কারবালার ঘটনায় কোরানের আলোকে মহানবীর কষ্ট


নবীকে কষ্ট দিলে কি আযাব?

সুরা আহযাবের ৫৭ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন ]
إِنَّ الَّذِينَ يُؤْذُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ لَعَنَهُمُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَأَعَدَّ لَهُمْ عَذَابًا مُّهِينًا
( ইন্নাল্লাজিনা ইউজুনাল্লাহা ওয়া রাসুলাহ লাআনাহুমুল্লাহু ফিদ্ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ ওয়া আআদ্দালাহুম আজাবাম মুহিনা)
অর্থ্যাৎ: যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদের প্রতি ইহকালে ও পরকালে অভিসম্পাত করেন এবং তাদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছেন অবমাননাকর শাস্তি। [ সুরা আহযাব ৩৩:৫৭ ]
আয়াতে ষ্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যারা রাসুলকে কষ্ট দিবে তাদের জন্য দুনিয়া আখেরাতে লানত
রাসুলুল্লাহকে কষ্ট দেয়া সাধারণ মুমিনকে কষ্ট দেয়া এক নয় কারন সাধারণ মুমিনদের কষ্ট দেয়ার ব্যপারে পবিত্র কুরানের সুরা আহযাবের ৫৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে ]
وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوا فَقَدِ احْتَمَلُوا بُهْتَانًا وَإِثْمًا مُّبِينًا
যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে। [ সুরা আহযাব ৩৩:৫৮ ]
যার মুমিন নারী পুরুষকে কষ্ট দেয় তাঁদের জন্য খোলা গুনাহ, অথ্যাৎ কবিরা গুনাহ কিন্তু নবীজিকে কষ্ট দিলে তার ব্যপারে বলা হয়েছে দুনিয়া আখেরাতে লানত আর রয়েছে অপমানজনক শাস্তি থেকে বুঝা যায় সাধারন মুমিনকে কষ্ট দেয়া আর নবীকে কষ্ট দেয়ার মধ্যে আকাশ পাতাল  পার্থক্য আছে
নবীকে কি বেছালে মুবারকের পরও কষ্ট দেয়া সম্ভব?
এখন অনেকে প্রশ্ন উঠাতে পারে যে নবীকে কষ্ট পৌঁছানোর হকুম নবীজির জীবদ্ধশায় এর সাথে সম্পর্কিত, হুযুর (দঃ) এর দুনিয়া থেকে বেছাল এর পর কেহ যদি হুযুরের শানে বেয়াদবী করে, হুযুরের পরিবারের লোকদেরকে কষ্ট দেয় তাতে হুযুরের কষ্ট হবে না ধরনের প্রশ্নের জবাব আমরা নিজেদের মনগড়া মতামত থেকে না দিয়ে কোরান থেকে দিব ইনশাআল্লাহ
হুযুরের হায়াতে কষ্ট দেয়া যেমন হুযুরের ওফাতের পরও কষ্ট দেয়া একই হকুম যেমন সুরা আহযাবের আয়াত ৫৩ নং আয়াত (ওয়ামা কানা লাকুম আন তুজু রাসুলাল্লাহ) অথ্যাৎ হে লোকেরা তোমাদের জন্য কখনো জায়েয নয় রাসুলুল্লাহ (দঃ) কে কষ্ট দেয়া (ওয়ালা আন তানকেহু আজওয়াজাহু মিন বাদিহি আবাদা) খবরদার হুযুরের বেছালের পর কখনো তাঁর স্ত্রীদের বিয়ে করা হালাল নয় এতে তাঁর কষ্ট হবে
আয়াতে স্পষ্ট বুঝা যায় হুযুরের ওফাতের পর আজওয়াজে মুতাহহারাত তথা হুযুরের বিবিদের কেহ বিয়ে করতে পারবে না কারন কি? আল্লাহ ফরমান এতে হুযুরের কষ্ট হবে এখন কেহ যদি বলে হুযুরের ওফাতের পরপর করা যাবে না, কিছুদিন পর করা যাবে  তাই আল্লাহ তায়ালা তাও স্পষ্ট করে দিয়ে বলেন (আবাদা) অথ্যাৎ একদম আবাদুল আবাদ পর্যন্ত কেয়ামত পর্যন্ত করার এজাযত নাই কারন এতে হুযুরের কষ্ট হবে সুবহনাল্লাহ
সুতরাং একটি কথা ক্লিয়ার হয়ে গেল যারা হুযুরকে কষ্ট দেয় তাঁদের জন্য দুনিয়া আখেরাতে লানত, আর হুযুরকে কষ্ট দেয়ার সময় কতদিন? (মিম বাদিহি আবাদা) আবাদুল আবাদ পর্যন্ত কেয়ামত পর্যন্ত হুযুরকে কষ্ট দিলে তার দুনিয়া আখেরাত বরবাদ হয়ে যাবে ধ্বংস হয়ে যাবে
এখানে আরো একটি বিষয় স্পষ্ট হল তা হল যার আদব সম্মান আবদী, যার সম্মান কেয়ামত পর্যন্ত জিন্দা, সে শান ওয়ালা নবী কেন জিন্দা হবেন না? হুযুর হায়াতুন্নবী তাইতো নবী দুনিয়ায় থাকা কালিন যেমন সম্মান, নবী কবরে যাওয়ার পরও তেমন সম্মান, নবী হায়াতুন্নবী তাই নবীর স্ত্রীদের কেহ বিয়ে করলে নবী কষ্ট অনুভব করবেন, নবী হায়াতুন্নবী তাই নবীর অনুভতি শক্তি, এহছাস এখনও জিন্দা

এখন কেহ যদি হুযুরের বাগানের ফুলকে কষ্ট করে, হুযুরের কলিজার টুকরার গলায় ছুরি চালায় তাতে হুযুরের কি রকম কষ্ট হবে একবার চিন্তা করে দেখুন এর চেয়ে বড় কষ্ট হুযুরের শানে আর কি হতে পারে? আর যে হুযুরকে কষ্ট দেয় তাকে আল্লাহ দুনিয়া আখেরাতে লানত দিয়েছেন এখন যাকে আল্লাহ লানত দিয়েছে তাকে আমদেরও বলতে হবে লানাতুল্লাহ, এখন কেহ যদি লানাতুল্লাহ না বলে রহমাতুল্লাহ বলে তারাও গোমরাহ যারা তাদের সমর্থন করে তারাও গোমরাহ
কি কি কারনে হুযুরের কষ্ট হয়?
নবীকে কষ্ট দিলে আল্লাহ সহ্য করেন না এখন আসুন আমরা জেনে নিই পবিত্র কোরানের আলোকে কি কি কারনে হুযুরের কাছে কষ্ট পৌঁছে-
হুযুরের কষ্টের ১ম রাস্তা আল্লাহ বন্ধ করেছেন- সুরা আহযাব ৫৩ নং আয়াতঘটনা হল হুযুর (দঃ) সাহাবায়ে কেরামকে দাওয়াত দিলেন সাহাবায়ে কেরাম হুযুরের ঘরে দাওয়াত খেলেন সাহাবাগন হুযুরের সঙ্গ বেশী চাইত, তারা খাবার খাওয়ার পর সেখানে বসে রইল, মাসায়ালা মাসায়েল জিজ্ঞাসা করতে লাগল বিভিন্ন প্রশ্ন করতে লাগল, ফলে হুযুর কিছুটা বিরক্ত হচ্ছিল, তখন আল্রাহ তায়ালা সুরা আহযাবের ৫৩ নং আয়াত নাযিল করেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَدْخُلُوا بُيُوتَ النَّبِيِّ إِلَّا أَن يُؤْذَنَ لَكُمْ إِلَى طَعَامٍ غَيْرَ نَاظِرِينَ إِنَاهُ وَلَكِنْ إِذَا دُعِيتُمْ فَادْخُلُوا فَإِذَا طَعِمْتُمْ فَانتَشِرُوا وَلَا مُسْتَأْنِسِينَ لِحَدِيثٍ إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ يُؤْذِي النَّبِيَّ فَيَسْتَحْيِي مِنكُمْ وَاللَّهُ لَا يَسْتَحْيِي مِنَ الْحَقِّ
হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা খাওয়ার জন্য আহার্য রন্ধনের অপেক্ষা না করে নবীর গৃহে প্রবেশ করো না। তবে তোমরা আহুত হলে প্রবেশ করো, তবে অতঃপর খাওয়া শেষে আপনা আপনি চলে যেয়ো, কথাবার্তায় মশগুল হয়ে যেয়ো না। নিশ্চয় এটা নবীর জন্য কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের কাছে সংকোচ বোধ করেন; কিন্তু আল্লাহ সত্যকথা বলতে সংকোচ করেন না।  [ সুরা আহযাব ৩৩:৫৩ ]

আশ্চর্য্য লাগে যখন মহান রবের এমন নিতীমালা গুলি পড়ি, দেখুন বিশ্ব জগতের মালিক হুযুরের সামান্য বিরক্তিও সহ্য করেন না, কিভাবে মানুষকে শিক্ষা দিচ্ছে, যদি খানা খাওয়া শেষ হয় আর দেরী কিসের সাথে সাথে হুযুরের ঘর থেকে চলে যাও কেন চলে যাবেন তাও আল্লাহ পরিস্কার করে বয়ান করে দিয়েছেন যে (তোমাদের দেরী পর্যন্ত সেখানে বসে থাকা আমার মাহবুবকে কষ্ট দেয়) সুবহানাল্লাহ আর তোমরা বসে থাকলে হুযুর লজ্জায় চলে যেতে বলতে পারে না এমন হকুম এমন আদব কোন নবীর জন্য আল্লাহ তায়াল দেন নি শুধু আমাদের নবীর জন্য দিয়েছেন একবার চিন্তা করুন আল্লাহ নবীকে কত ভালবাসেন এখন অনেকে দাবী করে কুরানে নবীকে ভালবাসার কথা নাই নাউজুবিল্লাহ
হুযুরের ঘরে একটু দেরী করে বসে থাকাতে হুযুরের যে বিরক্তি আসে তার জন্য আল্লাহ সতর্ক করে দিচ্ছেন, যারা হুযুরের চোখের মনি, বাগানের ফুলকে ১০ মহররম কারবালার ময়দানে শহিদ করেছেন তাদের কি অবস্থা হবে?
আল্লামা আলুছি (রহঃ) তফসিরে রুহুল মায়ানিতে উল্লেখ করেন এজিদ বদবখত সে হুযুরের রেছালতের উপর ঈমান আনেনি যদি হুযুরের রেছালতের উপর তাঁরা ঈমান থাকত তাহলে সে কখনো এভাবে হুযুরকে কষ্ট পৌঁছাতো না
হুযুরের কষ্টের ২য় রাস্তা আল্লাহ তায়ালা বন্ধ করে দিয়েছেন- কেহ হুযুরকে রায়েনা বললে সেটাও আল্লাহর সহ্য হয়নি সাহাবায়ে কেরাম ঈমানদারগন হুযুরকে কোন প্রশ্ন করার জন্য বলত রায়েনা অথ্যাৎ হে আল্লাহর রাসুল আমার দিকে একটু তাকান, ক্নিতু মুনাফিক যারা বেয়াদব যারা তারা হুযুরের শানে বেয়াদবীর নিয়তে রায়েনা শব্দটিকে একটু ঘুরিয়ে বলত রাঈনা যার অর্থ হয় হে রাখাল নাউজুবিল্লাহ এমন বেয়াদবদের পথ বন্ধ করে দেয়ার জন্য আল্লাহ কুরানে হকুম নাযিল করে দেন  (এয়া আইয়্যুহাল্লাজিনা আমানু লা তাকুলু রায়েনা ওয়াকুলু উনজুরনা) হে ঈমানদারগন তোমরা রায়েনা বলিওনা বরং বলবে উনজুরনা
একবার চিন্তা করে দেখুন আল্লাহ তায়ালা নবীর শানে কষ্ট যায় এমন সামান্যতম পথও বন্ধ করে দিয়েছেন সুবহানাল্লাহ মুমিন যারা তাদের তো নিয়ত খারাপ ছিল না তবে যারা নবীর দুষমন তাঁরা শব্দকে চুরি করে নবীর শানে বেয়াদবীর সুযোগ পাবে তাই আল্লাহ তায়ালা মুমিনদেরকেও রায়েনা শব্দ ব্যবহার নিষিদ্ধ করে দিলেন তার পরিবর্তে কি শব্দ ব্যবহার করবে তাও শিখিয়ে দিলেন আর তা হল উনজুর না সুবহানাল্লাহ

আপনি যদি আল্লাহকে প্রশ্ন করেন হে আল্লাহ আপনি মুহাম্মদ (দঃ) কে কেন বার বার বিভিন্ন কষ্ট থেকে বাঁচাচ্ছেন? তার জবাব কোরানেই পাবেন- সুরা মায়েদা ৬৭ নং আয়াত (ওয়াল্লাহু ইয়াছিমুকা মিনান নাছ) মাহবুবকে মানুষের কষ্ট থেকে বাঁচানো আমি আমার জিম্মায় রেখেছি
সুরা তওবার ৬৩ নং আয়াতে এরশাদ করছেন (ওয়াল্লাজিনা ইউজুনা রাসুলাল্লাহ লাহুম আজাবুন আলিম) যারা রাসুলকে কষ্ট দেয় তাঁদের জন্য কষ্টদায়ক শাস্তি আছে (ফাআন্না লাহুম নারা জাহান্নামা খালেদা) তাঁদের জন্য সবসময়ের জন্য জাহান্নামের শাস্তি রয়েছে(জালিকা খিজিউল আজিম) আর এটা জবরদস্ত আযাব
হুযুরের কষ্টের ৩য় রাস্তা যা আল্লাহ তায়ালা বন্ধ করে দিয়েছেন- কেহ যদি হুযুরের বারেগাহে উঁচু আওয়াজে কথা বলে সে কষ্ট থেকে আল্লাহ হুযুরকে মাহফুজ করে দিলেন আল্লাহ ফরমান সুরা হুযরাতের নং আয়াতে
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَرْفَعُوا أَصْوَاتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّ وَلَا تَجْهَرُوا لَهُ بِالْقَوْلِ كَجَهْرِ بَعْضِكُمْ لِبَعْضٍ أَن تَحْبَطَ أَعْمَالُكُمْ وَأَنتُمْ لَا تَشْعُرُونَ
মুমিনগণ! তোমরা নবীর কন্ঠস্বরের উপর তোমাদের কন্ঠস্বর উঁচু করো না এবং তোমরা একে অপরের সাথে যেরূপ উঁচুস্বরে কথা বল, তাঁর সাথে সেরূপ উঁচুস্বরে কথা বলো না। এতে তোমাদের কর্ম নিস্ফল হয়ে যাবে এবং তোমরা টেরও পাবে না। [ সুরা হুজুরাত ৪৯:২ ]
  এখানে নবীর কন্ঠ থেকে উঁচু কন্ঠে কথা বলা পর্যন্ত আল্লাহ নিষেধ করছেন, এতে কি হবে (আন তাহবাতা আমালাকুম ওয়া আনতুম লা তাশউরুন) তোমাদের সমস্ত আমল বরবাদ হয়ে যাবে তোমারা বলতেও পারবে না
সুতরাং আয়াতে বুঝা যায় নবীর বিরক্তি বা কষ্টের কারন হয় এমনতর অতি সামান্য কারনেই আপনার আমার জীবনের সমস্ত আমল বরবাদ হয়ে যাবে যার কোন খবরও আমাদের থাকবে না আমাদের নামাজ, রোজ, দান সদকা, হজ্ব, কোরবানী, তাহাজ্জুদ কোন আমলই আর টিকবে না সবই ধ্বংস হয়ে যাবে
হুজুরের ৪র্থ কষ্টের রাস্তাও বন্ধ: সুরা হুজরাতের আয়াতে এরশাদ করেন
إِنَّ الَّذِينَ يُنَادُونَكَ مِن وَرَاء الْحُجُرَاتِ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ
যারা প্রাচীরের আড়াল থেকে আপনাকে উচুস্বরে ডাকে, তাদের অধিকাংশই অবুঝ। [ সুরা হুজুরাত ৪৯:৪ ]

 যখন হুযুর (দঃ) হুজরার মধ্যে আরাম করেন তখন হুযুরকে বাহির থেকে গলি থেকে উঁচু আওয়াজে ডাকাডাকি করত, যাতে হুযুর বিরক্ত হতেন আল্লাহর কাছে এটাও পছন্দ না কারন মাহবুব যখন বিশ্রাম করে তখন বাহির থেকে কেহ উঁচু আওয়াজে ডাকলে মাহবুবের ঘুমের ডিস্টাব হবে তাই আল্লাহ তায়ালা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দিলেন
দেখুন কোরানের আয়াত দ্বারা আমরা জানতে পারলাম হুজুরের নিদ্রাও আল্লাহ হেফাজত করছেন, হুযুরের মানসিক অশান্তিও আল্লাহ হেফাজত করছেন, অপছন্দনীয় কোন আচরন থেকে হুযুরকে আল্লাহ বাচিঁয়ে দিচ্ছেন, বেয়াদবী থেকেও আল্লাহ বাচিয়ে দিচ্ছেন, কষ্টসমুহ থেকেও রব বাঁচিয়ে দিচ্ছেন যা দ্বারা হুযুরের শানে মানে, চিন্তায়, চেতনায়, ধ্যানে কষ্ট পৌঁছতে পারে এমন সব ধরনের রাস্তাই আল্লাহ অত্যন্ত পরিস্কার ভাবে বয়ান করে বন্ধ করে দিয়েছেন
এরপরও যারা হুযুরের শানে বেয়াদবী করে তাদের ব্যপারে আল্লাহ ঘোষনা দেন সুরা মুজাদালায় /৫৭ (উলাইকা ফিল আজাল্লিন) তারা নিতান্তই কমিনা লোক  
আগের আয়াতে বলেছিল, লানত, জাহান্নামী, আমল বরবাদ হয়ে যাবে এখন বলছে তারা মানুষই না কমিনা
এবার আসুন ইমাম হোসনকে কষ্ট দিলে কি হুযুর কষ্ট পান?
আমরা এতক্ষন অসংখ্য কোরান হাদীসের মাধ্যমে জানতে পারলাম হুযুরকে যারা কষ্ট পৌঁছাবে তারা হুযুরের জীবদ্ধশায় কষ্ট পৌঁছালে যে হকুম ওফাতের পরও একই হকুম, হুযুরকে কষ্ট দিলে তাঁর উপর দুনিয়া আখেরাতে লানত, তাঁর সকল আমল বরবাদ হয়ে যাবে তাঁর স্থান হবে জাহান্নাম এখন আমাদের জানা দরকার ১০ মহররম ইমাম হোসেনকে যে এজিদের হকুমে কারবালার ময়দানে নির্মমভাবে শহিদ করেছে সে কষ্টকি হুযুর পেয়েছেন কিনা?  
ফাতেমার ঘরে হুসেনের কান্না
আমরা যেহেতু ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি হুযুরের ওফাতের পরও কষ্ট পৌঁছে সুতরাং ৬১ হিজরী সনে ইমাম হোসেন যে শহিদ হয়েছেন তাতেও হুযুর কষ্ট পেয়েছেন, যেমন হাদীস শরীফে আছে একদিন মসজিদে যাওয়ার সময় হুযুর ফাতেমার ঘরের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন ঘর থেকৈ হোসেন এর কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছিল হুযুর (দঃ) ফরমালেন ফাতেমা হোসেনকে চুপ করাও (আলা তালামি আন্না বাকাআহু ইউজিনি) তুমি কি জান না তাঁর কান্নার আওয়াজ আমাকে কষ্ট দেয়? হোসেন বিন আলীকে হুযুর কান্না করতে দিতেন না কারন হুযুর (দঃ) জানতেন হোসেন জীবনে অনেক কষ্ট ভোগ করবে
# একদিন হযরত ইমাম হোসাইন (রাদি আল্লাহু আনহু) হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর কোলে ছিলেন। হযরত উম্মুল ফজল হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর দিকে তাকালে দেখতে পান যে তার চক্ষুদ্বয় থেকে অঝোরে প্রবাহিত হচ্ছে। উম্মুল ফজল আরজ করলেন,ইয়া রসূলাল্লাহ্! হঠাৎ চোখে পানি কেন? হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) ফরমালেন, এ মাত্র জিব্রাইল এসে আমাকে খবর দিয়েছে যে আমার এ শিশুক আমার উম্মত হত্যা করে ফেলবে। জিব্রাইল আমাকে সেই জমীনের মাটি এনে দিয়েছেন যেখানে আমার এ শিশু শহীদ হবে।
হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) সেই মাটি শুঁকে দেখলেন এবং বললেন,এ মাটি থেকে আমি কারবালার সুঘ্রান পাচ্ছি। অতঃপর সেই মাটি উম্মুল মুমেনীন হযরত উম্মে সালমা (রাদি আল্লাহু আনহু) কে দিলেন এবং বললেন, হে উম্মে সালমা, এ মাটি তোর কাছে রেখো। যখন এ মাটি রক্ত হয়ে যাবে তখন বুঝিও যে আমার এ নানু শহীদ হয়ে গেছে। হযরত উম্মে সালমা (রাদি আল্লাহু আনহু) এ মাটি একটি শিশিতে ভরে যত্ন সহকারে রেখে ছিলেন। যে দিন হযরত ইমাম হোসাইন (রাদি আল্লাহু আনহু) কারবালা ময়দানে শহীদ হন, সেই দিন এ মাটি মুখবন্ধ শিশিতে রক্তে রূপান্তরিত হয়ে গিয়েছিল।
---(মিশকাত শরীফঃ- ৫৬৪ পৃষ্টা)।

২টি মন্তব্য:

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.