের সম্মান আছে শালিন পোষাকে।
আল্লাহ
তায়ালা নারীদের মধ্যে হায়া এত বেশী পছন্দ করেন। মুসা (আ) যখন কুয়ার থেকে দুইজন ভদ্র
মহিলাকে সাহায্য করার জন্য তাদের জন্ত গুলিকে পানি পান করালেন, সে দুইজন ভদ্রমহিলা
তাদের বৃদ্ধ পিতাকে যখন এই ঘটনা বললেন তাদের পিতা মুসাকে ঘরে ডেকে আনার জন্য বললেন।
যখন সে ভদ্র বালিকারা মুসার দিকে যাচ্ছিলেন লাজুকতার সাথে, তাদের সে লাজুক পায়ে চলা
আল্লাহর পছন্দ হয়েছে তাই আল্লাহ তায়ালা সে লাজুক পায়ে হাটার কথাটাও কুরআনে হাইলাইট
করে বয়ান করেছেন
যেমন
আল্লাহ তায়ালা সুরা কাসাসের ২৫ নং আয়াতে বলেন
فَجَاءتْهُ إِحْدَاهُمَا تَمْشِي عَلَى اسْتِحْيَاء قَالَتْ إِنَّ أَبِي يَدْعُوكَ لِيَجْزِيَكَ أَجْرَ مَا سَقَيْتَ لَنَا
অতঃপর
বালিকাদ্বয়ের একজন লজ্জাজড়িত পদক্ষেপে তাঁর কাছে আগমন করল। বলল, আমার পিতা
আপনাকে ডাকছেন, যাতে আপনি যে আমাদেরকে পানি পান করিয়েছেন, তার বিনিময়ে পুরস্কার
প্রদান করেন। [সুরা কাসাস - ২৮:২৫]
কুরআনে আল্লাহ তায়ালা নারীদের
নামেও পর্দা রেখেছেন, ফেরাউনের স্ত্রীর কথা কুরআনে যতবার এসেছে আল্লাহ আসিয়া বলেননি
বরং ফরমায়েছেন (এমরাতু ফিরাউন) ফেরাউনের স্ত্রী।
তেমনি
যেখান নুহ (আ) এর স্ত্রীর কথা এসেছে সেখানে আল্লাহ হযরত নুহ (আ) এর স্ত্রীর নাম প্রকাশ
করেননি ফরমায়েছেন এমরাতু নুহ নুহের স্ত্রী। লুত (আ) এর স্ত্রী। ইবরাহিম এর স্ত্রী।
কোন নারীর নাম আল্লাহ প্রকাশ করেননি।
তবে
হ্যাঁ হযরত মরিয়ম এর নাম কুরআনে আছে, এরও একটা হেকমত আছে। হযরত মরিয়ম এর ব্যপারে আল্লাহ
একটা কথা ক্লিয়ার করার জন্য এই নাম বলেছেন যে হযরত মরিয়াম হলেন হযরত ঈসার মা। আর ঈসার
বাবা ছিলনা তাই তার পরিচয় দিয়েছেন ঈসা ইবনে মরিয়ম।
দেখুন
কুরআন নারীদের ব্যপারে কত সুন্দর ভাবে পদা ও শালিনতা শিক্ষা দিচ্ছে।
সুরা
নুরের ৩১ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন
وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের
দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে।
وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ
তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া
তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে
রাখে
وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُوْلِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاء
এবং তারা
যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র,
ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা
নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না
করে,
দেখুন সুরা
নুরে স্পষ্ট আল্লাহ তায়ালা বাবা, ভাই, স্বামী শ্বশুর, পুত্র,আরো যাদের কথা বলা
হয়েছে এরা ছাড়া বাজারে, স্কুলে, হাটে মাঠে ঘাটে আপনি নিজের ইচ্ছে মত পোষাক বা
সৌন্দয্য প্রদর্শন করতে পারেননা। যদি করেন আপনি আল্লাহর হকুমের অমান্যকারী হবেন,
আর কোন ঈমানদার আল্লাহর হকুমের অমান্য করতে পারেনা। সরাসরি আল্লাহর হকুমের
বিরুধীতাকারীদের সমথনও করতে পারেনা।
তাছাড়া সুরা
নুরে আল্লাহ তায়ালা আরো এরশাদ করেন
وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ
তারা যেন
তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। [সুরা নুর - ২৪:৩১]
যেখানে জোরে পদচারণা না করার
জন্য আল্লাহ হকুম দিচ্ছেন যেন পর পুরুষের কানে তোমার গোপন সাজ সজ্জা অলংকারের আওয়াজও
না পৌঁছে সেখানে একজন মুসলমান কিভাবে নিজের সৌন্দর্য্য কিভাবে পর পুরুষের কাছে প্রকাশ
করতে পারে?
যখন
পর্দার কোন বিধান ছিলনা সে আইয়্যামে জাহিলিয়াতে নারীদেরকে শুধু ভোগের পন্য মনে করা
হত, কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণকে অভিশাপ মনে করত তাই জীবন্ত কন্যা সন্তান তারা মাটিতে
পুতে দিত, আর সে নারীদেরকে ইসলামই প্রকৃত ইজ্জত সম্মান দিয়েছেন। প্রকৃত অধিকার দিয়েছে।
বেঁচে থাকার অধিকার দিয়েছে। তাই ইসলামের রীতি নিতিতেই আছে নারীদের জন্য আসল সম্মান
আসল স্বাধিনতা আসল শান্তি। আল্লাহ আমাদের মা বোনদেরকে বুঝার তৌফিক দান করুন আমিন।
কোন মন্তব্য নেই