কবর আজাব থেকে বাঁচার উপায় আমল ও দোয়া।







কবরে কাফনে শরীরে দাগও লাগবে না
কবর আযাব থেকে বাঁচার উপায় দোয়া ও আমল
মাঝে
মধ্যেই আমরা শুনি ২০ বছর পর অক্ষত লাশ বেরিয়ে এল কবর থেকে ১০ বছর পর লাশ পঁচেনি আজ আমি বলব কি আমল করলে কবরে লাশ পঁচবে না
তার
আগে অক্ষত লাশের কয়েকটি তাজা খবর শুনুন
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় মৃত্যুর ২৪ বছর পরে বিষখালী নদীর ভাঙনে কবর থেকে
বেরিয়ে আসে মৃত মোতাস্বের আলীর অক্ষত লাশ। এতে জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালের প্রথম দিকে
কাকচিড়া কালীবাড়ী গ্রামের খলিফা বাড়ির মোতাস্বের আলীর মৃত্যু হয়েছে। তার এক ছেলে ও
এক মেয়ে ছিল। মোতাস্বের আলী জীবিত থাকা অবস্থায়ই তার ছেলে মারা যায়। পরবর্তীতে তার
মৃত্যুর পর স্ত্রী ও মেয়ে মারা যায়।
স্থানীয় কিছু লোক নদীর তীরে ভাঙা কবরস্থানে
সাদা কাপড় দেখতে পেলে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় কবর থেকে মোতাস্বের আলীর লাশটি
উদ্ধার করা হয়।
লাশটি দেখার জন্য বহু লোকের সমাগম হয়েছে। পরে
স্থানীয় জামে মসজিদের পাশে নতুন কবরে লাশ দাফন করা
হয়।

আরেকটি নিউজ গত সপ্তাহের
নাসির আহমদ। দীর্ঘ ২২ বছর
আগে মারা গেছেন। এখনও তার লাশ সতেজ। কাফনের কাপড়ও রয়েছে অক্ষত। ভারতের উত্তর
প্রদেশের বান্দা জেলার বাবিরো অঞ্চলের ঘটনা এটি। সে লাশের ভিডিও ফেইসবুকের মাধ্যমে
ভাইরালও হয়েছে।
এবার আসুন জেনে নিই কি কাজ
করলে আমরাও কবর আযাব থেকে বাঁচতে পারব, আমাদের লাশও কবরে অক্ষত থাকবে, কাফন ও ময়লা
হবে না।

কবরের আজাব থেকে মুক্তি
পেতে হলে
কয়েকটি বিষয়ের ওপর  আমল করতে হবে, আর কয়েকটি কাজ থেকে বিরত থাকা
প্রত্যেক মানুষের জরুরী।




যে আমল গুলো করতে হবে
১) মনে রাখবেন কবর আযাব
থেকে বাঁচার জন্য পূর্বশর্ত হল মুমিন হতে হবে আর পরিপূর্ণ মুমিন হতে হলে
রাসুলুল্লাকে ভালবাসতে হবে, যেমন হুযুর (দঃ) এরশাদ করেন সহিহ মুসলিমের ৭৪ নং হাদীস
عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏
"‏ لاَ يُؤْمِنُ عَبْدٌ - وَفِي حَدِيثِ عَبْدِ الْوَارِثِ الرَّجُلُ -
حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ أَهْلِهِ وَمَالِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ
"
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন বান্দা (রাবী আবদুল ওয়ারিসের বর্ণনায় কোন ব্যাক্তি) ততক্ষন
পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না
, যতক্ষন আমি তার কাছে তার পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ ও অন্য লোকদের চাইতে অধিক প্রিয় না হব।
Zameen maili nahi hoti, zaman maila nahi
hota


Zameen mali nahi hoti, zaman maila nahin
hota


Muhammad (SAW) kay gulamon ka kafan maila nahi
hota.






. যথাসময়ে নামাজ আদায় করতে হবে।

. বেশি বেশি সাদকা করতে হবে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ
করেন
ঐ সত্ত্বার কসম যার পবিত্র হাতে আমার প্রাণ। মাইয়্যেতকে কবরে রাখার পর যখন
লোকেরা ফিরে আসতে থাকে তখন সে তাদের জুতোর আওয়াজ শুনতে পায়। মাইয়্যেত যদি ঈমানদার
হয় তাহলে নামায তার মাথার কাছে এসে দাঁড়ায়
, রোযা তার ডান দিকে এবং যাকাত বাম দিকে এসে হাজির হয়, তার নফল
ইবাদতসমূহ যথা
দান খয়রাত, মানুষের সাথে সদাচরণ ইত্যাদি এসে পায়ের দিকে দাঁড়ায়।

যদি মাথার দিক থেকে আযাব
আসতে থাকে
, ‘তাহলে নামায বাধা দিয়ে বলে এদিক থেকে যাওয়া যাবে না, যদি ডান দিক
থেকে আযাব আসতে থাকে তাহলে রোযা বাধা দিয়ে বলবে এদিক থেকে যেতে পারবে না
, যদি বাম দিক
থেকে আযাব আসতে থাকে তাহলে যাকাত নিষেধ করে বলে এদিক দিয়েও জায়গা পাবে না
, তারপর যদি
পায়ের দিক থেকে আযাব আসতে থাকে তাহলে তার নফল আমলসমূহ (গতিরোধ করে) বলবে এদিক দিয়ে
যাওয়া যাবে না।
(ফলে মৃত লোক কবর আযাব থেকে
বেঁচে যায়।)


. কুরআন তিলাওয়াত করতে হবে।
বিশেষ করে সুরা মুলুক
নিয়মিত পাঠ করতে হবে
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেছেনঃযে ব্যক্তি
প্রতিদিন রাতের বেলা তাবারাকাল্লাযী বিয়াদিহিল মুলক (সুরা মুলক) তেলাওয়াত করবে
আল্লাহ তাকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবেন। রাসুলুল্লাহ সাঃ এর যামানায় এই সুরাটিকে
আমরা
আল-মাআনিয়াহবা সুরক্ষাকারী
বলতাম। যে রাতের বেলা এই সুরাটি পড়বে সে খুব ভালো একটা কাজ করলো


[
নাসায়ী ৬/১৭৯
রাসুলুল্লাহ সাঃবলেছেনঃকুরআনে এমন একটা
সুরা আছে যার মধ্যে ৩০টা আয়াত রয়েছে যেটা একজন ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করবে এবং
তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর সেটা হলো তাবারাকাল্লাযী বিয়াদিহিল মুলকু (সুরা
মুলক)


[
তিরমিযী ২৮৯১, আবু দাউদ ১৪০০, আহমাদ,ইবনে মাজাহ]
আত তারগীব, ওয়াত তারহীব
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন
জনৈক সাহাবি
একটি কবরের উপর তাবু তৈরি করলেন। সেটা কবর বলে তাঁর জানা ছিলো না। তাবুতে বসা
অবস্থায় হঠাৎ কবরের ভিতর থেকে কুরআন তেলাওয়াতের আওয়াজ শুনতে পেলেন। সেখানে এক লোক
সূরা মূলক তেলাওয়াত করছে এবং তেলাওয়াত করতে করতে সম্পূর্ণ সূরা শেষ করে ফেলল।
সাহাবি উক্ত ঘটনা নবীজিকে অবহিত করলে তার কথা শুনে নবীজি বললেন
, এই সূরা কবরের
আযাব ফিরিয়ে রাখে এবং তেলাওয়াতকারীকে আযাব থেকে রক্ষা করছে। (মিশকাত শরীফ
,
হযরত আবু আইউব (রা.) বর্ণনা
করেন
Ñরাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেনÑযে ব্যক্তি ইসলামের শত্রুর সাথে যুদ্ধ করবে এবং নিহত বা
বিজয়ী না হাওয়া পর্যন্ত অবিচল থাকবে তাকে কবরে শাস্তি প্রদান করা হবে না। (নাসায়ী
, তিবরানী)
ইমাম গাযালী (রহ.) বলেনÑকবরের আযাব
থেকে যে ব্যক্তি মুক্ত থাকতে চায় তাকে দুনিয়ার সাথে ততোটুকু সম্পর্কই রাখা উচিত
যতোটুকু সম্পর্ক সে পায়খানা প্র
¯্রাবের স্থানের সাথে রক্ষা করে থাকে। 
 


. বেশি বেশি তাসবিহ-তাহলিল পাঠ করতে হবে। এ আমলগুলি কবরকে
আলোকিত ও প্রশস্ত করে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম এইগুলো থেকে বাঁচার জন্য ফরয
, নফল বা সুন্নত, যে কোনো নামাজে তাশাহুদ ও দুরুদের পরে সালাম ফিরানোর আগে এই
দোয়াটি পড়তে বলেছেন।




اَللَّهُمَّ
إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ، وَمِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ، وَمِنْ
فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ، وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْمَسِيْحِ الدَّجَّالِ
.



উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল ক্বাবরি, ওয়া মিনিআজাবি জাহান্নাম, ওয়ামিন ফিতনাতিল মাহইয়া-ওয়াল্ মামাতি, ওয়া মিং সাররি ফিতনাতিল্ মাসীহিদ্-দাজ্জাল।

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি আমাকে কাবরের আজাব থেকে রক্ষা করো,আমাকে
জাহান্নামের আজাব
, এবং দুনিয়ার ফিৎনা ও মৃত্যুর ফেতনা এবং দাজ্জালের ফিৎনা থেকে রক্ষা করো।
(বুখারি ও মুসলিম)




যে আমল থেকে বিরত থাকতে হবে

ক. মিথ্যা কথা বলা থেকে
নিজেকে বিরত রাখতে হবে।


খ. অপরের সম্পদ তথা পরের হক
আত্মসাৎ করা যাবে না।


গ. চোগলখুরী করা থেকে বিরত
থাকতে হবে।


ঘ. পেশাবের ছিটা হতে বেঁচে
থাকতে হবে।
 



একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম (মদিনা বা মক্কার) কোনো একটি বাগানের পাশদিয়ে অতিক্রম করছিলেন।
তথায় তিনি দু
জন এমন মানুষের আওয়াজ শুনতে পেলেন যাদেরকে কবরে শাস্তি দেয়া হচ্ছিল। রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন
, তাদেরকে আজাব দেয়া হচ্ছে অথচ বড় কোনো অপরাধের কারণে আজাব
দেয়া হচ্ছে না। অতঃপর তিনি বললেন
, তাদের একজন পেশাব করার সময় আড়াল করতোনা। আর দ্বিতীয় ব্যক্তি
একজনের কথা অন্যজনের কাছে লাগাত। (বুখারি)
আল্লাহ তাআলা উপরোক্ত
কাজগুলো যথাযথভাবে মেনে চলার তাওফিক দান করুন। কবরের আজাব থেকে মুসলিম উম্মাহকে
হিফাজত করুন। আমিন।


কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.