৯৯% পিতা মাতা যে আমল এর কারনে জাহান্নামি হবে

 


৯৯% পিতা মাতা যে আমল না করার কারনে জাহান্নামে যাবে, বিষয়টি খুবেই গুরুত্বপূর্ণ তাই প্রত্যেকের কাছে অনুরোধ,

ধৈর্য্য ধরে আজকের আলোচনাটি অবশ্যই শেষ পর্যন্ত শুনবেন। সহিহ বুখারীর ৮৯৩ নং হাদিসের বর্ণনা- নবী করিম () এরশাদ করেন

‏"‏ كُلُّكُمْ رَاعٍ، وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ
তোমরা সকলেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককেই অধীনস্থদের (দায়িত্ব) সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করা হবে।

এখন আপনার সন্তান এর বয়স বছর তার হাতে কায়দা দিয়েছেন নাকি মোবাইল দিয়েছেন আপনাকে সে প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হবে

সন্তান আপনি নিজ দায়িত্বে নষ্ট করবেন আর আল্লাহকে জবাব দিতে হবে না এমন ভাববেননা, আপনি চেষ্টা চালিয়ে যান তারপরও যদি সন্তান নষ্ট হয়ে যায় তখন আল্লাহকে বলতে পারবেন

মনে রাখবেন ৯৯% পিতা মাতা এই জায়গায় ধরা খাবে। সন্তানের হাতে গজব ছোটবেলা থেকে যারা উঠিয়ে দিয়েছেন।  আল্লাহ আমাদের সকলকে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার গযব থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন

একই হাদীসে নবী করিম () আরো বলেন- পুরুষ তার পরিবার বর্গের অভিভাবক, তাকে তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।

নারী তার স্বামী-গৃহের কর্ত্রী, তাকে তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। খাদিম তার মনিবের ধন-সম্পদের রক্ষক, তাকেও তার মনিবের ধন-সম্পদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।

বাচ্চাদের সামনে মোবাইল দিবেন না, তাদের সামনে বই দেন, কায়দা দেন, আমপারা দেন, বাচ্চাকে প্লাস্টিকের বই দিয়ে খেলাধুলা করতে দেন

প্রয়োজনে প্লাষ্টিকের বল দেন, খেলনা দেন, তবুও মোবাইল নামক এই গযব আপনার বাচ্চার হাতে দিবেন না। গেইম খেলার জন্য আইপেড, ট্যাব এসব থেকে বাচ্চাকে দুরে রাখুন।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বুঝার আমল করার তৌফিক দান করুন আমিন। সন্তানকে কোরআন শিক্ষার দিকে উৎসাহিত করুন

দ্বিতীয় খলীফা হযরত ওমর রা.এর ছেলে আব্দুল্লাহ, যখন সূরা বাকারা সমাপ্ত করেছিলেন তখন বাবা খুশিতে উট যবাই করে সমাজের লোকদেরকে দাওয়াত করেছিলেন।

আজ আমরাও মিষ্টিমুখ করি  কিন্তু অধিকাংশ  ক্ষেত্রেই তা হয়  সন্তান খৃষ্টান মিশনারীদের নামি দামি স্কুলে চান্স পেয়েছে এজন্য।

সন্তান স্কলারশিপ পেয়ে ইসলামের জঘন্যতম শত্রু ইহুদীদের ইউনিভার্সিটিতে সম্পূর্ণ বৈরী পরিবেশে পড়ার সুযোগ পেয়েছে এজন্য।

আসমান-জমিনের মধ্যে সবচেয়ে পবিত্র, নূরানী সবচেয়ে বরকতময় কালাম কুরআন মজীদ। তাহলে থেকে আমার সন্তানকে বঞ্চিত করব কেন?

সন্তানকে কুরআন শেখায় না এমন মা-বাবার হার যদি শতকরা ৭০ হয়ে থাকে তবে দ্বীন শেখায় না এদের হার শতকরা ৯০-৯৫ ভাগ।

নামায কীভাবে পড়বে তাও শেখায় না। হালাল-হারাম, পাক-নাপাক, অযু-গোসল তো দূরের কথা। অথচ সন্তানকে দ্বীনের প্রয়োজনীয় বিষয়াদি শেখানো পিতা-মাতার উপর ফরয। এটা না শেখানো সন্তানের উপর সবচেয়ে বড় জুলুম।

বাবা-মাকে ভুলের জন্য কিয়ামতের দিন চুলচেরা জবাব দিতে হবে। আধুনিকতার লেহাজ করে অনেক মা-বাবাই তাদের সন্তানদেরকে ইসলামের আহকাম ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুনের ব্যাপারে সম্পূর্ণ বিদ্বেষী করে গড়ে তোলেন

টুপি-দাড়ি, আলিম-ওলামা, মাদরাসা-মসজিদ ইত্যাদি বিষয়ে একটা নেতিবাচক ধারণা। তাদের অন্তরে ঠাঁই পায় (নাউযুবিল্লাহ) শৈশব থেকেই নাস্তিক প্রকৃতির শিক্ষক বাছাই করা হয়।

উপরন্তু স্যাটেলাইট চ্যানেল, ইন্টারনেট এর অবাধ ব্যবহার তো আছেই। সাথে সাথে ধরনের লেখকদের বইপত্র পড়তে দেওয়া হয় 

এবং এই মানসিকতা সম্পন্ন লোকদের পরিবেশেই তাদের বিচরণকে বিচক্ষণতার সাথে সীমাবদ্ধ রাখা হয়। 

এভাবে শিশুর মন-মানসকে বিষাক্ত করে দেওয়া হয়। এটা মারাত্মক ভুল।  এজন্য পিতামাতাকে আল্লাহর দরবারে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।

শিশুর প্রথম পাঠশালা হচ্ছে মায়ের কোল। এখানে সে জীবনের অনেক কিছু শেখে। পরবর্তীতে এটাই তার অভ্যাসে পরিণত হয়।

শরীয়তে এই পাঠশালার অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় এই যে, শিশুর এই প্রথম শিক্ষা শুরু হয় টিভি দিয়ে। মা-বাবা তাদেরকে সাথে নিয়েই টিভি দেখে,

ধীরে ধীরে এই ছোট বাচ্চাটি নাচ-গান থেকে শুরু করে সব ধরনের অশ্লীলতা শিখতে থাকে, বড় পুতুল নিয়ে খেলা করে, ঘুমায়।

ফুলের মতো এই বাচ্চার জীবন কী দিয়ে শুরু হচ্ছে  একটুও কি তা ভেবে দেখা হয়েছে। সবই ভুল। আমানতের খেয়ানত।

শরীয়তের আদেশ হল, ভূমিষ্ট হওয়ামাত্র শিশুর ডান কানে আযান বাম কানে ইকামত দিবে। যেন তার জীবন শুরু হয় আল্লাহর বড়ত্বের বাণী ‘আল্লাহু আকবার’ দিয়ে 

এর  পর  মা-বাবার দায়িত্ব হল সন্তানের ভালো অর্থবোধক নাম রাখা। বাচ্চা কথা বলা শিখলে তাকে সর্বপ্রথম আল্লাহর নাম শেখানোর চেষ্টা করা উচিত।

যিনি এই সন্তান দান করলেন এরপর তাকে বাকশক্তি দিলেন তার নাম সর্ব প্রথম শেখানোই কৃতজ্ঞ বান্দার পরিচয়।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,  ‘সন্তানকে প্রথম কথা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ শেখাও

এবং মৃত্যুর সময় তাদেরকে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর তালকীন কর।’ (শুআবুল ঈমান /৩৯৭-৩৯৮, হাদীস ৮৬৪৯)

বাচ্চা বয়সেই অল্প অল্প করে আল্লাহর পরিচয় শেখানো, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাম শেখানো, গল্পে গল্পে তাঁর পরিচয় আখলাক তুলে ধরা পিতামাতার কর্তব্য।

এককথায় তার জীবনের প্রথম পাঠশালা থেকে সে যেন দ্বীনের শিক্ষা অর্জন করে তা আমাদের কাম্য হওয়া উচিত।

ছোট ছোট আদব-কায়দা, যেমন ডান হাতে তিন শ্বাসে বসে পানি পান করতে শেখাবে। জুতা পরিধান করতে আগে ডান পা এবং খোলার সময় আগে বাম পা খোলা।

বাথরুমে ঢোকার সময় আগে বাম পা, বের হওয়ার সময় ডান পা ইত্যাদি শেখার উত্তম সময় এই শৈশবটাই।

ঘুমের দুআ, ঘুম থেকে ওঠার দুআ, খাওয়ার দুআ ইত্যাদি সহজ বিষয়গুলো এবং ছোট ছোট ব্যবহারিক সুন্নতে অভ্যস্ত করে গড়ে তোলার সময় এখনই। আর এটার দায়িত্ব মা-বাবার।

এভাবে সন্তানকে আপনার পক্ষ থেকে ইসলামিক রীতি নীতি গুলি শিখাতে হবে, শেখানোর চেষ্টা করতে হবে, নিজে না জানলে নিজে জেনে তারপর সন্তানকে শিখাতে হবে

এখন মিডিয়ার যুগ বড় বড় স্কলারগণ কোরআন হাদিস এর আলোকে সন্তানকে কিভাবে লালন পালন করবেন তেমন অনেক লেকচারও আছে যা দেখে আপনি নিজেও শিখে নিতে পারেন

তারপর সে মতে সন্তানকে লালন পালন করতে পারেন যা আপনার আপনার সন্তানকের জন্য উভয় জাহানের জন্য কল্যানকর হবে।

 

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.