মাত্র ১টি ভুলে পৃথিবীর কোন এবাদত কবুল হবে না


যে ভুলে কোন আমল কবুল হয় না

জুল খোয়ছারা তামিমি যে আমাদের নবীজির গনিমতের মাল বন্টনের ব্যপারে বিরোধীতা করলএমনকি সে আমাদের নবীর সাথে বেয়াদবী মুলক কথা বলে সেখান থেকে চলে গেল
হাদীসটি বুখারী-৫৮১১ নং হাদসী মুসলিম সহ প্রায় সকল হাদীসের কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে
জুল খোয়ছারার বেয়াদবী দেখে হযরত ওমর (রাঃ) খাপ থেকে তরবারী বের করে ফেললেন এজাজত তলব করল তার গর্দান উড়িয়ে দেয়ার কিন্তু হুযুর (দঃ) হযরত ওমরকে বাঁধা দিলেন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হুযুর (দঃ) ২টি কথা বললেন যে জুল খোয়ছারার বংশ থেকে একটি দলের সৃষ্টি হবে সে দল খুব বেশী বেশী কুরান পাঠ করবে এবং তারা নিজের জিহ্বাকে কোরান তেলাওয়াত দ্বারা সদা সতেজ রাখবে তবে কোরান তাদের কন্ঠ থেকে নিচের দিকে যাবে না আর সে সব লোক দ্বীন থেকে এমনভাবে বের হবে যেমন তির শিকার থেকে বের হয়ে যায়

নবীজি আরো ফরমান (ফাইন্না লাহু আসহাবান) তার একটি দল হবে তারা এমন এবাদত করবে তোমরা তোমাদের এবাদতকে তাদের এবাদতের মোকাবেলায় নগন্য মনে করবে তারা এত বেশী রোজা রাখবে তাদের রোজার তুলনায় তোমাদের রোজাকে নগন্য মনে করবে 
সারকথা হল যতই নামাজ, রোজা এবাদত করুক না কেন যেহেতু তাদের অন্তরে নবীর প্রতি সম্মান নাই তাই তাদের এসব এবাদতের কোন মূল্যই আল্লাহ তাঁর রাসুলের কাছে নাই
সাহাবী নবীকে চুটকি বলে হাসাত>
এবার বুখারী শরীফের ৬৩৯৮ নং হাদীস শুনুন- হযরত আবদুল্লাহ একজন সাহাবী যিনি বিভিন্ন কারনে সাজা প্রাপ্ত হয়েছেন, তিনি যখন বারবার সাজা ভোগ করতে থাকেন তখন কিছু সাহাবী তাকে লানত দিতে লাগল তখন রাসুলে কারিম (দঃ) বললেন হে আমার সাহাবারা তোমরা আমার আবদুল্লাহকে লানত দিও না, কারন সে আল্লাহ তাঁর রাসুলকে ভালবাসে
সে সাহাবীর আমল কি ছিল?
আপনারা শুনে অবাক  হবেন যে সাহাবীকে আল্লাহর নবী লানত দিতে নিষেধ করেছেন সে সাহাবীর ঝুলিতে অসংখ্য নামাজ ছিল না, অনেক এবাদত ছিল না, অনেক রোজা ছিল, অনেক দান সদকার সাওয়াব ছিল না, তাহাজ্জুদের পাহাড় ছিল না, নফল নামাজের আধিক্য ছিলনা, তবে একটা আমল ছিল সেটা হল সে সাহাবী আমার নবীকে ভালবাসত, তাই সে আমার নবীকে নিয়ে চিন্তা করত, আমার নবী সারাদিন দ্বীনের খেদমত করা, মানুষকে ইসলাম শিক্ষা দেয়া, মানুষের নানান সমস্যার সমাধান দেয়া, মানুষের প্রশ্নের জবাব দেয়া, দুর দুরান্ত থেকে আসা মেহমানদের মেহমানদারীর ব্যবস্থা থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা এসব করতে করতে হুযুর (দঃ) ক্লান্ত পরিশ্রান্ত আর তখন হযরত আবদুল্লাহ সে আমার নবীকে এমন এমন কিচু কথা বলত, কোন মিথ্যা কৌতুক নয় সত্য কথা কিন্তু তা খুবই চমৎকার ভংগীতে বলত তাতে পেয়ারা নবী হাসতেন আর আবদুল্লাহর সারাক্ষন এটাই চিন্তা আর চেস্টা ছিল নতুন নতুন কিছু নবীর সামনে বলা যাতে নবীজি হাসেন, আর আমার নবী হাসলে আবদুল্লাহ খুশী হন সে জন্য যদিও তাঁর ঝুলিতে অনেক এবাদত ছিল না তবে তাঁর মনে নবীর প্রতি যে অকৃত্রিম ভালবাসা ছিল সেটাই তাকেঁ লানত দিতে নিষেধ করল পক্ষান্তরে যুল খোয়ছারা তার গোষ্টি যারা কেয়ামত পর্যন্ত আসতে থাকবে যাদের ঝুলি ভর্তি এবাদত থাকবে, কোরান তেলাওয়াত থাকবে, নামাজ থাকবে, রোজা থাকবে কিন্তু তাঁদের অন্তরে নবীর প্রতি সম্মান থাকবে না, নবীকে কষ্ট দিবে তাই তারা লানতের উপযুক্ত
নবীকে কষ্ট দিলে কি আযাব?
সুরা আহযাবের ৫৭ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন ]
إِنَّ الَّذِينَ يُؤْذُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ لَعَنَهُمُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَأَعَدَّ لَهُمْ عَذَابًا مُّهِينًا
( ইন্নাল্লাজিনা ইউজুনাল্লাহা ওয়া রাসুলাহ লাআনাহুমুল্লাহু ফিদ্ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ ওয়া আআদ্দালাহুম আজাবাম মুহিনা)
অর্থ্যাৎ: যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদের প্রতি ইহকালে ও পরকালে অভিসম্পাত করেন এবং তাদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছেন অবমাননাকর শাস্তি। [ সুরা আহযাব ৩৩:৫৭ ]
আয়াতে ষ্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যারা রাসুলকে কষ্ট দিবে তাদের জন্য দুনিয়া আখেরাতে লানত
রাসুলুল্লাহকে কষ্ট দেয়া সাধারণ মুমিনকে কষ্ট দেয়া এক নয় কারন সাধারণ মুমিনদের কষ্ট দেয়ার ব্যপারে পবিত্র কুরানের সুরা আহযাবের ৫৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে ]
وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوا فَقَدِ احْتَمَلُوا بُهْتَانًا وَإِثْمًا مُّبِينًا
যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে। [ সুরা আহযাব ৩৩:৫৮ ]
যার মুমিন নারী পুরুষকে কষ্ট দেয় তাঁদের জন্য খোলা গুনাহ, অথ্যাৎ কবিরা গুনাহ কিন্তু নবীজিকে কষ্ট দিলে তার ব্যপারে বলা হয়েছে দুনিয়া আখেরাতে লানত আর রয়েছে অপমানজনক শাস্তি থেকে বুঝা যায় সাধারন মুমিনকে কষ্ট দেয়া আর নবীকে কষ্ট দেয়ার মধ্যে আকাশ পাতাল  পার্থক্য আছে অতএব আজ একটি নীতি শিখলাম তা হল আমল বেশী করে, রাত দিন এবাদত করে, সিজদায় পরে থেকে কোন লাভ নাই যদি অন্তরে নবীর প্রতি সম্মান মহব্বত ভালবাসা না থাকে, পক্ষান্তরে নবীর প্রতি ভালবাসা সম্মান মহব্বতকে প্রাধান্য দিয়ে যদি অল্প আমল ফরয ওয়াজিব গুলি নিয়মিত আদায় করে দেয়া যায় তাতেই মুক্তি রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে নবীর প্রেমি নবীর প্রতি সম্মান নবীর প্রতি অফুরন্ত ভালবাসা অন্তরে জায়গা দিয়ে আল্লাহর এবাদতে মনোনিবেশ করে জীবনের সকল আমলগুলিকে গ্রহণযোগ্য বানানোর তৌফিক দান করুন।
সম্প

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.