জুমার খুতবায় আবরার হত্যার ব্যপারে হুযুর একি বলল। সৎ কাজের আদেশ অসৎ কাজে ...







সফর মাসের ২য় খুতবা
সৎকাজের আদেশ অসৎকাজের নিষেধ

আউজুবিল্লাহি
মিনাশ শায়তানির রাজিম,
আজকে সফর মাসের
২য় জুমা, পেয়ারা
হাজিরিন গত জুমায়
ঈমানের হেফাজত মজবুত
করা ঈমানের নুর
বৃদ্ধি করার উপায়,
ঈমান কিভাবে নষ্ট
হয়,
কুফুরী কালাম কি?
হিন্দী গান, এবং
কুফুরী কালাম করলে
ঈমান নামের মুল্যবান
দৌলত নষ্ট হয়ে
গেলে কিভাবে ঈমানকে
নবায়ন করবেন কিভাবে
বিবাহ নবায়ন করবেন
বিষয়ে আলোচনা
করেছিলাম আজ আমি
ইনশা আল্লাহ সৎ
কাজের আদেশ
অসৎ কাজের নিষেধ
এর গুরুত্ব এবং
ঈমানের সাথে মৃত্যু
বরণ করার ব্যপারে
কিছু আমল
ওয়াজিফা আপনাদের সামনে
উপস্থাপন করব

ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজে নিষেধ
করার গুরুত্ব

আল্লাহ
তা
আলা বলেন,
﴿ وَلۡتَكُن مِّنكُمۡ
أُمَّةٞ يَدۡعُونَ إِلَى ٱلۡخَيۡرِ وَيَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَيَنۡهَوۡنَ
عَنِ ٱلۡمُنكَرِۚ وَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ١٠٤ ﴾ [ال عمران: ١٠٤] 
অর্থাৎ
তোমাদের মধ্যে এমন একটি
দল থাকা উচিত
,
যারা
(লোককে) কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে এবং সৎকার্যের নির্দেশ দেবে ও অসৎ কার্য থেকে
নিষেধ করবে। আর এ সকল লোকই হবে সফলকাম।
” (সূরা আলে ইমরান ১০৪ আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
﴿كُنتُمۡ خَيۡرَ أُمَّةٍ
أُخۡرِجَتۡ لِلنَّاسِ تَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَتَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ
وَتُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِۗ ﴾ [ال عمران: ١١٠] 
অর্থাৎ
তোমরাই শ্রেষ্ঠতম জাতি।
মানবমণ্ডলীর জন্য তোমাদের অভ্যুত্থান হয়েছে
, তোমরা সৎকার্যের নির্দেশ দান কর, আর অসৎ কার্য (করা থেকে)
নিষেধ কর
,
আর
আল্লাহতে বিশ্বাস কর।

(
সূরা
আলে ইমরান ১১০ আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
﴿ خُذِ ٱلۡعَفۡوَ
وَأۡمُرۡ بِٱلۡعُرۡفِ وَأَعۡرِضۡ عَنِ ٱلۡجَٰهِلِينَ ١٩٩ ﴾ [الاعراف: ١٩٩] 
অর্থাৎ
তুমি ক্ষমাশীলতার নীতি
অবলম্বন কর
,
সৎকাজের
নির্দেশ দাও এবং মূর্খদেরকে এড়িয়ে চল।
” (সূরা আ'রাফ ১৯৯ আয়াত)
অন্যত্রে বলেছেন,
﴿ وَٱلۡمُؤۡمِنُونَ
وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتُ بَعۡضُهُمۡ أَوۡلِيَآءُ بَعۡضٖۚ يَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ
وَيَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ ﴾ [التوبة: ٧١] 
অর্থাৎ
আর বিশ্বাসী পুরুষরা ও
বিশ্বাসিনী নারীরা হচ্ছে পরস্পর একে অন্যের বন্ধু
, তারা সৎ কাজের আদেশ দেয়
এবং অসৎ কাজে নিষেধ করে।

(
সূরা
তাওবাহ ৭১ আয়াত)
ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজে নিষেধ করার গুরুত্ব
৪/১৯২। নুমান ইবনু বাশীর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন
, ‘‘আল্লাহর নির্ধারিত সীমায় অবস্থানকারী (সৎকাজে আদেশ ও
অসৎকাজে বাধাদানকারী) এবং ঐ সীমা লংঘনকারী (উক্ত কাজে তোষামোদকারীর) উপমা হল এক
সম্প্রদায়ের মত
; যারা একটি দ্বিতলবিশিষ্ট পানি-জাহাজে লটারি করে কিছু লোক
উপর তলায় এবং কিছু লোক নিচের তলায় স্থান নিল। (নিচের তলা সাধারণতঃ পানির ভিতরে
ডুবে থাকে। তাই পানির প্রয়োজন হলে নিচের তলার লোকদেরকে উপর তলায় যেতে হয় এবং সেখান
হতে সমুদ্র বা নদীর পানি তুলে আনতে হয়।) সুতরাং পানির প্রয়োজনে নিচের তলার লোকেরা
উপর তলায় যেতে লাগল। (উপর তলার লোকদের উপর পানি পড়লে তারা তাদের উপর ভাগে আসা
অপছন্দ করল। তারা বলেই দিল
, ‘তোমরা নিচে থেকে আমাদেরকে কষ্ট দিতে এসো না।’)
নিচের তলার লোকেরা বলল, ‘আমরা যদি আমাদের ভাগে (নিচের
তলায় কোন স্থানে) ছিদ্র করে দই
, তাহলে (দিব্যি আমরা পানি ব্যবহার করতে পারব) আর উপর তলার
লোকদেরকে কষ্টও দেব না। (এই পরিকল্পনার পর তারা যখন ছিদ্র করতে শুরু করল) তখন যদি
উপর তলার লোকেরা তাদেরকে নিজ ইচ্ছার উপর ছেড়ে দেয় (এবং সে কাজে বাধা না দেয়)
, তাহলে সকলেই (পানিতে ডুবে)
ধ্বংস হয়ে যায়। (উপর তলার লোকেরা সে অন্যায় না করলেও রেহাই পেয়ে যাবে না।)
 পক্ষান্তরে
উপর তলার লোকেরা যদি তাদের হাত ধরে (জাহাজে ছিদ্র করতে) বাধা দেয়
তাহলে তারা
নিজেরাও বেঁচে যায় এবং সকলকেই বাঁচিয়ে নেয়।
’’[1]





[1] সহীহুল বুখারী ২৪৯৩, ২৬৮৬, তিরমিযী ২১৭৩, আহমাদ ১৭৮৯৭, ১৭৯০৪, ১৭৯১২, ১৭৯৪৪

আবূ সায়ীদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন
, ‘‘তোমরা রাস্তায় বসা হতে বিরত থাক।’’ সাহাবীগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! সে মজলিসে
না বসলে তো আমাদের উপায় নেই
; আমরা সেখানে কথাবার্তা বলি।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন
, ‘‘যখন তোমরা (সেখানে) না বসে মানবেই না, তখন তোমরা রাস্তার হক আদায় কর।’’ তাঁরা বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! রাস্তার হক
কি
?’ তিনি বললেন, (

«غَضُّ البَصَرِ، وَكَفُّ الأَذَى، وَرَدُّ السَّلامِ، وَالأمْرُ
بِالمَعْرُوفِ، والنَّهيُ عن المُنْكَرِ
»


‘‘দৃষ্টি সংযত রাখা, কাউকে কষ্ট না দেওয়া, সালামের জবাব দেওয়াভাল কাজের নির্দেশ ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা’’[1]
[1] সহীহুল বুখারী ২৪৬৫, ৬২২৯, মুসলিম ১২১১, আবূ দাউদ ৪৮১৫, আহমাদ ১০৯১৬, ১১০৪৪, ১১১৯২

عَن حُذَيفَةَ رضي
الله عنه، عَنِ النَّبيّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «وَالَّذِي نَفْسي بِيَدِهِ،
لَتَأْمُرُنَّ بِالمَعْرُوفِ، وَلَتَنْهَوُنَّ عَنْ المُنْكَرِ أَوْ لَيُوشِكَنَّ
اللهُ أنْ يَبْعَثَ عَلَيْكُمْ عِقَاباً مِنْهُ ثُمَّ تَدْعُوْنَهُ فَلا
يُسْتَجَابُ لَكُمْ». رواه الترمذي، وَقالَ: حديث حسن

১০/১৯৮। হুযাইফাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন
,
‘‘
তার
কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ আছে! তোমরা অবশ্যই ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ
থেকে নিষেধ করবে
,
তা
না হলে শীঘ্রই আল্লাহ তা
আলা তাঁর পক্ষ থেকে
তোমাদের উপর আযাব পাঠাবেন। অতঃপর তোমরা তাঁর কাছে দো
আ করবে; কিন্তু তা কবুল করা হবে
না।
’’[1]
[1] তিরমিযী ২১৬৯

عَنْ أَبِي بَكرٍ
الصِّدِّيقِ رضي الله عنه، قَالَ : يَا أيُّهَا النَّاسُ، إنّكُم لتَقرَؤُون
هَذِهِ الآيَة : ﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ عَلَيۡكُمۡ أَنفُسَكُمۡۖ لَا
يَضُرُّكُم مَّن ضَلَّ إِذَا ٱهۡتَدَيۡتُمۡۚ ﴾ [المائ‍دة: ١٠٥] وَإِنِّي سَمِعتُ
رَسُولَ الله صلى الله عليه وسلم يَقُولُ: «إِنَّ النَّاسَ إِذَا رَأَوُا
الظَّالِمَ فَلَمْ يأخُذُوا عَلَى يَدَيْهِ أوشَكَ أنْ يَعُمَّهُمُ اللهُ
بِعِقَابٍ مِنْهُ». رواه أَبُو داود والترمذي والنسائي بأسانيد صحيحة


আবূ বকর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু আনহু
বলেন
, ‘হে লোক সকল! তোমরা এই আয়াত পড়ছ, ‘‘হে মুমিনগণ!
তোমাদের আত্মরক্ষা করাই কর্তব্য। তোমরা যদি সৎপথে পরিচালিত হও তবে যে পথভ্রষ্ট
হয়েছে সে তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
’’ (সূরা
মায়েদাহ ১০৫ আয়াত)
 কিন্তু আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি
, ‘‘যখন লোকেরা
অত্যাচারীকে (অত্যাচার করতে) দেখবে এবং তার হাত ধরে না নেবে
, তখন
আল্লাহ তা
আলা তাদের সকলকে (আমভাবে) তার শাস্তির
কবলে নিয়ে নেবেন।
’’[1]
[1] আবূ দাউদ ৪৩৩৮, আহমাদ
, ১৭, ৩০, ৫৪, (আবূ
দাউদ
, তিরমিযী, নাসায়ী, সহীহ
সনদ সূত্রে)

বনি ইসরাইলের ঘটনা: আল্লাহর হকুম ছিল শনিবার মাছ শিকার করিও না, একদল
সরাসরি মাছ শিকারে লিপ্ত হয়ে গেল, ২য় দল মাছ শিকার করত না ঠিকই কিন্তু যারা শিকার
করত তাদের নিষেধও করত না বরং তাদের সাথে সম্পর্ক বজায় রেখেছিল, ৩য় দল যারা মাছ
শিকার করেছিল তাদেরকে সব সময় নিষেধ করত, কঠোর ভাবে নিষেধ করত এবং তাদের সাথে
সম্পর্কও ছিন্ন করে দিল, অতঃপর আল্লাহর আযাব আসল তারা ১ম দুই দলই আযাবে গ্রেফতার
হয়ে গেল সকলেই বান্দরে পরিণত হয়ে গেল, যারা অপরাধ করেছে তারাও বান্দর হয়ে গেল আর
যারা অপরাধে বাঁধা দেয়নি তারাও বান্দরে পরিণত হয়ে গেল। আর যারা কঠোর ভাবে অপরাধের
অন্যায়ে বাঁধা দিয়েছে তারা আল্লাহর আযাব থেকে বেঁচে গেল।

عَنْ أَبِي عَبدِ الله
طَارِقِ بن شِهَابٍ البَجَليِّ الأَحْمَسِيّ رضي الله عنه : أنَّ رَجُلاً سَأَلَ
النَّبيّ صلى الله عليه وسلم وَقَد وَضَعَ رِجلَهُ في الغَرْزِ: أيُّ الجِهادِ
أفضَلُ؟ قَالَ: «كَلِمَةُ حَقٍّ عِنْدَ سُلْطَانٍ جَائرٍ». رواه النسائي بإسناد
صحيح

১২/২০০। আবূ আব্দুল্লাহ ত্বারেক ইবনু শিহাব বাজালী
আহমাসী রাদিয়াল্লাহু
আনহু কর্তৃক বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করল এমতাবস্থায় যে
, তিনি (সওয়ারীর উপর আরোহণ
করার জন্য) পাদানে পা রেখে দিয়েছিলেন
, ‘কোন্ জিহাদ সর্বশ্রেষ্ঠ?’ তিনি বললেন, ‘‘অত্যাচারী সুলতানের
সামনে হক কথা বলা।
’’[1]
[1] নাসায়ী ৪২০৯, আহমাদ
১৮৩৫১
, (নাসায়ী বিশুদ্ধ সূত্রে)

عَن أُمِّ
المُؤمِنِينَ أُمِّ سَلَمَةَ هِندِ بِنتِ أَبي أُمَيَّةَ حُذَيفَةَ رَضِيَ الله
عَنهَا، عَنِ النَّبيّ صلى الله عليه وسلم، أَنَّهُ قَالَ: «إنَّهُ يُسْتَعْمَلُ
عَلَيْكُمْ أُمَرَاءُ فَتَعرِفُونَ وتُنْكِرُونَ، فَمَنْ كَرِهَ فَقَدْ بَرِئَ،
وَمَنْ أنْكَرَ فَقَدْ سَلِمَ، وَلَكِنْ مَنْ رَضِيَ وَتَابَعَ» قَالُوا: يَا
رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، أَلاَ نُقَاتِلهم؟ قَالَ: «لاَ، مَا أَقَامُوا
فيكُمُ الصَّلاةَ». رواه مسلم

৫/১৯৩। উম্মুল মুমেনীন উম্মে সালামাহ হিন্দ্ বিন্‌তে আবী উমাইয়া
হুযাইফাহ রাদিয়াল্লাহু
‘আনহা কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন
,
‘‘
অদূর
ভবিষ্যতে তোমাদের উপর এমন শাসকবৃন্দ নিযুক্ত করা হবে
, যাদের (কিছু কাজ) তোমরা
ভালো দেখবে এবং (কিছু কাজ) গর্হিত। সুতরাং যে ব্যক্তি (তাদের গর্হিত কাজকে) ঘৃণা
করবে
, সে দায়িত্বমুক্ত হয়ে
যাবে এবং
 যে
আপত্তি ও প্রতিবাদ জানাবে
সেও
পরিত্রাণ পেয়ে যাবে।
 কিন্তু যে ব্যক্তি (তাতে) সম্মত হবে এবং তাদের অনুসরণ
করবে (সে ধ্বংস হয়ে যাবে)।
’’
সাহাবীগণ
বললেন
, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমরা
কি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব না
?’ তিনি বললেন, ‘‘না; যে পর্যন্ত তারা তোমাদের
মধ্যে নামায কায়েম করবে।
’’[1]
[1] মুসলিম ১৮৫৪, তিরমিযী
২২৬৫
, ৪৭৬০, আহমাদ
২৫৯৮৯
, ২৬০৩৭, ২৬১৮৮

ভুল সংশোধনে হেকমত অবলম্বন করা
সৎ কাজের আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ করারও সুন্নত পদ্ধতি আছে যদি
সে পদ্ধতি অবলম্বন না করেন তাহলে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা বেশী
যিনি সৎ কাজের
আদেশ দিবেন অসৎ কাজে নিষেধ করবেন তার কিছু গুণ থাকা দরকার
যিনি মুবাল্লিগ তিনি নিজে জানতে হবে ভাল কি খারাপ কি
মুবাল্লিগ আল্লাহর সন্তুষ্টির নিয়তে কাউকে সংশোধনের চেষ্টা করতে
হবে
, কাউকে হেয় করার নিয়তে নয় কারো দোষ প্রকাশ করার নিয়তে নয় যে ব্যক্তি কোন মুসলমান ভায়ের কোন ত্রুটি গোপন করবেন কাল কেয়ামতের
ময়দানে তার দোষ আল্লাহ গোপন করবেন
কেহ ভাল কাজ ছেড়ে দিলে তাঁকে ভাল কাজটির ফজিলত বুঝাতে হবে, তারপর তাঁকে সে সৎ কাজের আদেশ দিতে হবে
কেহ মন্দ কাজ করলে তাঁকে সে মন্দ কাজের ক্ষতিসমুহ বুঝাতে হবে, না বুঝিয়েই সরাসরি নিষেধ করলে, অসম্মান করলে সে আপনার কথায় কান দিবে না
কেহ মন্দ কাজ করলে প্রথমে সে যদি আপনার অধিনস্থহয় তাকে বুঝানোর
চেস্টা করুন
, পারিবারিকভাবে,
তাতেও না হলে সামাজিক ভাবে তাতেও না হলে আইনগত আশ্রয় গ্রহণ করুন
আর নিজের সন্তান স্ত্রী যদি নামাজ না পড়ে, শরীয়ত বিরোধী কাজ করে সে ক্ষেত্রেও আপনি প্রথমে
বুঝাবেন তাতে না হলে ধমক দিয়ে চেষ্টা করবেন তাতেও না হলে আপনি পারিবারিক ভাবে সমাধানের
চেষ্টা করবেন তারপর সামাজিকভাবে তাতেও না হলে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন
সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা দিতে হবে, ৩টি বিষয়ে জোর দিতে হবে মিথ্যা যেন না বলে,
নামাজ যেন না ছাড়ে, মানুষের যেন খেদমত করে,
আপনার ছেলে মুসলমান একজন মুসলমান হিসেবে তার পরিচয় কি হওয়া উচিত? আমার নবী
বলেন (আল মুসলিমু মান সালিমাল মুসলিমুনা মিল লিসানিহি ওয়া এয়াদিহি) একজন লোক তখনই
মুসলমান হতে পারবে যখন তার হাত ও মুখ থেকে অন্য একজন মুসলমান নিরাপদ। আজ দেশের সর্বোচ্চ
বিদ্যাপিটে একজন মুসলমানকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে, যারা হত্যা করেছে তাদের
মধ্যে অধিকাংশই মুসলমানের সন্তান, তারা সর্বোচচ বিদ্যাপিঠের মেধাবী ছাত্র কিন্তু
তাঁদেরকে তাঁদের মা বাবা মুসলমান হিসেবে যে শিক্সাটা সেটা দিতে পারেনি বলে আজ তারা
মানুষ খুন করছে, দোষ মা বাবাদের যারা সন্তানকে শুধু ডাক্তার ইঞ্চিনিয়ার বানানোর
জন্য রাত দিন পরিশ্রম করে কিন্তু প্রকৃত শিক্ষা, ইসলাম শিক্ষা দেয় না। আফসোস আজ
ইসলামী শিক্ষা নৈতিক শিক্ষা থেকে আমাদের সন্তানেরা অনেক দুরে।
সদাচরন দিয়ে মন জয় করা
এক লোক হুযুর এর বিছানায়
যখন পেশাব করে দিল

শুনে অবাক হবেন-  অনেক
সময় দুর দুরান্ত থেকে যে সব লোক মদীনায় ইসলাম সম্পর্কে জানার জন্য আসত তাদেরকে হুযুর

(দঃ) সাহাবায়ে কেরামগনের মাঝে মেহমানদারীর জন্য
বন্টন করে দিতেন
,

আমাদের নবীজির ঘর ছিল খুবই সাদাসিদা, অনেক বড় বাংলো, অনেকগুলি কামরা ছিল না, তারপরও হুযুর (দঃ) কখনো কখনো মেহমান
নিজের জিম্মায় নিয়ে নিতেন
, একবার কি হল জানেন এক মোটা তাজা ধরনের
লোক মদীনায় আসল ইসলাম সম্পর্কে জানার জন্য
তাঁকে হুযুর (দঃ) নিজের মেহমান হিসেবে গ্রহণ করে নিলেন, রাতে খাবার খাওয়ালেন, দুধ পরিবেশন করলেন, লোকটি সব দুধই খেয়ে নিল, খাওয়া দাওয়ার পর শুয়ে গেল,
কিন্তু সকালে লোকটি ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে দেখে বিছানা ভিজে গেছে,
সে লজ্জায় বাহিরে চলে গেল দুরে কুয়ার পাশে গিয়ে গোসল করে নিল,
আর লজ্জায় সে হুজুরের ঘরে ফিরে যেতে চাচ্ছিলনা, কিন্তু সে তার কিছু মুল্যবান জিনিষপত্র হুজুরের ঘরে রেখে এসেছিল তাই একান্ত
অনচ্ছিসত্বেও সে হুজুরের ঘরে ফিরে গেল
, সে ঘরে গিয়ে দেখে হুজুর
পানি নিয়ে নিজেই সে লোকটির বিছানা পরিস্কার করছেন
, আর হুযুর লোকটিকে
দেখে মুচকি হেসে দিয়ে অত্যন্ত স্বাভাবিক ভাবে নরম সুরে বললেন গোসল করে েএসেছেন
?
বসুন আমি নাস্তার ব্যবস্থা করছি, লোকটি বসতে ইতস্তত
করছিল
, কিন্তু হুযুর তাঁকে অভয় দিয়ে বললেন পেরেশানীর কোন কারন
নাই অনেক সময় অতিরিক্ত ক্লান্তির কারনে এমনটি হয় এটা স্বাভাবিক আপনি একদম পেরেশান হবেন
না
, আপনি বসুন আমি আপনার জন্য নাস্তার এন্তেজাম করছি,
লোকটি হুযুরের কথা শুনে তার মনটা বরফের মত ঠান্ডা হয়ে গেল, তার সারা শরীর কেঁপে উঠল, সে বলে উঠল আল্লাহু আকবার,
এয়া রাসুলাল্লাহ আমি একজন সাধারন মানুষ তেমন জ্ঞানী নই তবে আজ আপনার
এ ব্যবহারে আমি স্বাক্ষি দিচ্ছি আপনি সত্যিই আল্লাহর রাসুল
, অতঃপর
সে লোকটি ইসলাম ধর্ম কবুল করে চলে গেল
, সে লোক তার কবিলায় ফিরে
গিয়ে তার কবিলার সকলের ঘরে ঘরে গিয়ে হুযুরের এমন অসাধারণ সুন্দর আচরনের কথা কলিজা ঠান্ডা
করা কথাবার্তা গুলি সকলকে প্রচার করল সে কবিলার সকলেই হুযুরের আদর্শ
, আচরনের ঘটনা শুনে মুগ্ধ হয়ে গেল আর কয়েকদিন পর সে লোকটি মদীনায় আবার তশরীফ
নিয়ে আসলেন তবে এবার তিনি একা আসেননি তাঁর সাথে ছিল প্রায় ৫০০ জন ঐ কবিলার লোক
,
যারা সকলেই ইসলাম কবুল করে নিলেন সুবহানাল্লাহ

ইমাম হাসান (রাঃ) হেকমত
একজন সম্মানি মানুষ তার কোন ভুল যদি আপনি জন সম্মুখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেন তাতে
হিতে বিপরীত হবে
,
যেমন একদিন ইমাম হাসান (রাঃ)
দেখলেন একজন বয়স্ক লোক অজু করছেন কিন্তু তা সুন্নত মোতাবেক হচ্ছিল না,
তখন ইমাম হাসান (রাঃ) বললেন
চাচা আমি ছোট মানুষ আমি অজু বানাব আপনি কি একটু দেখবেন আমার অজুটা সুন্নত মোতাবেক হচ্ছে
কিনা
? বৃদ্ধ বললেন ঠিক আছে কর আমি দেখছি, হযরত হাসান এত সুন্দর করে অজু করলেন ঠিক যেভাবে আমাদের প্রিয় নবী অজু করতেন
সেরকম
, বৃদ্ধ লোকটি নিজের অজুর যে সব ভুল তা বুঝতে পারলেন আর
হযরত হাসানকে অনেক দোয়া করলেন
কিন্তু আপনি যদি বাবার
সমান একজন বৃদ্ধ সম্মানি লোককে সবার সামনে সরাসরি বলেন আপনি ভুল করছেন
, তাতে হিতে বিপরীত হবে
এক ইমাম সাহেব ও যুবকের পেন্ট
এক মসজিদে এক যুবক টাখনুর
নিচে পেন্ট পরে নামাজ পড়তে আসল
, ইমাম
সাহেব যুবককে সবার সামনে বলতে পারতেন হে যুবক তোমার পেন্ট টাখনুর নিচে কেন
?
উপরে তোল, কিন্তু ইমাম সাহেব যুবককে মসজিদের এক
পাশে ডেকে নিয়ে গিয়ে বলল বেটা আমার পেট মোটা কখনো কখনো আমার পায়জামা টাখনুর নিচে চলে
যায়
, আর এতে গুনাহ হবে তাই আমি আমার পায়জামা উপরে গুটাচ্ছি তুমি
একটু দেখ আমার পায়জামা ঠিক মত টাখনুর উপর উঠছে কিনা
, এবার যুবক
দেখে নিলেন ইমাম সাহবে পায়জামা টাখনুর উপর
, ইমাম সাহেব সামনে
চলে গেলেন এখন সে যুবক নিজেরটাও উপরে তুলে নিলেন
এভাবেই স্থান কাল ও পাত্র ভেদে মানুষের মধ্যে ভাল কাজের প্রচলন করতে হবে মানুষকে
মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখতে হবে
, কার
এখন মন্দ লোকের পেশী শক্তি বেশী তাই আপনি সহজ সরল লোক যদি মন্দ দেখে মাথা গরম করে ধমকের
সুরে কথা বলেন তাতে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা বেশী
, এবং এ তরিকা
দ্বারা সমাজে মন্দ দুর না হয়ে মন্দ আরো বেড়ে যাবে ফিতনা বেড়ে যাবার সম্ভাবনা বেশী
  
ঈমানের দুর্বলতার আলামত কি?
আমরা আমর
বিল মারুফ সহজে করি, কিন্তু নেহি
আনিল মুনকার তথা মানুষকে অন্যায় কাজে বাঁধা প্রদান করি না আর যখন আমরা মানুষকে নেহি আনিল মুনকার তথা অন্যায় কাজে বাঁধা প্রদান করব না তখন বুঝে নিন আপনার আমার ঈমান দুর্বল হয়ে গেছে
হুযুর (দঃ) এরশাদ করেন যখন কোন অন্যায় দেখবে তখন মুমিনের জন্য শক্তিশালী ঈমানদারীর পরিচয় হল সে যেন তা শক্ত হাতে বাঁধা প্রদান করে,
আর যদি
শক্ত হাতে প্রতিরোধ করার সে ক্ষমতা না থাকে তাহলে ২য় পর্যায়ের পদক্ষেপ হল মুখে নিষেধ করা, এটা হল
১ম স্তর থেকে কম ঈমানের পরিচয়
আর যদি
মুখেও নিষেধ করার সে শক্তি বা ক্ষমতা না থাকে তাহলে ৩য় স্তর হল মনে মনে সে অন্যায়কে ঘৃণা করা, আর কেহ
কোন অন্যায় দেখে শক্ত হাতে বাঁধা দিতে পারল না, মুখেও প্রতিবাদ
করার সাহস পেল না, বরং ৩য়
স্তরের কাজ মনে মনে ঘৃণা করল এটা ঈমান দুর্বল হওয়ার আলামত
হে মুসলমান
ভায়েরা আজ আপনি কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন না, শুধু মনে
মনে ঘৃণা করেন, এটা আমার নবী যে বলেছেন দুর্বল ঈমানের আলামত, নবীজি আপনার আমার ঈমানের ফযিলত বয়ান করেন নি বরং আমার নবী সে কথাটাই বলে গেছেন, আজ আমরা অন্যায় দেখে শুধু মনে মনে ঘৃণা করি, শক্ত হাতে
কিংবা মুখে প্রতিবাদ করিনা সেটা আমাদের ঈমান যে দুর্বল হয়ে গেছে সেটারই আলামত
আর যারা
অন্যায়কে অন্যায় মনে করে না মাআজাল্লাহ তাঁর ঈমানের বারোটা বেজে গেছে
আজ আমরা
অন্যায়ে বাঁধা প্রদান করি না, তাইতো দিন
দিন আমাদের সমাজে অন্যায় অত্যাচার বাড়তেই চলেছে আপনার পাশের ঘরের ছেলেটি এয়াবা ব্যবসায় জড়িত, আপনি চিন্তা করছেন আমার ছেলেতো ভাল আছে আমি কেন তার বিরুধীতা করতে যাব? ধরনের
চিন্তাই আজ সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, আমাদের যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, এই সমাজ আমার, এই রাষ্ট্র আমার, আমরা সকল মুসলমান ভাই ভাই, এলাকার একজনও  বিপথে
চলে গেলে সে জন্য সকলকেই একসাথে তাঁরে ফিরিয়ে আনতে ঝাপিয়ে পড়তে হবে তবেই মুক্তি, না হয় যে অপরাধ আজ শুরু হয়েছে তা কাল আর আপনার আমার কন্ট্রোলে থাকবে না
অন্যায় দেখে
যদি বাঁধা না দেয় তখন কি কি আযাব হবে?
যখন মানুষ
অন্যায় দেখলে বাঁধা প্রদান করবেন না তখন কি হবে সে ব্যপারে হুযুর (দঃ) এরশাদ করেন- যার মফহুম কিছুটা এমন-
#যখন আমার উম্মত অন্যায় কাজে বাঁধা প্রদান করবে না তখন তাদের উপর নুযুলে কুরআনের বরকত উঠিয়ে নেয়া হবে,
# যখন তারা অন্যায় দেখে বাঁধিা দিবে না তখন তাদের উপর জালেম লোকদের কর্তৃত্ব প্রদান করা হবে,
# যখন তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলবে না তখন তাদের কোন দোয়া কবুল করা হবে না
#যখন অন্যায়ে বাঁধা দিবে না তখন আল্লাহ আযাব সে জাতীকে গ্রেফতার করবে
আজ অন্যায়ের
বিরুদ্ধে কথা বলবে এমন খাঁটি বান্দা খুঁজে পাওয়া খুবই মুশকিল আজ আমরা অন্যায়কে অন্যায়ই মনে করি না তা আমাদের জন্য খুবই আফসুসের বিষয়
আজ বেপর্দীগী
দেখে আমাদের ঈমানী জজবা জাগ্রত হয়ে উঠে না
আজ নেশার
বাজার গরম দেখে আমাদের বিবেক নাড়া দেয় না
আজ জেনার
বাজার গরম দেখে আমাদের কন্ঠে প্রতিবাদ
আসে
না
তাইতো আজ
আমাদের উপর মসিবতের উপর মসিবত, আমাদের পরিবারে অশান্তি, শত দোয়া করি তবুও কবুল হয় না, কারন আমরা
আজ অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে ভুলে গেছি

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.